Me and We

Me and We সবাইকে স্বাগতম

25/04/2025

গ্রিসের গ্রাম দেখতে যেমন

14/04/2025

⛔তিনটি হাড়ি⛔
(✍️দিনাজপুরের ঘুঘুডাঙ্গা ইউনিয়নের বাস্তব ঘটনার উপর ভিত্তি করে✍️)

দিনাজপুর জেলার ঘুঘুডাঙ্গা ইউনিয়নের উত্তর পাশে এক অখ্যাত গ্রাম—ভোঁপাড়ী। মানুষের মুখে মুখে ফেরে এই গ্রামের এক পোড়োবাড়ির ভয়াল গল্প। আজ থেকে প্রায় ৫০ বছর আগে এখানে ঘটে গিয়েছিল এমন একটি ঘটনা, যা রাত হলেই বাতাসে চাপা কান্না আর ফিসফাস হয়ে ফিরে আসে। আর সেই গল্পের কেন্দ্রবিন্দু—তিনটি হাড়ি এবং তাতে বন্দি তিনটি জীন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকসংস্কৃতি বিভাগের গবেষক রফিকুল হক লোককাহিনি ও গ্রামীণ তন্ত্র-মন্ত্র নিয়ে গবেষণা করছিলেন। তার সঙ্গে ছিল দুই ছাত্র, তানিম ও মারুফ। তারা খবর পান, দিনাজপুরের ঘুঘুডাঙ্গা ইউনিয়নের ভোঁপাড়ী গ্রামে একটি পোড়োবাড়ি আছে যেখানে নাকি তিনটি জীন বন্দি।

গ্রামে পৌঁছে তারা সাক্ষাৎ পান বৃদ্ধ আজাহার আলীর সাথে। তিনি একমাত্র ব্যক্তি যিনি ১৯৭২ সালের সেই অভিশপ্ত ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী। তার চোখে যেন ধরা পড়ে সত্তর বছরের হতভাগ্য ইতিহাস। তিনি বলেন:

> “ওই হাড়িগুলো কেউ ছোঁয় না। খোদা কসম, যেই ছুঁয়েছে, তার আর দুনিয়ায় ফেরা হয়নি। ওদের নাম নিলেও শরীর কাঁপে। হাড়ির ভেতরে বন্দি করা হয়েছে তিনটা জীন—ইবলিস, হাফসা আর রায়ান। ওরা একেকজন একেক রকম বিভীষিকার প্রতীক।”

রফিকুল এই সাবধানবাণীকে গবেষণার অতিরঞ্জন ভেবে উড়িয়ে দেন। তারা সেদিন রাতে পোড়োবাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। গ্রামের লোকেরা বারবার নিষেধ করলেও তিনজনের কৌতূহল ছিল দমে যাওয়ার নয়।

পোড়োবাড়ির রান্নাঘরে তারা খুঁজে পান তিনটি মাটির হাড়ি। প্রতিটির গায়ে খোদাই করা আছে জটিল আরবি লিপি, কুফরি মন্ত্র ও প্রতিটি জীনের নাম। সেই সাথে প্রতিটি হাড়ির ঢাকনার ওপরে একটি সিলমোহর খোদাই করা ছিল—একটি চোখ, একটি সাপ ও একটি থুতনিবিহীন মুখ।

আজাহার আলী ব্যাখ্যা করেন, “এই প্রতীকগুলো জীনদের ক্ষমতা বোঝায়। চোখ প্রতীক ইবলিসের—সে মানুষের অন্তরের ঘৃণা ও লোভ দেখে। সাপ প্রতীক হাফসার—সে কাম ও মায়ার বিষ ছড়ায়। আর থুতনিবিহীন মুখ রায়ানের—কারণ সে কণ্ঠরুদ্ধ মৃত্যুর প্রতীক।”

তারা একে একে খুলে ফেলে তিনটি হাড়ির ঢাকনা। বাতাস হঠাৎ ভারী হয়ে ওঠে, আর ঘরের মোমবাতির আলো নিভে যায়।

ইবলিস—আগুনের জীন, ছিল মধ্যপ্রাচ্যের প্রাচীন আগ্নেয়গিরির গুহায়। সে একসময় এক রাজাকে হিংস্র করে তুলেছিল, যার ফলে এক রাতেই ৩০০ মানুষ মারা যায়।

হাফসা—সুন্দরী নারীজীন, একসময় একজন তুর্কি সুফি সাধকের শিষ্যবেশে ঢুকে তার জীবন ধ্বংস করে দেয়। সে বিভ্রান্তির দেবী, পুরুষদের মন থেকে সংসারের ভালোবাসা শুষে নেয়।

