Adhir Adhikari

Adhir Adhikari video content maker...

01/06/2024
22/05/2024

জয় শ্রীনৃসিংহদেব 🙏
আপনারা যারা মন্দিরে যেতে পারেন নাই তাদের জন্য লাইভ এর ব্যবস্থা করা আছে আপনারা শ্রীনৃসিংহদেবের অভিষেক দর্শন করুন।

18/05/2024

#একাদশী #মোহিনী #মোহিনী_একাদশী
আগামী ৫ শে জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।। ১৯ মে ২০২৪ ইং রোজঃ রবিবার। পবিত্র মোহিনী একাদশী।

একাদশীর সঙ্কল্প মন্ত্রঃ
একাদশ্যাং নিরাহারঃ স্থিত্বা অহম্ অপরেহহনি।
ভোক্ষ্যামি পুণ্ডরীকাক্ষ শরণং মে ভবাচ্যুত।।

মোহিনী একাদশীর ব্রত ও মাহাত্ম্যকথাঃ
কুর্মপুরাণে বৈশাখ শুক্লপক্ষের 'মোহিনী' একাদশীর ব্রত মাহাত্ম্য বর্ণনা করা হয়েছে।

মহারাজ যুধিষ্ঠির বললেন--হে জনার্দন! বৈশাখ শুক্লপক্ষীয়া একাদশীর কি নাম, কি ফল, কি বিধি--এসকল কথা আমার নিকট বর্ণনা করুন।

উত্তরে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বললেন--হে ধর্মপুত্র! আপনি আমাকে যে প্রশ্ন করেছেন পূর্বে শ্রীরামচন্দ্রও বশিষ্ঠের কাছে এই একই প্রশ্ন করেছিলেন।

তিনি জিজ্ঞাসা করেছিলেন--হে মুনিবর! আমি জনকনন্দিনী সীতার বিরহজনিত কারনে বহু দুঃখ পাচ্ছি। তাই একটি উত্তম ব্রতের কথা আমাকে বলুন। যার দ্বারা সর্বপাপ ক্ষয় ও সর্বদুঃখ বিনষ্ট হয়।

এই কথা শুনে বশিষ্ঠ বললেন--হে রামচন্দ্র! তুমি উত্তম প্রশ্ন করেছ। যদিও তোমার নাম গ্রহণেই মানুষ পবিত্র হয়ে থাকে। তবুও লোকের মঙ্গলের জন্য তোমার কাছে সর্বশ্রেষ্ঠ ও পরমপবিত্র একটি ব্রতের কথা বলছি।

বৈশাখ মাসের শুক্লপক্ষীয়া একাদশী 'মোহিনী' নামে প্রসিদ্ধা। এই ব্রত প্রভাবে মানুষের সকল পাপ, দুঃখ ও মোহজাল অচিরেই বিনষ্ট হয়। তাই মানুষের উচিত সকল পাপক্ষয়কারী ও সর্বদুঃখবিনাশী এই একাদশী ব্রত পালন করা। একাগ্রচিত্তে তার মহিমা তুমি শ্রবণ কর। এই কথা শ্রবণমাত্রেই সমস্ত পাপ বিনষ্ট হয়।

