RudraX

RudraX In a slight different way! In a Slight Different Way!
(5)

প্রতিবছর জন্মদিন আসে,নানান স্মৃতির জানালা খুলে যায়।চেনা-শোনা অনেকেই একটিবার উইশ করতে ভুলে যায়,কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়,য...
09/09/2025

প্রতিবছর জন্মদিন আসে,
নানান স্মৃতির জানালা খুলে যায়।
চেনা-শোনা অনেকেই একটিবার উইশ করতে ভুলে যায়,

কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়,
যাদের সাথে হয়তো ঠিকভাবে কোনোদিন পরিচয় হয়নি,
কথা হয়নি, সাক্ষাৎ ও হয়নি,
ঠিক যেমন তোমরা…
তোমরাই আমায় জিতিয়ে দাও 💗

২৫ নটআউট,
খেলা এখনো বাকি, আরো অনেক পথ রয়েছে সামনে! ❤️

হাওড়া বা হুগলি বা যেকোনো রেলস্টেশন শুধু ট্রেন বদলের জায়গা নয়, এটা ভাগ্য বদলেরও জায়গা।কারও ভাগ্য স্বপ্নের দিকে ছোটে, কারও...
08/09/2025

হাওড়া বা হুগলি বা যেকোনো রেলস্টেশন শুধু ট্রেন বদলের জায়গা নয়, এটা ভাগ্য বদলেরও জায়গা।

কারও ভাগ্য স্বপ্নের দিকে ছোটে, কারও ভাগ্য এসে থামে এক সর্বনাশের কিনারে।

ঠিক যেমন থেমে গিয়েছিল আনন্দ কুমার বিন্দের ভাগ্য!

উত্তরপ্রদেশ থেকে বিভূতি এক্সপ্রেসের দীর্ঘ পথ পেরিয়ে আসা ছেলেটির চোখে স্বপ্ন ছিল, কিন্তু শরীরে ছিল যাত্রার ক্লান্তি। পশ্চিমবঙ্গের স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষা

এই একটাই লক্ষ্য তার হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দেওয়ার কারণ। হাওড়ার জনসমুদ্র পেরিয়ে লোকাল ট্রেন ধরে হুগলি স্টেশনে যখন সে নামল, তখন অচেনা পরিবেশের উদ্বেগ তার চোখে-মুখে স্পষ্ট। আর সেই উদ্বেগই হয়ে উঠল এক শিকারীর জন্য নিখুঁত আমন্ত্রণ।

শিকার শুরু হলো, আকস্মিক এবং দ্রুত।

কোনও দীর্ঘ ভূমিকা ছিল না, ছিল না সময় নষ্ট করার অবকাশ। ভিড়ের মধ্যে থেকে এগিয়ে আসা এক মূর্তিমান ‘সাহায্য’ তার সাথে কথা শুরু করল। হঠাৎ এগিয়ে এলেন একটি অদ্ভুত লোক।

তার কণ্ঠস্বরে ছিল অদ্ভুত সম্মোহন, আচরণে ছিল বহুদিনের চেনা কোনও আত্মীয়ের উষ্ণতা। আনন্দ কিছু বুঝে ওঠার আগেই, সেই লোকটি তাকে সাহায্যের জালে জড়িয়ে নিল। সোজা নিয়ে গেল এক হোটেলে।

আনন্দ ভেবেছিল, সে এক সৎ ব্যক্তির দেখা পেয়েছে। সে জানত না, হোটেলের ওই ঘরটাই ছিল তার ফাঁদের প্রথম পর্যায়।

একসাথে খাবার খাওয়া হলো। হতে পারে, খাবারের প্রতিটি গ্রাসের সাথেই মিশে যাচ্ছিল এক ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্র। হতে পারে, ওই খাবারের টেবিলেই পাতা হয়েছিল সেই শেষ সর্বনাশটুকু, যা আনন্দের চেতনাকে কিছুক্ষণের জন্য এই পৃথিবী থেকে মুছে দেবে।

খাবার শেষ হতেই এল সেই চূড়ান্ত প্রস্তাব। সেই বিষাক্ত বড়শি, যা গিলতে আনন্দ বাধ্য ছিল। লোকটি বলল, পরীক্ষার আগে মন শুদ্ধ করতে গঙ্গায় স্নান দেওয়া দরকার। আনন্দের সরল মন এর মধ্যে কোনও চক্রান্তের গন্ধ পেল না, সে এটাকে ঐশ্বরিক আশীর্বাদ ভেবেছিল।

তাকে নিয়ে যাওয়া হলো গঙ্গার ঘাটে। তবে কোনও ব্যস্ত ঘাট নয়, বরং নির্জন এক জায়গা।

আনন্দ যখন ভক্তিভরে চোখ বন্ধ করে গঙ্গার জলে ডুব দিল, ঠিক সেই মুহূর্তে তার পেছনে দাঁড়ানো মূর্তিমান ‘বিশ্বাস’-এর মুখটা এক শীতল, হিংস্র উল্লাসে ভরে উঠেছিল। তারপরই সব আবছা!

তারপর আর কিছু মনে নেই আনন্দ কুমারের।

তার চেতনার শেষ স্মৃতি ছিল গঙ্গার হিমশীতল জলের স্পর্শ। তারপর, শুধু এক অতল, অনন্ত অন্ধকার।

সে যখন চোখ খুলল, তখন সে চুঁচুড়া হাসপাতালের এক বিবর্ণ বিছানায়। জ্ঞান ফেরার পর প্রথম যে অনুভূতিটা হলো, তা শারীরিক কষ্টের নয়, এক তীব্র মানসিক যন্ত্রণা।

তার পকেট খালি, ফোন উধাও, ব্যাগ নেই। কিন্তু সেগুলো ছিল সামান্য ক্ষতি। আসল চুরিটা তো সবে শুরু হয়েছিল। যখন তার নিজের স্মৃতিগুলোই তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করতে শুরু করল।

তার মনে পড়তে লাগল সেই লোকটির ‘নির্মল’ হাসি, সেই ‘আন্তরিক’ ব্যবহার, আর তার নিজের সেই অন্ধ বিশ্বাস। প্রতিটা স্মৃতি যেন তার আত্মাকে চাবুকের মতো আঘাত করছিল। সে বুঝতে পারছিল, তাকে শুধু লুঠ করা হয়নি, তার মনুষ্যত্বের উপর বিশ্বাসটাকেও নির্মমভাবে হ*ত্যা করা হয়েছে।

কোনমতে সবকিছু হারিয়ে শরীরের শেষ সম্বলটুকু নিয়ে, সে রওনা দিল পরীক্ষা কেন্দ্রে!

কি বুঝলেন?

সময় ভালো নেই, একদমই তাই! সময় প্রচন্ড খারাপ!

