ლ স্বর- ব্যঞ্জ ლ

ლ  স্বর- ব্যঞ্জ ლ only for you........... ......

01/04/2025

জীবনে কখনো কি কোন মৃতকে গোসল করিয়েছেন? সুযোগ পেলে মৃতদের গোসল করাবেন, খুব কাছ থেকে দেখবেন মৃত্যুর পরে মানুষের দেহটা কত অসহায় হয়, মৃত্যুর পরে মানুষের মৃতদেহ কতটা ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

সুযোগ পেলে রাতে লাশ পাহারা দিবেন। তখন বুঝতে পরবেন মৃত্যুর পরে প্রিয় মানুষটার লাশ রাতের বেলা আপনার কাছে কত অদ্ভুত লাগে, কত ভয়ের কারণ হয়ে উঠে, কত আতঙ্কের কারণ হয়ে যায়।

সুযোগ পেলে মৃত ব্যাক্তির শরীরে একটু হাত লাগিয়ে কিছুক্ষণ স্পর্শ নিবেন। আপনি তখন উপলব্ধির সুযোগ পাবেন এই পৃথিবীতে বিশাল প্রভাব-প্রতিপত্তি রেখে যাওয়া মানুষগুলো মৃত্যুর পরে কত নির্জীব রূপ ধারন করে।

সুযোগ পেলে আপনজনদের লাশ কবরে নামাবেন- খুব আগ্রহ নিয়ে শেষবারের মতো মৃতদেহের মুখটি দেখার চেষ্টা করবেন এবং বারবার উপলব্ধির চেষ্টা করবেন এই মৃতদেহের সাথে অনন্তকালের যাত্রার পথে এটাই আপনার জীবনের শেষ দেখা।

জীবনে সুযোগ পেলে মাঝেমধ্যে কবরস্থানে গিয়ে নিরবে কিছুক্ষণ দাঁড়াবেন। এরপর মনে মনে চিন্তা করবেন জীবনের লাভ ক্ষতির হিসাবে এই মৃত মানুষগুলো এই পৃথিবীতে কি করে গেছেন? কাদের রেখে গেছেন? যাদের রেখে গেছেন তারা কি কখনও এই মৃত মানুষগুলোকে স্মরণ করার জন্য কবরস্থানের আশেপাশে আসে?

আমাদের সবার শরীরেই কমবেশী রক্তকণা আছে। একথা চিরসত্য যে আমাদের শরীরের প্রতিটি রক্তকণা শরীরে খুবই গুরুত্ব বহন করে। অথচ আমাদের শরীর থেকে কোন রক্তকণা বেরিয়ে গেলে সেটির যেমন কোন গুরুত্ব থাকে না তদ্রুপ আমাদের দেহ থেকে প্রাণটা বেরিয়ে গেলে আমাদের শরীরেরও অন্যের কাছে কোন মূল্য থাকে না।

আমাদের জীবনটা বড় বৈচিত্রময়। বেঁচে থাকতে আমরা এর জন্য ওর জন্য কত মায়া দেখাই, কত ভালবাসা দেখাই। এ আমার ছেলে তো সে আমার মেয়ে, এ আমার ভাই তো সে আমার বোন। অথচ মরে গেলে এই মানুষগুলোই সবার আগে তোড়জোড় শুরু করে কিভাবে মৃতকে দাফন করা যায়! কত দ্রুত মৃতকে কবরস্থ করা যায়! সেই চিন্তায় সবাই তটস্থ থাকে।

আমাদের জীবনটা আসলেই সাময়িক। এই সাময়িক জীবনটা মাত্র চল্লিশ-পঞ্চাশ-ষাট অথবা বড়জোর সত্তর বছরের সমষ্টি। অথচ এই জীবনে আমরা কখনো মৃত্যুর কথা না ভেবে কিভাবে অঢেল সম্পদ অর্জন করা যায় সেই চিন্তায় সর্বদা বিভোর থাকি।

এই পৃথিবীতে যার অঢেল সম্পদ আছে সে আরো সম্পদ চায়। যার সম্পদ নেই সে সম্পদ নেই ভেবে সর্বদা দুশ্চিন্তায় সময় কাটায়। আমাদের ১০% মানুষ ব্যতীত ৯০% মানুষেরই ধান্ধা ইহকাল আগে এবং পরকাল পরে। সম্পদ আগে এবং ইবাদত পরে।

এজন্য আমরা প্রায় সবাই দিনরাত চেষ্টা করি যে যেভাবে পারি, চুরি করে অথবা ডাকাতি করে অথবা অন্য কোন উপায়ে যাকে তাকে ঠকিয়ে যেভাবে পারি আগে সম্পদ অর্জন করি। এরপর এই অবৈধ সম্পদের অর্থে কয়েকবার হজ করে, মসজিদ মাদরাসায় বড় অংকের টাকা দান করে, গরীব এতিমখানায় খাইয়ে, বিভিন্ন দাতব্য সংস্থায় দানখয়রাত করে একেবারে বেহেস্ত কনফার্ম হয়ে যাবে।

রমাদান মাসে সারা পৃথিবীর মানুষ যেখানে ইবাদত মশগুলে সময় পার করে সেখানে বাংলাদেশের অনেকেই কিভাবে একে অন্যকে ঠকানো যায় সেই চিন্তায় ব্যস্ত থাকে। আমাদের দেশে সবাই মুসল্লি। মসজিদ মুসল্লিতে ভরপুর। কিন্তু ঈমানী শক্তিতে আমাদের মনোবল খুবই দুর্বল।

আমাদের দেশে যে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে, যে সর্বদা নিজেকে ইসলামি ব্যক্তি হিসাবে সবখানে জাহির করে সেও সুযোগ পেলে সাধারণ কিছু টাকা-পয়সার কাছে হঠাৎ নিজেকে হারিয়ে ফেলে। এজন্য বলি যে মৃত্যু চিরসত্য সে মৃত্যু নিয়ে আমরা খুব কমই চিন্তা করি।

আমাদের সততা সাধারণ টাকার কাছেই প্রতিনিয়ত হেরফের হয়ে যায়। অথচ মৃত্যুর পর একজন মৃত ব্যক্তির কি হিসাব নিকাশ শুরু হবে সেটি উপলব্ধি করতে পারলে আমরা কিছুতেই এত খারাপ হতাম না, আমরা কিছুতেই অন্যের হক মারার চিন্তা করতাম না, এমনকি আমরা কিছুতেই অন্যের সাথে দুর্ব্যবহারের চিন্তা করতাম না। মহান প্রভু সবাইকে এই বিষয়টি উপলব্ধির সুযোগ দিন। আমিন🤲
CR
Ramiz Sikder

22/03/2025

বাতেন আগে মুরগী চুরি করতো। ধরা খেয়ে উদুম কেলানি খায় একদিন।

তারপর থেকে এখন মুরগীর ডিম চুরি করে। ডিম চুরি করে ভালোই চলছে দিনকাল তার।
প্রতি গৃহস্থ বাড়িতে দিনের বেলায় তার তীক্ষ্ণ নজর থাকে। মোরগের সাথে মুরগী কম্বিনেট হওয়ার পর থেকেই বাতেন সেই মুরগী নজরে নজরে রাখে।

মুরগী কক কক করে পাশের বাড়ির মোরগ কে জানান দেয়া মাত্রই বাতেন বুঝতে পারে সময় হয়েছে।
এইবার ডিমগুলো তার হস্তগত করতে হবে। বাতেন অতি সন্তপর্নে খোয়ারের দরজা খুলে তার লুঙ্গীর নিচের ডিম বন্ধনীতে ডিম গুলো সযত্নে রাখে আরও দুটি ডিমের সাথে।

খোয়ারের পেছনেই যে বিলেতি কু*ত্তা টনি ব্লেয়ার এর খোয়ার ছিলো তা আর বাতেনের নজরে পড়ে নাই।
সেই কু*ত্তা বাতেন কে দৌড়ানি দেয়। বাতেন দৌড়ানি খেয়ে খেজুর গাছে ওঠে পড়ে। খেজুরের গাছে ওঠা চাট্টিখানি কথা না।

বাতেনের নিজের ব্যক্তিগত ডিম সহ সব ডিম ভেঙ্গে খান খান হয়ে যায়। কথা বলতে পারে না বাতেন। শোকে পাথর হয়ে গেছে সে। আর খেজুরের কাটা তো তার পশ্চাৎদেশ কবেই ছিন্ন ভিন্ন করে দিয়েছে।

রাগে গজ গজ করতে করতে বাতেন গালি দেয়,“কু*ত্তার বাচ্চা”।
নিচে টনি ব্লেয়ার ঘেউ ঘেউ করে গালি শুনে।

নাহ বাতেনের আর নিস্তার নেই। এখান থেকে পালানোর পথ খুঁজছে সে। লাফ দিয়ে নিচে পড়ে দৌড় লাগাবে সে উপায়ও নেই। কু*ত্তার বাচ্চা টনি ব্লেয়ার এর সাথে বাতেন দৌড়ে পারবে না এখন আহত অবস্থায়।

বাতেন পরিকল্পনা পাল্টায়, বাতেন জানে পোষা কুকুরদের কিছু ছুড়ে মারলে সেটা গিয়ে সে আবার ফেরত নিয়ে আসে।
তাই বাতেন তার ডিম বন্ধনী থেকে একটা ভাঙ্গা ডিম খুলে ছুড়ে মারে দূরে।

কিন্তু কি আশ্চর্য! টনি ব্লেয়ার যাচ্ছে না। সে ঘেউ ঘেউ করেই যাচ্ছে। মনে হচ্ছে ডিম থেকে আশ্চর্যজনক কিছু সে এখানে দেখতে পেয়েছে।

তখনই তার খেয়াল হলো তার লুঙ্গির নিচে পুরোটাই ফাঁকা।ছেড়া লুঙ্গি বাতাসে পত পত করে উড়ছে।
বাতেন এতোক্ষন বুঝতে পারে নি। খেজুরের কাটা বিধে তার নিচের অংশ অবশ হয়ে আছে।

এখন নিচে তাকিয়ে দেখে বুঝতে পারে কি ভয়ংকর দৃশ্য টাই না এতোক্ষন ধরে কুকুর নামের জা*নোয়ার টা পরী-ধ*র্ষণ করছে। কুকুর টা বোধ হয় এর থেকে ভয়ংকর কিছু কোন দিনও দেখে নি।

নাহ বাতেন এর মাথায় আর কোন পরিকল্পনা আসে না। সে আহত অবস্থায় খেজুর গাছের মাথায় ঝুলে থাকে।

টনি ব্লেয়ার এর ক্ষুধা পেলে সে খেজুর গাছের নিচ থেকে প্রস্থান করে। যাওয়ার সময় পেছন ফিরে বাতেনের দিকে আবার তাকায়। বোধ হয় কথা বলতে পারলে বলতো,"হা*লা বাতেইন্না সী ইউ টুমরো।”

বাতেনের উপর এই কুকুরের মতো মানুষেরও প্রচুর ক্ষোভ। কেউ তাকে দেখতে পারে না। তাকে এক ঘরে করেও রাখা যায় না। সে কোন না কোন দূর্ঘটনা ঘটাবেই।

এরপর গ্রামবাসি বাতেন কে খেজুর গাছ থেকে নামিয়ে ডিম চুরি করার অপরাধে তাকে এক ঘরে করে রাখে এলাকার মেম্বারের ঘরের পাশের এক ঘরে। কারন তার কোন নিজস্ব বাড়ি ঘর নাই।

সে এলাকার ছেলে বলে সবাই বলতো আমার বাড়ি ই তোর বাড়ি কিছু লাগলে আমার বাড়িতে আসিস তারপরও চুরি চামারি করিস না। চোরে না শোনে ধর্মের বানী। তাই সে সবার বাড়ি কে নিজের বাড়ি মনে করে চুরি করে।

এরপর মেম্বার ই তার দেখা শোনা করে। নজরে নজরে রাখে বাতেন কে।
মেম্বার না থাকলে তার মেয়ে বিলকিস বাতেন কে নজরে নজরে রাখে।

এই নজরে নজরে রাখতে গিয়ে বাতেনের নজরে বিলকিস পরে যায়। বিলকিসও সেই বদ নজর থেকে মুক্তি পায় না আর। এভাবে দু জনের নাজরানা হয়ে যায়। বিলকিস এর মনে লক হয়ে যায় বাতেন। বিলকিস চাবি দিয়ে খুলে দেয় তালা লাগানো দরজা। বাতেন পায় মুক্তি।

বাতেন বিলকিস কে কান্ধে করে নিয়ে পালিয়ে যায়। বিয়ে হয় মেম্বারের মেয়ে বিলকিসের সাথে মুরগী চোর বাতেনের।

অনেক দিন কেউ তাদের খোঁজ পায়নি। মেম্বার তার একমাত্র মেয়েকে হারানোর পর এখন চেয়ারম্যান হয়ে গেছে। কিন্তু তার মেয়ে আর তার কাছে ফিরে আসে না।

এর বহুদিন পর বিলকিস তার নিজ গ্রামে আসে। তখন বিলিকিসের পেটে কুদ্দুসের সন্তান!

