
10/08/2025
#তুমি_কি_আমার_হবে_শ্যামকালোবতী
#লেখিকা_মীম_হাওলাদার
#পর্বঃ১৯
"মীম চায় না ঐ লোকের সামনে পরতে।আনিশার কথায় মীমও খেয়াল করতেই, চোখ যেনো কপালে সত্যিই তো আহনাফ ভাইয়া ও রাইফ ভাইয়া, একসাথে দাঁড়িয়ে "আছে। আচ্ছা ভাইয়ারা এখানে কি করছে-আর বাইকগুলো কাদের রে আনি?"
"আনিশা মীমের হাত ধরে বলে চল আগে তো তাদের সামনে যাই।
গেইটের কাছে এসেই আনিশা জিজ্ঞেস করে আপনারা এখানে দাড়িয়ে আছেন কেনো রাইফের উদ্দেশ্যে কথা টা বলতেই ,
"আহনাফ বলে আনি দেখতো বাইকটা কেমন হয়েছে মাএই কিনে ভাবলাম একটু ঘুরে আসি।"
"আনিশা খুশি হয় ভাইয়া সত্যি বলছো তুমি বাইক কিনেছ? তাহলে তো ভালোই বাইকে ঘুরতে পারবো। মীম নিরব দর্শক এই লোকের সামনে সে কথা বলতেই নারাজ!
তবুও নিজের ভাইয়ের উদ্দেশ্যে বলে ভাইয়া তুমিও বাইক কিনছ? ফুপাই রাগ করবে তো! তাছাড়া তোমার তো হবু বউ আছে, তবে বাইক কেন কিনলা।
মীম আরো বলে,
«ওনার না হয় বউ নেই সে কিনতেই পারে। তুমি কি কাজ করলা? আমার বান্ধবীর সতিনকে নিয়ে চলে আসলা। মীমের কথায় উপস্থিত তিন জন অবাক চোখে তাকিয়ে, মীমের দিকে।"
"-মীম তাদের উদ্দেশ্য করে বলে এভাবে তাকানোর কি আছে? -আমি শুনেছি ছেলেরা বিয়ের আগে বাইক কিনলে,
"প্রথম বউ আর বিয়ের পর বাইক কিনলে ঐটা বউয়ের সতিন" জানটুসি রে ভাইয়া তোর জন্য সতিন নিয়ে আসছে!এখন ভাইয়া তোর হাত না ধরে, বাইকের পেছনে তোকে রেখে সামনে বাইকের দুই হাত শক্ত করে ধরে রাখবে। তোর কপাল পুরনো।"
"রাইফ যেনো আকাশ থেকে পরলো।
এদিকে,
মীমের কথায় আহনাফ মনে মনে বলে এই মেয়ে তো ফাজিলের হাড্ডি। কিভাবে আমার বোনটাকে আবলতাবল বুঝাচ্ছে? ম্যাম যদি জানতে পারে আমি তার ভবিষ্যৎ জামাই হতে চাচ্ছি ভাবতেই শুকনো ঢোক গিলে।
অন্যদিকে,
আনিশা মীমের কথায় প্রায় কাঁদো কাঁদো মীম যেভাবে বিশ্লেষন দিয়েছে যেনো এটাই সত্যি।
আপনারাই বলুন যুক্তি তো আছেই যা সত্যি তাই বলছি এখানে এমন ভাব ধরার কি আছে। পাঠিকারা আপনারাও ভেবে দেখুন বিষয়টা সত্যি না মিথ্যা।
"আনিশার কাছে মীমের কথা যুক্তিযুক্ত বলেই মনে হলো এখন তার ভিষণ মন খারাপ লাগছে।"
--""রাইফ রাগি চোখে একবার আহনাফের দিকে তাকিয়ে মীমকে বলে বোন তোর মাথায় এতো আজগুবি চিন্তা কই থেকে আসে? তুই তো আমার সংসার পাতার আগেই ভেঙ্গে দিবি মনে হচ্ছে।"
"দেখো ভাইয়া তোমার ঐ বজ্জাত বন্ধুর কথা শুনে তুমি বাইক কিনছো? এটাই তোমার আপরাধ।সে কিনতেই পারে সে তো এখনো সিঙ্গেল কিন্তু তুমি,।
""--আচ্ছা সব কথা বাদ, কিনে ফেলছো? এবার তোমার প্রেয়সীকে নিয়ে ঘুরে আসো। আমি বাসায় চলে যাচ্ছি।
#আনি যা মন ভরে ঘুরে আয় আমার ভাইকে আজকের জন্য তোকে দিলাম।
আনিশা আহনাফের দিকে একবার তাকিয়ে মীমের উদ্দেশ্যে বলে,
" তুইও সাথে চল ভালো লাগবে আমার।"
"তুই তোর জামাইয়ের সাথে যাবি আমি কেন তোর সাথে যাবো হুমম।"
" তাতে কি হইছে সবাই মিলে গেলে ভালো লাগবে প্লিজ মীম চল।"
"আচ্ছা যাবো কিন্তু তুই তোর জামাইয়ের সাথে যাবি আমি কই বসে যাবো?