কারণ আনন্দদের শিকার যারা করে, তারা আপনার-আমার মতোই সাধারণ দেখতে। তাদের মুখে কোনও দাঁত-নখ থাকে না, তাদের চোখে থাকে অভিনয় আর সহানুভূতির নিখুঁত মুখোশ। তারা মনোবিজ্ঞানী, তারা আপনার একাকিত্ব, আপনার অসহায়ত্বকে পড়তে পারে।

কিন্তু এই যুগে যদি আপনি চোখ বন্ধ করে কারো উপর বিশ্বাস করেন, সেটিই ডেকে আনবে আপনার কাল। ডেকে আনবে আপনার সবচেয়ে বড় বিপদ।

এতে বোঝাই যায় ছেলেটি হয়তো প্রচন্ড সরল ছিল, উত্তরপ্রদেশের এক গ্রাম থেকে আসা ছেলেটি বুঝতে পারিনি এখানকার ছলচাতুরির মানসিকতার মত হিংস্র ব্যক্তিদের।

তাই আপনার কাছে একান্ত অনুরোধ, আপনি যতই বুদ্ধিমান বা বুদ্ধিমতি হন না কেন, চোখ কান এবং মস্তিষ্ক খোলা সব সময় রাখবেন! কারণ এই তিনটির মধ্যে একটিও বন্ধ হয়ে গেলে বিপদ আসতে এক সেকেন্ডও লাগবে না।

তাই পরেরবার কোনও অচেনা জায়গায় পা রাখার আগে মস্তিষ্কে এই কথাটা গেঁথে নিন, আপনার প্রথম এবং শেষ রক্ষাকবচ হলো আপনার সতর্কতা।

সাহায্যকারী হাত অবশ্যই আছে, কিন্তু তার আড়ালেই লুকিয়ে থাকে শিকারীর বাড়ানো থাবা। সরলতা ভালো, কিন্তু অন্ধ সরলতা আত্মহত্যারই নামান্তর।

চোখ কান খোলা রাখুন। প্রযুক্তিকে বন্ধু বানান। কিন্তু নিজের সুরক্ষা এক অচেনা ‘দেবদূত’-এর হাতে তুলে দেবেন না।

কারণ এই পৃথিবীতে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর শিকারী দুই পায়ে হাঁটে এবং মানুষের ভাষায় কথা বলে। আর তাদের শিকারের প্রথম ধাপটাই হলো আপনার বিশ্বাস জয় করা।

এটা কিন্তু কোন গল্প নয়, এটি সত্য বাস্তব, যা মাত্র কিছুদিন আগেই ঘটে গেল বাংলার বুকে! এই প্রতিবেদনটি আপনাকে সেই আয়নাটা দেখানোর জন্য, যার সামনে দাঁড়ালে আপনি নিজের ভেতরের সরল, বিশ্বাসপ্রবণ মুখটার পেছনে লুকিয়ে থাকা বিপজ্জনক দুর্বলতাটাও দেখতে পাবেন।

কারণ আনন্দদের শিকার যারা করে, তারা কোনও সাধারণ অপরাধী নয়। তারা এই আধুনিক সভ্যতার জঙ্গলের সবচেয়ে ধূর্ত শিকারী। তাদের দাঁত-নখ নেই, আছে নিখুঁত অভিনয় আর মানুষের মন পড়ার আশ্চর্য ক্ষমতা।

তারা জানে, এই পৃথিবীতে সবচেয়ে সহজে যাকে ভেঙে ফেলা যায়, সে হলো একজন ভালো মানুষ। কারণ একজন ভালো মানুষ পৃথিবীকে তার নিজের মতোই সুন্দর করে দেখতে চায়। সে বিশ্বাস করতে ভালোবাসে, ভরসা করতে ভালোবাসে। আর শিকারীরা ঠিক এই বিশ্বাসকেই তাদের তুরুপের তাস বানায়।

আপনার দয়া, আপনার সরলতা তাদের কাছে কোনও মহৎ গুণ নয়, বরং এক সহজ প্রবেশদ্বার, যা দিয়ে তারা আপনার সর্বনাশ পর্যন্ত পৌঁছতে পারে।

আপনাকে ছোট থেকে শেখানো হয়েছে, ‘সবার উপকার করবে, মানুষকে বিশ্বাস করবে’। কিন্তু আপনাকে এটা কেউ শেখায়নি যে, এই বিশ্বাস আর বোকামির মধ্যেকার সীমারেখাটা খুব পাতলা। আপনার সরলতা এক অমূল্য সম্পদ, কিন্তু এই পৃথিবীতে সেই সম্পদের নিলাম ডাকতে এক মুহূর্তও দ্বিধা করে না কেউ। পৃথিবী কোনও রূপকথার রাজ্য নয়, এটি একটি কঠিন বাস্তবতার ময়দান। আর এখানে টিকে থাকতে গেলে শুধু ভালো হলে চলে না, আপনাকে বুদ্ধিমান এবং বিচক্ষণও হতে হয়।

তাই পরেরবার যখন কোনও অচেনা হাত আপনার দিকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসবে, তখন তাকে অন্ধের মতো আঁকড়ে ধরার আগে এক মুহূর্তের জন্য থামুন। তার মুখের কথার চেয়ে তার চোখের ভাষাকে পড়তে শিখুন। তার আচরণের মধ্যে লুকিয়ে থাকা সূক্ষ্ম অসংগতিগুলো বোঝার চেষ্টা করুন। আপনার ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়কে অবহেলা করবেন না। যদি ভেতর থেকে কোনও সতর্কবার্তা আসে, তাকে শুনুন। কারণ ওই সতর্কবার্তাই হয়তো আপনাকে এক ভয়ঙ্কর খাদের কিনারা থেকে ফিরিয়ে আনবে।

মনে রাখবেন, এই পৃথিবী বড়ই নির্দয়; এখানে দ্বিতীয় সুযোগ চেয়ে নেওয়ার আগে, প্রথম সুযোগেই আপনাকে নিঃস্ব করে দেওয়া হয়। আপনার অসতর্কতার সুযোগে এই পৃথিবী আপনাকে গিলে খাওয়ার জন্য দ্বিতীয়বার ভাববে না।

সুতরাং, চোখ খোলা রাখুন। কান সজাগ রাখুন। আর হৃদয়কে আবেগের পাশাপাশি যুক্তির বর্মও পরিয়ে রাখুন।

কারণ এই পৃথিবীতে ভালো মানুষ হয়ে বেঁচে থাকাটা জরুরি, কিন্তু বোকা মানুষ হয়ে টিকে থাকাটা প্রায় অসম্ভব।

#এসএসসি

06/09/2025

কি রে, দেখ তো ভাই, এখনকার হাই গ্রাফিক্সের যুগে এই নস্টালজিক গেমস গুলো মনে পড়ে? 🎮

আচ্ছা, কোন গেমটি এখনো খেলতে ইচ্ছে করে? এই গেমগুলির বাইরে থাকলেও কমেন্ট করো! ❤️✨Old Monbile Games Nostalgia

29/08/2025

শিশু যৌ*ন পাচার ও যৌ*ন ব্যবসা একটি সামাজিক ও আইনি অপ"রাধ। একজন দায়িত্ববান নাগরিক হিসাবে এই অপ*রাধের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া আমাদের কর্তব্য । দেশের আইন অনুযায়ী এই জঘন্য অপ*রাধের শাস্তি চরম। পুলিশ প্রশাসনের সবরকম সহায়তা রয়েছে আমার আপনার সাথে।

চুপ করে থাকার দিন শেষ। সমাজকে নিরাপদ রাখতে , আগামী প্রজন্মের জন্য এক সুন্দর পৃথিবী গড়ে তুলতে তাই এগিয়ে আসুন। সকলের মিলিত প্রয়াসই পারবে দোষীদের শাস্তি সুনিশ্চিত করতে ও এই অপরাধকে দমন করতে। 👈✅

কখনও ভেবেছেন,আপনার সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয়টাই একদিন আপনার মৃ*ত্যুকূপ হয়ে উঠতে পারে?যে ঘরের দেওয়াল আপনাকে বাইরের জগৎ থেকে আড়া...
27/08/2025

কখনও ভেবেছেন,

আপনার সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয়টাই একদিন আপনার মৃ*ত্যুকূপ হয়ে উঠতে পারে?

যে ঘরের দেওয়াল আপনাকে বাইরের জগৎ থেকে আড়াল করে, সেই দেওয়ালই যদি জীবন্ত হয়ে আপনার শেষ আর্তনাদটাকে গিলে নেয়?

