31/08/2024
ধন্যবাদ বাংলাদেশ
সাজানো গোছানো একটা শহর মুহূর্তেই তছনছ হয়ে গেলো হঠাৎ বন্যার কারণে। নদীর নামানুসারে এই জেলার নামকরণ হলেও পানির সাথে আমাদের সখ্যতা কখনোই অত গভীর ছিলো না। আমাদের কাছে ভরা-বর্ষা মানে রাস্তার হাটু পানিতে জাল মেরে মাছ ধরা, কিংবা বন্ধুরা মিলে কাদা-মাটিতে ফুটবল খেলা। সেই পানিই যে এত প্রলয়ংকারী আর এত ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে তা এই অঞ্চলের মানুষের চিন্তার বাইরে।
মানুষের আর্তনাদ, হাহাকার, দুশ্চিন্তা, আর কান্নায় যখন ফেনীর বাতাস ভারী হয়ে উঠেছিলো তখন পুরো বাংলাদেশ ঝাপিয়ে পড়ে ফেনীকে বাচাঁনোর জন্য। ১ দিনের মধ্যে ট্রাকে হাজার হাজার ভলন্টিয়ার শত শত স্পীডবোট নিয়ে চলে আসলো মানুষকে উদ্ধারে। কিন্তু প্রবল স্রোতের মধ্যে উদ্ধার কার্যক্রম যখন অসম্ভব হলে উঠছিলো, তখনও মনোবল না হারিয়ে নিজেদের সাধ্যমত চেষ্টা করেছে সবাই। বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা, সাধারণ মানুষ সবাই আন্তরিকভাবে ঝাপিয়ে পড়েছে।
এই আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনকে ফেনীবাসী মনে রাখবে; টিএসসিকে ফেনীবাসী মনে রাখবে; দেশের বিভিন্ন জায়গায় মন্দিরের টাকা ডোনেট করার কথা ফেনীবাসী মনে রাখবে; উমরা হজ্জের জন্য জমানো টাকা ডোনেট করে দেওয়া শিশুটিকে ফেনীবাসী মনে রাখবে; ফেনীবাসীর সেবায় পুরো দেশের সব ভলন্টিয়ারদের ঐ ক্লান্ত শরীর, নির্ঘুম রাতগুলোর কথা ফেনীবাসী মনে রাখবে। আপনাদের প্রতি আমাদের আন্তরিক ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা জানবেন।
অতীতে ফেনী দেশের সব দূর্যোগে দুই হাত ভরে দিয়ে এসেছে। আজ পুরো দেশ মিলে সেই ভালোবাসাটা ফেনীবাসীকে ফিরিয়ে দিলো। ফেনীবাসী এই বন্যা যতদিন মনে রাখবে, ততদিন আপনাদেরও মনে রাখবে।
আমি খুব করে চাইবো আমাদের শহরের এই ক্ষত কাটিয়ে উঠার পর ফেনীতে আসা ভলন্টিয়ারদেরকে নিয়ে একটা আয়োজন করা হোক। তাদেরকে আপ্যায়ন করার একটা সুযোগ হোক ফেনীবাসীর জন্য। আমাদের বিপদে যদি তারা আসতে পারে আমাদের আনন্দেও তারা নিশ্চয়ই শামিল হবে।
©