14/05/2023
আমাদের ৯৫০ টাকায় চারজনের কামাক্ষা মায়ের দর্শন।
------------------------------------------------------------------------------
ভিডিও লিঙ্ক : https://openinapp.co/wntia
আগের থেকেই ঠিক করে রেখেছিলাম, এবার গরমে মা কামাক্ষা দর্শন করতে যাবো প্লাস একটা ৮ বছরের পুরনো মানতও আছে। গুয়াহাটিতে থাকা এক্স কলিগদের থেকে শুনলাম, কামাক্ষা মায়ের মন্দিরের সামনে অনেক গেস্ট হাউস বা ধর্মশালা আছে। আমি ঠিক করেই রেখেছিলাম, কামাক্ষাতেই থাকবো, গুয়াহাটি তে না। তো সেই মতো কামাক্ষা স্টেশনের বাইরে থেকে গাড়ি ভাড়া কতলাম। ২৫০ টাকা নেবে, স্টেশন থেকে কামাক্ষা মায়ের মন্দির পর্যন্ত। গাড়ি থেকে নেমে লাগেজ নিয়ে একেবারের মন্দিরের সামনে চলে আসলাম। মা, বাবা, বউ, মেয়েকে দাড় করিয়ে রেখে গেস্ট হাউস খুজতে চললাম। পেলামও, ১০০০ টাকা ডবল বেড। মোটামুটি ভাল। এবার ল্যাগেজ নিতে এসে শুনি, বাবা আর একটা গেস্ট হাউস দেখে এসেছে। মন্দির ট্রাস্টির গেস্ট হাউস। তাদের রুম ভাড়া ৫০০ টাকা, ফোর বেড। আর মন্দিরের দরজা থেকে ঠিক পাঁচ পা দূরে। মানে গেস্ট হাউসের বাইরে যদি আপনি প্রথম পা টা ফেলেন তাহলে ছয় নম্বর পা টা আপনি মন্দিরে দেবেন। গেস্ট হাউস টা, মন্দিরের মেইন গেট থেকে যে গলিটা বাঁ দিকে চলে গেছে সেই দিকে।
রুমে ঢুকে ফ্রেস হয়ে ভোগের কুপন কাটতে গেলাম। দুপুরের ভোগ ফ্রি। দুপুর ১২ টা থেকে ৩ টে পর্যন্ত দেয়। খাবার দেয়, খিচুড়ি, আলু পনিরের তরকারি, একটা পাপড়, একটা লুচি, পায়েস আর ক্ষীর। পরে চাইলে খিচুড়ি আর তরকারি দেবে। ছেলে আর মেয়েদের খাওয়ার জায়গা আলাদা।
আমি যার থেকে গাড়ি ভাড়া করেছিলাম, মেঘালয় ঘোরার জন্য, সেই অরিজিৎ দাস আমাকে বলেছিলো, দুপুরের মন্দির খোলার পর, ৩টের পরে লাইন দেবে, তুলনামূলক ফাঁকা থাকবে। সেই মতো, দুপুর ৩.১০ এ লাইন দিয়ে টিকিট নিয়ে ঢুকলাম। আমাদের টা জেনারেল লাইন ছিল। এছাড়াও ৫০০ টাকার লাইন আছে। যেখানে সকালে ১০০ টা আর দুপুর ১২.৩০ থেকে ১০০ টা টিকিট দেয়। এবার দুপুরে আপনি চাইলে লাইনে দাড়াতে পারেন, কিন্তু যাদের হাতে টোকেন আছে তারাই টিকিট পাবে। সো, আপনি যদি দেখেন আপনার হাতে টোকেন নেই, ফালতু সময় নষ্ট করবেন না। আর আপনি যদি ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাথে যুক্ত থাকেন, তাহলে ৫০ টাকা করে নেয়, পার হেড। (এর চেয়ে বেশি জানি না)।
এবার ৩.১০ এ লাইনে দাড়াই। আমরা দুনম্বর ঘরে বসেছিলাম। একটা কথা যতই ভীড় হোক না কেন, ৪ টের আগে যারা লাইনে দাড়িয়েছেন, তাদের মায়ের দর্শন হবেই হবে। আমরা যখন ঘর থেকে বেরোলাম, তখন বাজে ৫.৪৫। মানে প্রায় আড়াই ঘন্টা বসে ছিলাম। কোন অসুবিধা হয় নি। চা, নিম্বু পানি চাইলে আপনারা খেতে পারেন। আমাদের পুজো দিয়ে বাইরে আসতে আসতে প্রায় ৬.৫৫ বেজে গেছিলো। মানে চার ঘন্টার কম সময়ে আমাদের দর্শন হয়ে গেছিলো।
আর যদি আপনারা পায়রা ওড়াতে চান, তাহলে জোড়া পায়রার দাম ৫০০ টাকা। মন্দিরের বাইরে তারা মায়ের মন্দিরের সামনে পাওয়া যায়। আর এর সাথে সিদূর কিনে নেবেন। ওড়ানোর আগে পায়রার কপালে লাগিয়ে দেবেন।
এবার রাতের খাওয়া। মন্দির ট্রাস্টির গেস্ট হাউসে রাতের খাওয়ার ব্যবস্থা আছে। সেটা দুপুরেই বলে রাখতে হয়। আপনারা যদি সেখানে রুম না পান, তাহলেও আপনারা রাতের খাবার খেতে পারবেন। ৫০ টাকা পার হেড নেয়। খাবার দেয়, ভাত, ডাল, আলু পনিরের তরকারি, আর একটা ভাজা। মিল সিস্টেমে খাওয়া।
আমাদের চারজনের মোট খরচ হলো
গাড়ি ভাড়া : ২৫০ টাকা
ঘর ভাড়া : ৫০০ টাকা
দুপুরের খাওয়া : ফ্রি
সন্ধ্যাবেলা চা : ৪০ টাকা। (১০ টাকা করে চা)
রাতের খাওয়া : ২০০ টাকা।
সব মিলিয়ে ৯৯০ টাকা।
এবার একটা দরকারী তথ্য, পুরো কামাক্ষা মন্দির এবং তার সংলগ্ন এলাকায় ইভেন পার্কিং জোনে, বা বাস স্ট্যান্ডেও, স্মোকিং নট এল্যাও। বিড়ি, সিগারেট খেতে দেখলে ৫০০ টাকা ফাইন। ঘরে বসে যত ইচ্ছা খান, রাস্তায় খাবেন না।
কামাক্ষা দেবালয় গেস্ট হাউসের নম্বর : 0361-2734654
যতোটা পারলাম জানালাম, যদি কিছু জানার থাকে অবশ্যই বলবেন। জানানোর চেষ্টা করবো।
মা কামাক্ষা আপনাদের সবার মঙ্গল করুক, এই কামনা করি।