বিশ্বাস করুন, পারে।

কৃষ্ণনগরের মানিকপাড়ার একটি বাড়ি এখন সেই ভয়ংকর সত্যের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

বাইরে থেকে দেখতে আর পাঁচটা সাধারণ বাড়ির মতোই। কিন্তু কান পাতলে আজও হয়তো শোনা যায় এক অভিশপ্ত দুপুরের চাপা গোঙানি।

বাতাসের আনাচে-কানাচে মিশে আছে বারুদের গন্ধ আর জমে থাকা আতঙ্ক।

ঈশিতা মল্লিক,

উনিশটা বসন্ত দেখা এক তরুণী। যার নিজের একটা ঘর ছিল, একটা কলেজ ছিল, আর ছিল একরাশ স্বপ্ন।
সেই স্বপ্নের পৃথিবীতে সে একজনকে বিশ্বাস করে জায়গা দিয়েছিল, দেবরাজ সিং।

কিন্তু সে জানত না, ভালোবাসার আড়ালে লুকিয়ে ছিল এক আদিম, শিকারী প্রবৃত্তি। সে বুঝতে পারেনি, যে হাতটা তার কাঁধে আশ্রয় দিত, সেই হাতেই একদিন ফুটে উঠবে মৃ*ত্যুর নীল শিরা।

সম্পর্কের খাঁচাটা দমবন্ধকর হয়ে উঠছিল।
ঈশিতা চেয়েছিল মুক্তি। সে চেয়েছিল খোলা আকাশ।
কিন্তু শিকারী তার শিকারকে এত সহজে মুক্তি দেয় না।

ঈশিতার 'না' শুধু একটা প্রত্যাখ্যান ছিল না।
ওটা ছিল ঘুমন্ত এক দানবকে জাগিয়ে দেওয়ার সঙ্কেত।
যে দানবের কাছে ভালোবাসা মানে শরীর, আর প্রত্যাখ্যান মানে বিনাশ।

তারপর? সেই অভিশপ্ত দুপুর, ২৫শে আগস্ট!

সেদিন কড়া নাড়েনি কেউ।
দরজার ওপারে দাঁড়িয়ে ছিল না কোনও মানুষ, দাঁড়িয়ে ছিল সাক্ষাৎ মৃ*ত্যুদূত।

শিকারীর পদক্ষেপে, নিঃশব্দে সে ঢুকে পড়েছিল বাড়ির ভেতর। তার লক্ষ্য ছিল স্থির, ঈশিতার ঘর।

যে ঘরটা ছিল ঈশিতার দুর্গ, তার স্বপ্নের আঁতুড়ঘর, সেই ঘরেই প্রবেশ করেছিল অশুভ ছায়া।

কোনও কথা নয়। কোনও বোঝাপড়া নয়।
শুধু দুইজোড়া চোখের নীরব যুদ্ধ, এক চোখে ছিল বাঁচার আকুতি, আর অন্য চোখে ছিল সব শেষ করে দেওয়ার হিমশীতল প্রতিজ্ঞা।

তারপর…
জামার ভেতর থেকে বেরিয়ে এসেছিল এক টুকরো শীতল কঠিন ধাতু। লক্ষ্য সেই মেয়েটির মাথা।

ঘরের স্তব্ধতা চিরে দিয়ে সেই ধাতব বস্তুটি যখন ঝলসে উঠল, সময় যেন এক মুহূর্তের জন্য থেমে গিয়েছিল।

ঈশিতার চোখের সামনে তার ভালোবাসার মানুষটি বদলে গিয়েছিল এক অচেনা, নির্দয় ঘা*তকে।

একটা শব্দ।
না, বি*স্ফো*রণ। সব শেষ!

যে শব্দে একটা গোটা বাড়ির আত্মাটা এক মুহূর্তে উড়ে গেল।
যে শব্দটা শুধু একটা মেয়ের হৃৎপিণ্ড থামিয়ে দেয়নি, থামিয়ে দিয়েছিল তার মায়ের পৃথিবী, তার পরিবারের ভবিষ্যৎ।

ঘরের দেওয়ালগুলো যেন যন্ত্রণায় কুঁকড়ে উঠেছিল সেই শব্দে।

এরপর নেমে এসেছিল এক অনন্তকালীন স্তব্ধতা,
যে স্তব্ধতা মৃ*ত্যু*র চেয়েও ভয়ংকর।

কেন? কীসের জন্য এই নৃশংসতা?

কারণ, এই সেই সমাজ যেখানে প্রেমিকের মুখোশের আড়ালে ঘাতকেরা নিঃশ্বাস নেয়। যেখানে প্রত্যাখ্যানকে দুর্বলতা ভাবা হয়, আর প্রতিহিংসাকে পৌরুষ। অথবা ঠিক এর উল্টোটাও ঘটে।

এই সেই সমাজ যেখানে আমরা ভালোবাসার নামে একে অপরকে নিয়ন্ত্রণ করার খেলায় মেতে উঠি।

আজ যে আপনার ফোনের পাসওয়ার্ড চাইছে, আপনার পোশাক নিয়ে প্রশ্ন তুলছে, কাল সেই আপনার নিঃশ্বাসটুকুও নিজের বলে দাবি করবে।

আমরাই আমাদের চারপাশে রোজ জন্ম দিচ্ছি একেকটা দেবরাজকে। কখনও সিনেমার পর্দায় তার পৌরুষ দেখে হাততালি দিচ্ছি, কখনও "ও একটু বেশিই ভালোবাসে" বলে তার অধিকারবোধকে প্রশ্রয় দিচ্ছি।

আর তারপর, যখন এই বিষাক্ত ভালোবাসা তার আসল রূপ দেখায়, যখন একটা মেয়ের নিথর শরীর পড়ে থাকে তার নিজেরই ঘরে, তখন আমরা মোমবাতি হাতে বিচার চাই, অথবা একবার খুব সহজেই ভুলে যাই।

বিচার?
আসল দানবটা তো আপনার-আমার মধ্যেই কোথাও লুকিয়ে আছে। চেনা মুখের আড়ালে। সম্মানের মুখোশের পেছনে।

আজ ঈশিতার জন্য যে ঘরটা মৃ*ত্যুপুরী হয়ে উঠল, কে জানি কত এরকম হচ্ছে আরো, চোখে আসছে না শুধু।

দরজাটা বন্ধ করার আগে একবার ভাবুন, আপনি ঠিক কার থেকে বাঁচতে চাইছেন? বাইরের বিপদ থেকে?

নাকি ঘরের ভেতরে বেড়ে ওঠা সেই নিঃশব্দ দানবটা থেকে?

কখনও কি ভেবেছেন, আপনার হাতের মুঠোয় থাকা স্মার্টফোনটা আসলে কী?ওটা কি শুধু একটা যন্ত্র? নাকি এক মায়াবী আয়না, যেখানে আমাদের...
23/08/2025

কখনও কি ভেবেছেন, আপনার হাতের মুঠোয় থাকা স্মার্টফোনটা আসলে কী?

ওটা কি শুধু একটা যন্ত্র? নাকি এক মায়াবী আয়না, যেখানে আমাদের সময়ের প্রতিচ্ছবি ভেসে ওঠে? বিপদ কিভাবে এসে আপনাকে তার কাছে টেনে নিয়ে যায়? আপনারই অজান্তে!

