09/07/2025
আজকের গল্প:
কর্ম সুত্রে গ্রামের ১৫০ কিলোমিটার দূরের শহরে থাকা । সারাটা দিন চার দেওয়ালে আবদ্ধ , ঠিক যেমন খাঁচার তোতাপাখির মত। মালিক খাবার দেয়, জল দেয় কিন্তু উড়তে দেয়না । স্বভাবতই সুযোগ পেলে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিই।
তো একদিনকার যাত্রা পথের কাহিনী পাঠকদের শেয়ার করচ্ছি। বার টা ছিল শনিবার, মেঘলা আকাশ, গুরি গুরি বৃষ্টি। অফিসে কাজ করতে করতে মনে জেদ উঠলো আমি বাড়ি যাব । কিন্তু ভাগ্যর এমন পরিহাস একটার পড় একটা কাজ আসতেই থাকলো । অন্য দিকে মনের উদ্দিপনা বাড়তে থাকলো।সব শেষকরে কাজ শেষ হলো অন্যদিনের মতো রাত দশটায়।
কিন্তু এতে জেদ আমার কমেনি, বাড়ি যাবো মানে যাবোই। তাই অফিস থেকে বেড়িয়ে শিয়ালদহর উদ্দেশ্য রওনা দিলাম । গিয়ে দেখি দশটা কুঁড়ির ট্রেন বেরিয়ে গেছে পরবর্তী ট্রেন এগারোটা পনেরো। টিকিট কেটে ভেন্ডর বগিতে উঠে পড়লাম।
এবার আসি আসল কাহিনীতে। আগেই বলেছি বৃস্টির দিন, তাই ভেন্ডরে খান দশেক লোক। নিজের সঠিক টাইমে ট্রেনটা ট্রেশন ত্যাগ করলো । এদিকে ট্রেনের ঝুক ঝুক শব্দ বাড়তে থাকচ্ছে, অন্য দিকে বুকের হৃদস্পন্দন বাড়ছে। রাতের ট্রেন, বিভিন্ন রকমের মানুষ, নানান রকম খেয়ালি পনা মস্তিষ্কের কনে বাসা বেঁধেছে। ইতিমধ্যে ট্রেন এসে পৌঁছালো ব্যারাকপুর, আমি আর এক ব্যাবসি বাদে সবাই নেমে পড়লো। আর ভেন্ডার বগির পিছনের গেট দিয়ে উঠলো এক জরাজীর্ণ লোক । এখন বগিতে সামনের দিকে আমি, বিপরীত দিকে বসা থাকে ব্যাবসায়ী, আর পিছনের দরজা তে থাকে ঐ ব্যাক্তি।
উনার দিকে তাকিয়ে থাকি কৌতুহলের সঙ্গে ।ভয় টাও বাড়তে থাকলো ।
কারণ বলে দিই-
লোকটা চাদর গায়ে পড়ে আছে। মুখে খোঁচা ভর্তি দাড়ি, প্যান্টা যেমন ছেঁড়া তেমন নোংরা এবং পয়ে হাতে ফোঁসকা পড়ার মত ছোপ দাগ এর সঙ্গে বিভৎস দূর্গন্ধ। যেটা ঐ ব্যাক্তি উঠতেই বগি টা তে মম করচ্ছে। অপর দিকে এত সিট থাকতেও , নিচে থেবরে বসেছে। এবার অন্য ভয় শুরু হলো। পাড়ার কোনো একদিন বয়স্ক ব্যক্তিদের কাছে শুনেছিলাম ঠাকুর আসলে মিস্টি গন্ধ ছড়ায়,আর আত্মা আসলে দূর্গন্ধ। স্বভাবতই ভয় উল্টো অবস্হান নিল। চোর , ডাকাত , ছিন্তায়ের ছেড়ে ভুতুড়ে ভয় বহন করলো । একবার ভাবচ্ছি উনি পাগল, আবার ভাবচ্ছি অন্য কেউ। পৌছালাম শ্যামবাজার ট্রেন দাঁড়াতেই ব্যবসায়িক নেমে গেল। ভাবনাতে এতটাই মগ্ন ছিলাম ট্রেন থামা, ব্যাবসায়ীক নেমে যাও টের পাইনি। ট্রেন যখন চালু হল তখন বুঝতে পারলাম। এবার ত আমার হার্টবিট ট্রেনের থেকে বেশি গতিতে চলতে শুরু করলো। এদিকে ফোনের ঘড়িতে সাড়ে বারোটার বেজে গেছে। অন্য দিকে আমারো অবস্থা শুকিয়ে এসেছে, ভয় কী ? সেটা এবার উপলব্ধি করচ্ছি। নৌহাটি ক্রসিং-এ আসতেই লোকটা উঠে আস্তে আস্তে আমার দিকে এগোতে থাকে। তখন তো আমার হাত পা শূন্য। কি করবো বুঝতে পারছি না। নৈহাটি তে দাঁড়াতেই আমি যেই নামতে যাচ্ছি , তখনই ঐ ব্যাক্তি পিছন থেকে আওয়াজ দিলো , বাবু ও বাবু একটি বিড়ি হবে? আমি আশ্চর্য ভাবে চেয়ে তাকে বল্লাম আমার কাছে এ সব থাকে না। এই বলে নেমে অন্য বগিতে উঠি । তখন প্রানে জান ফিরে আসলো ।