ইন্টারভেলস🙂
----------
বাতেন বিলকিস কে নিয়ে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করার কিছু দিন পর তারা হানিমুনে যায় যাত্রাবাড়ীর "প্লে ইউথ মি" নামক কটেজে। ফেরার পথে রিক্সায় উঠে ভাড়া বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।

কিন্তু বাস্তবতা বড়ই কঠিন। চুরির সব জমানো টাকা এ কদিন ধুমসে খরচের পর বাতেনের ফুটা পকেটে এখন কানা সিক্কাও নাই। কিন্তু রিক্সাওয়ালা কুদ্দুসের লুঙ্গির চিপায় হাজার টাকার কচকচে নোট ঝলমল করছে যা বিলকিসের নজর এড়ায় না।

গন্তব্য শেষ হওয়ার পর বাতেন রিক্সা ভাড়া দিতে পারে না। কুদ্দুসের পা জড়িয়ে ধরে ভাড়া মাফ করে দিতে বলে বাতেন। কুদ্দুস আবার লোক ভালো।
সে বলে, ঠিক আছে তোর বউ কে আমার হাতে তুলে দিলে তোর ভাড়া মাফ।

বাতেন বলে,“ওকে পাওয়ার জন্য আমি অনেক স্ট্রাগল করছি, ও আমার বিয়ে করা বউ। এভাবে আমি ওকে ছাড়তে পারবো না রিক্সাওয়ালা বন্ধু। তুমি অন্য কিছু বলো।”

কুদ্দুস বলে,“আমি যা বলি তাই ই। এর কোন বিকল্প সিস্টেম নাই। হইলে ওভার লোড, না হইলে লোডশেডিং।”

বাতেন নিরুপায় হয়ে বিলকিস কে বলে,“তুমি কি বলো প্রিয়তমা?”

বিলকিস কুদ্দুসের লুঙ্গী ভরা টাকার ঝনঝনানি দেখতে দেখতে বলে,“বাতেন তুমি আমার ভালো লাগা ছিলে শুধুমাত্র। আমি বোধ হয় তোমাকে ভালোবাসতে পারি নি। এছাড়া তুমি কুদ্দুসের টাকার কাছে হেরে গেছো। যত যাই বলো টাকা ছাড়া ভালোবাসা হয় না। কুদ্দুসের অনেক টাকা। আমাকে ক্ষমা করো বাতেন। গুড বাই।”

এই বলে বিদায় নিয়ে বিলকিস কদ্দুসের রিক্সায় চড়ে।বাতেন একা রাস্তায় গড়াতে গড়াতে কাঁদে।
এরপর বাতেন প্রতিজ্ঞা করে সে অনেক টাকা কামাবে একদিন। এরপর বিলকিসের সামনে গিয়ে দাঁড়াবে। তার মুখের উপর হাজার টাকার নোট হাজার টা ছুড়ে মারবে।

বিলকিস যখন গ্রামে আসে কুদ্দুসের বাচ্চা পেটে নিয়ে তখন কুদ্দুস নিখোঁজ। রিক্সা চালানোর পেছনে তার ছিলো বাবার ব্যবসা। এছাড়া সে নিয়মিত গা*জারও চালান দিতো এলাকায়। সে এখন মা*দক মামলায় হাজার বারোটা কেস খেয়ে ফেরারী আসামী। পুলিশ তাকে কু*ত্তার মতো খোঁজে।

বিলকিস এতো যন্ত্রনা সহ্য করতে না পেরে শেষমেশ তারা চেয়ারম্যান বাবার বাড়িতে এসে ওঠে। বিলকিসের বাবা বিলকিসের অসাধারন কাহিনী শুনে স্ট্রো*ক করে মা*রা যায়।

বিলকিস কাঁদে। কাঁদতে কাঁদতে তার মেকাপ নষ্ট হয়ে যায়। সে কাঁদতে কাঁদতে আবার আয়নার সামনে বসে মেকাপ করে।

এতো দিনে বাতেন ডিলারের ব্যবসা করে পাক্কা ব্যাবসায়ী হয়ে গেছে। বাতেন এখন 'কষ্ট সয়াবিন' তেল এর ডিলার। মিনিমাম এক লাখ লিটারের উপর সয়াবিন তেল মজুদ করে রাখছে সে।
দেশে সয়াবিন তেল এর খুব সংকট চলছে। বাতেনের মনে এখন আনন্দ হচ্ছে। এতোদিনের কষ্ট তার সার্থক হয়েছে। এখন সে টাকার উপর ঘুমাবে।

সে স্যুট টাই পড়ে আবার তার নিজ গ্রামে আসে। কেউ তাকে দেখে চিনতে পারে না এ যে এক সময়ের মুরগী চোর বাতেন। এখন অনেক বড়লোক।

বাতেন কে দেখে দূর থেকে বিলকিস হাত নাড়ে। বিলকিস কে লক্ষ্য করে বাতেনও কাছে যায়। কত গুলো হাজার টাকা ছুড়ে মারে বিলকিসের মুখে। বিলকিস অনুতপ্ত হয় বাতেনের কাছে।

বিলিকিসের বাচ্চা তার পেটের ভেতর থেকে বিলকিস কে লাথি দেয়। বিলকিসের ব্যাথা ওঠে। বাতেন এর মায়া হয়। বিলকিস কে সে এখন কান্ধে নিতে পারবে না। তাই একটা ঠেলাগাড়ি ঠিক করে।

ঠেলতে ঠেলতে হাসপাতাল নিতে নিতে ঠেলাগাড়ি তেই বিলকিস ফুটফুটে এক মৃ*ত সন্তান প্রসব করে।
বাতেন দূর থেকে মুচকি হাসে। তার মন ঠান্ডা হয়। এতোদিনের রিভেঞ্জ তার সাক্সেস হয়েছে।

এর মধ্যে বাতেনের ফোনে আননোন নাম্বার থেকে ফোন।
- কে? মিঃ বাতেন বলছেন?
- জ্বি বলছি। আপনি?
- আমি ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও ভ্রাম্যমাণ আদালত এর মেজিস্ট্রেট বলছি। আপনার অবৈধভাবে মজুদ করা আশি হাজার লিটার সয়াবিন তেল এখন আমাদের হাতে আটক।

বাতেন এর কান থেকে পড়ে ফোন গড়াতে গড়াতে পাশের ড্রেনে তলিয়ে যায়। বাতেন খাম্বার মতো দাঁড়িয়ে থাকে রাস্তায়।

টনি ব্লেয়ার তখনও বাতেন কে ভুলে নাই। সে বাতেন কে দেখে ঘেউ ঘেউ করতে করতে আবারও দৌড়ানি দেয়। বাতেন সম্মোহন ফিরে পেয়ে নিজেও কু*ত্তার মতো দৌড়ায়।

বাতেন কে খুঁজতে আবার পুলিশ আসছে। পুলিশ দেখে বাতেন কু*ত্তার মতো দৌড়াচ্ছে। পুলিশও বাতেনের পেছনে দৌড়ায়।

বিলকিস ঠেলাগাড়ি তে বসে এসব দেখে কষ্টের মধ্যেও হাসে। হাসতে হাসতে তার মাথার রগ ছিরে ম*রে যায়।

বাতেন কেও এনকাউন্টারে ফেলে গুলি করে পুলিশ। বাতেনও বিদায় নেয় দুনিয়া ছেড়ে।
এভাবেই প্রকৃতি প্রতিশোধ নেয় সবার। যাকে ইংলিশে বলে "রিভেঞ্জ অফ ন্যাচার"

