09/08/2025
ঈশ্বরদী পদ্মানদীতে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টায় সন্ত্রাসী মহড়া,অভিযোগের তীর জাকারিয়া পিন্টু'র দিকে
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
"উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে" কথাটি একটি প্রবাদ হলেও কথাটির বাস্তবায়ন ঘটেছে পাবনার ঈশ্বরদীতে । পদ্মানদীতে আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে গত কয়েক মাস ধরে ঈশ্বরদীর সাড়াঘাট, চরাঞ্চল ও ইপিজেড এলাকার পদ্মা নদীতে চলেছে সন্ত্রাসীদের মহড়া,এ ঘটনায় এক পক্ষ আরেক পক্ষের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে ফায়দা হাসিলের হীনচেষ্টা চালানোর অভিযোগ উঠেছে ,ঘটনার সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে বিচার দাবী । গত বছরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরবর্তী রাজনীতিতে সারাদেশে যখন চলেছে ক্ষমতার পালাবদল, লুটপাট এবং জবরদখলের মতো অনেক ঘটনা। তখন পদ্মা নদীর বালি'র ব্যবসার নিয়ন্ত্রণকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠে উক্ত এলাকা।ভুক্তভোগী সুত্রে জানা যায়, বিগত পাঁচ বছর ধরে নাটোর জেলা প্রশাসনের ইজারা প্রক্রিয়ায় বৈধভাবে বালুমহাল পরিচালনা করছেন ইন্জিনিয়ার কাকন। সর্বশেষ ১৪৩২ বাংলা সনে ৯ কোটি ৭৬ লাখ টাকা দিয়ে লালপুর উপজেলার দিয়ার বাহাদুরপুর মৌজার বালুমহাল ইজারা নেন তিনি। উল্লেখ্য,এই বালু মহাল থেকে উত্তোলিত বালু নৌকা যোগে পাবনার ঈশ্বরদী-রূপরুপ হয়ে কুষ্টিয়ার ভেড়ামার সহ অন্যান্য জায়গায় বালু ব্যবাসায়ীরা নিয়ে যায়। বালুর নৌকা থেকে চাঁদাবাজির উদ্দেশ্যে উক্ত এলাকায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরির লক্ষ্যে বিগত প্রায় ২মাস যাবৎ বিভিন্ন সময়ে বহিরাগত সন্ত্রাসী বাহিনী স্পিডবোটে করে সন্ত্রাসী কায়দায় মহড়া দিয়ে বেড়াচ্ছে। এ ঘটনায় আতংক বিরাজ করছে উক্ত নদীপথ এলাকায়।এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মোড় অন্য দিকে ঘোরাতে বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়ায় মিথ্যা অপপ্রচারে নেমেছে একটি চক্র, সন্ত্রাসী মহড়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে "কাকন বাহিনী" নামক কাল্পনিক বাহিনীর উপর দায় চাপিয়ে প্রকৃত অপরাধীরা থাকছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী বালুমহালের ইজারাদার ইন্জিঃ কাকন বলেন, আমি বিগত ৫বছর লালপুরের বালুমহাল সরকারের নিকট থেকে ইজারা নিয়ে চালাচ্ছি, আমার এখান থেকে ভেড়ামারা,মিরপুর সহ কুষ্টিয়ার বিভিন্ন এলাকার বালু ব্যবসায়ীরা বালু কিনে নৌকায় করে ঈশ্বরদী-রূপপুর হয়ে নিদিষ্ট এলাকায় যায়,বেশ কিছু দিন যাবৎ একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বালু ভর্তি নৌকা থেকে চাঁদা দাবী করে আসছে এ লক্ষ্যে তারা সন্ত্রাসী কায়দায় নদীতে মহড়া দিয়ে বেড়াচ্ছে। এ-সময় তিনি আরও বলেন, উল্টো আমাকে ফাঁসাতে তারা মিথ্যা প্রচারণায় নেমেছে।ইন্জিঃ কাকন প্রশ্ন ছুড়ে বলেন, আমার বালু মহাল নাটোর জেলার লালপুরে অবস্থিত,বিভিন্ন জায়গার বালু ব্যবসায়ীরা লালপুর থেকে বালু নিয়ে যায়,লালপুরে বালু সংক্রান্ত কোনো ঝামেলা নেই, তবে আমি কেনো কোন উদ্দেশ্যে ঈশ্বরদী-রূপুপুর এলাকায় আমার নিকট থেকে ক্রয়কৃত বালু বোঝায় নৌকায় সন্ত্রাসী মূলক কর্মকান্ড করতে যাবো? অথচ আমার নামে মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে বলা হচ্ছে "কাকন বাহিনী" নাকি নদীতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করছে।আমি প্রশাসনের কাছে জোর দাবী জানাচ্ছি, এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সুষ্ঠ তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় আনা হোক। কারা করছে এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন,শুনেছি ঈশ্বরদী এলাকার প্রভাবশালী একটি মহল যারা বর্তমানে উক্ত এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে তারাই এসকল সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত, নিরপেক্ষ তদন্ত করলে তাদের নাম আপনারা জানতে পারবেন।কারা ঘটাচ্ছে এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে সাঁড়াঘাট, চরাঞ্চল, ইপিজেডসহ নদী সংলগ্ন এলাকার জেলে, রাখাল ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বললে না প্রকাশ না করার শর্তে তারা বলেন, বর্তমানে এলাকার প্রভাবশালী জাকারিয়া পিন্টু ও তার দুই ভাই মেহেদী হাসান ও সোনামনি'র নেতৃত্ব কায়েম রয়েছে, তাদের ইশারা ছাড়া কেউ কিছুই করতে পারে না,এই নদী অঞ্চল তারাই নিয়ন্ত্রণ করছে।এ ছাড়াও অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, বিআইডব্লিউটিএ’র রাজশাহী-আরিচা নৌপথের পাকশী ব্রিজ পর্যন্ত অংশ ৫ কোটি ৩১ লাখ টাকায় এক বছরের জন্য ইজারা নেয় গ্রুপঅন সার্ভিসেস প্লান লিমিটেড নামক একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির প্রোপাইটর নাসির উদ্দিনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত ১ জুলাই থেকে সাঁড়া ঘাটে বৈধভাবে খাজনা আদায় করতে গেলে ২৫% চাঁদার দাবী করে স্থানীয় বিএনপি নেতা জাকারিয়া পিন্টু ও তার বাহিনী। চাদা না দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে আমার লোকজনকে পিন্টু বাহিনী ধরে নিয়ে যায় এবং ব্যাপক মারপিট করে হাত,পায়ের রগ কেটে দেয়।এ সমস্ত বিষয় নিয়ে জাকারিয়া পিন্টু'র সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তাকে পাওয়া যায় নি। এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( ঈশ্বরদী সার্কেল) প্রণব কুমারের সাথে কথা বললে তিনি, বলেন ঐ ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে যা তদন্তাধীন আছে, নৌ পুলিশ মামলার তদন্ত করছে।তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে।