Wasim

Wasim create my daily life vlog video

07/06/2025

ঈদ মোবারক
"তাকাব্বাললাহু মিন্না ওয়া মিনকুম।"
সকলকে প্রিতি শুভেচ্ছা।

*****(ঐতিহাসিক বিদায় হজ্জের ভাষণ।)******বিদায় হজের ভাষণ ইতিহাসের এক অনন্য দলিল, যা মানবজাতির সর্বজনীন অধিকার, সাম্য, ন্...
06/06/2025

*****(ঐতিহাসিক বিদায় হজ্জের ভাষণ।)******

বিদায় হজের ভাষণ ইতিহাসের এক অনন্য দলিল, যা মানবজাতির সর্বজনীন অধিকার, সাম্য, ন্যায়বিচার এবং মানবিক মর্যাদার মূর্তপ্রতীক। প্রায় এক লাখ ১৪ হাজার সাহাবির উপস্থিতিতে এই ভাষণ দেন তিনি। এটি ছিল মহানবীর (স.) জীবনের শেষ হজ এবং তাঁর বিদায়ী ভাষণ। যা তিনি মসজিদে নামিরাতে ও জাবালে রহমতের ওপরে এবং পরদিন দশম জিলহজ ঈদ ও কোরবানির দিন মিনাতে প্রদান করেছিলেন। (সিরাতুন নবী (স.), ইবনে হিশাম (র.), খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা: ২৭৩-২৭৭)।

ভাষণের মূল বিষয়বস্তু
বিদায় হজের ভাষণে মহানবী (স.) কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর আলোকপাত করেন, যা আজও মানবাধিকার, সামাজিক ন্যায়বিচার, ইসলামের সুমহান আদর্শে অটল থাকার শিক্ষা এবং মানবিক মূল্যবোধের আদর্শ হিসেবে বিবেচিত হয়। বিভিন্ন হাদিস থেকে নবীজির বিদায় হজের ভাষণের গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনাগুলো এখানে তুলে ধরা হলো।

মানবিক সাম্য ও ভ্রাতৃত্ববোধ
নবীজি (স.) বলেন- হে মানুষ! তোমাদের প্রভু একজন। তোমাদের পিতা একজন। আরবের ওপর কোনো অনারবের এবং অনারবের ওপর কোনো আরবের শ্রেষ্ঠত্ব নেই। শ্বেতাঙ্গের ওপর কৃষ্ণাঙ্গের কোনো শ্রেষ্ঠত্ব নেই এবং কৃষ্ণাঙ্গের ওপর শ্বেতাঙ্গেরও নেই। শ্রেষ্ঠত্ব কেবল তাকওয়ার ভিত্তিতে।

ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার নির্দেশ
নবীজি (স.) বিদায় হজের ভাষণে নির্দেশ দেন, ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করা যাবে না। তিনি বলেন, পূর্ববর্তী জাতিগুলো ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ির কারণেই ধ্বংস হয়ে গেছে।

নারীর অধিকার
বিদায় হজের ভাষণে নারীর অধিকার সুরক্ষায় মহানবী (স.) বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, নারীদের সাথে সদাচরণ করতে এবং তাদের অধিকার রক্ষা করতে।

প্রাণ ও সম্পদের সুরক্ষা
মহানবী (স.) উল্লেখ করেন, মানুষের জান-মাল ও সম্মান অপরাধ ছাড়া হরণ করা যাবে না। তিনি বলেন, তোমাদের রক্ত, সম্পদ এবং সম্মান একে অপরের জন্য হারাম, যতদিন পর্যন্ত না আল্লাহর বিধান থাকে।

অধীনস্থদের প্রতি সদাচরণ
মহানবী (স.) অধীনস্থদের সাথে সদাচরণ করতে নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, তাদের প্রতি সদাচরণ করলে আল্লাহ তোমাদের প্রতি দয়া করবেন। আরও বলেন, তাদের ওপর অত্যাচার করো না। তোমরা যা খাবে তাদেরও তা-ই খাওয়াবে; যা পরবে তা-ই পরাবে। ভুলো না, তারাও তোমাদের মতো মানুষ।

ঋণ ও আমানত রক্ষা
তিনি (স.) ঋণ পরিশোধের ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা প্রদান করেন এবং আমানতের খেয়ানত না করতে নির্দেশ দেন।

সামাজিক সাম্য ও ন্যায়বিচার
নবীজি (স.) সামাজিক সাম্য প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান এবং বলেন, কেউই জন্মগতভাবে শ্রেষ্ঠ বা নিম্নমানের নয়; বরং তাকওয়া ও আল্লাহভীরুতাই মানুষের প্রকৃত মর্যাদা নির্ধারণ করে।

কোরআন-সুন্নাহ আঁকড়ে ধরার নির্দেশ
নবীজি বলেছেন, আমি তোমাদের মাঝে এমন এক জিনিস রেখে যাচ্ছি, যা দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরে থাকলে তোমরা পথভ্রষ্ট হবে না। তা হচ্ছে আল্লাহর কিতাব। ‘আমার সম্পর্কে তোমরা জিজ্ঞাসিত হলে তখন তোমরা কি বলবে?’ তারা বলল, ‘আমরা সাক্ষ্য দেব যে আপনি (আল্লাহর বাণী) পৌঁছিয়েছেন, আপনার হক আদায় করেছেন এবং সদুপদেশ দিয়েছেন।’ তারপর তিনি তর্জনী আকাশের দিকে তুলে লোকদের ইশারা করে বললেন, ‘ইয়া আল্লাহ! তুমি সাক্ষী থেকো।’ তিনি তিনবার এরূপ বলেন।