গল্প-রিভেঞ্জ অফ ন্যাচার

©

18/03/2025

"আমার ধারণা, বাঙালি শব্দটির উৎপত্তি ঘটেছে ব্যাঙ থেকে। এ অঞ্চলে প্রচুর জলা ও নিম্নভূমি ছিলো, যেগুলোতে বাস করতো কোটি কোটি ব্যাঙ। ব্যাঙ থেকে ব্যাঙোল, ব্যাঙোল থেকে বাঙালি।

ব্যাঙের সাথে আমাদের চারিত্রিক মিল বিস্ময়কর। ব্যাঙ লাফিয়ে লাফিয়ে চলে, আমরাও লাফিয়ে লাফিয়ে চলি। টিভি খুললেই শুনতে পাই— লাফিয়ে লাফিয়ে আমাদের উন্নতি হচ্ছে। লাফ ছাড়াও যে ধীরে ধীরে আগানো যায় অনেক পথ, তা মানতে আমরা রাজি নই।

ব্যাঙের আঁধার পছন্দ, আমাদেরও আঁধার পছন্দ। আলো আমাদের শত্রু। যা থেকেই আলো বেরোয়, তা আমরা দেখামাত্র ধ্বংস করি। একবার তো সূর্যকেও ধ্বংস করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু নাগাল পাইনি বলে করিনি। তবে আকাশের সূর্যকে টিকিয়ে রাখলেও, মাটির বহু সূর্যকে ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছি।

ব্যাঙের প্রিয় খাদ্য পোকামাকড়। আমাদেরও প্রিয় খাদ্য পোকামাকড়। মানুষের মধ্যে যারা ক্ষুদ্র ও ক্ষমতাহীন, তাদেরকে পোকামাকড় ভেবে খেয়ে ফেলি। আমাদের জেলখানা ভরে আছে অজস্র পোকামাকড়ে।

ব্যাঙ তার ডোবাকে বিশ্ব জ্ঞান করে। আমরাও তাই করি। রাত-দিন ডোবা নিয়ে পড়ে থাকি। ডোবার বাইরেও যে জগৎ আছে, ওই জগতে যে রূপান্তর ঘটে যাচ্ছে, তা স্বীকার করতে আমরা প্রস্তুত নই।

আমাদের সকল হাঁটা ব্যাঙের হাঁটা। হেঁটে আমরা কোনো দূরত্ব অতিক্রম করি না। হাজার মাইল হেঁটেও আমাদের অতিক্রান্ত দূরত্ব হয় শূন্যের সমান।

ব্যাঙের মতো আমাদের চোখও মাথার উপরিভাগে। সারাক্ষণ আসমানের দিকে তাকিয়ে চলি। কোনোকিছুই গভীরভাবে তলিয়ে দেখি না। ভাসা ভাসা গরিব দৃষ্টি নিয়ে মেঘের ভিড়ে খুঁজি ঈদের চাঁদ।

ব্যাঙ পানি পান করে না। শরীরের চামড়া দিয়ে সে জল শোষণ করে। আমরাও তাই করি। এক অঙ্গের কাজ আরেক অঙ্গ দিয়ে করি। সরল কাজ সরলভাবে করা আমাদের পছন্দ নয়।

ব্যাঙ সমুদ্রে বাঁচতে পারে না। আমরাও পারি না। কোনো বড়ো এলাকায়ই আমরা টিকে থাকতে পারি না। এই ভয়ে বড়ো কোনো স্বপ্নও দেখি না। আমাদের সকল স্বপ্ন আমাদের ডোবার সমান। বাঙালি সমুদ্র পাড়ি দিয়ে কোনো নতুন দ্বীপ আবিষ্কার করেছে, এরকমটি শোনা যায় না।

ব্যাঙের মতো আমরা পোনাও বেশি ছাড়ি। এ পোনা পৃথিবীর খুব একটা কাজে আসে না। অকাজের জিনিস সংখ্যায় বেশি হয়, এটিই নিয়ম। ব্যাঙের এ নিয়ম আমরা মেনে চলি।

ব্যাঙ যেখানেই বাস করে, সেখানেই কাদা তৈরি করে। আমরাও তাই করি। আমাদের জাতীয় ক্রীড়াকর্মের নাম— কাদা ছোঁড়াছুড়ি। কারও গায়ে ছুঁড়ে মারার মতো কাদা না পেলে, পেট থেকে কাদা বের করে ছুঁড়ে মারি।"


—মহিউদ্দিন মোহাম্মদ
পৃষ্ঠা ২০-২১, বই: আধুনিক গরু-রচনা সমগ্র
সংজ্ঞাবলীর পদাবলী / বাঙালি

