
13/08/2025
আমাকে একজন লিখেছেন তিনি নাকি পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতে ভারতের মত এত পথকুকুর দেখেননি। উত্তরে আমি তাঁকে বললাম, সে দেশে নিশ্চই গরুকে মা বলেও ডাকা হয় না?
ভন্ডামীর দেশে প্রভুর আজ আর তাঁর ভক্তের প্রয়োজন নেই বলছেন তাহলে? একদিকে গরুকে মা বলে অন্যদিকে নন্দীকে শিবের বাহন। গরু দুধ দেয় বলে একটু আদর বেশি, কিন্তু নন্দী তো ছেলে তাই একটু বড় হলেই নয় কসাইখানা না হয় রাস্তায় ছেড়ে দেওয়া হয় গাড়ির ধাক্কা খাওয়ার জন্য। এটাই আসল ভন্ডামীর ছবি। দিল্লির রাস্তায় তার মানে আজকাল মানুষ খেকো কুকুর ঘুরে বেড়ায় সব, সমাজ বন্ধুতা হারিয়েছে তাঁরা?
আর শহরজুড়ে যে মানুষরূপী কিছু হিংস্র হায়না ঘুরে বেড়াচ্ছে তাদের বিচার কে করবে?
সব কুকুর কামড়ায় এটা হতে পারে না। তাহলে সবার জন্য এই নির্মম বিচার কেন? মানুষের ক্ষেত্রে হলেও এই একই নির্দেশ দিত সুপ্রিমকোর্ট? নির্দেশ দেওয়া হত সব মানুষকে তুলে নাও কলকাতা থেকে কারণ আরজিকর হাসপাতালে একজন মানুষ ধর্ষণ করেছেন। কই সে বিচার? কে উত্তর দেবে? আদালতের রায় হাত বেঁধে দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের পুলিশের , সিবিআই কি করেছে? যতটুক করেছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ করেছে।
মানুষের জন্য আজ গোটা প্রাণীকূল যন্ত্রণার হয়ে দাঁড়িয়েছে? একসময় এদের জায়গা দখল করা মানুষ আজ ওদের সম্পূর্ণভাবে ঘরছাড়া করতে চায়। এটা ওদেরও তো বাড়ি, ছোট ছোট বাচ্চাগুলো মায়ের থেকে আলাদা হয়ে যাবে। না খেতে পেয়ে মরবে। আজ সত্যিই কুত্তে কি মৌত মারতে চলেছে মানুষ।
মানুষ ওদের মারেনি? দিনের পর দিন অত্যাচার করেনি? গায়ে গরম জল ঢেলে দেওয়া, বাচ্চাগুলোকে গাড়ির চাকায় পিষে মারা। দেখলেই লাঠির বাড়ি। কোনও কথা নেই কুকুর দেখলেই লাথি। কিছুই না সেটাই মজা। এই বিচার কে করে?
অনেক মানুষ আছেন যাঁরা এই রায়ে খুব আনন্দ পেয়েছেন। খুব খুশী। শুধু তারা আলিশান বাড়িতে থাকবেন কিন্তু প্রাণীকূল হঠাও। এককালে চোর তাড়ানোর দরকার পড়ত, হিংস্র জন্তুদের হাত থেকে পশু খামারকে বাঁচাত। মানুষকে সুরক্ষা দিত। সেই সময় ছিল কুকুর বন্ধু। আজ বিশাল ইমারতে সেই পাহারাদারের প্রয়োজন নেই। দামি দামি পেশাদার সিকিউরিটি আছে সেখানে। তাই কুকুর বিদায় করো।
কিন্তু এই মানুষ জঙ্গল শেষ করেছে আজ যাঁরা মানুষের বন্ধু ছিল তাদেরও এলাকা ছাড়া করতে চায়। আগে থেকে পর্যাপ্ত নির্বিজকরণ ও ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করলে এই সংখ্যা দাঁড়াতো না। সমাধান আজও আছে। চাইলে কেন্দীয় সরকার অন্য ব্যবস্থা নিতে পারত। কিন্তু ওরা যে সরকারকে ভোট দেয়না।
বাঘও মানুষ খায়, কিন্ত সব বাঘ নয়। কিন্তু মানুষ একদিন এত বাঘ মেরেছে যে আজ বাঘকে সংরক্ষণ করতে হয়।
একদিন মানুষের উপকার করা এই প্রাণীগুলোর এবার করুণ দশা হতে চলেছে। কারণ এইদেশে ডগ শেল্টার একটা প্রহসন মাত্র। কুকুরদের জন্য কোটি কোটি টাকা কি খরচ করবে কেন্দ্রীয় সরকার? রেবিসের ভ্যাকসিন একবার দিলে এক এই ছবি আজ দেখতে হত না। আমাদের দেশের প্রশাসনের অপদার্থতার দায় আজ পথকুকুররা নেবে। কুকুর কামড়ালে জলাতঙ্ক হতেও পারে, সেটা ভয়ঙ্কর। কিন্তু সেটাও তো আটকানো যায়। ভারতের সব শহরের কি একই দশা?
যে দেশে মানুষের সংখ্যা প্রত্যেক বছর গণ্ডায় গণ্ডায় বাড়ছে আর কুকুর বাড়লেই দোষ। ধিক্কার জানাই এই মনুষত্বকে।
তাই বলি গরুকে মা বলার দরকার নেই। ধর্মের ভন্ডামি না করে একবার অন্তত ওদের কথা যদি সত্যিই ভাবতেন তাহলে এই অবলা প্রাণীগুলোর এই দশা হত না। বিশ্বাস করুন একদিন সবাই থাকবে কিন্তু এই নিষ্ঠুর মানুষ পৃথিবী থেকে চলে যাবে। এই পাপের বিধান সেই সর্বোচ্চ আদালতে হবেই হবে।
Amit Bhattacharjee
Amit Batcharge
Amit Bhattacharjee