
04/06/2025
সময়টা ৪:০০টা থেকে ৫:০০টা হবে। সবসময়ের মত আমি দৌড়ের অনুশীলন করতে বারহই । আমার গন্তব্য ছিল পোস্তগোলা থেকে রাজেন্দ্রপুর বাস স্ট্যান্ড আবার রাজেন্দ্রপুর বাস স্ট্যান্ড থেকে পোস্তগোলা। আমি রাজেন্দ্রপুর বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত গিয়েও ছিলাম ভালোভাবে। আসার সময় আমি দেখতে পাচ্ছি হাসনাবাদের বিল্ডিং গুলো ইকুরিয়া থাকা অবস্থায়,হঠাৎ করে কি হলো আমি জানিনা আমি নাকি অজ্ঞান ছিলাম ছোট ভাইরা বলল । আমাকে নাকি ট্রাক মেরে দিয়ে গেছে।
ইকুরিয়া হাইওয়ে থেকে এক অপরিচিত আন্টি আমাকে নিয়ে জুরাইনের আদ-দ্বীন হাসপাতালে নিয়ে আসে কিন্তু হাসপাতাল আমাকে এডমিট করেনি। আমাকে গেটের সামনে রেখে দেওয়া হয়েছিল মৃত লাশের মতো। সেই আন্টি আমার ফোন দিয়ে ছোট ভাই ও বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ করে।
ছোট ভাইদের কথা অনুযায়ী বুঝেছি প্রায় ৩ ঘন্টার মতো অজ্ঞান ছিলাম। আমার যখন হুশ আসে তখন আমি রিক্সাতে আমার পাশের ছোট ভাইয়ের বন্ধু ছোট ভাই রিস্তি ও আরিফ এবং সামনে তরিকুল ভাই। আমি তাদেরকে বলি পিজি হাসপাতালে নিতে। এরপর আবার অজ্ঞান হয়ে যাই। তারা আমাকে ন্যাশনাল হাসপাতালে নিয়ে যায়।
ন্যাশনাল হাসপাতালের গেটে গিয়ে আমার আবার জ্ঞান ফিরে আসে দেখি গেটের সামনে আমার বন্ধু রিফাত,সাদ,প্রান্ত,পলক,ছোট ভাই ইয়াসিন,আলামিন-ভাই ও আরমান ভাই। ৭-৮ জন মানুষের মত ছিল সবাইকে হাসপাতালের নিচে থাকতে বলা হয়। এই সারা সময় ছোট ভাই রিস্তি এবং আরিফ আমার সাথে ছিল ও আরমান ভাই আমাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেছে ও দৌড়াদৌড়ির কাজ উনি করছেন । যখন আমার চেহারা ও মাথার সেলাই হয় আরিফ আমার সাথে ছিল, রিস্তি রুমের বাহিরে অপেক্ষা করছিল ও আরমান ভাই গিয়েছিল সেলের কাজে যা যা লাগে তা আনতে । এরই মধ্যে আমার আম্মু চলে আসে এসে কান্নায় ভেঙে পড়ে । চেহারায় ৬টা সেলাই এবং মাথায় ১৩-১৪ টা সেলাইয়ের মত লাগছে ।
সেলাইয়ের কাজ শেষে ডাক্তারের কাছে যাই। বন্ধুরা ও আলামিন ভাই হাসপাতালের নিচে ছিল সবাই ডাক্তার রুমের বাইরে এসে অপেক্ষা করছিল। ডাক্তার ঔষধ লিখে দিল ও বিভিন্ন চেকআপ করতে বলল। এরপর চেকআপ করে বাসায় ফিরে আসলাম। আসার সময় সারা রাস্তায় আম্মু কানতেছিল এবং বলতেছিল হাইওয়ে ট্রাক এক্সিডেন্টে মানুষ বাঁচে না আল্লাহ তোকে বাঁচাইছে বাবা।
বাসায় সবাই দেখা করতে আসে যারা হাসপাতালে গিয়েছিল খবর পাওয়ার সাথে সাথে। আমরা সবাই কথা বলি সবাই আমাকে বলছে আমি অনেক শক্তিশালী ছিলাম
এই অবস্থাতেও । ধন্যবাদ সবাইকে আমারে এই খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসার জন্য। ❤️🩹 ছোট ভাই রিস্তি এবং আরিফ জীবনে অনেক বড় হও দোয়া রইল
যেই আন্টিটা আমাকে হাইওয়ে থেকে হাসপাতালে এনে সবার সাথে যোগাযোগ করেছে আল্লাহ তাকে ও তার পরিবারকে হেফাজতে রাখুক। তার সাথে কোন যোগাযোগের ব্যবস্থা নেই কিন্তু তাকে আমি মনে
রাখবো সারা জীবন ...........
আলহামদুলিল্লাহ বেঁচে আছি আল্লাহর রহমতে,
সবাই দোয়া করবেন আমার জন্য যাতে তাড়াতাড়ি সুস্থ হতে পারি এবং আয়রন হওয়ার প্রস্তুতি নিতে পারি।
তারিখ : ৩ জুন ২০২৫