রায়ান—ছায়ার জীন, ছিল পারস্যের এক সমাধিতে। একবার সে একজন শিশুকে প্রতি রাতে স্বপ্নে এসে কাঁদতে বাধ্য করেছিল। ৩৬ দিন পরে সেই শিশু ঘুমেই মারা যায়।

এই তিন জীনকে বন্দি করেছিলেন আফগান তান্ত্রিক আল-খাত্তাব। তিনি ১৯৭১ সালে যুদ্ধ শেষে গ্রামে এসে গোপন সাধনায় লিপ্ত হন। সাত রাতের কুফরি মন্ত্রে, নিজের রক্ত দিয়ে বানান তিনটি সিলমোহর। তিনি সতর্ক করে বলেছিলেন, “এই মুদ্রা না ভাঙা পর্যন্ত ওরা বন্দি থাকবে। তবে যারা এগুলো ভাঙবে, তারাই হবে ওদের পরবর্তী বাসস্থান।”

রাত ৩টার দিকে পোড়োবাড়ি কেঁপে ওঠে। তানিম চিৎকার করে বলে, “আমার চোখ! আমি দেখতে পাচ্ছি আগুন!” তার মুখ গলে যায়, হাড় বেরিয়ে পড়ে। মারুফ খালি চোখে দেখে হাফসাকে, তার হাত ধরে সে এগোয় এবং বাড়ির ছাদ থেকে লাফ দেয়। তার দেহ খুঁজে পাওয়া যায় দিঘির পাশে, ঠোঁটে হাসি।

রফিকুল অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায় বটগাছের নিচে। তার জ্ঞান ফিরে আসে পরবর্তী সপ্তাহে, কিন্তু সে তখন ছিল দিনাজপুর মানসিক হাসপাতালে।

ডা. শওকত হাসান, যিনি তখন হাসপাতালের ইনচার্জ ছিলেন, জানান:

> “রফিকুল সারা দিন দেয়ালের দিকে তাকিয়ে থাকত। সে বারবার বলে, ‘ওরা এখন আমার ভিতরে... আমার চোখ দিয়ে দেখছে... আমার কণ্ঠ দিয়ে বলছে।’ আমরা তাকে থেরাপি দিয়েছি, কিন্তু কিছুদিন পর সে সম্পূর্ণ নির্বাক হয়ে যায়। শুধু মাঝে মাঝে সে হাড়ির মতো ঠোঁট গোল করে ফুঁ দেয়, যেন কিছু ফেরাচ্ছে।”

রহিম চাচা:

> “আমার বাবা বলত, রাতে ওই বাড়ির জানালা থেকে এক শিশু হাত বাড়িয়ে দিত। কিন্তু সেখানে তো কেউ থাকে না। ১৯৯১ সালে আমার মামা ওই বাড়ির পাশ দিয়ে যাওয়ার পর পাগল হয়ে যায়।”

হাজেরা খালা:

> “আমরা ছোট থাকতে রাতে হাড়ির ঢাকনা খুলে হালকা আওয়াজ পেতাম। মা বলতেন, ‘চুপ করো, হাফসা গান ধরেছে।’”

মৃত গোরস্থান পাহারাদারের ছেলে, জব্বার:

> “আমার আব্বা বলতেন, ওই পোড়োবাড়ির ভেতরে তিনটা ছায়া হাটে। তারা নাম ধরে ডাকে। একবার তুমি সাড়া দিলে, আর ফিরে আসা হয় না।”

ভোঁপাড়ী গ্রামের লোকেরা জানে, এই ঘটনা বানানো নয়। তার প্রমাণ—আজও কেউ পোড়োবাড়ির পাশ দিয়ে যায় না। বাড়ির দেয়ালে রক্তে লেখা দেখা যায় আরবি শব্দ—"اخرج من هنا" (এখান থেকে চলে যাও)। রাত নামলেই বাতাস ভারী হয়ে ওঠে, এবং তিনটি হাড়ির গল্প আবার নিঃশব্দে ফিরে আসে।

আমাদের সমাজে এমন কিছু ঘটনা আছে, যেগুলো বিশ্বাস হওয়ার মতো নয়। কিন্তু বিশ্বাস করা না করা সম্পূর্ণ আপনার ব্যাপার।

যার সাথে ঘটে, শুধু সে-ই জানে—ভয়ের গভীরতা কতটা হতে পারে।

Endereço

Lisbon

Notificações

Seja o primeiro a receber as novidades e deixe-nos enviar-lhe um email quando Me and We publica notícias e promoções. O seu endereço de email não será utilizado para qualquer outro propósito, e pode cancelar a subscrição a qualquer momento.

Compartilhar