14/12/2025
একদিন ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হযরত উমর ফারুক (রা.) মদিনার রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন। পথে তিনি উট চারণভূমি দিয়ে যাওয়ার সময় একটি উট দেখতে পেলেন। উটটি ছিল অন্যান্য উটের তুলনায় অনেক বেশি স্বাস্থ্যবান ও মোটাতাজা।
হযরত উমর (রা.) জিজ্ঞেস করলেন, "এই উটটি কার?"
লোকেরা উত্তর দিল, "এটা আপনার ছেলে আব্দুল্লাহর উট।"
এ কথা শোনার সাথে সাথে খলিফার চেহারার রঙ বদলে গেল। তিনি সাথে সাথে আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রা.)-কে ডেকে পাঠালেন। ছেলে আসার পর তিনি কঠোরভাবে জিজ্ঞেস করলেন, "এই উটটি তোমার কাছে কোত্থেকে এল?"
আব্দুল্লাহ (রা.) বিনয়ের সাথে উত্তর দিলেন, "আব্বাজান! আমি এই উটটি নিজের টাকায় কিনেছিলাম। কেনার সময় এটি খুব রোগা ও দুর্বল ছিল। আমি এটিকে মোটাতাজা করার জন্য এই সরকারি চারণভূমিতে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম, যাতে পরে বিক্রি করে কিছু লাভ করতে পারি।"
এ কথা শুনে হযরত উমর (রা.)-এর রাগ আরও বেড়ে গেল। তিনি বললেন:
"শোনো! যখন তোমার উট এই চারণভূমিতে ঘাস খেতে আসত, তখন লোকেরা ভাবত—'এটা তো খলিফার ছেলের উট'। তাই তারা তোমার উটকে সবার আগে ঘাস খেতে দিত, সবার আগে পানি পান করাত। তোমার উটের প্রতি তারা বিশেষ যত্ন নিত। ফলে তোমার উট অন্যদের তুলনায় দ্রুত মোটাতাজা হয়েছে।"
"তাই, এই বাড়তি লাভ তোমার প্রাপ্য নয়। কারণ এটা তুমি তোমার বাবার (খলিফার) ক্ষমতার প্রভাবে পেয়েছ।"
হযরত উমর (রা.) রায় দিলেন:
"হে আব্দুল্লাহ! এখনই এই উটটি বাজারে বিক্রি করে দাও। তুমি উটটি কেনার সময় যে মূলধন খরচ করেছিলে, শুধু সেটুকুই তুমি নেবে। আর বিক্রির পর লাভের পুরো টাকা বা অতিরিক্ত অংশ বায়তুল মাল (রাষ্ট্রীয় কোষাগারে) জমা দিয়ে দাও। কারণ এই লাভে তোমার কোনো হক নেই।" (রেফারেন্স: মুয়াত্তা ইমাম মালিক,আল-সুনান আল-কুবরা (বায়হাকী)
ক্ষমতার অপব্যবহার বা প্রভাব খাটিয়ে কোনো সুবিধা নেওয়া ইসলামে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। ন্যায়বিচার নিজের পরিবারের বিরুদ্ধে গেলেও তা পালন করতে হয়।