#ব্যাঙ #বাঙালি #বেঙ্গল #বাংলা

05/02/2025

যুগের পর যুগ চলে যাবে, তবুও তোমাকে না পাওয়ার আক্ষেপ আমার ফুরাবে না!!❤️‍🩹

20/01/2025

এক ঘন্টার বেশী সময় ধরে ট্রেনে
বসে আছি..
কিন্তু ছাড়ার কোন নাম গন্ধ নেই..
গরমে প্রাণ ওষ্ঠাগত.. মাথার উপরের
ফ্যানটাও ঘুরছে না..
পাশেই কোথাও ডাবওয়ালা "এই
ডাব, এই ডাব" বলে চিলাচ্ছে
:: ঐ ডাব কত করে রে?
> ৩৫ টেকা
অনেক দরদাম করে শেষ পর্যন্ত
৩০টাকা দিয়ে একটা কিনলাম..
ডাবওয়ালাকে টাকা দিয়ে বিদায়
করতে যাব এমন সময় মিষ্টি একটা
কন্ঠস্বর শুনতে পেলাম
- ভাইয়া , ডাব কত করে..?
> ৩৫টেকা আফা (ডাবওয়ালা)
- কিই ? ফাইজলামী পাইছেন
২০টাকা দিব..
ধমক খেয়ে ডাবওয়ালা ২০টাকাতেই
ডাব দিয়ে দেয়..
আমি অবাক হয়ে মেয়েটার ডাব
কেনা দেখলাম..
ইচ্ছা করছে হাতের ডাবটা
ডাবওয়ালার মাথায় ফাটাই..
কিন্তু কিচ্ছু করার নাই..
সিটের পাশে দাড়িয়েই মেয়েটি
ডাব খাওয়া শেষ করে.. বলল
- বসতে পারি ? (মেয়েটি)
:: জ্বি , বসুন (আমি)
- তাহলে উঠুন (মেয়েটি)
:: উঠব মানে ?
- আমি জানালার পাশে বসব..
:: কিন্তু
- কোন কিন্তু না , উঠুন বলছি
এবার বুঝলাম কেন ডাবওয়ালা
৩০টাকার ডাব , ২০টাকায় দিয়ে
দিল..
বাপরে যে অগ্নি দৃষ্টি মনে হয় ভস্ম
করে দিবে..
নির্ধারিত সময়ের দেড় ঘন্টা পর
ট্রেন যাত্রা শুরু করল..
আইনস্টাইন দাদু বলছিল সুন্দরী
মেয়েদের পাশে ৫ ঘন্টা বসে
থাকলেও মনে হয় ৫ মিনিট..
আমার হইছে উল্টা ট্রেন ছেড়েছে
তিন ঘন্টা , কিন্তু আমার মনে হচ্ছে
তিনদিন..
জানালা দিয়ে বাইরে তাকালেই
মেয়েটার দিকে চোখ চলে যাচ্ছে..
৩-৪ বার চোখাচোখিও হয়েছে..
প্রতিবারি মেয়েটা মুচকি করে একটু
হাসছে আয় আমি ভ্যাবলাম মত চোখ
সরিয়ে পত্রিকার পাতার দিকে
নিয়েছি..
পড়তে পড়তে পত্রিকা মুখস্থ করে
ফেলছি , তাও সময় কাটেনা..
মেয়েটা দিকে তাকালাম..
জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে
আছে মেয়েটা..
বাতাসের ঝাপটায় মেয়েটার চুলগুল
এলোমেলো হয় যাচ্ছে..
কিছু অবাধ্য চুল আমার নাকের
কাছেও চলে এসেছে..
মিষ্টি এক্টা সুভাস পাচ্ছি
মেয়েটার উড়ো চুলগুল থেকে..
কী শ্যাম্পু দেয় চুলে কে জানে?
মিষ্টি সুভাষ টা আমার জন্য
ক্লোরফর্মের কাজ করছে, চোখ দুটো
বন্ধ হয়ে আসছে..
মেয়েটার দিকে তাকালাম ..
মেয়েটি এখনও বাইরে তাকিয়ে
আছে..
তার চুলগুল উড়ছে..
আর আমি হারিয়ে যাচ্ছি ঘুমের
রাজ্যে..
ট্রেনের টিটির ডাকে ঘুম ভাঙ্গল..
পাশের মেয়েটি নেই..
ট্রেন একেবার জনশূণ্য..
উপরে তাকিয়ে দেখি আমার
ব্যাগটাও নেই..
"আংকেল আমার ব্যাগটা ?"
> কাল ছোট ব্যাগটা ? (টিটি)
:: জ্বি জ্বি ঐটাই
> ঐটা আপনার ব্যাগ ? আপনার পাশের
মেয়েটাই তো ব্যাগটা নিয়ে নেম
গেল , আমিতো ভাবলাম ওনার..
(টিটি)
মাথা চক্কর দিচ্ছে..
ঐ ছোট ব্যাগটাই আমার সব..
ল্যাপটাপ , টাকা , সার্টিফিকেট সব
ওতে..
মেয়েটা যে এই কাজ করবে বিশ্বাস
করতেই কষ্ট হচ্ছে..
ব্যাগ খুইয়ে প্লাটফর্ম দিয়ে হাটছি..
আর বাসায় কি বলব ভাবছি
হঠাত পিছন থেকে সেই মিষ্টি
কন্ঠস্বরটা শুনতে পেলাম
- এই যে মিস্টার (মেয়েটি)
:: আ আ আপনি ?
- হ্যাঁ , আর কতক্ষন ব্যাগটা পাহারা
দেয়াবেন
:: আমি তো ভাবলাম আপনিই ......
- কি? আমিই ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে
গেছি..
:: স্যরি , ভুল বুঝছি, ব্যাগটা না দেখে
মাথা কাজ করছিল না
- হি হি হি , নিয়ে যাওয়াই উচিত
ছিল.. যে মরার মত ঘুমুচ্ছিলেন................................
মেয়েটা আরও কি কি যেন বলছে..
শব্দগুল আমার কান দিয়ে ঢুকছে না..
আমি মেয়েটার দিকে তাকিয়ে
আছি..
মেয়েটার হাসি তার কন্ঠস্বরের
থেকেও মিষ্টি..
:: আচ্ছা আপনার নাম কি ?
(মেয়েটাকে জিজ্ঞাসা করলাম)
> হি হি হি মিষ্টি
বাহ , নামও 'মিষ্টি'
মিষ্টির ছড়াছড়ি একেবারে..
ডায়াবেটিস হয়ে যাবে মনে হচ্ছে..
মেয়েটা এখনও হাসছে আর ওর আমি
তাকিয়ে আছি..
এ মিষ্টিতে যদি ডায়াবেটিসও হয়
তবুও কোনও আফসোস নেই..
আমি রাজি আছি .....

20/01/2025

কালোর প্রশংসা শুধু উপন্যাসে মানায়🙂🙂

বাস্তবে তো...

কবি নিজেই সৌন্দর্যের প্রেমে পড়েছেন.. 🥲💔

22/10/2024

একটা রেস্টুরেন্টে খেতে ঢুকেছি। খাবার অর্ডার দিয়ে হাতমুখ ধোয়ার জন্য যাচ্ছি এ সময় ওয়েটার বলল, "স্যার, ম্যাডাম আপনাকে ডাকে।"

আমি একটু অবাক হয়ে ঘুরে তাকালাম। খুব সুন্দরী একটা মেয়ে অনেকটা দূরে দাঁড়িয়ে আছে। আমার দিকে তাকিয়ে একটু হাসল। তারপর ভুল হয়েছে এমন ভঙ্গিতে হাত নাড়াল। আমি বুঝলাম মেয়েটা বোধহয় আমাকে পরিচিত কারো সাথে মিল পেয়েছিল।

মানুষটা মনে হয় কাছের কেউ হবে। খুব কাছের কেউ না হলে মেয়েরা সেচ্ছায় কথা বলতে যায় না। মেয়েটার সাথে একটা ছোট ছেলে । ছেলে কে নিয়ে একা খেতে এসেছে । স্বামী সাথে নেই ! স্বামী বিদেশে থাকে নাকি মারা গেছে ?

মেয়েটার কথা ভেবে আমার মনটা খারাপ হয়ে গেল!

ওয়েটার টেবিলে খাবার দিয়েছে । দেখে বেশ ভালো লাগছে। গরম গরুর মাংস দিয়ে রুটি। অনেক দিন পর এমন সুস্বাদু খাবার খেলাম।

খাবার শেষ করে গরম এক কাপ চা খেলাম। ওয়েটার কে বললাম , "বিলটা নিয়ে আস।"

ওয়েটার বিল এনে বলল, "স্যার এক হাজার বিশ টাকা !"

আমি হতবাক হয়ে বললাম , "এত টাকা !"

ওয়েটার বলল, "ম্যাডামের বিল সহ!"

বুঝলাম আবার ধরা খেয়েছি ! সুন্দরী মেয়ের কাছে কতবার ধরা খেলাম তবুও সুন্দরীদের হাসি দেখলেই সব কিছু ভুলে যাই। কেমন মায়া লাগে!

বিল দিয়ে বের হচ্ছি এ সময় ওয়েটার আবার ডাকল, "স্যার।"

ভেবেছিলাম তাকাব না। ওয়েটার দৌড়ে কাছে এসে বলল, "স্যার আপনাকে ডাকে!"

