Salankaraa

Salankaraa Salankaraa is more than a dance school. It’s a place for women of all ages to reclaim their dreams and perform with dignity, joy, and grace.
(1)

With classical forms, it nurtures Rabindra-Nritya and Kathak as paths of expression, rediscovery and self-renewal.

ফিরে দেখা ২০২৪-এর বার্ষিক অনুষ্ঠানে সালংকারা স্কুল অব ডান্স উপস্থাপন করেছিল “পদাবলি”—শব্দ, সুর ও নৃত্যের এক সংলাপ, যেখান...
22/08/2025

ফিরে দেখা ২০২৪-এর বার্ষিক অনুষ্ঠানে সালংকারা স্কুল অব ডান্স উপস্থাপন করেছিল “পদাবলি”—শব্দ, সুর ও নৃত্যের এক সংলাপ, যেখানে কবিতার পদ হেঁটে গেল ঘুঙুরের পথে।
প্রযোজনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল তিনটি সেতু—শব্দ (পদ), সুর (রাগ-রাগিণী, তাল-লয়) ও শরীর (আঙ্গিক-মুদ্রা)। কর্ণধার অঙ্কিতা রায়ের কোরিওগ্রাফিতে রবীন্দ্রসঙ্গীত, কীর্তন-ঐতিহ্য, রবীন্দ্র নৃত্য ও কথকের বোল এক সুতোয় গাঁথা হয়েছে।
২০২৪-এ “পদাবলি” আমাদের শিখিয়েছে—দর্শককে ছুঁতে গেলে চমক নয়, সত্য দরকার। আগামী বছর আমরা সেই সত্যকে আরও ধারালো করেই ফিরব—নতুন পদ, নতুন পদক্ষেপ, নতুন পদচিহ্ন নিয়ে।

#পদাবলি #সালংকারা #বিরলাসভাঘর #বার্ষিকউৎসব #রবীন্দ্রনৃত্য #কথক #পারফরমিংআর্টস #কলকাতা #বাংলাশিল্প

এক দশকের চেয়ে একটু আগের কথা। সপ্তমীর রাত। রাত ঢলছে ভোরের দিকে। গোটা শহর তখন উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েছে। পাড়ায় পাড়ায় ঠাকুর দেখা...
19/08/2025

এক দশকের চেয়ে একটু আগের কথা। সপ্তমীর রাত। রাত ঢলছে ভোরের দিকে। গোটা শহর তখন উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েছে। পাড়ায় পাড়ায় ঠাকুর দেখার লম্বা লাইন। ভিড় মণ্ডপের সামনে, এগরোলের দোকানে, ফুচকার ঠেলার সামনে। ঠিক তখনই আচমকা শারীরিক অবস্থার অধঃপতন। সদ্য মা হওয়া যুবতীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে, জানা যায়, পরপর অ্যাটাক হয়েছে, অন্তত তিনবার। চিকিৎসকেরা জবাব দিয়ে দিয়েছিলেন। যুবতীর বাবা দাঁড়িয়ে স্থির হয়ে। চোখের সামনে তখন ঘোর অন্ধকার। বিড়বিড় করে, চিৎকার করে বলছেন, 'এ হতে পারে না।'। জীবন-মরণের লড়াই তিনি যখন লড়ছিলেন, ঠিক তার এক সপ্তাহ আগেই, মহালয়ার পরের দিন মা হয়েছেন। জন্ম দিয়েছেন ফুটফুটে সন্তানের। তাকে ফেলে, সকলকে ফেলে, এই অসময়ে চলে যাবেন? 'হতে পারে না।'

না তা হয়নি। বৃথা যায়নি আকুতি, মিনতি। বহু সংগ্রামের পর, তিনি সুস্থ হন। যদিও অনেকাংশে সুস্থ হলেও, বেশকিছু জায়গায় গভীর ক্ষত ছেড়ে গিয়েছে সেই কালো দিন। সেসব ঢেকে নিয়েই, ঠোঁটে একফালি হাসি ঝুলিয়ে এখন দিব্যি দিনভর ঘর সংসার সামলান। ছেলের সঙ্গে খুনসুটি করেন, মা-শাশুড়ির সঙ্গে গল্প জোড়েন যখন তখন, এবং মঞ্চে ওঠেন। এই পর্বে, তাঁর গল্প।