চলুন, আজ তাকাই সেই আয়নায়।
যেখানে বিনোদনের আলো ঝলমলে, আর তার আড়ালে লুকিয়ে আছে এক গভীর অন্ধকার।

কল্পনা করুন এক সাধারণ সন্ধ্যা। সারাদিনের ক্লান্তি শেষে ডুব দিলেন অনলাইন গেমের জগতে। কোনদিন খেলেননি আপনি, ভাবলেন চেষ্টা করি, মজার ছলে।

একটি ছোট বাজি, আপনি ভাবলেন একবার ট্রাই করেই দেখি! আর তার বিনিময়ে অপ্রত্যাশিত জয়।

মুহূর্তেই আনন্দের ঝলক! আপনার হঠাৎ করে মনে হবে এই ইউনিভার্স সম্পূর্ণভাবে যেন আপনার সঙ্গেই রয়েছে।

আপনি হয়তো জানেন না, কিন্তু সেই মুহূর্তে মস্তিষ্কে ছুটে যায় এক রাসায়নিক স্রোত, যার নাম ডোপামিন। এটাই বলে দেয়, “এই কাজটা আনন্দের, আবার করো।”

আধুনিক প্রযুক্তি এই আদিম সংকেতকেই তার সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র বানিয়ে ফেলেছে।

কিন্তু যখন ভাগ্য সঙ্গ ছাড়ে, তখনও মস্তিষ্ক প্রথম জয়ের সুখস্মৃতি আঁকড়ে ধরে। জন্ম নেয় এক মরিয়া আকাঙ্ক্ষা, হারানো টাকা ফেরত আনার।

এরপর আপনি আবার খেলেন, তারপর আবার, এবং ক্রমাগত আবার! আপনার মন বলে প্রতিবারই যেন আপনি জিতবেন। শুধু একটিবার জিতলেই সমস্ত লস আপনি ফিরিয়ে আনতে পারবেন।

এটি কোন যেমন তেমন কথা নয়, এর পেছনে রয়েছে গভীর বৈজ্ঞানিক যুক্তি, রয়েছে পড়াশোনা!

মনোবিজ্ঞানীরা একে বলেন Loss Chasing।
এ সময়ে যুক্তি নয়, আবেগই হয়ে ওঠে শাসক।

আরেকটা বিভ্রম যোগ হয়, Gambler’s Fallacy।
মনে হয়, “অনেক হার হলো, এবার ভাগ্য ফিরবেই।”

কিন্তু সত্য হলো, ভাগ্যের কোনো স্মৃতি নেই।
প্রতিবারই সম্ভাবনা একই: ক্ষুদ্র আর প্রায় অসম্ভব।

ভয়াবহ বাস্তবতা কি জানেন?

ভারতে অনলাইন গেমিং এখন ৩০ হাজার কোটি টাকার সাম্রাজ্য। এর দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রায় ৪৫ কোটির বেশি মানুষ। সম্মিলিতভাবে হারানো অর্থ ২০,০০০ কোটি টাকার বেশি।

এগুলো কেবল সংখ্যা নয়। এগুলো হলো লক্ষ লক্ষ ভাঙা স্বপ্ন, ঋণের বোঝা, আর নীরব কান্নার খতিয়ান।

কর্ণাটকে ৩২ জন, তামিলনাড়ুতে ১৭ জন তাদের জীবন শে*ষ করে দিয়েছেন এই নেশার ফাঁদে সর্বস্ব হারিয়ে। ডিজিটাল বিষ কতটা গভীরে পৌঁছেছে, তার প্রমাণ এটি।

শুধু বিজ্ঞাপনের পেছনেই খরচ হয়েছে বছরে হাজার হাজার কোটি টাকা।

বিজ্ঞাপনের মুখ? প্রিয় ক্রিকেটার, সিনেমার নায়ক এবং ইনফ্লুয়েন্সাররা। যারা সমাজকে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করতে পারে।

তাঁরা স্বপ্ন দেখিয়েছেন, “তুমি হতে পারো কোটিপতি।”

কিন্তু সত্য হলো, ওদের জন্য এটা কয়েকশো কোটি টাকার চুক্তি, আর আপনার জন্য সর্বস্ব হারানোর ঝুঁকি। সবচেয়ে হাস্যকর বিষয় তারা কিন্তু কখনোই এইরকম গেম একটিবারের জন্য খেলে দেখবেন না।

এই সংকট যখন সমাজকে ক্ষয়ে দিচ্ছিল, তখনই এগিয়ে আসে রাষ্ট্র। জন্ম নেয় এক যুগান্তকারী প্রস্তাবিত আইন, যা ডিজিটাল জুয়ার শিকড় উপড়ে ফেলতে চলেছে। এটাই আশা করা যাচ্ছে অন্তত এখনো। কি এই আইন?

The Promotion and Regulation of Online Gaming Bill, 2025

এ আইন গেমিং আর গ্যাম্বলিংয়ের মধ্যে টানবে স্পষ্ট সীমারেখা। খেলোয়াড়কে দেখা হবে অপরাধী নয়, বরং ভুক্তভোগী হিসেবে। শাস্তি নামবে সেই সংস্থাগুলোর ওপর, যারা মানুষের মস্তিষ্ক নিয়ে ব্যবসা করেছে।

তবে সরকার শুধু দরজা বন্ধ করছে না, খুলছে নতুন সম্ভাবনার দরজা, ই-স্পোর্টস এর দুয়ার।

যেমন দাবা বা ক্রিকেট, তেমনই ই-স্পোর্টসকে দেওয়া হবে বৈধ ক্রীড়ার মর্যাদা। ফলে প্রতিভাবান গেমাররা ‘জুয়াড়ি’র তকমা ঝেড়ে ‘ই-অ্যাথলিট’ হিসেবে আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেশের নাম উজ্জ্বল করতে পারবেন।

শেষ প্রশ্ন আপনার কাছে,

প্রযুক্তি একদিকে সম্ভাবনা, অন্যদিকে ধ্বংস।
বিনোদন একদিকে আনন্দ, অন্যদিকে আসক্তি।

এই পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রের পদক্ষেপ কি যথেষ্ট?
নাকি আসল যুদ্ধটা সমাজের মানসিকতা পরিবর্তনের, যা কেবল আইন দিয়ে জেতা যায় না? এই বিষয়ে আপনার মতামত কী?

আইন কেবল এক দরজা বন্ধ করতে পারে। আসল লড়াই চলছে আমাদের মনের অন্ধকারে, যেখানে প্রযুক্তির নীল আলো আকর্ষণ ছড়িয়ে দেয় এবং স্বাধীন চিন্তার দীপ্তি ঝলসিয়ে ওঠে। প্রতিটি বাজি, প্রতিটি স্ক্রিন, প্রতিটি মুহূর্ত, সবই আমাদের পরীক্ষা।

আর এই পরীক্ষা চলতেই থাকবে, যতক্ষণ না আমরা নিজেদের ভিতরের লোভ, ভয়, লালসা চেনে, এবং নিজের হাতে নিয়ন্ত্রণ নেব।

এটি এত সহজে শেষ হবে না। নয়, কারণ এই লড়াই চলছেই, প্রতিটি মুহূর্তে, প্রতিটি চোখের ঝলকে, প্রতিটি হৃদয়ের স্পন্দনে। আর যারা সাহস করে নিজের ভিতরের অন্ধকারের মুখোমুখি দাঁড়াবে, তারা দেখবে, নতুন ভোরের আলো ধীরে ধীরে জ্বলে ওঠে, আকাশের নীল আভায় নয়, বরং নিজের সাহস আর সচেতনতার আলোয় আলোকিত হবে তাদের জীবন। লিখে রাখুন।।

19/08/2025

সেই একাদশ শ্রেণির গল্প কবিতা এবং নাটক, মনে পড়ে?

এইতো কিছুদিন আগে আমরা এগুলো পড়েছিলাম, আর এখন এতগুলো বছর পেরিয়ে গিয়েছে! কি সুন্দর সমস্ত কিছু ছিল তাই না? মন দিয়ে শুনুন, আমরা টাইম ট্রাভেল করতে চলেছি সেই সময়ে!

এইগুলোর মধ্যে আপনার সবচেয়ে প্রিয় কোনটি ছিল? ❤️✨

08/08/2025

সেই ক্লাস ইলেভেন টুয়েলভ এর ইংরেজি বই এর গল্প কবিতাগুলি ❤️ মনে আছে রে?