তাকিয়ে দেখলাম কাউন্টারের লোকটা ডাকছে মনে হয় টাকা কম বেশি হয়েছে । আমি কাউন্টারে গিয়ে বললাম , "কী হয়েছে ?"

লোকটা বলল, "স্যার, ম্যাডাম তাড়াহুড়া করে মোবাইলটা ফেলে গেছে !"

10/10/2024

আমার পরম সৌভাগ্য, তুমি আমার প্রেমে পরেছিলে Thank you so much. আমি আমৃত্যু তোমার এই প্রতিদানের কথা মনে রাখবো।

24/09/2024
18/09/2024

ফ্রেঞ্চ ভাষায় বললাম, দুইটাকার বাদাম দেন। উনি দিতে দিতে বললেন, ভাতিজা কি বাঙালি। বললাম,হয় চাচা। বললেন, কতদিন থেকে ফ্রান্সে। বললাম, তিনবছর হওয়ার পথে। জিগাইলেন, কাগজ পেয়েছি কি'না? বললাম, জি দশ বছরের কাগজ পেয়েছি। দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বললেন, নয়টা বছর হয়ে গেলো,কাগজ পাইনি এখনো দেশে ও যেতে পারিনা।

বাদাম দেয়ার পর টাকা দিতে গেলাম, নিলেননা।
বললেন, কাজ না থাকলে চলো ভাতিজা গল্প করি।
বললাম, কাজ আছে, তবে দেড় ঘন্টা পর।

জিগাইলেন, দেশের বাড়ি কোথায়, বিয়ে করছি কি'না,মা বাপ আছেন কি'না। একজন বয়স্ক মানুষ, আমাদের মতো ছেলের বয়সী কাউকে পেলে যা জিজ্ঞেস করেন ঐগুলাই জিগাইলেন।

বেশ মোটা মানুষ তার উপর বয়স্ক, এরমধ্যে ইল্লিগ্যাল, বুঝলাম এই জন্য উনারে কেউ কাজে নেয়না।এইজন্যই ফুটপাতে বাদাম বিক্রি করছেন হয়তো।

পকেট থেকে স্যামসাং ফোন বের করে,স্ক্রিনে থাকা একটা মেয়ের ছবি দেখালেন। জিগাইলেন, মেয়েটা সুন্দরী কি'না?

একটা কিশোরী মেয়ের বাড়ন্ত বয়সে যে'রকম সুন্দরী থাকে ওরকমি। বেশ সুন্দর মেয়েটা।বললাম, হা অনেক সুন্দরী। বললাম, চাচা আমার জন্য মেয়ে সেটিং করতেছেন কি'না। আমি আপনাদের ঐ কুমিল্লায় গিয়ে বিয়ে করবনা। বললেন, থাম বেটা থাম কাস্টমার বিদায় করি।সিগারেট খাইলে একটা ধরা।

সিগারেট ধরালাম, চাচায় কাস্টমার বিদায় করলেন।তারপর বললেন, এটা আমার মেয়ে। বলেই চাচায় মুচকী হাসি শুরু করলেন। ভারী মুচ আর লাল দাড়ী,রহস্যময় মুচকি হাসি। আমি সিওর চাচায় এবার বলবে,আমার মেয়েরে বিয়ে করবে?

চাচায় কথা বলে থামেন, মুচকি হাসেন, লংটাইম আবার বলেন। চাচা বললেন, আমার এই মেয়ে ক্লাস এইটে গোল্ডেন পেয়েছে। বললাম, চাচা গোল্ডেন কি।চাচা বললেন, এটা কি আর আমি জানি। আমি মুর্খ মানুষ। আমার মেয়েটা পড়ায় খুব ভালো।আমার দুই মেয়ে,এটাই বড়।

আমি রহস্য নিয়ে এগোচ্ছি, কবে চাচা বলে উঠেন,আমার মেয়েরে বিয়ে করবে?

বললাম, চাচা ডেইলি কেমন ইনকাম হয়। বললেন, মনে কর ত্রিশ পয়ত্রিশ,চল্লিশ এরকম। বললাম,অনেক কম।রুমভাড়া, থাকা খাওয়ার বিল দিলে'তো আর বাড়ীতে পঞ্চাশ হাজার ও দিতে পারবেননা। বললেন,টাইনাটুইনা মাসে পঞ্চাশ দেই তোমার চাচীর একাউন্টে।

বললেন, ভাতিজা সম্পদ করছি,নতুন আসার পর ভালো বেতনেই কাজ করছি।বাড়ি'তো আছেই।মেয়েদের নামে ডিপোজিট। আর মনে কর,কুৃমিল্লা শহরে বাসার জায়গা কিনছিলাম পচিশ লাখ দিয়ে,এখন পঞ্চাশ লাখ বিক্রি হবে।আল্লাহ এনাফ দিছেন ভাতিজা।বললাম,চাচা দেশে চলে যান।এই বয়সে আর বিদেশ।বললেন, আগামী বছর কার্ড পাবো তারপর যাবো।ফ্রান্সে নরমালি কেউ টানা দশবছর থাকলে,অটোমেটিক লিগ্যাল কার্ড দিয়ে দেয়।

যাইহোক,বললাম চাচা গিয়ে, গোসল খাওয়া তারপর কাজে যাওয়া,অন্য দিন কথা হবে।ছাড়লেননা,বললেন বিশ মিনিট দাড়াও গল্প করি, তোমার সাথে।না করতে পারলামনা।

বললেন,আমার এই মেয়ে মেট্রিকে এ প্লাস পেয়েছে। পড়ায় খুব ভালো।আমার তো মনে কর, আশা, মেয়েরে টাকা পয়সা খরছ কইরা পড়ামু,ডাক্তার বানামো,রুজি করার দরকার নাই।গরীব মানষের চিকিৎসা করলো।আমার তো আল্লাহ দিলে অনেক আছে,মেয়ে মনে কর,আমার টাকাই বাকি জীবন খরছ করলো।

আমি কিছুতেই বুঝতে পারছিলামনা,চাচা ঘুরেফিরে উনার মেয়ের গল্পেই আসেন কেন।বললেন,ভাতিজা আমি ফেসবুকে ভিডিও দেখলাম,এক ছেলে হেলিকপ্টারে বিয়ে করতেছে।মনে কর, আমি ও খবর নিয়া দেখলাম পাঁচ দশলাখ খরছ করলে হেলিকপ্টার চড়াইয়া আমার মেয়েরে ওর শশুড় বাড়ি পাঠাতে পারবো।বললাম চাচা,আপনার মেয়ে নিয়া'তো দেখি বিশাল স্বপ্ন।

বললেন,ভাতিজা আমাদের এই বয়সে এসে নিজের আর কিচ্ছু আশা আকাঙ্ক্ষার থাকেনা।সব স্বপ্ন থাকে বাচ্চা কাচ্চা নিয়া।বললেন, ভাতিজা মেয়ে মেট্রিক পাশ করার পর বললো,ফোন লাগবে,দিলাম।মাস ছয়েক পরে বলে,আলাদা একলা রুমে থাকবে,ওর পড়ার জন্য।