" কেন তুই আমার ভাইয়ের সাথে যাবি কথাটা বলতেই মীম চিৎকার করে বলে,
"কিহ্হহহ"
--"" রাইফ যেনো হতাশ কি হচ্ছে এসব? আহনাফের জোড়াজোড়িতে আজকেই বাইক কিনতে হয়েছে,আবার কলেজ গেইট' নিয়ে আসলো,,,
এদিকে বোন যে ঘাড়ত্যাড়া এরে কিভাবে সামলাবে সে?😕
আনিশা একটু ভাব নিয়ে বলে,
"জানু তুই না একটু আগেই আমাকে বলছিলি চল জানটুসি দু'জন দুই বাইকার নিয়ে লং ড্রাইভে যায়, তো এখন কেন এমন করছিস?
আনিশার কথায় মীমের ইচ্ছে করছে মাটির নিচে লুকাতে,এই মেয়ে এভাবে ফাসালো আমায়!
আরেক দিকে আহনাফ চমকে রাইফের দিকে তাকালে রাইফ ইনোসেন্ট ফেইস করে বুঝায় আমি কিছু জানি না!
আনির বাচ্চি আমি কি জানতাম নাকি? যে এখানে তোর ভাই আছে! তাহলে জীবনেও বলতাম না অন্য কেও হলে? সত্যি চলে যেতাম!
মীমের ত্যাড়াত্যাড়া কথায় আহনাফের যেনো রাগ মাথা উঠার উপক্রম,
মীম আর একটা কথা যদি বলতে শুনি, এসব কি হচ্ছে? বড়দের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয়? তা কি তোর অজানা? একদম ভালো লাগছে না তোদের এসব। ভালো মেয়ের মতো আহনাফের সাথে আয় বাড়তি কোনো কথা আমি শুনতে চাই না। " রাইফ এক প্রকার বাধ্য হয়েই কথাগুলো বলে যাতে তার বোন চুপ হয়ে যায়। এই আহনাফের জন্য আমার বোন কবে জেনো ভুল বুঝে ফেলে?"
হঠাৎ ভাইয়ের এমন ব্যবহারে চুপসে যায় মীম,চোখের কোণে ভির করেছে সমুদ্র। পলক ফেললেই যেনো সর্বনাশ হয়ে যাবে।
আহনাফ মীমের দিকে তাকাতেই চোখের কোণে পানি, দেখে রাগে ফেটে পরে চোখ লাল করে রাইফের দিকে তাকালে, রাইফও চোখ লাল করে ডোন্ট কেয়ার ভাব দেখিখে আনিশাকে বাইকে উঠতে বলে, নিজেও বাইকে উঠে বাইক স্টার্ট দেয় মূহুর্তেই চোখের আড়াল হয়ে যায়।
মীমের ইচ্ছে করছে কান্না করতে তার নিজেকে খুব অসহায় লাগছে,
"ভাইয়া আমাকে এভাবে বলতে পারলো?ভেবেই আরো কান্না আসছে।হঠাৎ গালে ঠান্ডা স্পর্শ লাগতেই চমকে উঠে মীম শুনতে পায় এক পুরুষের কন্ঠ,
ম্যাম এভাবে কাঁদছেন কেন? আপনাকে এভাবে মানায় না! আপনার নাকের আগার রাগটা খুব মানায় আপনাকে। আপনি হাসলেও ভালো লাগে।
মীম যেনো স্তব্ধ হয়ে যায় তার শরীর যেনো কাঁপছে নিশ্বাস আটকে যাওয়ার উপক্রম,
~~~~~~~~~~
আহনাফঃ এভাবে কাপছো কেন? শরীর খারাপ লাগছে বলো আমাকে!
মীমঃ......................