পবিত্র সরস্বতী নদীর তীরে ভদ্রাবতী নামে সুশোভনা নগরী ছিল। চন্দ্রবংশজাত ধৃতিমান নামে এক রাজা সেখানে রাজত্ব করতেন। সেই নগরীতেই ধনপাল নামে এক বৈশ্য বাস করতেন। তিনি ছিলেন পুণ্যকর্মা ও সমৃদ্ধশালী ব্যক্তি। তিনি নলকূপ, জলাশয়, উদ্যান, মঠ ও গৃহ ইত্যাদি নির্মাণ করে দিতেন। তিনি ছিলেন বিষ্ণুভক্তি পরায়ণ ও শান্ত প্রকৃতির মানুষ। সুমনা, দ্যুতিমান, মেধাবী, সুকৃতি ও ধৃষ্টবুদ্ধি নামে তার পাঁচজন পুত্র ছিল। পঞ্চম পুত্র ধৃষ্টবুদ্ধি ছিল অতি দুরাচারী। সে সর্বদা পাপকার্যে লিপ্ত থাকত। পরস্ত্রী সঙ্গী, বেশ্যাসক্ত, লম্পট ও দ্যূতক্রীড়া প্রভৃতি পাপে সে অত্যন্ত আসক্ত ছিল। দেবতা, ব্রাহ্মণ ও পিতা-মাতার সেবায় তার একেবারেই মতি ছিলনা। সে অন্যায় কার্যে রত, দুষ্টস্বভাব ও পিতৃধন ক্ষয়কারক ছিল। সবসময় সে অভক্ষ ভক্ষণ ও সুরাপানে মত্ত থাকত।

পিতা ধনপাল একদিন পথ চলছিলেন। হঠাৎ তিনি দেখতে পেলেন ধৃষ্টবুদ্ধি এক বেশ্যার গলায় হাত রেখে নিঃসংকোচে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তার নির্লজ্জ পুত্রকে এইভাবে চৌরাস্তায় ভ্রমণ করতে দেখে তিনি অত্যন্ত মর্মাহত হলেন। এই কুস্বভাব দর্শনে ক্রুদ্ধ হয়ে তিনি তাকে গৃহ থেকে বের করে দিলেন। তার আত্মীয়-স্বজনও তাকে পরিত্যাগ করল। সে তখন নিজের অলংকারাদি বিক্রি করে জীবন যাপন করত। কিছুদিন এইভাবে চলার পর অর্থাভাব দেখা দিল। ধনহীন দেখে সেই বেশ্যাগনও তাকে পরিত্যাগ করল।

অন্নবস্ত্রহীন ধৃষ্টবুদ্ধি ক্ষুধা-তৃষ্ণায় অত্যন্ত কাতর হয়ে পড়ল। অবশেষে নিজের গ্রামে সে চুরি করতে লাগল। একদিন রাজপ্রহরী তাকে ধরে বন্দী করল। কিন্তু পিতার সম্মানার্থে তাকে মুক্ত করে দিল। এভাবে বারকয়েক সে ধরা পরল ও ছাড়া পেল। কিন্তু তবুও সে চুরি বন্ধ করল না। তখন রাজা তাকে কারাগারে বদ্ধ করে রাখলেন। বিচারে সে কষাঘাত দন্ড ভোগ করল। কারাগারের পর অনন্য উপায় ধৃষ্টবুদ্ধি বনে প্রবেশ করল। সেখানে সে পশুপাখি বধ করে তাদের মাংস ভক্ষণ করে অতি দুঃখে পাপময় জীবন যাপন করতে লাগল।

দুষ্কর্মের ফলে কেউ কখনও সুখী হতে পারে না। তাই সেই ধৃষ্টবুদ্ধি দিবারাত্রি দুঃখ শোকে জর্জরিত হল। এভাবে অনেকদিন অতিবাহিত হল। কোন পুণ্যফলে সহসা একদিন সে কৌণ্ডিন্য মুনির আশ্রমে উপস্থিত হল। বৈশাখ মাসে ঋষিবর গঙ্গাস্নান করে আশ্রমের দিকে প্রত্যাবর্তন করছিলেন। শোকাকুল ধৃষ্টবুদ্ধি তার সম্মুখে উপস্থিত হল। ঘটনাক্রমে ঋষির বস্ত্র হতে এক বিন্দু জল তার গায়ে পড়ল। সেই জলস্পর্শে তার সমস্ত পাপ দূর হল। হঠাৎ তার শুভবুদ্ধির উদয় হল।

