
09/08/2025
গল্পের নাম: “চালাক মা, তালাক কন্যা”
একটা ছোট শহরে বসবাস করতেন রোজিনা বেগম। তিনি ছিলেন চতুর, বুদ্ধিমতী, আর সামান্য ব্যাপারেও নিজের কথাই শেষ কথা ভাবতেন। পরিবারে একমাত্র সন্তান ছিল তার মেয়ে সানজিদা—দেখতে সুন্দর, শিক্ষিত, কিন্তু মা’র প্রভাবে কিছুটা অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী আর অহংকারী।
রোজিনা বেগম প্রায়ই মেয়েকে উপদেশ দিতেন—
🗣️ “তোর শ্বশুরবাড়ির কেউ যদি তোকে সামান্যও কষ্ট দেয়, সঙ্গে সঙ্গে জবাব দিবি! ছাড় দিবি না একচুলও। আমরা কি কম কেউ?”
মায়ের শেখানো এই ‘চালাকির শিক্ষা’ নিয়েই সানজিদা বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতে গেল। স্বামী রাশেদ ছিল সহজ-সরল, ভদ্র মানুষ। খুব বেশি কথা বলত না, কিন্তু দায়িত্ববান ছিল। শ্বশুর-শাশুড়িও ছিলেন শান্ত স্বভাবের।
কিন্তু সেখানে গিয়ে সানজিদার আচরণ বদলে যেতে লাগল। ছোটখাটো বিষয়েও সে রেগে যেত।
একদিন ডাল পাতলা হয়েছে বলে সে রাগ করে রান্নাঘরে গিয়ে পুরো ডাল ফেলে দেয়।
আরেকদিন স্বামী অফিস থেকে দেরি করে ফিরলে, সে রাগে দরজা খুলতে দেয়নি।
একসময় সম্পর্কটা এমন জায়গায় দাঁড়াল, যেখানে রাশেদের চুপ থাকাও অপরাধ, কথা বলাও ঝগড়ার কারণ হয়ে দাঁড়াল। কিছু মাসের মধ্যেই তালাক হয়ে গেল।
তবুও রোজিনা বেগম বললেন,
👩🦳 “তোর কোনো ভুল নাই মা, ওরাই তোকে বুঝতে পারেনি।”
এরপর দ্বিতীয় বিয়ে হলো। নতুন সংসার, নতুন মানুষ। কিন্তু আচরণ আর মানসিকতা ছিল আগের মতোই—তর্ক, অবজ্ঞা আর নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা। ফলাফলও হলো আগের মতো—তালাক।
এভাবে তৃতীয় বিয়েও টিকল না।
একদিন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে সানজিদা নিজেই প্রশ্ন করল নিজেকে—
🪞*“সব দোষ কি ওদেরই ছিল? না কি মা’র চালাকির চেয়ে যদি একটু ধৈর্য, নম্রতা আর ভালোবাসা শিখতাম, তাহলে জীবনটা হয়তো অন্যরকম হতো?”*
⸻
🔚 শেষ কথায় বলা যায়—
চালাকি দিয়ে সম্পর্ক টেকে না।
টেকে ভালোবাসা, সহনশীলতা, শ্রদ্ধা আর বোঝাপড়ার উপর।
মায়ের কৌশল যদি মেয়ের জীবনে অহংকার হয়ে দাঁড়ায়,
তাহলে ঘরে আসে না সুখ—
বরং কপালে জোটে তালাকের নোটিশ।
-সমাপ্ত। ✅