কোনটি সবচেয়ে প্রিয় ছিল জানাও

মাত্র ৩৫ রান বাকি ছিল ইংল্যান্ডেরঠিকই শুনছেন, পঁইত্রিশ মাত্র!ভারতের প্রয়োজন তখন ও চারখানা উইকেট।পাল্লা কার ভারী লাগছে আ...
04/08/2025

মাত্র ৩৫ রান বাকি ছিল ইংল্যান্ডের

ঠিকই শুনছেন, পঁইত্রিশ মাত্র!
ভারতের প্রয়োজন তখন ও চারখানা উইকেট।

পাল্লা কার ভারী লাগছে আপনার?

নব্বই শতাংশ মানুষ তখনই বলে দিয়েছে, ইংল্যান্ড এই ম্যাচ গিলে খাবে। প্রথম কুড়ি মিনিটেই এই রান অনায়াসে উঠে আসবে ইংল্যান্ডের খাতায়।

তাদের হাতে ‘বাজবল’,
তাদের ব্যাটে আগুন,
তাদের চোখে আত্মবিশ্বাস।

আর ভারতের?

শুধু একটা জিনিস... আবেগ।

ঠিক এক্সাক্টলি, এই আবেগ দিয়েই শুরু হলো ইতিহাসের নতুন লেখা।

একটা স্পেল, একটা মোচড়, একটা চিৎকার,
আর সেই আবেগে গড়ে উঠল এক মহাকাব্য।

লন্ডনের ওভাল ময়দান, ইংল্যান্ড বনাম ভারত, পঞ্চম এবং শেষ টেস্ট।

ম্যাচের বল পড়ার আগেই লড়াই শুরু।
ভারতের কোচ গৌতম গম্ভীর দাঁড়িয়ে, পিচের দিকে চেয়ে আছেন, চোখে আগুন।

পিচের সবুজ ঘাস আর শুকনো ফাটল দেখে পিচ কিউরেটরের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ।

বোঝা যাচ্ছিল, এটা ক্রিকেটের মাঠ নয়, এটা যুদ্ধের ময়দান।
ভারত এখানে এক ইঞ্চিও জমি ছাড়তে আসেনি।

শুরু হলো সেই মুহূর্ত, পাঁচ ম্যাচের লম্বা টেস্ট সিরিজের শেষ ম্যাচের প্রথম দিন।

ভারত ব্যাট করতে নামল।
সেই গ্রিন টপে, যেখানে পিচ এবং মাঠ আলাদা করা যাচ্ছে না! যেন সাংঘাতিক ব্যাপার!

ইংল্যান্ডের পেসারদের আঘাতে ভারতের টপ অর্ডার একের পর এক ভেঙে পড়ল, মাঠ যেন তাসের ঘর।

কিন্তু সেই ধ্বংসস্তূপের মধ্যে এক প্রহরীর মতো দাঁড়িয়ে রইলেন করুণ নায়ার। একটা লড়াকু অর্ধশতরান। একটা শেষ ফাইট ব্যাক! যে ইনিংস ভারতকে পৌঁছে দিল ২২৪ রানে।

এইবার ইংল্যান্ড ব্যাট করতে নামল আর শুরুতেই ঝড় ওপেনাররা যেন আগুন ঝরাচ্ছে। তাদের সো কলড বাজবল যেন শুরু হয়ে গিয়েছে!

দর্শকদের মনে প্রশ্ন, ‘এবার বুঝি শেষ!’

কিন্তু না। সিরাজ আর প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা তখনও বাকি ছিলেন।
দুজন মিলে ফিরিয়ে দিলেন ইংলিশ বাহিনীকে।
ম্যাচে ফিরল ভারত। এক অসামান্য শুরু থেকে ইংল্যান্ড কল্যাপস হয়ে গেল মাত্র ২৪৭ রানে।

এইবার ব্যাট করতে নামল ভারতের ভবিষ্যৎ, যশস্বী জয়সওয়াল। একটা কবিতার মতো শতরান। তাঁর সঙ্গে যুক্ত হলেন নাইট ওয়াচম্যান আকাশ দীপ, জাদেজা, আর ওয়াশিংটন সুন্দরের অর্ধশতরান।

ভারত দাঁড় করিয়ে দিল ৩৯৬ রানের পাহাড়। ইংল্যান্ডের লক্ষ্য ৩৭৪ রান, এটি করে দিতে পারলেই সিরিজ তাদের!

উত্তরে ইংল্যান্ড?
তারা তো আগেই বলে রেখেছে, ‘আমরা ভয় পাই না।’
রুট ও হ্যারি ব্রুক, এক ভয়ংকর জুটি।
তাদের প্রতিটা শটে ভারতীয় হৃদয় কেঁপে উঠছে।
ম্যাচ ভারতের হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে।

এমন সময় আরেক অঘটন, প্রসিদ্ধ কৃষ্ণার বলে ব্রুকের শটে বল আকাশে উঠে গেল, বাউন্ডারি লাইনে দাঁড়িয়ে সিরাজ, সবাই নিশ্চিত ক্লিন ক্যাচ হবে, সিরাজ টের পেলেন না তার পা ঠেকে গিয়েছে বাউন্ডারি রোপে, আম্পায়ার দু হাত তুলে জানালেন ছক্কা এটি!

শুধু সিরাজ নয়, গোটা ভারতীয় ক্রিকেটার ও ফ্যানদের মুখে হতাশার ছবি! ব্রুক এর এই ক্যাচটি কতটা দামী হতে পারে? হলো ও তাই, ১০০ রানের জোরালো ইনিংস খেলে দিলেন হ্যারি ব্রুক, যেন ভারতের সব আশা শেষ!

ঠিক সেই সময়, সেই গল্প ঘোরানো মোড়!
আকাশ দীপ এলেন।
এক ডেলিভারি, আর বিদায় নিলেন হ্যারি ব্রুক, ক্যাচ সেই সিরাজের হাতেই, কিন্তু তখনও প্রশ্ন বড্ড কি দেরি হয়ে গেল?

ম্যাচে প্রাণ ফিরল।
প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা আর সিরাজ তখন একেকটা আগুনের গোলা ছুঁড়ে দিচ্ছেন। ধীরে ধীরে সাথে সাথে আরও উইকেট পড়তে থাকলো, যেন অদ্ভুত টার্ন নিল সেই ম্যাচ, দর্শকের উল্লাস ফেটে পড়ার মতো।

কিন্তু ওই যে বলে না সবকিছু যখন আপনার পক্ষে যায়, তার পরবর্তী মুহূর্তেই এমন কিছু অপেক্ষা করে যা পুরোটাই আনএক্সপেক্টেড। কালো করে এলো আকাশ, যেন ইংল্যান্ডের শিবিরের প্রতি ছবি এটি, নামল ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি। আম্পায়ার জানালেন আজকের দিনের জন্য খেলা সমাপ্ত। খেলা হবে আগামীকাল।

চতুর্থ দিনের শেষে, ইংল্যান্ডের দরকার মাত্র ৩৫ রান, হাতে ৪ উইকেট। পুরো থ্রিলার!

পঞ্চম দিন, গোটা এত লম্বা টেস্ট সিরিজের শেষ দিন, শুরু হলো ইংল্যান্ডের পক্ষ থেকে, গতকাল পিচ যেখানে ভেঙে গিয়েছিল, সকালবেলা দেখা যায় সেই পিচ কিউরেটর ভারী রোলার চালিয়ে পিচ সপাট করছেন। ফলে ইংল্যান্ডের ব্যাটিং আরো সুবিধাজনক মনে হবে এটি আশা করাই যাচ্ছিল।

পঞ্চম দিনের শুরু।
প্রথম দুটো বলেই আক্রমণাত্মক আবার ইংল্যান্ড!
জেমি ওভারটন দুটো বাউন্ডারি এমন ভাবে মেরে ম্যাচটা শুরু করলেন যেন তারা বলে দিলেন আর দশ মিনিট লাগবে খেলাটা শেষ হতে। ‘খেলা বুঝি শেষ!’