তনয়া। তনয়া মণ্ডল। বয়স নয় নয় করে পেরিয়ে গিয়েছে চল্লিশের কোঠা। এক দুই করে সালংকারার হয়ে মঞ্চে নৃত্য পরিবেশনা করেছেন তিনবার। নিজের পছন্দের গানের সঙ্গে, নিজের প্রিয় মানুষের সান্নিধ্য-সাহায্যে, নিজের স্বপ্ন পূরণ করছেন ধীরে ধীরে। শরীর যেখানে কখনও কখনও বাধা হতে চায়, কীভাবে আসে এই বিপুল মনের জোর? প্রশ্ন শুনে হাসি আর থামে না। কঠিন সময়ের কথাও বলে যান হাসতে হাসতেই।

জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির একেবারে উল্টোপথেই ঘর। ছোট থেকেই যেন চারপাশে সুর। সেই সুরের মাঝে দাঁড়িয়ে একেবারে জ্ঞান হওয়ার পর থেকেই চাইতেন পায়ে বোল তুলতে। তনয়ার মা বলেন, যখন পাড়ার ক্যাসেটের দোকানে গান বাজত, ঠিকমতো হাঁটতে না পারা মেয়ে তখনও নাচ করত দাঁড়িয়ে পড়ে। তবে তনয়ার বাবা কিছুটা সেকেলে এই বিষয়ে। একেবারেই চাইতেন না মেয়ে নাচের সঙ্গে যুক্ত থাক। পাড়ায় মামিমার দৌলতে কিছু অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশনা করা হতো বটে, তবে আর আলাদা করে নাচ শেখা হয়নি মেয়ের। ফলে যা হয়। জোড়াসাঁকো থেকে বিদ্যাসাগর কলেজ পেরিয়ে সুকিয়া স্ট্রিট যেতে মাঝে যে বেশ কয়েক দশক সময় লেগে গিয়েছে, সেই সময়টায় নিজের স্বপ্ন মনের ভিতরেই চাপা দিয়ে রেখেছিলেন তিনি।

জোড়াসাঁকো থেকে সুকিয়া স্ট্রিট। ম্যাপ অনুযায়ী আর এমন কী। উত্তরের এদিক থেকে ওদিক। তবে ট্রাম লাইন পের হয়ে গিয়ে, কিছুটা উপকার হল তাঁর। স্বামী, শ্বশুর বাড়ির লোকজন আপত্তির দূর, তাঁরা রাজি হয়েছেন সহোৎসাহে। ব্যাস। তারপর আর কী। তনয়া যখন বিয়ে-সন্তান, সর্বোপরি বেঁচে ফিরে নতুন করে জীবন শুরু করার কথা ভাবছিলেন, ভাবছিলেন নিজের স্বপ্ন সাকার করার কথা, তখনই একদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় সালংকারা-র কথা জানতে পারেন। সে তো রোজ কতকিছুর বিজ্ঞাপন সামনে আসে। সেদিন তাহলে কেন থমকে গিয়েছিলেন তিনি ওই এক জায়গায়? তনয়ার মনে আছে, সেখানে লেখা ছিল, আর যাই হোক, নাচের বিষয়ে বয়স কোনও ফ্যাক্টর নয়। সত্যি নয়? ভাবতে ভাবেই দারুণ কৌতূহল, আনন্দ, দুরুদুরু বুকে আর পাঁচজনের সঙ্গেই হাজির হওয়া অঙ্কিতার সামনে।

