17/05/2025
1️⃣ম পর্ব: শত্রুর আগমন
নিউইয়র্ক শহরের এক উঁচু বিল্ডিংয়ের কাঁচঘেরা অফিসে বসে আছেন ড্যানিয়েল ব্রুকস – আমেরিকার খ্যাতনামা এক ধর্মতত্ত্ববিদ ও ইসলামবিদ্বেষী চিন্তাবিদ। বহু বছর ধরে তিনি “ইসলাম একটি সহিংস ধর্ম” – এই প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। টিভি ডিবেট, লেখালেখি, বক্তৃতা – সব জায়গাতেই তিনি ইসলামের বিরুদ্ধে আগুন ঝরানো ভাষায় কথা বলেন।
কিন্তু এবার ড্যানিয়েল তার জীবনের সবচেয়ে বড় মিশনে নামছে।
➡️মিশন:ইসলাম ধ্বংসের চাবিকাঠি খুঁজে বের করা – সরাসরি মুসলিমদের ভেতর ঢুকে।”
তিন মাসের জন্য তিনি যাচ্ছেন মধ্যপ্রাচ্যের একটি মুসলিম দেশে – “আল-কুদস বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করতে।” অথচ বাস্তবত তাঁর গোপন উদ্দেশ্য হলো কুরআনের ভুল ধরা, হাদীসের ত্রুটি বের করা, এবং মুসলিম সমাজের ভেতরের দুর্বলতাগুলো আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় ফাঁস করে দেওয়া।
“তাদের ধর্মের শেকড় কাঁটা শুরু হবে এবার।” — এমন আত্মবিশ্বাস নিয়ে তিনি প্লেনের জানালার দিকে তাকিয়ে ছিলেন।
➡️মুসলিম দেশে প্রথম পদার্পণ:
দেশটির নাম আমরা বলবো না, কল্পিত মুসলিম রাষ্ট্র। ড্যানিয়েল প্রথম দিনেই হোস্টেল পৌঁছার পরে কিছু অদ্ভুত বিষয় খেয়াল করলেন। তিনি ভেবেছিলেন, চারদিকে থাকবে অশিক্ষিত, অসভ্য, একচোখা মৌলবাদী মানুষ। কিন্তু তার ধারণার সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র দেখতে পেলেন।
হোস্টেল ম্যানেজার – একজন বৃদ্ধ মুসলিম – তাকে সম্মানের সঙ্গে অভ্যর্থনা জানালেন। রুমে নিয়ে গিয়ে বললেন:
“আপনার ধর্ম যেটাই হোক, আপনি আমাদের মেহমান। ইসলাম বলে, ‘মেহমানের খেদমত করা ঈমানের অংশ।’”
ড্যানিয়েল প্রথম ধাক্কা খেলেন। “এরা তো আমাকে শত্রু মনে করছে না!” তিনি ভাবলেন, “এটা হয়তো শুধু অভিনয়। আমি দেখবো, কতদূর যায়।”
➡️কুরআনের প্রতি প্রথম স্পর্শ:
বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে তিনি ইসলামী স্টাডিজ বিভাগের কিছু শিক্ষকের সঙ্গে পরিচিত হলেন। সবাই তার প্রতি খুব ভদ্রতা দেখাচ্ছিল, অথচ তারা জানত যে ড্যানিয়েল একজন ইসলাম বিদ্বেষী লেখক।
একজন অধ্যাপক – শেখ সালেহ – তাকে বললেন:
“তুমি কুরআন নিয়ে গবেষণা করতে এসেছো, ঠিক আছে। কুরআনের সমালোচনার আগে কুরআনটা অন্তত আরবিতে না হোক, ইংরেজিতে একবার মনোযোগ দিয়ে পড়ো। তারপর তোমার মতামত দিও।”
ড্যানিয়েল হেসে বললেন, “আমি অনেক পড়েছি। তবে ঠিক আছে, আবার পড়বো। যেন কোনো যুক্তি মিস না হয়।”
তাকে দেওয়া হলো একটি ইংরেজি অনুবাদ। রাতে তিনি রুমে বসে প্রথমবারের মতো কুরআনের আয়াতগুলো মন দিয়ে পড়তে শুরু করলেন।
“Indeed, in the creation of the heavens and the earth, and the alternation of the night and the day, are signs for people of reason...” (Surah Al-Imran: 190)
ড্যানিয়েল থমকে গেলেন। “এটা তো অনেক গভীর! বিজ্ঞান ও আধ্যাত্মিকতার এক অদ্ভুত মিশ্রণ!”
তার চোখে প্রথমবারের মতো ইসলাম এক রহস্যময় ধর্ম হিসেবে ধরা দিলো।
➡️ভাঙতে চাওয়া বিশ্বাস, নিজেকেই ভাঙতে শুরু করলো:
প্রতিদিন ক্লাসের পর ড্যানিয়েল ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলতেন, তাদের ধর্মীয় জীবনযাত্রা, নামাজ, রোজা, দান — এসব পর্যবেক্ষণ করতেন। কিন্তু কোনো ‘সহিংসতা’ বা ‘বিদ্বেষ’ খুঁজে পাননি।
এক সন্ধ্যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে থাকা মসজিদের ভিতরে ড্যানিয়েল গোপনে প্রবেশ করেন – একটা মোবাইল রেকর্ডার লুকিয়ে। উদ্দেশ্য ছিল, ইমামের কথা রেকর্ড করে 'জিহাদ' বা 'বিদ্বেষ' সম্পর্কিত কিছু তুলে ধরা।
কিন্তু ইমাম যা বললেন, তা ছিল—
“যে ব্যক্তি মানুষকে ভালোবাসে না, সে আল্লাহকে ভালোবাসে না। ইসলাম শান্তির নাম। মানুষকে রক্ষা করাই প্রকৃত জিহাদ।”
ড্যানিয়েল যেন নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না।
➡️পর্বের শেষ
এক রাতে ড্যানিয়েল একটি স্বপ্ন দেখেন। তিনি হেঁটে যাচ্ছেন অন্ধকার মরুভূমিতে। হঠাৎ এক আলো এসে তার চোখে পড়ে। সেই আলোতে লেখা — "لا إله إلا الله محمد رسول الله" (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ)
তিনি চিৎকার করে উঠলেন — “না! এটা হতে পারে না! এটা তো আমি বিশ্বাস করি না!” কিন্তু আলো বাড়তেই থাকে... তাঁর হৃদয় যেন কাঁপতে শুরু করে।
ঘুম ভাঙতেই তিনি ঘেমে একাকার।
সে বুঝতে পারে— তার ভেতরে কিছু একটার শুরু হয়ে গেছে।
গল্পটি ভালো লাগলে লাইক করুন👍
✅পরের পার্ট চান কিনা কমেন্টে জানান।👇
এবং পেজটিকে ফলো দিয়ে রাখুন।