তখনই এলেন সিরাজ, কি লাইন কি লেন্থ!
প্রথমে ফিরিয়ে দিলেন স্মিথকে। কট বিহাইন্ড।

তারপর সেই জাদুকরী মুহূর্ত, ওভারটনের বিরুদ্ধে ডিআরএস! বড় স্ক্রিনে ভেসে উঠল, আউট! যেন শেষ কাঁটা তুলে নেওয়া হল!

প্রসিদ্ধ তুললেন নবম উইকেট। ক্লিন বোল্ড করে দিলেন টাং কে। ভারতীয় গ্যালারি উচ্ছসিত, সাহেবরা নিঃশব্দ।

ঠিক তখনই মাঠে নামলেন এক আহত যোদ্ধা, ক্রিস ওক্স।
হাত বাঁধা, চোখে যন্ত্রণা। মাঠে নামলেন দেশের জন্য।

মনে পড়ে গেল, ঋষভ পন্থও জাস্ট আগের টেস্ট ম্যাচ ভাঙা পা নিয়ে নেমেছিলেন। তখন ইংল্যান্ড দাঁড়িয়ে সম্মান জানিয়েছিল।

আজ ভারত দাঁড়িয়ে সম্মান জানাল ওক্সকে। হাততালির আওয়াজে আর কিছু শোনা যাচ্ছিল না স্টেডিয়ামে।

এই এক মুহূর্তে দল, দেশ, প্রতিপক্ষ, সব মিলিয়ে এক হয়ে গেল টেস্ট ক্রিকেটের আত্মা।

তারপর শেষ টুইস্ট ইন দ্যা টেল।

গাস অ্যাটকিনশন মারলেন একটা বড় ছক্কা! এইবার হৃদপিন্ডের গতিবেগ যেন কাউন্ট করা আর যাচ্ছিল না, প্রতি মুহূর্তে ভয় কি হবে এবার!

ইংল্যান্ডের জিততে দরকার মাত্র সাত রান, আর একটা ছয় যদি মেরে দেয় তাহলে ম্যাচ ড্র, ভারত আর সিরিজকে ড্র করতে পারবেনা, ইংল্যান্ডের সিরিজ নিশ্চিত হবে।

তারপর, ঠিকই ধরেছেন! মিয়া ম্যাজিক!
শেষ স্ট্রাইক।
সিরাজ দৌড় শুরু করলেন।
এক নিখুঁত ডেলিভারিতে গাস অ্যাটকিনসনের স্টাম্প ছিটকে গেল। অদ্ভুত এক ডিপিং ডেলিভারি।

ভারত জিতল মাত্র ৬ রানে! সিরিজ ২-২!

চারপাশে উল্লাস, চিৎকার, চোখের জল।
গম্ভীরের আগুন, যশস্বীর শিল্প, সিরাজের গর্জন, ওক্সের হেঁটে আসা...

এই সবকিছু মিলেই টেস্ট ক্রিকেট এক অসামান্য দৃশ্যে পরিণত হলো।

শেষ হল পাঁচ ম্যাচের এক অসাধারণ সিরিজ, কত কিছুই না শেখালো আমাদের এই সিরিজ! আমরা কেউ স্টুডেন্ট, কেউ কর্মজীবনে ব্যস্ত এমপ্লয়ি, সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ আমরা বিভিন্ন জায়গায় প্রত্যেকদিন ক্রমাগত লড়াই করে চলেছি,

একবার বলুন তো যদি আপনি সত্যিকারের মনের থেকে ক্রিকেট ভক্ত হন, তাহলে এই সিরিজ যে কতটা উপলব্ধ করেছেন আপনি আমি নিশ্চিত যে আপনি ভাষায় ব্যক্ত করতে পারবেন না!

নতুন ইন্ডিয়ান টিম এত ভালো প্রদর্শন করবে পুরোটাই আনএক্সপেক্টেড ছিল যেন সবার কাছে! শুধু তারা প্রদর্শন করল না, আমাদেরকে এক অসাধারণ শিক্ষাও দিয়ে গেল! হার না মানার শিক্ষা, লড়াই করার শিক্ষা! জেতার খিদে রাখার শিক্ষা।

কারণ, টেস্ট ক্রিকেট আমাদের শেখায়, জীবন কখনোই একটা টি-টোয়েন্টি নয়। এখানে সব কিছু তাত্ক্ষণিক হয় না। এখানে ধৈর্য লাগে, লড়াই লাগে, বারবার ব্যর্থ হয়েও আবার দাঁড়িয়ে পড়ার মানসিকতা লাগে। একটা ক্যাচ, একটা স্পেল, একটা ইনিংস বদলে দিতে পারে পাঁচদিনের গল্প। এই খেলাটা ঠিক যেন জীবনেরই প্রতিচ্ছবি।

আর ঠিক এই কারণেই টেস্ট ক্রিকেটকে ভালোবাসতে হয়। কারণ এটা শুধু স্কোরবোর্ডের খেলা নয়, এটা হৃদয়ের খেলা। এখানে ব্যথা লুকিয়ে চোখে জল নিয়েও কেউ বল করে যায়, কেউ ব্যাট তুলে নেয় শুধু দেশের নামে। যেখানে ‘নায়ক’ শুধু রান করা কেউ নয়, নায়ক সেই, যে এক ইঞ্চি জমিও ছেড়ে না দিয়ে লড়াই চালিয়ে যায়। এটাই টেস্ট। এটাই ক্রিকেট। এটাই ভালোবাসা।

এরকম জিনিস আমাদের কোন বইও শেখাতে পারে না। যেভাবে ক্রিকেট আমাদের শেখায়, টেস্ট ক্রিকেট শেখায়।

এই খেলাকে ভালো না বেসে থাকা যায় এখনো? আপনিই বলুন তো!

এই জন্যই তো বলি বারবার,
টেস্ট ক্রিকেট, ইউ বিউটি ❤️✨

03/08/2025

নিশির ডাক, শুনেছেন কখনো? Nishir Daak
গভীর রাতে কোন পরিচিত গলা শুনেছেন? কখনো মনে হয়েছে হঠাৎ করে যেন আপনাকে কেউ ডাকলো? কিন্তু সে তো থাকার কথা নয় সেখানে! নিশির ডাক!

তিন বছরের শিশুর জন্য স্কুল ফি আড়াই লক্ষ টাকা?একটা তিন বছরের শিশুর জন্য ঠিক কতটা খরচ হতে পারে?না না, খেলনা বা চকোলেট নয়।...
02/08/2025

তিন বছরের শিশুর জন্য স্কুল ফি আড়াই লক্ষ টাকা?

একটা তিন বছরের শিশুর জন্য ঠিক কতটা খরচ হতে পারে?

না না, খেলনা বা চকোলেট নয়।
ভ্রমণ বা জন্মদিনের পার্টিও নয়।

শুধু একটা সাধারণ স্কুলে ভর্তি হওয়ার খরচ বলছি। সেখানে সে অ,আ,ক,খ শিখবে, রং করতে শিখবে, গল্প শুনবে, কথা বলতে শিখবে!

ভাবছেন হয়তো, খুব বেশি হলে কয়েক হাজার?
হয়তো কিছু ইউনিফর্ম, একটা ব্যাগ, বইখাতা মিলিয়ে মোটামুটি ম্যানেজেবল কিছু?

তাহলে একটু থামুন।

কারণ, এই দেশের এক নামী স্কুলে,
আপনাকে গুনতে হতে পারে দুই লক্ষ একান্ন হাজার টাকা, শুধু একটা শিশু ক্লাসে পা রাখবে বলে!

এই গল্পটা কোনও কল্পকথা নয়

হায়দ্রাবাদের অন্যতম নামকরা স্কুল!