দেড় বছর সালংকারার সঙ্গে যুক্ত। একেবারে প্রফেশনালি তালিম নিচ্ছেন রবীন্দ্রসঙ্গীতের। কেমন ছিল সেই প্রথম দিন? তনয়া স্পষ্টভাবে বলেন, তিনি প্রথমদিনেই অঙ্কিতার যত্নের ছোঁয়া পেয়েছিলেন। পেয়েছিলেন গুরুর সহচর্য, যিনি বুঝিয়েছিলেন। 'এই জায়গা তোমার। তোমার জয় করার।' একদিকে গুরুর অভয় বাণী, অন্যদিকে একসঙ্গে একগুচ্ছ বয়সী-অসমবয়সী বন্ধু। সবাইকে নিয়ে যেন জোড়াসাঁকো, সুকিয়া স্ট্রিট ছাড়িয়ে আরও একটা নতুন পরিবার তৈরি হয়ে গেল তাঁর। তাঁরা একসঙ্গে নতুন গান শুনলেন। অর্থ বুঝলেন এবং মন দিয়ে বোঝার চেষ্টা করলেন কোন অর্থের উপর দাঁড়িয়ে কীভাবে তাকে নাচের আকার দিচ্ছেন অঙ্কিতা। প্রথমদিকে ততটা না হলেও আজকাল এই প্রক্রিয়া খুব মন দিয়ে বোঝার চেষ্টা করেন তনয়া। দেখেন তাঁর চারপাশে আরও কত ঝড়-ঝাপটা পেরিয়ে, কত মানুষ এসে দাঁড়ান অঙ্কিতার সামনে। অঙ্কিতা যেন তাঁদের সমস্ত সমস্যার উপর বুলিয়ে দেন সোনার কাঠি। সেই সোনার কাঠি দেখা যায় না। নাচের ছন্দ আর আত্মবিশ্বাসের আকারে ছড়িয়ে দেন সালংকারার মেঝেতে।

তনয়া সালংকারায় ইতিমধ্যেই তিনবার অনুষ্ঠান করেছেন মঞ্চে। সেসব দিনের কথা বলতে গিয়েই উচ্ছ্বাস বেড়ে যায় কয়েকগুণ। আপ্লুত হয়ে বলেন, 'বহুবছর বাদে যেদিন মঞ্চে উঠলাম। সেই মঞ্চ, আলো, সামনে সেই ভিড়। আমি যেন কেমন হয়ে গিয়েছিলাম। বিশ্বাস করুন, আমার মনে হয়, আমার কাছে সেই ছোটবেলার মঞ্চে উঠে নৃত্য পরিবেশনার সঙ্গে এখনকার অনুষ্ঠান, গ্রিণ রুম, বুক ঢিপঢিপ ভাব, কিছুই যেন বদলায়নি। এখনও সেই একই নার্ভাসনেস কাজ করে। তবে বলতেই হবে, যেমন সালংকারা ছাড়া সম্ভব হত না কিছুই, তেমনই আমার শ্বশুরবাড়ির সকলে ভীষণ সাহায্য করেন। আগে মা থাকতেন, এখন গ্রিণ রুমে কখনও আমার শাশুড়ি মা বসে থাকেন।' তবে তাঁর নাচের সবথেকে বড় গুণমুগ্ধ ভক্ত এবং সমালোচক কে? উত্তর জানা, তনয়ার ছেলে। তনয়ার মতে, 'এত বছর পরে নাচতে এসে যখন অনুশীলন করি, যখন অনুষ্ঠান করি, সবাই ভাল বললেও ছেলে বারবার খুঁত ধরে। বলে, মা, এই জায়গাটা এমন হতে পারতো, ওই জায়গাটা তেমন।'

সেসব তিনি শোনেন মন দিয়ে। একাগ্র চিত্তে শেখেন অঙ্কিতা কী শেখাচ্ছেন। শোনেন, মঞ্চে ওঠার ঠিক আগে, কী বলছেন তিনি। সব শুনে, মঞ্চে ওঠেন। তখন মাথায় রাখতে চান না শরীরের যন্ত্রণা, ওষুধ, কড়া ডোজের ইনজেকশন, রেওয়াজের পরে পা-আটকে যাওয়ার কথা। মনে রাখতে চান না কিছু। তিনি তখন আলোর নীচে দাঁড়ান। সামনে দেখতে পান বহু মানুষকে। তাঁরা জোড়াসাঁকোর হতে পারেন, সুকিয়া স্ট্রিটের হতে পারেন। চেনা হতে পারেন কিংবা নাও হতে পারেন। তনয়ার পা তখন মঞ্চে, তিনি শুনতে পান-