ঋষির সামনে সে কৃতাঞ্জলিপুটে প্রার্থনা করতে লাগল 'হে ঋষিশ্রেষ্ঠ! যে পুণ্য প্রভাবে আমি এই ভীষণ দুঃখ যন্ত্রণা থেকে মুক্তি লাভ করতে পারি, তা কৃপা করে আমাকে বলুন। '

ঋষিবর বললেন--'বৈশাখ মাসের শুক্লপক্ষে মোহিনী নামে যে প্রসিদ্ধ একাদশী আছে, তুমি সেই ব্রত পালন কর। এই ব্রতের ফলে মানুষের বহু জন্মার্জিত পর্বত প্রমাণ পাপরাশিও ক্ষয় হয়ে থাকে। '
মহামুনি বশিষ্ঠ বললেন-- কৌণ্ডিন্য ঋষির উপদেশ শ্রবণ করে প্রসন্ন চিত্তে ধৃষ্টবুদ্ধি সেই ব্রত পালন করল।

হে মহারাজ রামচন্দ্র! এই ব্রত পালনে সে নিষ্পাপ হল। দিব্যদেহ লাভ করল। অবশেষে গরুড়ে আরোহণ করে সকল প্রকার উপদ্রবহীন বৈকুণ্ঠধামে সে গমন করল। হে রাজন! ত্রিলোকে মোহিনী ব্রত থেকে আর শ্রেষ্ঠ ব্রত নেই। যজ্ঞ, তীর্থস্থান, দান ইত্যাদি কোন পুণ্যকর্মই এই ব্রতের সমান নয়। এই ব্রত কথার শ্রবণ কীর্তনে সহস্র গোদানের ফল লাভ হয়।

আসুন নিজে একাদশী ব্রত পালন করি এবং অন্যকেও একাদশী পালনে উৎসাহিত করি।

পারনঃ
পরের দিন সকাল বাংলাদেশ সময় ৫:২০ থেকে ৯:৩৪ মিনিটের মধ্যে এবং পশ্চিমবঙ্গ সময় ৪:৫৫ থেকে ৯:১৭ মিনিটের মধ্যে।

***একাদশীর পারন মন্ত্র***
একাদশ্যাং নিরাহারো ব্রতেনানেন কেশব।
প্রসীদ সুমুখ নাথ জ্ঞান দৃষ্টি প্রদো ভব।।
অথবা
অজ্ঞান তিমিরান্ধস্য ব্রতেনানেন কেশব।
প্রসীদ সুমুখো নাথ জ্ঞানদৃষ্টিপ্রদো ভব।।

এই মন্ত্র পাঠ করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পারন করতে হয়। অন্যথায় একাদশীর ফল লাভ হয় না।

হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে।
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে।।

16/05/2024

জয় শ্রীনৃসিংহদেব🙏
আগামী ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ ।। ২২ মে ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ রোজঃ বুধবার শ্রীনৃসিংহ চতুর্দশী ব্রত।

যে ব্যক্তি নৃসিংহ চতুর্দশী ব্রত দিন জেনেও নৃসিংহ চতুর্দশী ব্রত পালন করে না, চন্দ্র সূর্য যতদিন রয়েছে ততদিন তাকে নরক যন্ত্রণা ভোগ করতে হবে। ভগবান নৃসিংহদেব এটি উল্লেখ করেছেন।

ভগবানের ভক্ত প্রহ্লাদ মহারাজ কে রক্ষা করার জন্য এবং হিরণ্যকশিপু বধ করার জন্য তিনি আবির্ভূত হয়েছিলেন।

এই দিন সকলেরই ব্রত পালন করা কর্তব্য। আমরা আলোচনা করব - কিভাবে নরসিংহ চতুর্দশী ব্রত পালন করতে? হয় এবং গৃহে কিভাবে আপনারা ভগবান নৃসিংহদেবকে পূজা নিবেদন করবেন? কিভাবে অভিষেক করবেন? এবং নৃসিংহ চতুর্দশী ব্রত মাহাত্ম্য।

