04/07/2025
নির্বাচনে পিআর পদ্ধতি
▪️ নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের বাইরে স্বতন্ত্র কেউ প্রার্থী হতে পারবেন না। কারণ এ পদ্ধতিতে ব্যক্তিকে নয়, ভোট দিতে হবে দলকে
▪️সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনীব্যবস্থায় আরো স্বৈরাচারী হবেন দল ও দলপ্রধান। কারণ তখন সংসদ সদস্য হতে সম্ভাব্য প্রার্থীরা আর জনগণের কাছে যাবেন না; যাবেন দলের নেতার কাছে। আগে থেকেই টাকা নিয়ে হাজির হবেন।
▪️৩০০ আসনের মধ্যে এককভাবে সরকার গঠন করতে একটি দলকে ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেতে হবে, যা হবে কঠিন। সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে দেখা দেবে আরেক সমস্যা। যদি কোনো সরকারের ৫০ শতাংশের বেশি আসন না থাকে তাহলে দেখা যাবে, সরকার বাজেটসহ বিভিন্ন আইন পাস করতে পারছে না। আইন পাসের জন্য অন্য দলের শরণাপন্ন হতে হবে। সেসব দল সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন সুবিধা আদায় করে নেবে। উন্মোচিত হবে নতুন দুর্নীতির ক্ষেত্র। ছোট দলগুলো কারণে-অকারণে সরকারকে ফেলে দিতে চাইবে এবং কোনো সরকারই সঠিকভাবে কাজ করতে পারবে না।
▪️ জনগণের সরাসরি ভোটের মাধ্যমে ৩০০ সংসদ সদস্য নির্বাচনের যে বিধান রয়েছে, সেটির মাধ্যমে প্রতিটি আসনে মনোনয়নের জন্য স্থানীয় পর্যায়ে প্রতিযোগিতা হয় এবং এর মাধ্যমে স্থানীয় নেতৃত্ব তৈরি হয়। কিছু নেতা তৈরি হয়। জনগণের ভোট পেতে হলে তাঁদের স্থানীয় জনগণের সঙ্গে মিশতে হয়। কথা বলতে হয়। সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনী পদ্ধতি চালু হলে জনগণের কোনো সংসদ সদস্য থাকবে না। থাকবে দলীয় প্রধানের আনুগত্য, পোষা সংসদ সদস্য, যাঁদের আনুগত্য থাকবে কেবল দলীয় প্রধানের কাছে। সংসদ হবে দলীয় ক্লাব।
▪️সংসদীয় আসনের ভাগ পাওয়ার মানদণ্ড যদি ন্যূনতম ৫ শতাংশ হয়, তাহলে আমাদের দেশের ছোট ছোট দলগুলোর, যাদের প্রায় সবারই ভোটপ্রাপ্তির হার ৫ শতাংশের কম, তারা কোনো আসন পাবে না।
▪️ছোটদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা’র নেতিবাচক উদাহরণ ইসরায়েলের পিআর পদ্ধতি। ‘এ প্রসঙ্গে গাজায় ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের মধ্যকার চলমান যুদ্ধের উদাহরণ টানা যেতে পারে। অনেক বিশ্লেষকের মতে, গাজায় যুদ্ধ এত প্রলম্বিত হওয়ার একটি বড় কারণ হলো আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের কারণে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু কিছু অতি ক্ষুদ্র উগ্র ধর্মান্ধ দলের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছিলেন।
▪️স্বৈরাচারের পুনর্বাসনের আশঙ্কা
Note : বর্তমান আসনভিত্তিক ‘ফার্স্ট পাস্ট দ্য পোস্ট’ এফপিটিপি এবং সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির ইতিবাচক ও নেতিবাচক উভয় দিকই রয়েছে। দুটি পদ্ধতিই বলতে গেলে ‘মিক্সড ব্লেসিং’ বা মিশ্র আশীর্বাদ। এ বিবেচনায় অনেক দেশেই এখন মিশ্র পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকে। মিশ্র পদ্ধতিতে সংসদের একাংশ এফপিটিপি পদ্ধতিতে, আরেকাংশ সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত হয়ে থাকে। সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিও বহু রকমের হয়ে থাকে। এ ছাড়া সংসদের দুই কক্ষে দুই ধরনের পদ্ধতিও থাকতে পারে।