'চিরকল্যাণময়ী তুমি ধন্য, দেশবিদেশে বিতরিছ অন্ন--
জাহ্নবীযমুনা বিগলিত করুণা পুণ্যপীষুষস্তন্যবাহিনী ॥'

মাথায় ঘোরে প্রকৃত অর্থ, যা মঞ্চে ওঠার ঠিক আগের মুহূর্তে বুঝিয়েছেন অঙ্কিতা। এই জীবনে এই স্বপ্নই তো ছুঁতে চেয়েছেন তিনি, আজীবন।

কলমে - সালংকারা এডিটোরিয়াল টিম



#আমাদের_কথা

05/08/2025

গুণীজনের চোখে – সালংকারা নিবেদিত ‘চিত্রাঙ্গদা’

এই স্বীকৃতি আমাদের কাছে শুধু প্রশংসা নয়—একটি দায়, একটি দায়িত্ব। নিজেকে খুঁজে পাওয়ার গল্প ‘চিত্রাঙ্গদা’। নিজেকে গ্রহণ করার সাহসের নাম ‘চিত্রাঙ্গদা’। এবং যখন গুণীজনের চোখে সেই সত্য প্রতিফলিত হয়, তখন বুঝি আমাদের প্রচেষ্টা সার্থক।

শ্রাবণের শুরু। উত্তর থেকে দক্ষিণ কলকাতা প্রবল বর্ষণে জলমগ্ন। এক একজন রাস্তা পেরোচ্ছেন জল-কাদা ডিঙিয়ে অতি সন্তর্পণে। কার ...
02/08/2025

শ্রাবণের শুরু। উত্তর থেকে দক্ষিণ কলকাতা প্রবল বর্ষণে জলমগ্ন। এক একজন রাস্তা পেরোচ্ছেন জল-কাদা ডিঙিয়ে অতি সন্তর্পণে। কার কারও মনে পড়ছে ছোট বেলার কাগজের নৌকা ভাসানোর দিন। কেউ কেউ বৃষ্টি মাথায় নিয়ে চলছেন, কাঁধে অতি গুরুগম্ভীর কাজের গুরুভার। এক হাঁটু জল পেরিয়ে গাড়িতে উঠে বসলেন ড. লোপামুদ্রা সেনগুপ্ত। অতি গুরুত্বপূর্ণ কাজ শেষের দিকে এগোচ্ছেন তিনি। কিন্তু গাড়িতে বসতেই যেন ধাক্কা এল ভিতর থেকে। কাজ! সারাজীবন, নানা খাতে, নানা সময়ে এই কাজই করে গিয়েছেন । অক্লান্তভাবে। তবে প্রবল ক্লান্তিতেও তিনি কখনওই নিজের স্বপ্নকে, শখ-আহ্লাদকে কেবল মনের গহীনে ফল্গু ধারার মতো ছেড়ে দেননি। জেদের সঙ্গে, জোরের সঙ্গে, বিপুল উদ্যমের সঙ্গে অঙ্গ হিসেবে জড়িয়ে রেখেছেন। স্বাভাবিকভাবেই, বর্ষার দিনে কাজ যতই থাকুক, যতটুকু সময় পেয়েছেন, কাজের সঙ্গেই এখন গান শুনবেন, চোখ বুজে। নিজের গান। পছন্দের। আরামের। গান শুনতে গুনতেই একটা সময় কি গাড়ি ঘুরিয়ে দিতে বলবেন? বলবেন, ‘ঠিকানা বদলে নাও আজ। চলো সালংকারায়’?