বৃহৎ নরসিংহ পুরাণে ভগবান শিব, ভক্ত প্রহ্লাদ মহারাজ কে বলেছেন -
বর্ষে বর্ষে তু কর্তব্যং মম সন্তুষ্টি কারণম্।
মহা ণ্ডহ্যমিদং শ্রেষ্ঠং মানবৈর্ভবভীরুভিঃ।।

প্রতি বছর আমার সন্তুষ্টির জন্য এ নরসিংহ চতুর্দশী ব্রত পালন করা সকলের কর্তব্য। ভগবান নৃসিংহদেব সেটি উল্লেখ করেছেন। জন্ম - মৃত্যুর চক্রের ভয়ে ভীত যে সকল মানুষ তারা এই ব্রত পালন করার মাধ্যমে তারা ভগবানের প্রতি ভক্তি লাভ করতে পারে। এই ব্রত হচ্ছে অত্যন্ত গোপনীয় এবং শ্রেষ্ঠ ব্রত। ভগবান শ্রী নৃসিংহদেব তিনি আরো বলেছেন যে এই ব্রত সকলেরি পালন করা কর্তব্য যে ব্যক্তি আমার ব্রত দিন জেনেও এই আমার ব্রত পালন করে না, চন্দ্র সূর্য যতদিন রয়েছে ততদিন তাকে নরক যন্ত্রণা ভোগ করতে হবে।

তবে আমার ভক্তরা স্বভাবতই এই ব্রত পালন করে থাকেন কিন্তু প্রত্যেকেরি এই ব্রত পালনের অধিকার রয়েছে এবং প্রত্যেকেই ব্রত পালন করা কর্তব্য।

তো তখন প্রহ্লাদ মহারাজ ভগবান শ্রী নৃসিংহদেবকে জিজ্ঞাসা করলেন - হে ভগবান, হে নৃসিংহদেব, হে সকল দেবতাদের আরাধ্য আপনি আমাকে কৃপা করে বলুন আমি কিভাবে আপনার ভক্ত হলাম এবং কিভাবে আপনার প্রতি আমার এত ভক্তি জন্মেছি! আমি পূর্ব জন্মে কি ছিলাম! কি রকম ছিলাম! কি রকম ভক্তি সাধন করেছিলাম! সেই সম্বন্ধে আমি জানতে ইচ্ছুক আপনি কৃপা পূর্বক আমাকে তা বর্ণনা করুন।

তখন ভগবান শ্রী নৃসিংহদেব প্রহল্লাদ মহারাজকে কে বললেন - হে প্রহল্লাদ তুমি পূর্ব জন্মে ব্রাহ্মণ ছিলে। তুমি ব্রাম্মন পুত্র ছিল এবং তুমি যে ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছে এবংতোমার পিতা ছিল বেদজ্ঞ ব্রাহ্মণ। তার নাম ছিল বসুর্শমা সে অত্যন্ত ধর্ম ধর্মপরায়ণ ও ন্যায়পরায়ণ ছিল। সে প্রতিনিয়ত বেদ পাঠ করত এবং সে পূজার্চনা করত। তোমার মা তিনিও ছিলেন সুশীলা ধর্মপরায়ণা সতী-সাধ্বী।

তোমার পিতার অর্থাৎ বসুর্শমার পাঁচ পুত্র ছিল। তার মধ্যে প্রথম চার পুত্র তারাও ছিল সদাচারী বিদ্বান পিতৃভক্ত এবং ধর্মপরায়ন কিন্তু কনিষ্ঠপুত্র টি ছিলে তুমি। তোমার নাম ছিল বসুদেব। তুমি কোন ধর্ম কর্মের অনুষ্ঠান করনি এবং তুমি ছিলে অসদাচারী এবং তুমি সর্বদা কামে আসক্ত ছিলে এবং সূরাপায়ী ছিলে। তুমি সবসময় পাপ কর্মে রত ছিলে এবং তুমি সর্বদা পতিতা গৃহে অবস্থান করতে।

