20/09/2025
👇🏻👇🏻👇🏻 আতঙ্কের নতুন নাম- 'ঘিলু খেকো অ্যামিবা'। করোনা পরবর্তী সময়ে, পশ্চিমবঙ্গেই এক কোষী অ্যামিবার এই সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছেন অনেকে। তাদের মধ্যে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আর যাঁরা বেঁচে ফিরেছেন, তাঁদেরই একজন হলেন, হুগলির শ্রীরামপুরের বাসিন্দা প্রবীর কর্মকার। বছর ৫৬-এর প্রবীর কর্মকার পেশায় একজন প্লাম্বার। জলের পাইপ লাইন বসানো, কল লাগানো, জলের ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করেই সংসার চলে! পরিবারের দাবি, ২০২৪-এর জানুয়ারি মাসের পর থেকে নানা অসুস্থতায় ঘরবন্দি তিনি।
কী কী উপসর্গ ছিল তাঁর? ঘনঘন অচৈতন্য হয়ে যাওয়া, জ্বর আসা এবং খিঁচুনি লেগেই থাকত। অনেক ডাক্তার দেখিয়েও কোনও লাভ হয়নি। বলা হয়েছে, গত ৮ এপ্রিল বাড়াবাড়ি হওয়ায় প্রথমে শিশুমঙ্গল হাসপাতাল, পরে সেখান থেকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয় তাঁকে।
চিকিৎসকদের সন্দেহ হওয়ায়, তাঁর সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড পাঠানো হয় পরীক্ষার জন্য। রিপোর্ট আসতেই দেখা যায়, প্রবীর কর্মকারের মস্তিষ্কে বাসা বেঁধেছে এক কোষী অ্যামিবা। তাঁর প্রেসক্রিপশনেও লেখা রয়েছে, অ্যাকান্থামিবা মেনিনগোএনসেফ্যালাইটিস। ৮ এপ্রিল থেকে ২৬ জুন পর্যন্ত ভর্তি ছিলেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। ২৭ জুন বাড়ি ফিরেছেন। কিন্তু এখনও ভাল করে হাঁটাচলা করতে পারেন না।
শ্রীরামপুরের বাসিন্দা প্রবীর কর্মকার বলেন, 'মাথায় পোকা বাসা বেধেছিল। প্লাম্বারের কাজ করি। নদী পুকুরে কখনও স্নান করিনি।' প্রবীর কর্মকারের বন্ধু বলেন, 'অজ্ঞন হয়ে যেত, জ্বর আসত। অনেক ডাক্তার দেখিয়েছি। কিছু হয়নি। সেখানে টেস্ট হল। ২ মা ওখানে রইল।'
অন্যদিকে, দেউলটির বাসিন্দা দীপঙ্কর ভৌমিক। পেশায় পোস্টাল এজেন্ট। তার পরিবারের দাবি, ২০২৪-এ ডিসেম্বর মাসে হঠাৎ জ্বর আসে। মাথার সামনের অংশে ব্যথা শুরু হয়। তারপর কানে অসহ্য যন্ত্রণা। স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করেও লাভ না হওয়ায় আনা হয় SSKM-এ। পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ায় কোমায় চলে যান তিনি। স্থানান্তরিত করা হয় CCU-তে। শেষে সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড পরীক্ষা করে দেখা যায়, মস্তিষ্কে বাসা বেঁধেছে নির্দিষ্ট প্রজাতির অ্যামিবা। প্রায় ৮ দিন কোমায় ছিলেন দীপঙ্কর ভৌমিক।
আক্রান্তের ছেলের বক্তব্য, 'ডাক্তার কী বলেছে, নোংরা জল থেকে হয়েছে। নাক বা চোখ দিয়ে মাথায় চলে গেছে। ১ মাস SSKMএ- ছিল'।
এদিকে সামনেই মহালয়া। হারিয়ে যাওয়া মানুষগুলোর কথা স্মরণ করে, শরতের সকালে বুক জলে দাঁড়িয়ে, সূর্যকে সাক্ষী রেখে তাঁদের উদ্দেশে করা হয় তর্পণ। এই পরিস্থিতিতে সতর্ক থাকতে বলছেন চিকিৎসকরা। সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, 'মহালয়া আসছে। পুকুরে নদীতে তর্পণ। সতর্ক থাকা জরুরি। চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে দ্রুত নিরাময় করা যায়।' সতর্ক কলকাতা পুরসভাও।
চিকিৎসকরা বলছেন সাবধানের মার নেই। তাই সতর্ক থাকুক সবাই।