এই স্কুলে Nursery ক্লাসে ভর্তির জন্য ২,৫১,০০০ টাকা খরচ ধরা হয়েছে বার্ষিক।

শুধু পড়াশোনার জন্য নয়,
তার সঙ্গে রয়েছে admission fee, refundable deposit,
বই,খাতা, মিড ডে মিল, ইউনিফর্ম, এবং একটি অদ্ভুত ফি, Initiation Fee, যার মূল্য ৪৫,০০০ টাকা।

এই ফি কোন সূচনার?
শৈশবের? না কি ঋণের?

মাসে ধরলে দাঁড়ায় প্রায় ₹২১,০০০ টাকা।
একজন তিন বছরের শিশুর মাসিক শিক্ষাখরচ!
একজন সাধারণ মানুষের প্রায় মাসের উপার্জনের সমান।

একসময় আমাদের মা-বাবা হয়তো সরকারি স্কুলেই পড়েছেন। তাঁদের সময় সরকারি বিদ্যালয়ই ছিল গর্বের প্রতীক।

আজ সেই স্কুলের ভবন জীর্ণ, টয়লেট ব্যবস্থাও প্রশ্নবিদ্ধ।
বই আছে, কিন্তু পড়ানোর ইচ্ছা নেই। শিক্ষক আছে, কিন্তু দায়িত্ববোধ নেই। দেখুন ব্যতিক্রম অবশ্যই রয়েছে, কিছু সরকারি বিদ্যালয়ে রয়েছে যারা অসাধারণ কাজ করছেন, কিন্তু তার সংখ্যা অতিরিক্তই কম এটি আশা করি আপনি ভাল মতই মানেন!

তার চেয়ে প্রাইভেট ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে শিশু ভর্তি করালে
অভিভাবকদের মনে হয় সন্তান আধুনিক পরিবেশে মানুষ হবে। একেবারে চিন্তামুক্ত হয়ে যাবে তারা।

কিন্তু সেটা কি সত্যিই আধুনিকতা?
না কি একটা ব্যয়বহুল মোহ?

এখানেই শুরু হয় বিভাজন।
একদিকে ঝকঝকে ইংরেজি স্কুল, আরেকদিকে ধুলো ধরা সরকারি বেঞ্চ। এই ব্যবধান শুধু পোশাকে নয়, ভবিষ্যৎ দৃষ্টিভঙ্গিতেও জন্ম দেয় ফাটল।

কাহিনী এখানেই শেষ নয়!

Nursery তে ভর্তি করিয়ে আপনি যদি ভাবেন, এবার অন্তত কয়েক বছর নিশ্চিন্ত, তাহলে ভুল করছেন।

এই স্কুলেই পরবর্তী ক্লাসে উঠতে গেলেও নতুন করে Admission Fee নেওয়া হবে।

অর্থাৎ, প্রতিটি ক্লাসে নতুন সূচনা, নতুন হিসেব, নতুন ইনভয়েস। শুধু পড়াশোনার নামে একটার পর একটা দামি লেভেল আনলক করার মতো যেন একটা অবাধ্য পেইড গেম যেন হয়ে উঠছে শৈশব!

আরও বড় হলে আরও ভয়াবহ দাম

এই একই স্কুলে পরবর্তী ক্লাসে খরচ বাড়তেই থাকবে।

Nursery ক্লাসে ২.৫১ লাখ টাকা,
PPI & PPII ক্লাসে গিয়ে দাঁড়াবে ২.৭২ লাখে,
I & II ক্লাসে পৌঁছলেই সেটা ২.৯১ লাখ,
আর মাত্র III থেকে V ক্লাসে গেলেই খরচ দাঁড়ায় ₹৩,২২,৩৫০!

মানে, বয়স বাড়বে মানেই আরও নতুন ফি, আরও নতুন বোঝা। আর সন্তান যত ‘বড়’ হবে,
অভিভাবকের কাঁধে চাপবে আরও ‘ভারী’ খরচের ব্যাগ।

এই ব্যাগে বইয়ের চেয়ে ইনভয়েস বেশি।

প্রশ্নটা এখানেই, শিক্ষা কি এখন বিক্রি হচ্ছে?

একটা সময় ছিল, যখন বাবা-মা বলতেন,
"আমার ছেলে-মেয়ে যেন মানুষ হয়, পড়াশোনা করে, বড় হয়।"

আজ তার অর্থ দাঁড়িয়েছে,
"আমার ছেলে-মেয়ে যেন এমন একটা স্কুলে পড়ে, যার নাম শুনে লোক মুখে তাকায়।"

তবে সেই নাম কেনার খরচটা অনেকের সাধ্যের বাইরে।

সরকারি স্কুলে ভরসা নেই,
প্রাইভেট স্কুলে ভর্তির খরচে পকেট ফাঁকা।

এই দুইয়ের মাঝখানে আটকে আছে লক্ষ লক্ষ পরিবার,
যারা সন্তানকে মানুষ করতে চান, কিন্তু সমাজ যেন বলছে,
”সাধ্য নেই, সরে যান।”

তাহলে কী দাঁড়াল?

শিক্ষা এখন টাকা হয়ে গেছে। আর টাকাই এখন শিক্ষা।
যার যত টাকা, সে তত শিক্ষিত হয়ে ওঠার সুযোগ পাচ্ছে।

এবং যার টাকার অভাব,
তার শৈশবের ‘অভাব’
শুধু পুষ্টি বা জামাকাপড় নয়,
শিক্ষার অভাব দিয়েও চিহ্নিত হচ্ছে।

এই ব্যবধান ক্রমশ গা-সওয়া হয়ে যাচ্ছে।
বিস্ময়ের বদলে এখন আমরা অভ্যস্ত হয়ে পড়ছি।

এই লেখাটা কোনও শিক্ষাবিদ বা অর্থনীতিবিদের লেখা নয়।
আমি ঠিক আপনার মতোই একজন সাধারণ নাগরিক।
শুধু এতো টুকু চাওয়া,
আমরা যেন এমন একটা সমাজ গড়ি,
যেখানে শৈশবের দাম টাকায় হয় না।

যেখানে প্রতিটা শিশু,
ধনী, দরিদ্র, শহুরে, গ্রাম্য,
সমান অধিকার নিয়ে স্কুলে যেতে পারে।

আর যেখানে Initiation Fee নয়,
Initiative থাকবে সরকার, সমাজ, এবং আমাদের মধ্যে।

ভাবুন একবার,
আপনার সন্তানের শৈশব আপনি টাকা দিয়ে কিনবেন,
নাকি একটি সম্মানজনক ভবিষ্যৎ গড়ে তুলবেন,
যেটার মূলে থাকবে সুযোগ, ভালোবাসা আর শিক্ষার আসল মানে?

বর্তমানে চারিপাশের অবস্থা দেখলে তো বুঝতেই পারছেন শিক্ষা সম্পূর্ণভাবে সার্কাস হয়ে গিয়েছে, কিন্তু এবার যেন তা আরো এক বৃহৎ রূপ ধারণ করতে চলেছে, এবং ভবিষ্যতে যা হতে চলেছে হয়তো আমি আপনি এখন কল্পনাই করতে পারছি না, যেন এটি একটি হালকা আভাস, পরিণতি হতে চলেছে ভয়ংকরতম!

ইস, যদি আরেকবার চান্স পেতাম তাহলে সব ঠিক হয়ে যেত! এই কথাটা মাথায় ঘোরে বারবার আপনার?একটা না বলা কথা, একটা ফিরে না চাওয়া...
31/07/2025

ইস, যদি আরেকবার চান্স পেতাম তাহলে সব ঠিক হয়ে যেত! এই কথাটা মাথায় ঘোরে বারবার আপনার?

