
30/06/2025
কিশোরগঞ্জের ইটনায় বিনা পারিশ্রমিকে তিন হাজারের বেশি ক*বর খোঁড়া সেই মনু মিয়া (৬৭) মা*রা গেছেন। মনু মিয়ার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। জীবনের প্রায় অর্ধশত বছর তিনি ব্যয় করেছেন কবর খননের কাজে, বিনিময়ে কখনো কিছু চাননি। আশপাশের গ্রাম ও জেলাজুড়েও পরিচিত ছিলেন ‘শেষ ঠিকানার কারিগর’ নামে।
শনিবার সকালে জয়সিদ্দি ইউনিয়নের আলগাপাড়া গ্রামের নিজ বাড়িতে তিনি মা*রা যান (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
মনু মিয়ার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে তার ভাতিজা শফিকুল ইসলাম বলেন, তিনি (মনু মিয়া) দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিসসহ বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন।
মনু মিয়ার স্বজনেরা বলেন, কবর খোঁড়ার কাজ করতে গিয়ে নিজের দিকে খেয়াল হয়নি নিঃসন্তান মনু মিয়ার। ফলে শরীরে নানা জটিল রোগ বাসা বাঁধে। রোগে কাবু হয়ে সম্প্রতি শয্যাশায়ী হন তিনি। গত ১৪ মে তাকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে কিছুটা সুস্থতাবোধ করলে তাকে বাড়িতে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আজ সকাল থেকে তিনি আবার অসুস্থ হয়ে যান।
ইটনার চিকিৎসক ডা. ফেরদৌস আহমেদ চৌধুরী লাকী বলেন, তাকে বলা হতো শেষ ঠিকানার কারিগর। তার মৃত্যুত এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
ড. লাকী জানান, মনু মিয়া স্ত্রী রেখে গেছেন। কোনও সন্তান নেই। জীবনের প্রায় ৫০ বছর তিনি বিনা পয়সায় মানুষের কবর খনন করে গেছেন। দূরদূরান্তে যাতায়াতের সুবিধার জন্য তিনি নিজের নিজের ধানি জমি বিক্রি করে কয়েক বছর আগে একটি ঘোড়া কিনেছিলেন। কারও মৃত্যুর খবর পেলেই মনু মিয়া ক*বর খননের যাবতীয় সরঞ্জাম নিয়ে ঘোড়ায় চড়ে ছুটে যেতেন। কিন্তু মাসখানেক আগে যখন মনু মিয়া ঢাকায় চিকিৎসাধীন ছিলেন তখন কিছু দুর্বৃত্ত তার ঘোড়াটিকে মে*রে ফেলে।