16/09/2025
এবারের লেখাজোকা শারদ সংখ্যার অন্যতম সেরা আকর্ষণ মৃত্তিকা মাইতির উপন্যাস 'যারা সাতশিমুলপুরে থাকে।'
আমরা কতজনই বা খবর রাখি, বাংলার একেকটি গ্রাম উজাড় করে দলে দলে নারী-পুরুষ চলে যাচ্ছেন ভিন রাজ্যে; শুধুমাত্র বেঁচে থাকার জন্য। তাদের মধ্যে কেউ চাষী, কেউ তাঁতি, কেউ মৎসজীবী, কেউ দরিদ্র পুরোহিত, কেউ ফেরিওয়ালা ইত্যাদি আরও কত পেশার মানুষ। নিজেদের মূল পেশা ছেড়ে তাঁরা হয়ে যাচ্ছেন মজুর, কেউ রাজমিস্ত্রি, কেউ গয়না শিল্পের কারিগর, কেউ বাথরুম পরিষ্কারের জমাদার, কেউ এলাচ চাষের শ্রমিক, কেউ ভ্যানচালক, কেউ কাগজ কুড়োনি, কেউ ঠিকে ঝি। বাংলার গ্রামের ছবি বদলে যাচ্ছে। বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে যোগাযোগ। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে গ্রামের সংস্কৃতি। আমরা তাঁদের নাম দিয়েছি পরিযায়ী শ্রমিক।
তাঁদের সংখ্যা কত আমরা সঠিকভাবে জানি না। পনেরো লাখ, কুড়ি লাখ, পঁচিশ লাখ? কেউ জানি না। রোজগারের আশায় এক রাজ্যের মানুষ অন্য রাজ্যে যাবে এ অতি স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু সেই চলে যাওয়ার মধ্যে যদি থাকে ভূমিচ্যূত হওয়ার বেদনা, আত্মীয় হারানোর দুঃখ, অনিশ্চয়তা ও নিরাপত্তাহীনতার আতঙ্ক... তাহলে তাতে সুখ থাকে না।
আর গ্রামে পড়ে থাকা তাঁদের পরিজন, বন্ধু, সন্তান-সন্ততিরাই বা কেমন থাকেন সেই ক্রমশ শূন্য হয়ে যাওয়া বাড়িঘরের ফাঁকে ফাঁকে সে খবরই বা কে রাখে?
এ সমস্ত কথাই উঠে এসেছে মৃত্তিকা মাইতির মরমী কলমে, এই উপন্যাসে।
সম্পাদক হিসেবে নয়, একজন মনোযোগী পাঠক হিসেবে আমি বলতে চাই এই উপন্যাসটি পড়লে পাঠকের চোখের সামনে এক অন্যরকম মায়াময় পৃথিবী ভেসে উঠবে।
লেখাজোকার শারদ সংখ্যা সংগ্রহ করে উপন্যাসটি পড়লে কেউ ঠকবেন না। সঙ্গে আরও অনেক ভালো লেখা তো আছেই।