24/05/2025
মা, আমি চুরি করিনি! এক প্যাকেট চিপসের অপবাদে
বি/ষ খেয়ে আ*ত্ম*হ*ত্যা ক্লাস সেভেনের কৃষ্ণেন্দুর!
স্টিং টাইমস সার্ভিস, পাঁশকুড়া: বাজারে চিপস কিনতে গিয়েছিল পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পাঁশকুড়া গোঁসাইবেড়ের ক্লাস সেভেনে পড়া কৃষ্ণেন্দু দাস। সে জানত না, সেই দিনই তার জীবনের শেষ দিন।
গোঁসাইবেড় বাজারে একটি দোকানের সামনে পড়ে থাকা চিপসের প্যাকেটটা যখন সে হাতে তুলে নেয়, তখন কেউ জানত না—এই সামান্য মুহূর্তই ছেলেটির জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল হয়ে দাঁড়াবে।
দোকানে চিপস ছিল না, দোকানদারও ছিলেন না—এই অভিযোগ করছে কৃষ্ণেন্দুর পরিবার। প্যাকেট কুড়িয়ে নেওয়ার পর বাড়ি ফেরার সময়ই বিপদ নামে। দোকান মালিক শুভঙ্কর দীক্ষিত—পেশায় একজন সিভিক ভলান্টিয়ার—মোটরবাইকে চড়ে ধাওয়া করেন ওই নাবালককে।
বাজারের মাঝে, শত শত লোকের সামনে একরত্তি ছেলেটিকে ‘চোর’ বলে অপমান করেন তিনি। কান ধরে ওঠবস করান, চলে শারীরিক নিগ্রহও। পাশে দাঁড়িয়ে মানুষ, আর মাঝখানে দাঁড়িয়ে ছোট্ট কৃষ্ণেন্দু—লজ্জা, অপমান আর অবমাননার পাহাড়ে দাঁড়িয়ে কাঁপছে তার মন।
পরিবারের দাবি, চিপসের দামটাও দিয়েছিল কৃষ্ণেন্দু। তবুও কলঙ্ক মোছা গেল না। ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন কৃষ্ণেন্দুর মা। ছেলেকে শাসন করে বাড়ি নিয়ে যান—না জেনে, এটাই ছেলের শেষ হাঁটা।
“মা, আমি চুরি করিনি!”
এই কথাটাই ছিল শেষ। তারপর লিখে যায় এক টুকরো সুইসাইড নোট। তারপর… কীটনাশক।
তমলুক মেডিকেল কলেজে শেষ চেষ্টা হলেও রক্ষা করা গেল না। সোমবার সকালে নিথর হয়ে বাড়ি ফিরল কৃষ্ণেন্দু—পিছনে ফেলে গেল একটা অসমাপ্ত শৈশব, একরাশ অপমান আর অগুনতি প্রশ্ন।
প্রশ্ন উঠছে—
একজন সিভিক ভলান্টিয়ার হয়ে শুভঙ্কর দীক্ষিত কীভাবে আইন নিজের হাতে তুলে নিলেন? কেন তিনি বাজারের মধ্যে এক নাবালককে জনসমক্ষে অপমান করলেন? কোথায় ছিল সংযম, কোথায় ছিল বিচারবোধ?
সিসিটিভি ফুটেজ দেখাতে রাজি নন অভিযুক্ত শুভঙ্কর। নীরবতা তার একমাত্র প্রতিক্রিয়া। কিন্তু নীরব নয় গোঁসাইবেড়—বাড়ছে প্রতিবাদের সুর।
"শাস্তি চাই! বিচার চাই!"—গর্জে উঠছে এলাকাবাসী।
আজ কৃষ্ণেন্দু নেই।
রয়ে গেছে তার সেই শেষ আর্তনাদ—
“মা, আমি চুরি করিনি…” 🙏🥹