বলতেই পারেন। এতগুলো বছর। একদিকে ঘর-সংসার, পড়াশোনা, অধ্যাপনা, বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব সব সামলে তো এভাবেই দিনের পর দিন গিয়ে দাঁড়িয়েছেন সালংকারার কাছে। সবদিন হয়তো বর্ষা হয় না আকাশ ভেঙে, কিন্তু সালংকারায় পৌঁছতে বেশিরভাগ দিনেই লোপামুদ্রাকে ডিঙিয়ে যেতে হয় কাজের পাহাড়। পঞ্চান্নর গণ্ডি পেরিয়ে, অনায়াসে সেই পাহাড় ডিঙিয়ে যান তিনি। কীভাবে পান এই জীবনশক্তি? প্রশ্ন করলেই ব্যাস! গম্ভীর মুখে বড় দের ক্লাস নেওয়া দিদিমণির তখন আর চোয়াল শক্ত থাকে না। মুখে-চোখে নিমেষে ফুটে ওঠে কিশোরী বেলার সরলতা। এক নাগাড়ে বলে যান, ছোট বেলা, বড় বেলা, কৈশোর, যৌবনের গল্প। বলেন সব সামলে স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখার মূল মন্ত্রের কথা, আর বলেন, কতটা জরুরি সালংকারার মতো প্রতিষ্ঠান কিংবা অঙ্কিতার মতো দিদিমণি।

আগেই বলেছি দক্ষিণ কলকাতার লোপামুদ্রা, পেশায় অধ্যাপক। বছর দুই হল, সালংকারার সঙ্গে যুক্ত তিনি। নাচের কথা শুরু হলেই, পঞ্চান্ন থেকে তিনি এক লহমায় এগিয়ে যান বাহান্ন বছর আগে। যখন তার বয়স সবে তিন। সেই খুদের রবীন্দ্রসদনে নৃত্যানুষ্ঠানের দিন, পরে কিচুটা বড় হয়ে ভারতনাট্যম, কথকের তালিম নেওয়ার দিন, ভারতীয় লোক নৃত্য নিয়ে দীর্ঘ কাজ, নিজের নাচ শেখানো সেসব ছবির মতো ফুটে ওঠে। একটা সময় পর্যন্ত সবকিছু সামলে নাচের ধারা বজায় রেখেছিলেন তিনি। তবে নেশা আর পেশার ঠকাঠুকিতে, মাঝে কিছু বছিরের বিচ্ছেদও সইতে হয়েছে তাঁকে। অধ্যাপনা, গবেষণা, সংসারের দায়দায়িত্ব, ছেলেকে বড় করা সব মিলিয়ে মাঝের কয়েকবছর ঘুঙুর কেবল আলমারির এক কোণে তোলা ছিল। যেমন তোলা থাকে প্রিয় কোনও শাড়ি, আর কখনও পরা হবে না ভেবে।

তবে ওই যে, যেমন সব পাখি ঘরে ফেরে, তেমনই কারও কারও জেদের কাছে, অপেক্ষার কাছে হার মেনে ফিরে আসে হারিয়ে যাওয়া সবকিছু। আর যদি তিনি হন লোপামুদ্রার মতো ‘নাছোড়বান্দা মেয়ে’? তাহলে? দীর্ঘ বিরতি আর সালংকারার অধ্যায়, এর মাঝেও তিনি ভালবাসার নাচের কাছে ফিরে যেতে একাধিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্তও হন। তবে কোথাও গিয়ে তিনি সেই শিকড়ের খোঁজ পাননি, যা খুঁজে বেড়াচ্ছিলেন হন্যে হয়ে। ফলে কোনও যাত্রাই দীর্ঘমেয়াদী হয়নি। তারপরেই একদিন মুখোমুখি হন সালংকারার সঙ্গে।

সেই শুরু। এক বছর পেরিয়ে দু’ বছর। কেন সালংকারাই? কেন বহু পথ পেরিয়ে এখানেই থামলেন তিনি? উত্তরে খুব ঝটপট করেই বলেন, ‘সালংকারা তো অঙ্কিতা ম্যাডামকে ঘিরেই। তাঁর যে নাচের ক্রিয়েটিভিটি, কোরিওগ্রাফি এবং সবথেকে বড় কথা, সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে, একযোগে চলার যে চেষ্টা, পরিবারের মতো উদযাপনের যে আন্তরিক প্রচেষ্টা, সহনশীলতার সনে সকলকে গ্রহণ করা, সেটা শেখার মতো। সবাইকে শুধু নিয়ে চলা তো নয়, সময় নিয়ে ধীরে ধীরে সকলের থেকে ভালটা খুঁজে বের করে আনা। এই সময়ে এর থেকে বড় আর কী। আমি তো চাই, যতদিন পারি যেন অঙ্কিতার কাছে যেতে পারি। নাচ শিখতে পারি। যেন কোনও না কোনওভাবেই আমি যেন থেকে যেতে পারি সালংকারার সঙ্গে। নাচের কথা বলি যদি, আমি তো অঙ্কিতার কাছে রবীন্দ্রনৃত্য শিখি, আমি অবাক হই। এমন অনবদ্য ভঙ্গিমা, অভিব্যক্তি এত অসাধারণ কোরিওগ্রাফি, আমি শেখার আগে মুগ্ধ হয়ে দেখি।‘

একদিকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপিকা, লিঙ্গ বৈষম্য-মানবাধিকার নিয়ে চর্চা আর একদিকে রবীন্দ্র নৃত্যে আকুল পরিবেশনা, একেবারে বিপরীতে দাঁড়িয়ে থাকা দুই বিষয়কে কীভাবে একসঙ্গে জুড়ে রাখেন লোপামুদ্রা? উত্তর দিতে গিয়ে ভাবাতুর হন। বলেন- ‘রবীন্দ্রনাথের গান-কবিতা-উপন্যাস, দেখবেন একদিকে রয়েছে গভীর দর্শন, আর একদিকে মানব মনের নানা দিক। কখনও হাহাকার-কখন বেদন, রোদন আবার কখনও ওপার আনন্দ, প্রেম ভালবাসা ছড়িয়ে। এসব আমাদের সুক্ষ্ম অনুভূতিকে নাড়া দেয় বারেবারে। আমাকে তো দেয়ই। আমি নান ধরনের কাজ যখন করি বাইরে, আর যখন রবীন্দ্রনাথের চিত্রাঙ্গদা, চন্ডালিকা নিয়ে ভাবি, এত প্রাসঙ্গিকতা খুঁজে পাই। মনে হয়, আমার দু’ দিক দুই বিপরীতের হলেও, কোনও এক কারণে, দুটো দিক মিলে যায় গভীরভাবে। আমি যখন রবীন্দ্রনাথের গানে চান করি, আমি জানি তাতে আমার গোটা জীবনের অভিজ্ঞতাও যেন ফুটে উঠছে।‘

সপ্তাহভর দাঁড়ান টেবিলের একদিকে,দিদিমণি হয়ে। একদিন দাঁড়ান অন্য প্রান্তে, একান্ত বাধ্য ছাত্রী হয়ে। মনে করেন, গুরুর প্রতি সম্মান থেকেই আসলে শেখার শুরু। মনে করেন জীবনের একেবারে প্রথমভাগ থেকে পারফর্মিং আর্টস-এর সঙ্গে নিজেকে যুক্ত রাখতে পেরেছেন এবং এখনও সেই চর্চা চালিয়ে যেতে পারছেন বলেই হয়তো বাকি নানা খাতের নানা জটিল সমস্যার সমাধান করেছেন সহজে।

কথা যখন শেষের মুখে, এক পৃথিবী কাজের মাঝে তখন যেন পাশাপাশি দাঁড়িয়ে লোপামুদ্রার কৈশোর, যৌবন আর বার্ধক্যে উপনীত হওয়া মন। যেমন অঙ্কিতা এক লাইনে দাঁড় করান নানা বয়সের নানা মানুষকে, যাঁরা ডুবে থাকেন নাচের প্রতি, শিল্পের প্রতি আকন্ঠ ভালবাসায়। শহরে তখন ঝড়। শ্রাবণের অযাচিত ঝড়। লোপামুদ্রা ভাবছেন, এবার তিনি একদিন নাচবেনই, ‘যে রাতে মোর দুয়ারগুলি…।‘ সামনে কে? মঞ্চে পাশে কে? ব্যাকগ্রাউন্ডে কী? কিছু যায় আসে না। শুধু একটু আলো চান। যে আলোয় ফুটে উঠবে নারীর চেষ্টা, ইচ্ছা, জেদ, ধৈর্যের প্রতিচ্ছবি। কখনও সেই প্রতিচ্ছবি দেখতে হবে অঙ্কিতার মতো, কখনও লোপামুদ্রার মতো, কখনও বা আরও কারও মতো। যাঁরা জিতে যাচ্ছেন এক একটা লড়াই, পৃথিবীর যে কোনও প্রান্তে।

