
23/08/2025
টোকিওতে প্রবাসীদের সাথে আয়নাঘরের বন্দি ব্যারিস্টার আরমানের হৃদয়বিদারক স্মৃতিচারণ
টোকিও, জাপান | ২৩ আগস্ট ২০২৫
আজ শনিবার টোকিওর Ayase Hall-এ ইসলামী মিশন জাপানের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় এক বিশেষ আলোচনা সভা- MEET with BARRISTER ARMAN যেখানে প্রবাসী বাংলাদেশীরা সরাসরি শুনলেন ব্যারিস্টার আরমানের ‘আয়নাঘর’ বন্দি জীবনের ৮ বছরের হৃদয় বিদারক অভিজ্ঞতা।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী মিশন জাপানের সম্মানিত সভাপতি হাফেজ মাওলানা সাবের আহমদ।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সংগঠনের জেনারেল সেক্রেটারি ইঞ্জিনিয়ার আবদুল্লাহ আল মারুফ, আরো উপস্থিত ছিলেন ড. মাজেদুর রহমান, আব্দুল মালেক প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্যারিস্টার আরমান বলেন,
আয়নাঘরে কাটানো প্রতিটি দিন ছিল মৃত্যুর সাথে লড়াইয়ের মতো। আমাদের এমন ছোট ছোট সেলে রাখা হতো, যেখানে দিনের আলো পর্যন্ত প্রবেশ করতে পারত না।আমাকে একাধিকবার এমনভাবে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট করা হয়েছিল যে আমি ভেবেছিলাম আর বেঁচে ফিরতে পারব না। প্রচন্ড শীতের মাঝে গোসল করার জন্য ঠান্ডা পানি দেওয়া হতো, আর আমার যন্ত্রণা দেখে তারা হাসতো। আমাদের কারও সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে দেওয়া হতো না।
পরিবার থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়। যেন আমরা সমাজ থেকে হারিয়ে যাই। আমি নিজের চোখের সামনে অনেক ভাইকে নির্যাতনের ফলে নিস্তেজ হয়ে যেতে দেখেছি। সেই দৃশ্যগুলো আজও দুঃস্বপ্নের মতো তাড়া করে বেড়ায়। আয়নাঘর ছিল না কোনো সাধারণ কারাগার; এটি ছিল মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের এক ভয়াবহ পরীক্ষাগার।
উল্লেখ্য ব্যারিস্টার আরমানের পিতা মীর কাসেম আলী ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদের সদস্য। একাধারে ইসলামী ব্যাংক, নয়া দিগন্ত, দিগন্ত টিভি ও কেয়ারী গ্রুপের স্বপ্নদ্রষ্টা ও রূপকার। ২০১৬ সালে ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অন্যায়ভাবে মীর কাসেম আলীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পর, ব্যারিস্টার আরমানকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তিনি টানা ৮ বছর ‘আয়নাঘর’ নামে হাসিনার কুখ্যাত কারাগারে অমানবিক নির্যাতনের শিকার হন।
সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, শহীদ মীর কাশেম আলী দের আত্মত্যাগ ও ব্যারিস্টার আরমানদের অবর্ণনীয় ত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশে ইসলাম রাষ্ট্রীয় ভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে ইনশাআল্লাহ।
প্রোগ্রামে টোকিওসহ আশপাশের বিভিন্ন শহর থেকে অসংখ্য প্রবাসী বাংলাদেশী পরিবার অংশগ্রহণ করেন। ব্যারিস্টার আরমানের স্মৃতিচারণে অনেকেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
রিপোর্ট: প্রচার বিভাগ
ইসলামিক মিশন জাপান