একটা না বলা কথা, একটা ফিরে না চাওয়া মানুষ,
একটা রাস্তায় আপনার না যাওয়া পা,
যার ভেতরে কি এক অদ্ভুত প্রশ্ন রয়ে যায়,
"আমার জীবনটা কি অন্যরকমও হতে পারত না?"

আমাদের প্রত্যেকের ভেতরেই যেন এক অসমাপ্ত গল্পের রেশ থেকে যায়। সেই না হওয়া জীবনটার একটি আবছা প্রতিচ্ছবি প্রায়ই চিন্তায় হানা দেয়,

কখনো ভোরের আলোয়, কখনো গভীর রাতের নিঃসঙ্গতায়।
আমরা তাকে ‘আফসোস’ বলি, কিন্তু সে হয়তো আমাদেরই অস্তিত্বের এক হারানো প্রতিধ্বনি,
যা অন্য কোথাও বেজে চলেছে।

ধরুন, এক সন্ধ্যায় আপনি এক বন্ধুর আমন্ত্রণ ফিরিয়ে দিলেন।

আর ঠিক সেই সন্ধ্যায়, অন্য এক পৃথিবীতে,
একজন “আপনি” সেই আমন্ত্রণ গ্রহণ করলেন,
সেই বন্ধুত্ব থেকে নতুন গল্প, হয়তো ভালোবাসা, হয়তো ভিন্ন জীবন শুরু হলো তার।

ভাবছেন, গল্পের মতো শোনাচ্ছে?

না। এটা গল্প নয়। এটা বিজ্ঞান।

বিজ্ঞানের সবচেয়ে রহস্যময় থিওরি এটি, The Many-Worlds Theory!

ভাবুন তো, একটি কণার কথা, একটি কোয়ান্টাম কণা।
সে যখন কোনো পথের মোড়ে দাঁড়ায়, তার সামনে থাকে অগণিত সম্ভাবনা।

আমাদের চেনা জগৎ বলে, একটি পথ বেছে নিতে হবে।
কিন্তু এই তত্ত্ব বলে, সে একসাথে সব পথেই যাত্রা করে।
প্রতিটি সম্ভাবনার জন্য জন্ম নেয় একটি নতুন জগৎ।

জীবন যেন এক প্রবহমান নদী,
কোনো সিদ্ধান্তের মুখে এসে সেই নদী ভাগ হয়ে যায় দুই স্রোতে। আপনি একটি স্রোতের যাত্রী হন, কিন্তু অন্য স্রোতটিও বয়ে চলে, নিজস্ব গন্তব্যের দিকে, নিজস্ব ছন্দে।

এই তত্ত্বের নাম হল Many-Worlds Interpretation, ১৯৫৭ সালে তরুণ বিজ্ঞানী Hugh Everett বললেন, “প্রতিটি সিদ্ধান্ত, প্রতিটি সম্ভাবনা নিজস্ব একটি মহাবিশ্ব তৈরি করে নেয়।”

একটা দরজা আপনি খুললেন, আরেকটা আপনি খুললেন না, তবুও দুটোই ঘটল, শুধু আলাদা জগতে, আলাদা “আপনি”-কে নিয়ে।

এই তত্ত্ব আপনার জীবনকে নতুন চোখে দেখতে শেখায়।

আপনি যা হতে চেয়েছিলেন, সেই শিল্পী, সেই প্রেমিক, সেই সাহসী পথিক, সে হারিয়ে যায়নি।

সে আছে। শুধু আরেকটা রিয়্যালিটিতে।
আরেকটা “আপনি”-এর জীবনে।

আপনার আজকের ব্যর্থতাটিই হয়তো অন্য ভুবনের আপনার কোনো সংস্করণের সাফল্যের প্রথম ধাপ। যে সিদ্ধান্ত আজ ভুল বলে মনে হচ্ছে, তা অন্য এক “আপনি”-র জন্য হতে পারে শ্রেষ্ঠ আশীর্বাদ।

এই মহাজাগতিক আয়নায়, কিছুই চূড়ান্তভাবে ভুল বা শুদ্ধ নয়, সবই কেবল ভিন্ন ভিন্ন গল্পের সূচনা।

আপনার কি কখনো অকারণে মন খারাপ হয়?
অথবা হঠাৎ একরাশ আনন্দ এসে ভরে দেয় হৃদয়?

কে জানে...
হয়তো অন্য কোনো জগতে,
অন্য “আপনি” কোনো তীব্র বেদনা কিংবা অনাবিল আনন্দের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন, আর তার ক্ষীণ অনুভূতির ঢেউ চেতনার সীমানা পেরিয়ে এসে আপনাকেও ছুঁয়ে যাচ্ছে।

বিজ্ঞানের এই অসীম জ্ঞানের মতে,
আপনি কোনো একক ব্যক্তি নন,
আপনি একটি চেতনাপুঞ্জ,
আপনারই অগণিত সংস্করণের সমষ্টি।
আপনি একা, অথচ আপনার ভেতরেই বাস করে এক বিশাল জনসমুদ্র।

একটা “আপনি” পাহাড়ের ধারে এক কাঠের ঘরে থাকেন,
আরেক “আপনি” এখনো শহরের কোলাহলে নিজেকে খুঁজে ফেরেন।

একজন সময়মতো ভালোবেসেছেন,
অন্যজন শুধু তাকিয়ে থেকেছেন, চুপ করে থেকেছেন।

কোন ইউনিভার্সে আপনি হয়তো সত্যিই একজন মহাকাশচারী, গুগলের সিইও, দেশের বেস্ট ক্রিকেটার ইত্যাদি।

আপনার জীবন আসলে একটি গ্রন্থ নয়, একটি লাইব্রেরি।

প্রতিটি সিদ্ধান্ত, প্রতিটি মুহূর্ত, প্রতিটি পৃষ্ঠা, নতুন এক গল্পের জন্ম দেয়।

এই লাইব্রেরির প্রতিটি বই একেক স্বাদের,
কোনোটা রোমাঞ্চকর অভিযানের, কোনোটা নিঃসঙ্গতার,
কোনোটা ভালোবাসার নীলচে রঙে রাঙানো।

আপনি এখন যে গল্পটি পড়ছেন, সেটি কেবল একটি সংস্করণ। আরও অগণিত ‘আপনি’ অন্য জীবন বেছে নিয়েছেন, অন্য আকাশে চাঁদ দেখছেন, অন্য কারও হাতে হাত রাখছেন।

এই তত্ত্ব আমাদের নিজেদের ক্ষমা করতে শেখায়। যে ভুলের জন্য আপনি নিজেকে দোষারোপ করে গেছেন এতদিন,
জেনে রাখুন, আপনারই অন্য একটি “আপনি” সেই ভুলটি করেননি। সে ভালো আছে। অথবা সে এমন কিছু হয়তো ভুল করেছে, আপনার জীবনে আপনি বিন্দুমাত্র টেরই পাচ্ছেন না।

আপনার অনুশোচনা লঘু হয়ে আসে,
কারণ সম্ভাবনা কখনোই মরে না,
সে শুধু অন্য কোনো পৃথিবীতে বাঁচে, অন্য ইউনিভার্সে আশা রাখে!

আমরা প্রত্যেকে এক চলমান মহাবিশ্ব, অথবা অগণিত ব্রহ্মাণ্ডের মাঝখানে ছোট্ট একটি সেই কণা!
যার প্রতিটি নিঃশ্বাস, প্রতিটি স্পন্দন,
নতুন কোনও সৃষ্টির অংশ।

আমরা একইসাথে ধ্রুবতারা এবং তার আলো।
একইসাথে প্রশ্ন এবং উত্তর।
একইসাথে আমি আলো এবং আমি আমার সমস্ত ছায়া।

#মাল্টিভার্স
#বিজ্ঞানরূপকথা

Address


Alerts

Be the first to know and let us send you an email when RudraX posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to RudraX:

  • Want your business to be the top-listed Media Company?

Share