একদিন তুমি তোমার পতিতা বান্ধবীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়েছিলে এবং প্রথমদিকে তোমাদের সম্পর্কটা ভালোই কাটছিল কিন্তু হঠাৎ কোনো এক কারণে তোমাদের মধ্যে মনোমালিন্য এবং কলহ বাঁধে। সে কারণে তোমরা দুইজন দুই দিকে চলে যাও এবং তোমরা কেউ কারো সঙ্গে কোন কথা বলনি এবং সেদিন তোমরা কোন কিছু আহার করনি এবং তোমাদের মন অত্যন্ত খারাপ ছিল। তো তুমি তখন হাঁটতে হাঁটতে ধ্বংসাবশেষ একটি গৃহে উপস্থিত হলে সেটি ছিল পুরো ভগ্নাবশেষ এবং ইট পাথরের তৈরি। তো তুমি সেই গৃহে অবস্থান করলে এবং সমগ্র দিনটি অনাহারে ছিল এমনকি জল পর্যন্ত তুমি গ্রহণ করোনি।

এবং একটা সময় তুমি ক্রন্দন করতে লাগলে। এবং আমার নিকট প্রার্থনা করতে লাগলে যে হে ভগবান আমার ভাইয়েরা কত সুন্দর। আমার মা-বাবা তারা কত ধর্মপরায়ণ ও ন্যায়পরায়ণ সদাচারী। তারা সর্বদা বেদ পাঠ করে, তোমার পূজা করে, আমার ভাইয়েরাও কত সুন্দর ভাবে তোমার পূর্জা-অর্চনা করছে এবং পিতা-মাতার আদেশ পালন করছে কিন্তু আমার কেন এরকম দশা হলো? আমি অসদাচারী, আমি পাপাচারী, আমি সুরাপায়ী, আমি কামাসক্ত। আমার কিভাবে এই দশা হল এবং প্রহল্লাদ তুমি তখন ভগবানের কাছে আকুল প্রার্থনা করতে লাগলে ও ক্রন্ধন করতে লাগলে।

এই ভাবে বলতেছিলে যে, হে ভগবান আমি আমার এই অবস্থা থেকে মুক্ত হতে চাই। আমি আবার তোমার সেবায় যুক্ত হতে চাই। আমাকে উন্নত জীবন প্রদান করুর। এই ভাবে তুমি ক্রন্ধন করছিল এবং প্রার্থনা করেছিলে। সৌভাগ্যক্রমে তুমি যে ভগ্নাবশেষ সম্বলিত গৃহে অবস্থান করছিলেন সেটাই ছিল আমার একটি মন্দির। অত্যন্ত পুরনো একটি মন্দির তুমি সেখানে অবস্থান করছিলে এবং সৌভাগ্যক্রমে সেই দিনটি ছিল বৈশাখ মাসের শুক্লপক্ষের চতুর্দশী তিথি। আমার আবির্ভাব তিথি। নৃসিংহ চতুর্দশী দিন এবং তুমি সারাদিন অনাহারী ছিলে কিছুই খাওনি তোমার অজান্তেই উপবাস হয়ে গিয়েছিল এবং যেহেতু তুমি আমার নিকট প্রার্থনা করেছিলে তাতেই আমি সন্তুষ্ট হয়েছি অজান্তেই তোমার এই বিব্রত আমি গ্রহণ করেছি। এবং এর ফলে এ জন্মে তুমি আমার পরম ভক্ত হিসেবে জন্মেছো এবং তোমার সেই পতিতা বান্ধবী সেও ক্রন্দন করছিল সেও অনাহারী ছিল এবং সেও প্রার্থনা করেছিল আমার কাছে।