কলমেঃ সালংকারা এডিটোরিয়াল টিম

#আমাদের_কথা

আজ শ্রাবণের আমন্ত্রণে — কিছু ফিরে দেখা মুহূর্ত২৬ জুলাই ২০২৫, বেঙ্গল গ্যালারি ও ফাউন্টেন কোর্ট, ICCR কলকাতা — শ্রাবণের সন...
29/07/2025

আজ শ্রাবণের আমন্ত্রণে — কিছু ফিরে দেখা মুহূর্ত

২৬ জুলাই ২০২৫, বেঙ্গল গ্যালারি ও ফাউন্টেন কোর্ট, ICCR কলকাতা — শ্রাবণের সন্ধ্যায় একত্র হয়েছিল নৃত্য, সঙ্গীত, লোককথা ও দৃশ্যশিল্পের সম্মিলন।

চিত্র, ছন্দ ও সুরে ভরা এই অনুষ্ঠান হয়ে উঠল আরও তাৎপর্যময় বিশিষ্টজনদের উপস্থিতিতে। আমাদের সঙ্গে ছিলেন বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা সুদেষ্ণা রায়, নৃত্যশিল্পী অলকানন্দা রায় এবং গুরুজন শুভাশিস ভট্টাচার্য।

ধ্রুপদী নৃত্য থেকে শুরু করে লোকনৃত্য, রবীন্দ্রসঙ্গীত থেকে পুতুলনাচ, ছৌ এবং লোকগান— বর্ষার সৃজনশীল চেতনাকে বিভিন্ন মাধ্যমে তুলে ধরা হল।

এই সন্ধ্যার কয়েকটি মুহূর্ত শেয়ার করছি আপনাদের সঙ্গে। আপনারা যারা ছিলেন, তাদের ধন্যবাদ। আর যারা আসতে পারেননি—এই ছবিগুলি আপনাদের জন্য।

আয়োজনে
Salankaraa School of Dance
COG India Art Foundation
Artverse

#আজশ্রাবণেরআমন্ত্রণে



Artverse COG India Art Foundation - ছবি ও ঘর

কলকাতার সাংস্কৃতিক ক্যালেন্ডারে একটি অনন্য সংযোজন হতে চলেছে ‘আজ শ্রাবণের আমন্ত্রণে’— একটি একদিনের বহুমাত্রিক পারফর্মিং আ...
25/07/2025

কলকাতার সাংস্কৃতিক ক্যালেন্ডারে একটি অনন্য সংযোজন হতে চলেছে ‘আজ শ্রাবণের আমন্ত্রণে’— একটি একদিনের বহুমাত্রিক পারফর্মিং আর্টস এবং ভিজ্যুয়াল আর্টস অনুষ্ঠান, যা অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ২৬ জুলাই, ২০২৫ তারিখে, বেঙ্গল গ্যালারি ও ফাউন্টেন কোর্ট, আইসিসিআর কলকাতায়।
এই অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে আয়োজন করছে Salankaraa School of Dance, COG India Art Foundation, ও Artverse।
মূল ভাবনা—বর্ষা, এবং বর্ষার সেই সৃজনশীল ক্ষমতা, যা গানে, কথায়, তুলির টানে ও নৃত্যের ভঙ্গিমায় ধরা দেয়। বর্ষা যেমন চাষির গানে, ভাটিয়ালির সুরে, বাউলের সহজিয়ায়, ভানুসিংহের পদাবলির রাধাকৃষ্ণে, বিখ্যাত শিল্পীর জলরঙে, ছৌ নাচে, তেমনই আমার আপনার। বর্ষাস্নাত সন্ধ্যায় নিজেকে নতুন করে খুঁজে পেতে এ কর্মযজ্ঞে আপনার আমন্ত্রণ।
এই সন্ধ্যায় থাকছে—
🔸ধ্রুপদী নৃত্য ও রবীন্দ্রনৃত্য পরিবেশনা - "বর্ষামঙ্গল"
🔸লোকসঙ্গীত ও প্রথম ফসলের গান — বাংলার গ্রামীণ গন্ধে ভেজা সুর
🔸রবীন্দ্রনাথ ও বর্ষা — পাঠ ও সংগীতের আবহে "এ ভরা বাদরে"
🔸ভিজ্যুয়াল আর্ট প্রদর্শনী — বর্ষা যেমন দেখেছেন শিল্পীরা
🔸বিশেষ আকর্ষণ — পুরুলিয়ার ছৌ নৃত্য (ঝালদা থেকে আগত শিল্পীদের পরিবেশনায়)
স্থান ও সময়:
⫸ Bengal Gallery & Fountain Court, ICCR Kolkata
⫸ ২৬ জুলাই ২০২৫ | বিকেল ৫টা – রাত ৮টা
আয়োজক:
Salankaraa School of Dance
COG India Art Foundation
ArtVerse

