20/06/2025
ভারতের মহারাষ্ট্রের ঔরঙ্গাবাদে এক গয়নার শোরুমে এসেছেন নেহাতই সাধারণ চেহারার এক বৃদ্ধ দম্পতি। স্ত্রীকে কিছু উপহার দেবেন বলে স্বামী সঙ্গে করে এনেছেন জীবনের তিলতিল করে জমানো পুঁজি।
ম্যানেজার সে খবর জানতে পেরে এগিয়ে এসে গল্প জুড়ে দেন তাঁদের সঙ্গে। হাসিঠাট্টার মাঝে কথা বলতে বলতে জেনে নেন তাঁদের জীবনের অনেক কথা।
এবার এল জিনিস কেনার পালা। হাতের ঝোলা ব্যাগ থেকে বেরোল একটা ৫০০ টাকার নোট। একে একে ১০, ২০ টাকার নোট। সবশেষে একটা ছোটখাট বোঁচকা, তাতে ভর্তি খুচরো পয়সা।
শোরুমের ম্যানেজার গোটা বিষয়টা বুঝতে পেরে তাঁদের একটি হার উপহার দেন। সঙ্গে একজোড়া কানের দুলও। এরপর বৃদ্ধের কাছে সরল আবদার জানান, নিজে হাতে স্ত্রীর হাতে সেটা তুলে দিতে হবে।
উপহার তো দিলেন ম্যানেজার, কিন্তু এত বড় দোকানে এসে কোনও টাকা না দিয়ে চলে যাবেন, এতে যেন সম্মানে বাঁধে বৃদ্ধের। সমাজের খেটে খাওয়া মানুষের কাছে আত্মসম্মানই যে অনেক বড়। প্রাণ যাক, সম্মান নিয়ে বাঁচাটাই বড় কথা।
তাই সবচেয়ে 'বড়' নোটটি তুলে দিতে চাচ্ছিলেন ম্যানেজারের হাতে। কিন্তু ম্যানেজারের উত্তর, 'আমাদের উপর আপনার আশীর্বাদের হাত থাকলেই হবে। পান্ডুরঙ্গ (কর্নাটক, মহারাষ্ট্রের পূজিত দেবতা) তো আছেনই, কিছুর অভাব হবে না কোনওদিন।' কিন্তু বৃদ্ধ নাছোড়বান্দা, টাকা তিনি দেবেনই। উপায় নেই বুঝে অবশেষে দুটো ১০ টাকার নোট নেন ম্যানেজার।
স্বামীর চোখে জল, ধুতির খুঁট দিয়ে মুছে ফেললেন। তা দেখে স্ত্রীও আটকাতে পারলেন না নিজেকে। এমন এক মূল্যবান উপহার পেয়ে বিশ্বাসই হচ্ছিলনা ওই দম্পতির। কিন্তু এই চোখের জল যে শুধু অবিশ্বাস্য মূল্যবান এই উপহারের জন্য নয়, জীবনের অন্যতম এই দিনটি তাঁদের মনের মণিকোঠায় সাজিয়ে রাখছেন এই বৃদ্ধ দম্পতি।
-kamal Barua