যে হে ভগবান পৃথিবীতে প্রত্যেকটি নারী কত প্রতি পরায়ণা পতিব্রতা সদাচারীনী এবং তারা কত সুন্দর ভাবে তোমার পূজার্চনা করছে কিন্তু আমি কোন কর্তব্যই সাধন করতে পারতেছিনা এবং আমাকে সমাজ ভালো চোখে দেখেনা। কেউ আমাকে ভালোবাসে না। আমাকে আপনি উন্নত জীবন প্রদান করুন এইভাবে তোমার বান্ধবী যখন প্রার্থনা করেছিল সেও সারা দিন উপবাস ছিল রাত্রি জাগরন করেছিল আর তুমিও রাত্রি জাগরন করেছিলে তোমরা কেউ কারো সঙ্গে কথা বলো নি কারো দিকে তাকাও নি তোমরা দুজন ২ দিকে ছিলে। তো সেই কারণে তোমাদের দুইজনেরই এই ব্রত পালন হয়েছে এবং তোমার বান্ধবী সেও এই ব্রত পালনের প্রভাবে সে স্বর্গের অপ্সরা জীবন লাভ করেছে।

তখন ভগবান শ্রী নৃসিংহদেব প্রহল্লাদ মহারাজকে আরো বলতে লাগলেন হে প্রহল্লাদ সৃষ্টি শক্তি লাভের উদ্দেশ্যে ব্রহ্মা এই ব্রত পালন করেছিল। ত্রিপুরাসুরকে বধ করার জন্য শিব এই ব্রত পালন করেছিল। সর্বসুখ লাভ করার জন্য সকল দেবতারা পূর্বজন্মে এই ব্রত পালন করেছিল এবং তোমার বান্ধবী ব্রত পালন করে অপ্সরা জীবন লাভ করে ত্রিলোকে সুখচারী হয়েছে এবং তুমিও এই ব্রত পালন করে আমার পরম ভক্ত রূপে তুমি জন্ম নিতে পেরেছ। তো এই ব্রত সকলেরই পালন করা কর্তব্য এবং যারা এই ব্রত পালন করবে তারা এ জন্মে সুখ ভোগ করতে পারবে এবং ভক্তি লাভ করতে পারবে এবং মুক্তি লাভ করতে পারবে।

এজন্যে তারা দীর্ঘায়ু লাভ করতে পারবে, যারা ধনহীন তার ধন লাভ করতে পারবে, যারা পুত্রহীন তারা সুপুত্র লাভ করতে পারবে এবং যারা যশহীন দ্বারা যশলাভ করতে পারবে, যারা তেজহীন তারা তেজস্বী হতে পারবে, মহা তেজশালী হতে পারবে, যারা রাজ্য হারিয়েছে তারা রাজ্য ফিরে পাবে তো এই ভাবে যারা আমার ব্রত পালন করবে নিষ্ঠা সহকারে তারা এ জন্মেও অত্যন্ত সুখ লাভ করতে পারবে এবং পরজন্মে তারা আমার আমার নিত্য চিন্ময় ধামে তারা ফিরে আসতে পারবে। তাই এই ব্রত সকলেরি পালন করা কর্তব্য। কিন্তু কিছু অসাদাচারী লোক তারা আমার ব্রত পালনে রুচিপূর্ণ হয়না তার আমার ব্রত পালন করেনা কিন্তু সকলেরই এই পালন করা কর্তব্য।

আসুন আমরা সকলেই ব্রত এই পালন করি। এতক্ষন আমরা আলোচনা করলাম শ্রীনৃসিংহ চতুর্দশী ব্রত মাহাত্ম্য।

কিভাবে আপনি গৃহে এই ব্রত পালন করবেন? ভগবান শ্রী নৃসিংহদেবের অভিষেক করবেন? কিভাবে পূজা করবেন? সে সম্বন্ধে এখন আমি আলোচনা করব।

