29/04/2025
চট্টগ্রামের সিইপিজেড এলাকার এলসিবি গার্মেন্টসে অসুস্থ অবস্থায় ছুটি না পেয়ে এক আদিবাসী তরুণ শ্রমিক, উৎপল তঞ্চঙ্গ্যা (Utpal Tanchangya) প্রাণ হারিয়েছেন।
তিনি ফ্যাক্টরিতে ফিনিশিং হেলপার পদে কাজ করতেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, উৎপল গত ২৬ এপ্রিল থেকেই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি ছুটির আবেদন করেছিলেন, কিন্তু কর্তৃপক্ষ তার আবেদন গ্রহণ করেনি।
চাকরি হারানোর ভয়ে তিনি বাধ্য হয়ে অসুস্থ শরীর নিয়েই কাজে যোগ দেন।
গত ২৭ এপ্রিল সকালে আরও দুর্বল শরীরে দ্বিতীয়বার ছুটির আবেদন করেন উৎপল। তবে ফের ছুটি না দিয়ে তাকে জোর করে কাজ চালিয়ে যেতে বাধ্য করা হয়।
দুপুর একটার দিকে শরীরের অবস্থা আরও সংকটাপন্ন হয়ে পড়লে, কান্নাজড়িত কণ্ঠে তৃতীয়বার ছুটির আবেদন করেন তিনি। অবশেষে বিকেল চারটায় ছুটি পান, কিন্তু তখন উৎপলের শরীর এতটাই দুর্বল হয়ে পড়েছিল যে তিনি নিজের পায়ে দাঁড়াতেও পারছিলেন না।
পরবর্তীতে তাকে দ্রুত বেপজা মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
কিন্তু সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় খারাপ হলে তাকে ফৌজদার হাট ডায়রিয়া হাসপাতালে নেওয়া পথে সল্টগোলা রেল ক্রসি এলাকায় সিএনজি গাড়ীতে থাকা অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই তরুণ আদিবাসী শ্রমিক।
এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর, এলসিবি গার্মেন্টসের বিরুদ্ধে শ্রমিক নির্যাতন এবং মানবিকতার চূড়ান্ত অবহেলার অভিযোগ উঠেছে।
একই কারখানায় কর্মরত উৎপলের সহকর্মী পূর্ণা চাকমা (Purna Chakma) জানান, উৎপলের মৃত্যুর জন্য কারখানা কর্তৃপক্ষের অমানবিক আচরণই সরাসরি দায়ী।
আদিবাসী শ্রমিক উৎপল তঞ্চঙ্গ্যার মৃত্যু কোনো বিচ্ছিন্ন দুর্ঘটনা নয়। এটি শ্রমিকের জীবন নিয়ে প্রতিষ্ঠানিক অবহেলার একটি ভয়াবহ উদাহরণ।
শ্রমিকের ন্যূনতম মানবাধিকার নিশ্চিত না করে জোরপূর্বক কাজ করানোর সংস্কৃতি আজ ‘কাঠামোগত হত্যাকাণ্ডের’ রূপ নিচ্ছে। উৎপলের মৃত্যু সেই নির্মম বাস্তবতারই আরেকটি মর্মান্তিক প্রমাণ।
゚