রুম তো ছিলই দিলাম। আমার মেয়ের একলা রুম ভিডিও কলে দেখি, শুধু খাট আর পড়ার টেবিল আর কিছু নাই।তোমার চাচীরে বলে, একসেট সোফা কিনে দিয়ে রুম একদম সুন্দর করে সাজিয়ে দিলাম।

মেয়ে খুব খুশি হয়েছিল সোফা কিনে দেয়ায়।এরমধ্যে মনে কর ভাতিজা অনেক বিয়ের প্রস্তাব আসা শুরু হলো,ভালো ভালো বিয়ের প্রস্তাব, ছেলে ব্যাবসায়ী,বিদেশে সেটেল্ড ,আরো কত'কি।মেয়ে রাজি না,সে পড়বে।আমি এবার পাক্কা সিওর হলাম, পরিশেষে চাচা বলবেন,তোমার মতো ছেলে পাইলে দিয়ে দিবো।

চাচা বললেন, এইবছর আমার মেয়ের আইএ (এইচএসসি) পরিক্ষা দিতো, দেশে করোনার জন্য পিছিয়ে গেলো।শুন ভাতিজা,একদিন রাতে স্বপ্নে দেখি আমার শরীর মাথা সবজায়গা থেকে আমার সব চুল পড়তেছে,। পড়ে একদম নাই হয়ে গেছে। আমি রাস্তা দিয়ে হাটলে,মানুষ আমাকে দেখলে হাসে।স্বপ্নটা দেখে ঘুম ভেঙ্গে গেলো, রাত বাজে চারটা, বাংলাদেশ টাইম সকাল আটটা।মনের মধ্যে কেমন অশান্তি করতেছে,আমার এই এক অভ্যাস,খারাপ লাগলে,আমার মেয়ে দুইটার সাথে কথা বলি।কল দিলাম মেয়ের ফোনে, ও ফোন ধরেনা।ভাবলাম ঘুমে হবে।তোর চাচীর ফোনে ফোন দিলাম।

তোর চাচী চোখে কম দেখে চশমা ব্যাবহার করে।খুব একটা বুড়ী হয়নি, চোখে রোগ ওর,বলে হাসলেন চাচা।তোর চাচীরে কল দিলে,ও প্রথমে চশমা পরবো তারপর ফোন খোঁজে বের করবো,তারপর ফোন রিসিভ করবো।কানা মানুষ বুঝলী ভাতিজা, বলে চাচা হাসিতে ফেটে পড়লেন।

তো ফোন দিলাম তোর চাচীর ফোনে,ও ফোন রিসিভ করলো।সালাম কালাম হওয়ার পর জিগাইলাম, মেয়ে ফোন রিসিভ করেনি কেন,ও কই।তোর চাচী বললো,ঘুমায় হয়তো,বলতে বলতে ওর রুমে গিয়া দেখে - ও ফাঁসিতে ঝুলছে।

চাচা তবুও হাসছেন,মুচকি হেসেই যাচ্ছেন আর বাদাম নাড়ছেন।বললাম, বলেন কি চাচা?বললেন, হ্যা ভাতিজা মেয়েটা মরার আজ সাইত্রিশদিন চলছে।আমি মনে কর কার্ড পেলে, দেশে গিয়া, তোর চাচীরে নিয়া হজ্ব কইরা আইসা,মরার জন্য শুইয়া পড়মু।যতক্ষণ না মরছি আর কাঁদবোনা।আরে ব্যাটা,কার জন্য বাচবো কষ্ট করবো।

কত কষ্টের মেয়ে,কত আদরের মেয়েটা,কত স্বপ্নের মেয়ে আমার মরে গেলো,কোন পোলার জন্য।

বিলিভ মি- চাচা তবু ও হাসছিলেন। আমি পুরাই হ্যাং হয়ে গেছি কতক্ষণের জন্য। একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে দিয়ে বললাম, চাচা আসি আজ।আবার আসবো শিওর। ফোন নাম্বার দিয়ে বললাম, যখন ইচ্ছে কল দিয়েন,আসবো আপনার সাথে গল্প করতে।

মানুষ মনে হয় কাঁদতে কাঁদতে ক্লান্ত হয়ে হাসে অথবা,কান্নাকে অযৌক্তিক মনে করে বা ভয় পায়, কান্না করতে যদি নিজেকে খুইয়ে ফেলে, ভালো থাকার অভিনয়ের জগৎ থেকে।

©সংগৃহীত

04/09/2024

একবার চাকরির ইন্টারভিউতে একজনকে কোম্পানির বস একটি অদ্ভুত প্রশ্ন করে সেই প্রশ্ন শুনে প্রায় ২০০ জন মানুষ চুপ হয়ে যায়!

প্রশ্নটা এমন ছিল, মনে করুন এক ঝড়ের দিনে আপনি আপনার গাড়ী ড্রাইভিং করছেন আপনি একটি বাস স্টপ অতিক্রম করার সময় দেখলেন সেখানে ৩ জন লোক দাঁড়িয়ে আছে। প্রথমজন একজন সুন্দরী নারী যাকে আপনি মনপ্রাণ দিয়ে ভালোবাসেন এবং সারা জীবনের জন্য কাছে পেতে চান। দ্বিতীয়জন আপনার খুব পুরোনো এক বন্ধু যে একবার আপনার জীবন বাঁচিয়েছিল এবং তৃতীয়জন এক বৃদ্ধা মহিলা যাকে খুব অসুস্থ্য দেখাচ্ছিল। আপনার গাড়িতে মাত্র একজনকেই বসতে দেওয়া সম্ভব।

এমতবস্থায় আপনি কাকে আপনার গাড়িতে উঠতে বলবেন? বৃদ্ধাকে? কারণ এটা নৈতিকতার প্রশ্ন এবং তিনজনের মধ্যে তার অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। আপনি আপনার বন্ধুকে উঠাতে পারেন কেননা সে আপনার জীবন বাঁচিয়েছিল। কিন্তু বৃদ্ধা এবং বন্ধু দু-জনকেই ছাড়তে হবে যদি আপনার পছন্দের মানুষটি হারাতে না চান।

প্রায় ২০০ জন প্রার্থীকে এই একই প্রশ্ন করা হয়েছিল এবং তাদের মধ্যে একজনের উত্তর ছিল সম্পূর্ণ আলাদা আর তাকেই চাকরীটা দেওয়া হয়েছিল। জানেন, সেই ব্যতিক্রমী উত্তরটি কি ছিল? তিনি খুব সহজে বলেছিলে, “এ রকম পরিস্থিতিতে আমি গাড়ি থেকে নেমে চাবিটা পুরোনো বন্ধুর হাতে দিয়ে বলতাম, বৃদ্ধ মহিলাটিকে হাসপাতালে পৌছে দিতে এবং আমার প্রিয় মানুষটির হাত ধরে দাঁড়িয়ে থাকতাম যতক্ষন না পরবর্তী বাস আসে।”