Registration: FREE ENTRY : OPEN TO ALL

কলকাতার সাংস্কৃতিক ক্যালেন্ডারে একটি অনন্য সংযোজন হতে চলেছে ‘আজ শ্রাবণের আমন্ত্রণে’— একটি একদিনের বহুমাত্রিক পারফর্মিং আ...
25/07/2025

কলকাতার সাংস্কৃতিক ক্যালেন্ডারে একটি অনন্য সংযোজন হতে চলেছে ‘আজ শ্রাবণের আমন্ত্রণে’— একটি একদিনের বহুমাত্রিক পারফর্মিং আর্টস এবং ভিজ্যুয়াল আর্টস অনুষ্ঠান, যা অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ২৬ জুলাই, ২০২৫ তারিখে, বেঙ্গল গ্যালারি ও ফাউন্টেন কোর্ট, আইসিসিআর কলকাতায়।
এই অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে আয়োজন করছে Salankaraa School of Dance, COG India Art Foundation, ও Artverse।
মূল ভাবনা—বর্ষা, এবং বর্ষার সেই সৃজনশীল ক্ষমতা, যা গানে, কথায়, তুলির টানে ও নৃত্যের ভঙ্গিমায় ধরা দেয়। বর্ষা যেমন চাষির গানে, ভাটিয়ালির সুরে, বাউলের সহজিয়ায়, ভানুসিংহের পদাবলির রাধাকৃষ্ণে, বিখ্যাত শিল্পীর জলরঙে, ছৌ নাচে, তেমনই আমার আপনার। বর্ষাস্নাত সন্ধ্যায় নিজেকে নতুন করে খুঁজে পেতে এ কর্মযজ্ঞে আপনার আমন্ত্রণ।
এই সন্ধ্যায় থাকছে—
🔸ধ্রুপদী নৃত্য ও রবীন্দ্রনৃত্য পরিবেশনা - "বর্ষামঙ্গল"
🔸লোকসঙ্গীত ও প্রথম ফসলের গান — বাংলার গ্রামীণ গন্ধে ভেজা সুর
🔸রবীন্দ্রনাথ ও বর্ষা — পাঠ ও সংগীতের আবহে "এ ভরা বাদরে"
🔸ভিজ্যুয়াল আর্ট প্রদর্শনী — বর্ষা যেমন দেখেছেন শিল্পীরা
🔸বিশেষ আকর্ষণ — পুরুলিয়ার ছৌ নৃত্য (ঝালদা থেকে আগত শিল্পীদের পরিবেশনায়)
স্থান ও সময়:
⫸ Bengal Gallery & Fountain Court, ICCR Kolkata
⫸ ২৬ জুলাই ২০২৫ | বিকেল ৫টা – রাত ৮টা
আয়োজক:
Salankaraa School of Dance
COG India Art Foundation
ArtVerse
Registration: FREE ENTRY : OPEN TO ALL
Boost this post to get more reach for Salankaraa.

Address


Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Salankaraa posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Salankaraa:

  • Want your business to be the top-listed Media Company?

Share