শিরক বিদআত, চুরি-ডাকাতি, জিনা থেকে পবিত্র থাকার নির্দেশনা
নবীজি বলেন, সাবধান! পৌত্তলিকতার পাপ যেন তোমাদের স্পর্শ না করে। শিরক করো না, চুরি কোরো না, মিথ্যা কথা বেলো না, জেনা-ব্যভিচার করো না। সর্বপ্রকার মলিনতা থেকে নিজেকে মুক্ত করে পবিত্রভাবে জীবনযাপন করো। চিরদিন সত্যাশ্রয়ী হয়ো। নবীজি বলেন, জাহিলী যুগের যত রসম রেওয়াজ, শোন, (আজ থেকে) সব আমার পায়ের নিচে পদদলিত।

সুদ নিষিদ্ধ
নবীজি বলেন, জাহিলিয়াতের সকল সুদ আজ বিলুপ্ত করা হল। সর্বপ্রথম আমি যে সুদ বিলুপ্ত করছি তা আমারই বংশের আববাস ইবনে আব্দুল মুত্তালিবের সুদ।

অহংকার করো না
নবীজি বলেন, যে ব্যক্তি নিজ বংশকে হেয় মনে করে অপর এক বংশের নামে আত্মপরিচয় দেয়, আল্লাহর অভিশাপ তার ওপর নেমে আসে।

স্বামীর অনুমতি ছাড়া তার সম্পদ কাউকে দেওয়া যাবে না
বিদায় হজের ভাষণে মহানবী (স.) উল্লেখ করেন যে, একজন স্ত্রী তার স্বামীর অনুমতি ছাড়া তার সম্পদ কাউকে দিতে পারবেন না। এটি পরিবারের মধ্যে অর্থনৈতিক নিরাপত্তা এবং পারস্পরিক সম্মানের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।

একজনের অপরাধের দায় অন্যজনের নয়
নবীজি (স.) বিদায় হজের ভাষণে স্পষ্টভাবে ঘোষণা করেন, কোনো অপরাধীর অপরাধের দায় তার পিতা বা সন্তান বহন করবে না। প্রত্যেকেই নিজ নিজ কর্মের জন্য দায়ী।

নেতার আনুগত্যের নির্দেশ
নবীজি (স.) বিদায় হজের ভাষণে মুসলমানদেরকে তাদের নেতার প্রতি আনুগত্য করার নির্দেশ দেন। এমনকি সেই নেতা যদি ক্রীতদাসও হন।

মুসলমানরা ভাই ভাই হয়ে থাকবে
বিদায় হজের ভাষণে মহানবী (স.) মুসলমানদের হিংসা-বিদ্বেষ থেকে মুক্ত থাকতে বলেন, আরও বলেন, মুসলমানরা পরস্পর ভাই ভাই। তোমরা একে অপরের প্রতি জুলুম করো না।

নবীজির এই বিদায়ী বর্তা সবার কাছে পৌঁছানোর নির্দেশনা
নবীজি বলেন, যারা উপস্থিত আছো, তারা অনুপস্থিত সব মুসলমানের কাছে আমার এই সব বাণী পৌঁছে দিয়ো। হয়তো অনেক অনুপস্থিত লোক উপস্থিত শ্রোতা অপেক্ষা অধিক হেফাজতকারী হবে।’

কোরআনের আয়াত নাজিল
ভাষণশেষে ভাবের আতিশয্যে নবী (স.) নীরব হন। জান্নাতি নূরে তাঁর চেহারা আলোকদীপ্ত হয়ে ওঠে। এই মুহূর্তে নাজিল হয়—‘আজকের এই দিনে তোমাদের দ্বিনকে পূর্ণ করে দিলাম। তোমাদের ওপর আমার নিয়ামত পূর্ণ করে দিলাম। ইসলামকেই তোমাদের ওপর দ্বীন হিসেবে মনোনীত করলাম।’ (সুরা মায়েদা: ৩)

বিশাল জনতা নীরব। কিছুক্ষণ পরে তিনি চোখ মেলে করুণ স্নেহমাখা দৃষ্টিতে সেই জনসমুদ্রের প্রতি তাকিয়ে বললেন, ‘বিদায়!’ একটা অজানা বিয়োগ-বেদনা সবার হৃদয়ে ছায়াপাত করল।

(আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ইবনে কাসির, খণ্ড: ৫, পৃষ্ঠা: ১৯৮ ও ৩২০-৩৪২)

বিদায় হজের ভাষণ মানবজাতির জন্য এক চিরন্তন আদর্শ। এতে যে সাম্য, ভ্রাতৃত্ব, মানবাধিকার এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের শিক্ষা দেওয়া হয়েছে, তা আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক। এটি শুধুমাত্র মুসলমানদের জন্য নয়, বরং সমগ্র মানবজাতির জন্য একটি মহান শিক্ষণীয় দলিল।

সংগৃহীত

31/05/2025

আলহামদুলিল্লাহ।


Address

Vill Nabadangal Po Mathpalsa Ps Sainthia Dist Birbhum
Sainthia
731234

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Wasim posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share