16/07/2025
অনেকেই সৌদি আরবে কফিল ছাড়া নিজের নামে বিজনেস করতে চান। নিজের কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করতে চান। আপনাদের মনে নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খায়। সে সকল প্রশ্নের উত্তর পাবেন এই পোস্টে।
যারা চান সৌদি আরবে নিজের নামে ব্যবসা করতে তাদের জন্য রয়েছে Investor License, যার মাধ্যমে আপনি সৌদি আরবে ১০০% নিজের নামে কোম্পানি খুলতে পারবেন।
এই লাইসেন্স নিয়ে আপনি কী করতে পারবেন?
Investor License নিয়ে আপনি চাইলে একাধিক খাতে ব্যবসা শুরু করতে পারেন। যত খুশি বিজনেস বাড়াতে পারেন।
Import-Export (আমদানী-রপ্তানী)
রেস্টুরেন্ট / কফি শপ / হোটেল
ক্লিনিক, ফার্মেসি, ল্যাবরেটরি
স্কুল, প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (ট্রেনিং ইনস্টিটিউট)
আইটি ও সফটওয়্যার কোম্পানি
ই-কমার্স বা অনলাইন বিজনেস
কনস্ট্রাকশন ও রিয়েল এস্টেট কোম্পানি
বিনোদন, মিডিয়া, বিজ্ঞাপন, মার্কেটিং
আপনার ব্যবসার ধরন অনুযায়ী সঠিক ক্যাটাগরি নির্বাচন করলেই এই সবকিছু সম্ভব। যখন যে নতুন বিজনেস শুরু করতে চান একটিভিটি এড করে নিলেই হবে।
শুধু বাংলাদেশের কোম্পানি থাকলে কী হবে?
আপনার যদি কেবল বাংলাদেশে কোম্পানি থাকে, তবুও আপনি লাইসেন্স পেতে পারেন। তখন কিছু নির্দিষ্ট সেক্টরে সীমাবদ্ধতা থাকবে যেমন ইমপোর্ট এক্সপোর্ট করতে পারবেন না। যদি কোম্পানি না থাকে খুলতে প্রয়োজন ৭ দিন। এই লাইসেন্সকে অনেকে সার্ভিস লাইসেন্স বলে।
যদি তিনটি দেশে কোম্পানি থাকে?
যদি আপনি বাংলাদেশ ছাড়াও যুক্তরাজ্য, আমেরিকা, দুবাই ইত্যাদি যে কোনো অতিরিক্ত ৩ দেশের কোম্পানি দেখাতে পারেন, তাহলে আপনি সবচেয়ে বিস্তৃত ধরনের লাইসেন্স পাবেন। এর মাধ্যমে আপনি চাইলে যে কোনো ব্যবসা একই লাইসেন্সে করতে পারবেন। এক লাইসেন্সেই ফ্যাক্টরি, রেস্টুরেন্ট, আইটি, ট্রেডিং সব চালানো যাবে। যদি একটি কোম্পানি নাও থাকে তবে খুলতে প্রয়োজন ৭ দিন। এই লাইসেন্সকে অনেক ট্রেডিং লাইসেন্স বলে।
এরপর বাংলাদেশের কোম্পানি ও অন্যান্য দেশে যদি কোম্পানি থাকে সেই কাগজ নিয়ে সৌদি অংশে কাজ। প্রথমেই লাগবে আপনার পাসপোর্টের কপি। এটি আবেদনকারীর পরিচয় নিশ্চিত করতে ব্যবহৃত হয়। এরপর দরকার হবে একটি সচল মোবাইল নাম্বার ও ইমেইল ঠিকানা, যাতে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে OTP ও অন্যান্য নোটিফিকেশন পাঠানো যায়।
আপনার কোম্পানির ঠিকানা প্রমাণের জন্য প্রয়োজন হবে National Address Certificate, যা সৌদির পোস্টাল সিস্টেমে রেজিস্ট্রেশন করে পাওয়া যায়। এরপর অফিস বা দোকান ভাড়া নেওয়ার পর, সেই ভাড়ার চুক্তিপত্রকেই বলা হয় Ejar এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি কাগজ, যা না থাকলে আপনি লাইসেন্সের পরবর্তী ধাপে যেতে পারবেন না।
একবার ঠিকানা ও ইজার রেডি হলে আপনি MISA Investor License-এর জন্য আবেদন করবেন। লাইসেন্স পাওয়ার পর, এর ভিত্তিতে আপনি সৌদিতে একটি কোম্পানি খুলতে পারবেন, যেটির নাম, কার্যক্রম, ক্যাটাগরি সব আপনার পছন্দ অনুযায়ী হবে।
এরপর করতে হবে Commercial Registration (CR), যার মাধ্যমে আপনার কোম্পানি অফিসিয়ালি সৌদিতে রেজিস্টার হবে। তারপর আপনি পাবেন Chamber of Commerce-এর সদস্যপদ, যেটি ব্যবসার স্বীকৃতি হিসেবে গণ্য হয়।
এখানেই শেষ নয়, আপনার ব্যবসা যদি ৩৭৫,০০০ রিয়ালের বেশি আয় করে, তবে আপনাকে কর কর্তৃপক্ষের (ZATCA) কাছে VAT রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। ব্যাংক লেনদেনের জন্য কোম্পানির নামে একটি অফিসিয়াল ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা বাধ্যতামূলক।
সবশেষে, আপনার ব্যবসার ধরন যদি খাদ্য, মেডিকেল, বা টেলিকমিউনিকেশন সম্পর্কিত হয়, তাহলে আপনাকে Municipality License, SFDA Approval, বা CITC Permission নিতে হবে। ব্যবসার প্রকৃতির উপর নির্ভর করে কোন অনুমোদন লাগবে তা নির্ধারণ হয়।
কত টাকা প্রয়োজন সৌদি আরবে লিগ্যালি কোম্পানি সেটাপের জন্য? সাধারণত ইন্টারন্যাশনাল ফার্মগুলো ২৫,০০০ থেকে লাইসেন্সের ধরণ অনুযায়ী ২৫০০০০ রিয়াল পর্যন্ত চার্জ করে। বাংলাদেশি কনসালটেন্সি ফার্মগুলো ২০,০০০ থেকে ধরণভেদে ৯০,০০০ চার্জ করে। যেমন ধরুণ আপনি কোনো খাবার রপ্তানি করবেন। লাইসেন্সের সাথে আপনার খাবারগুলোকে সৌদিতে চেকাপ করতে হবে যে এগুলো হালাল ও স্বস্থ্যের জন্য ঠিক আছে। এভাবে বিজনেসের ধরণ ও লাইসেন্স অনুযায়ী দাম কম বেশি হয়।