যারা আপনার আমিষভোজী রয়েছেন তারাও এই ব্রত পালন করতে পারবেন। আপনারা নৃসিংহ চতুর্দশীর আগের দিন নিরামিষ আহার গ্রহণ করবেন। ভগবত প্রসাদ গ্রহণ করবেন ভগবানকে ভোগ নিবেদন করে অন্য প্রসাদ গ্রহণ করে এবং ব্রাহ্ম-মুহূর্তে অর্থাৎ সূর্যোদয়ের পূবে দেড় ঘন্টা শর্য্য ত্যাগ করবেন। এই নৃসিংহ চতুর্দশীর দিনে আপনারা অধিক হরিনাম জপ করবেন এবং সারাদিন আপনার উপবাস পালন করবেন। যারা অসমর্থ তাদেরকেও নির্দেশ দেয়া হয়েছে কমপক্ষে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপবাস পালন করতে হবে। সন্ধ্যা পর্যন্ত উপবাস পালন করার পর যারা অসমর্থ তারা সন্ধ্যার পর নৃসিংহদেবের অভিষেক করার পর পূজা করার পর আরতি করার পর আপনি সন্ধ্যার পরে অনুকল্প প্রসাদ গ্রহণ করতে পারবেন। যেমন - ফল, জল, বাদাম, দুধ, অর্থাৎ একাদশীর মতো অনুকল্প প্রসাদ আপনি সন্ধ্যার পর গ্রহণ করতে পারেন। এবং পরদিন সকালে অন্য প্রসাদ গ্রহণ করে পারন সম্পন্ন করতে হবে।

এই নৃসিংহ চতুর্দশীর দিন নৃসিংহ স্তব পাঠ কারবেন, নৃসিংহ কবজ পাঠ করবেন, নৃসিংহদেবের অষ্টোত্তর শতনাম পাঠ করবেন এবং নৃসিংহদেবের সুন্দর সুন্দর লীলা রয়েছে সেই লীলা মহিমা পাঠ করবেন ও শ্রবন করবেন এবং সমগ্র দিনটি আপনার নৃসিংহদেবকে নিয়ে অতিবাহিত করবেন।
কিভাবে আপনারা গৃহে ভগবান নৃসিংহদেবের পূজা করবেন?
আপনারা প্রথমে মঙ্গলারতি করবেন করার পর জব করবেন এরপর ভগবান শ্রী শ্রী নৃসিংহ দেবের অর্চন করবেন। লক্সমি নৃসিংহ বিগ্রহ অথবা প্রহল্লাদ ও নৃসিংহ বিগ্রহ অর্চন করতে পারেন। যদি আপনাদের বিগ্রহ না থাকে তাহলে আপনারা ভগবান নৃসিংহদেবের চিত্র পঠে অর্চন করবেন এবং ভোগ নিবেদন করবেন।

এই নৃসিংহ চতুর্দশীর দিনে বিশেষ পূজা নিবেদন করতে হবে সন্ধার সময়। তো আপনারা বিকেলের দিকে পবিত্র নদীতে স্নান করবেন অথবা আপনারা গৃহে স্নান করতে পারেন ”ওম গঙ্গা, ওম গঙ্গা, ওম গঙ্গা” উচ্চারণ পূর্ব এবং স্নান করে আপনার গৃহে এসে ভূমি লেপন করবেন এবং সেখানে অষ্টদল পদ্ম রচনা করবেন এবং সে পদ্মের উপর আপনি রত্ন যুক্ত তামার কলসী স্থাপন করবেন।

যারা রত্ন যুক্ত তামার কলসী স্থাপনা করতে পারবেন না তাদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা রয়েছে। তো রত্ন যুক্ত তামার কলসি স্থাপন করার পর কলসীর উপর চাল ভর্তি পাত্র রাখতে হবে এবং সে পাত্রের উপর লক্সমি নৃসিংহ বিগ্রহ স্থাপন করতে হবে।

যারা তামার পাত্র রাখতে না পারবেন তারা যে অষ্টদল পদ্ম রচনা করেছেন। সে পদ্মের আপনি ভগবান শ্রীনৃসিংহদেবের বিগ্রহ স্থাপন করতে পারবেন। অথবা প্রহ্লাদ নৃসিংহ বিগ্রহ স্থপন করতে পারবেন। যদি বিগ্রহ না থাকে তাহলে আপনি সেখানে নৃসিংহদেবের চিত্রপট স্থাপন করতে পারবেন।