আহনাফঃ শান্ত হও রাইফ রাগ করে বলে নি তোমাকে চুপ করানোর জন্য যাতে তুমি যেতে রাজি হয়ে যাও।
মীম কি বলবে? আর এই বেডা কেন এতো সুন্দর করে ওর সাথে কথা বলছে কাহিনী কি?
"খুব যত্ন সহকারে মীমের চোখের পানি মুছিয়ে দিয়ে, বাইকের কাছে যেতে বললে মীমও চুপচাপ হাঁটা শুরু করে,,,, ,
কেউ একজন খুব খুশি মনে বাইকে উঠে বসতেই মীমকে ইশারা করে বাইকে বসতে,,,,,,
এক আকাশ অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও মীম এগিয়ে এসে দাঁড়িয়েছে।
বেচারি মীম আছে তার চিন্তায় আর সে বলছে বাইকে বসতে বাহ্ কি সুন্দর কথা,,,,
হেলমেন পড়তে পড়তে বলে দাঁড়িয়ে আছো কেন? উঠে বসো। মীম চিন্তায় পড়ে যায় কিভাবে যে সে বসবে। আর যদি বাইকে থেকে পরে যাই তাহলে আল্লাহ সহায় হইও বলেই অনেক কষ্টে বাইকে উঠে বসে। আহনাফের মুখে তৃপ্তিকর হাসি যা মীমের চোখের আড়ালেই রয়ে গেলো
ম্যাম আমাকে ধরে বসেন। আহনাফ কথাটা বলতেই মীম রেগে যায়,
মীমঃ জীবনেও না.......!
আহনাফঃপরে গেলে আমার দোষনা কিন্তু ?
মীমঃ আপনারিতো দোষ কেন আসাকে বাইকে উঠাতে রাজি হলেন? আরো বলে,
ভাইয়া আনিশা ওরা কাপল মানুষ যেতেই পারে সেখানে আমি কেন আপনার সাথে যাচ্ছি। আমি পরে যাই বা মরে যাই আপনাকে ভারতে হবে না আপনি চলুন।
আহনাফঃ একদম চুপ ধমক দিয়ে। কিছু বলি না বলে যা ইচ্ছে তাই করে যাবে বলে যাবে। তোমার সমস্যা কি এমন কর কেন সবসময়। এতো ত্যাড়ামি আমার পছন্দ না। ধরে বসো বলছি।
মীম ধমক শুনে কিছুটা ভয় পেতেই আহনাফের থেকে দূরত্ব রেখে তার কাধে হাত দিয়ে বসতেই যেন মীমের শরীয় কাঁপে উঠে।
আহনাফ বাইক চালু দিয়ে কিছুদূর যেতেই মীম খেয়াল করে হঠাৎ বাইক থেমে গেলো। কি হলো?কেন থামলে সে বুঝতে পারলো না?
এদিকে আহনাফের শরীরে কেমন যেনো এক অনুভূতি ছুঁয়ে গেলো।সে জোরে একটা নিশ্বাস ছেড়ে আবার বাইক স্টার্ট দেয়।
কয়েকটা বাইকে করে দুজন করে মানুষ যাচ্ছে সবার মাথায় হেলমেড। মীম হঠাৎ বলে উঠে,
আপনি কি আমাকে মারার প্লান করছেন নাকি? আমার ভবিষ্যৎ জামাই যাতে বিধবা হয়ে যায়! যদি এমনটা ভেবে থাকেন তাহলে আপনার ভবিষ্যৎ বউকেও বিধবা বানিয়ে দিবো বলে দিলাম। "
হঠাৎ ব্রেক করায় তাল সামলাতে না পেরে শক্তপোক্ত দেহের সাথে ধাক্কা খেতেই মীমের হাতটি কাঁধ অতিক্রম করে আহনাফের বুকে সস্পর্শ হতেই পুরুষটির সর্বাঙ্গে কেঁপে উঠে। এক অন্যরকম অনুভূতি ছুঁয়ে গেলো যেনো জনম জনমের জন্য এই স্পর্শ।
এর মাঝেই মীম হাত সরিয়ে নেয়,
"এভাবে কেও ব্রেক করে যদি সত্যি পরে যেতাম আপনি তো মানুষ সুবিধার না? রাগিকন্ঠে বলে,
মীমের এমন কথায় ধ্যান ফিরে আহনাফের।
❝এই তুমি একটু আগে কিসব আজগুবি কথা বললে হুমমমম।আমি কে তোমাকে মারতে যাবো আর তোমার জামাই কেন বিধবা হবে।পুরুষ মানুষ বিধবা হয় কিভাবে? ❞
#চলবে