এই উত্তরটি আসলেই সবার দৃষ্টিভঙ্গী পাল্টে দিয়েছিল এবং সবাইকে এটা ভাবতে শিখিয়েছে যে, “ব্যতীক্রমী কিছু ভাবো।” প্রত্যেকেই সফলতা এবং সেটি করার ক্ষমতার প্রবৃতি নিয়ে জন্মায়। কিন্তু একজনই সফলতা পায় যে কিনা ব্যতিক্রম!! সুতরাং সব সময় নিজেকে ইউনিক করার চেষ্টা করবেন।

সিইও

03/09/2024

এক কথায় এত কিছু:

শ্বশুরবাড়ি গিয়ে জামাই কোনো কথা বলে না। শালীরা-শালারা কত ঠাট্টা-তামাসা করতে আসে; সে কোনো উচ্চবাচ্য করে না।তখন শ্বশুর গিয়ে জামাইয়ের বাপকে বলে, “দেখুন, আপনার ছেলে আমাদের বাড়ি এসে চুপ করে বসে থাকে। কোনো কথাবার্তা বলে না। এটা যেন কেমন কেমন লাগে। সবাই বলে জামাই বোকা।” বাপ বলল, “আমার ছেলে তো বাড়িতে বেশ ভালোমতোই কথাবার্তা বলে! আচ্ছা, তাকে আমি বেশ করে ধমকিয়ে দিব।”

বাড়ি এসে বাবা ছেলেকে ডেকে বলল, “কিরে শ্বশুরবাড়ি গিয়ে কথাবার্তা বলিস না কেন? সেখানে গিয়ে সকলের সঙ্গে আলাপ-সালাপ করবি। শালা-শালীদের সঙ্গে হাসি-তামাসা করবি। তবেই না লোকে বলবে, বেশ ভালো জামাই!”ছেলে মাথা নত করে রইল। বাবা বুঝল, এবার ছেলে শ্বশুর বাড়ি গিয়ে তার উপদেশ মতো কাজ করবে।ঈদের ছুটিতে জামাই শ্বশুরবাড়িতে এসেছে। এসে বৈঠক খানার এক কোণে চুপচাপ বসে আছে।

শ্বশুর এসে জিজ্ঞাসা করল, “কি বাবাজী! চুপ করে বসে আছ কেন? বাড়িতে সবাই ভালো আছে তো?” জামাই উত্তর করল, “ভালো আর আছে কই? কয়েকদিন হল, আমার বাবার মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে। হাতে একটা লাঠি নিয়ে যাকে দেখেন তাকেই মারতে আসেন।”শ্বশুর বলল, “তবে তো খুব খারাপ কথা! আমি কালই তোমার বাবাকে দেখতে যাব।”

জামাই বলল, “শ্বশুর সাহেব! যাবেন যে, খুব সাবধানে যাবেন। একখানা লাঠি হাতে নিয়ে ঘুরাতে ঘুরাতে যাবেন। আমার বাবা যদি আপনাকে মারতে আসেন, লাঠি উঠিয়ে তাঁকে মারতে যাবেন! দুই একটা লাঠির ঘা মাথায় পড়লে বাবা শান্ত হয়ে যাবে। তারপর আর কিছু বলবেন না।” শ্বশুর বলল, “আচ্ছা, ঠিক আছে, তাই করব। কাল সকালেই তোমার বাবাকে দেখতে যাব।”

জামাই শ্বশুরবাড়ি হতে ফিরে আসল। বাপ জিজ্ঞাসা করল, “কি রে, শ্বশুর বাড়ি গিয়ে এত তাড়াতাড়ি ফিরে আসলি যে?” ছেলে বলল, “ফিরে না এসে উপায় কি? আমার শ্বশুরের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। যাকে দেখেন তাকেই লাঠি ঘুরিয়ে মারতে আসেন।”বাপ বলল, “তবে তো খুব খারাপ খবর! কাল সকালে তোর শ্বশুরকে দেখতে যাব।”

ছেলে বলল, “আপনি যে যাবেন, খুব সাবধানে যাবেন। একখানা লাঠি ঘুরাতে ঘুরাতে যাবেন। আমার শ্বশুর যদি আপনাকে মারতে আসেন, লাঠির কায়েক ঘা তাঁহার গায়ে মারবেন, তিনি তখনই থেমে যাবেন। কিন্তু কয়েক ঘা না মারলে তিনি আপনাকে মারতেই থাকবেন। সাবধান! সঙ্গে লাঠি না নিয়ে যাবেন না।”

পরদিন সকালে দুই গ্রাম হতে বাপ আর শ্বশুর লাঠি ঘুরাতে ঘুরাতে বাহির হল। মাঝপথে এসে দুই বিয়াইয়ের সাথে দেখা হল।শ্বশুর লাঠি উঁচিয়ে বলল, “এই!” বাপ তেমনি লাঠি ঘুরিয়ে বলল, “এই!” তারপর দুই বিয়াইতে লাঠি পেটাপেটি আরম্ভ হল। সে কি যেমন তেমন মারামারি! পাড়ার লোকেরা ছুটে এসে দুই বিয়াইকে আলাদা করে ধরে রাখল।

তারপর বলল, “তোমাদের হল কি? দুই বিয়াইয়ের মধ্যে এমন ভাব-মহব্বত। আর এখন এইভাবে তোমাদের মারামারি করার কারণ কি?” শ্বশুর তখন বলল, “কাল জামাইয়ের মুখে শুনলাম বিয়াই নাকি পাগল হয়ে গেছে। যাকে দেখে তাকেই মারতে আসে। আর লাঠি দিয়ে দুই এক ঘা মারলেই নাকি নীরব হয়ে যায়।”বাপ বলল, “ওই শয়তান ছেলে বিয়াইয়ের বিষয়েও আমাকে এমন কথা বাড়ি এসে বলেছে।”

এখন এ-বিয়াই ও-বিয়াই একে অপরের সঙ্গে আলাপ করে সমস্ত জানতে পারল। বাপ বাড়ি ফিরে ছেলেকে ধমক দিয়ে বলল, “ওরে শয়তান, বেহায়া! তোর শ্বশুর সম্বন্ধে এমন মিথ্যা কথা আমাকে বলেছিলি কেন?” ছেলে বিনীতভাবে উত্তর করল, “আপনি আমাকে শ্বশুরবাড়ি গিয়ে কথাবার্তা বলতে উপদেশ দিয়েছিলেন, আমি সেখানে গিয়ে একটি মাত্র কথা বলেছি, তাতেই এত! আর অনেক কথা বললে না জানি কি হত?”

-পল্লী কবি জসীমউদ্দীন।
বইঃ বাঙালির হাসির গল্প

Address

BANGORA
Yavatmal
1800

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when ლ স্বর- ব্যঞ্জ ლ posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to ლ স্বর- ব্যঞ্জ ლ:

Share

Category