এরপর আপনি ভোগ নিবেদন করবেন। এরপর আপনি ভগবান নৃসিংহদেবের অভিষেক করবেন। অভিষেকের সময় আপনি পঞ্চামৃত অর্থাৎ দুধ, দই, মধু এবং চিনি। এই পঞ্চামৃত সহযোগে অভিষেক করবেন।
পঞ্চম ফলের রস সংগ্রহ করতে না পারলে যে ফলের রস আপনার সংগ্রহ করতে পারবেন সেটা দিয়ে ভগবান শ্রীনৃসিংহদেবের অভিষেক করবেন। এবং করার পর আপনার মহা আরতি করবেন, হরিনাম সংকীর্তন এবং এরপর নৃসিংহদেবকে মহা ভোগ নিবেদন করবেন। ভোগ নিবেদন করে আপনারা অনুগল্প প্রসাদ গ্রহণ করতে পারবেন। যাদের পক্ষে সমর্থন তারা সারাদিন সারারাত অনাহারে উপবাস থাকতে পারেন। আর অসমর্থ তারা সন্ধ্যার পর অভিষেকের পর আপনারা ফল, জল, দুধ ও বাদাম প্রভৃতি অনুকল্প প্রসাদ গ্রহণ করতে পারবেন।

আপনারা চেষ্টা করবেন রাত্রি জাগরন করার এবং রাত্রি জাগরণ করে নৃসিংহদেবের স্তব পাঠ করবেন। নৃসিংহদেবের কবজ পাঠ করা, হরি নাম করা এবং নৃসিংহদেবের লীলা শ্রবণ করা এবং পরদিন ব্রহ্ম মূহূর্তে বিছনা ত্যাগ করে স্নান করে মঙ্গল আরততে অংশগ্রহণ করবেন হরিনাম জপ করবেন এবং সকাল বেলা আপনারা অন্য প্রসাদ গ্রহণ করে পারন সম্পন্ন করবেন।

এইভাবে আপনারা গৃহে ভগবান শ্রীনৃসিংহদেবের পূজা সমার্পন করতে পারবেন এবং অভিষেক করতে পারবেন এবং এই দিন আপনার নৃসিংহ চর্তুদশী ব্রত পালন করে আপনারা আপনাদের জীবনকে সাফল্যমন্ডিত করতে পারবেন।

যেহেতু ভগবান নৃসিংহদেব উল্লেখ করেছেন যে ব্যক্তি আমার এই চতুর্দশী ব্রত জেনেও পালন করবে না। তাকে চন্দ্র সূর্য যতদিন রয়েছে ততদিন নরক যন্ত্রণা ভোগ করতে হবে। তাই সাধু সাবধান আপনি নিজে পালন করুন আপনার পরিবারকে উৎসাহিত করুন আপনার বন্ধু-বান্ধবকে উৎসাহিত করুন তারা যেন এই নৃসিংহদেবের চর্তুদশী ব্রত পালন করে এবং উপবাস প্রতিপালন করে এবং ভগবান নৃসিংহদেবের অকৃত্তিম কৃপা যেন তারা লাভ করে।

যদি আপনার কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে জয় সনাতন পেজে জিজ্ঞাসা করুন এবং পেজে লাইক দিন সকল প্রশ্ন আমাদের জানাতে পারেন। ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন, আমাদের সঙ্গে থাকুন।

🙏জয় শ্রীনৃসিংহদেব🙏
ভূল ত্রুটি মার্জনীয়। সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ্য থাকবেন আমাদের সঙ্গে থাকবেন। ধন্যবাদ সবাইকে

Address

Siliguri Westbengal
Westbengal
734003

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Adhir Adhikari posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Adhir Adhikari:

Share

Category