09/08/2025
আওয়ামী লীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা মানবাধিকারের লঙ্ঘন, জাতিসংঘে অভিযোগ দাখিল —!!
লন্ডন, যুক্তরাজ্য:
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক আওয়ামী লীগের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাকে 'মৌলিক মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন' হিসেবে অভিহিত করে জাতিসংঘের কাছে একটি জরুরি আবেদন জানানো হয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে লন্ডনের ডাউটি স্ট্রিট চেম্বার্সের দুই বিশিষ্ট আইনজীবী স্টিভেন পাওলস এবং অ্যালেক্স টিন্সলে এই আবেদনটি দাখিল করেছেন।
আবেদনটি জাতিসংঘের গণতান্ত্রিক ও equitible আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলা প্রচার বিষয়ক স্বাধীন বিশেষজ্ঞ এবং অন্যান্য বিশেষ প্রতিবেদকদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এতে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের কার্যক্রমের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে এবং একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।
আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী প্রশাসন ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে দেশব্যাপী আওয়ামী লীগের সমর্থক, নেতাকর্মী এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর ব্যাপক সহিংসতা ও হামলা চালানো হয়েছে। উদ্বেগজনকভাবে, এসব হামলার সঙ্গে জড়িতদের কোনো প্রকার বিচারের আওতায় না এনে অন্তর্বর্তী প্রশাসন তাদের সর্বাত্মক ক্ষমা ঘোষণা করেছে।
আইনজীবীরা জানান, অন্তর্বর্তী প্রশাসন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিলেও তাদের কর্মকাণ্ড সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের বিষয়ে গভীর সংশয় তৈরি করেছে। এর মধ্যেই, ২০২৫ সালের মে মাসে অন্তর্বর্তী প্রশাসন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এই নিষেধাজ্ঞার কারণ হিসেবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (আইসিটি) দলের নেতাদের বিরুদ্ধে চলমান বিচারিক কার্যক্রম শেষ না হওয়াকে উল্লেখ করা হয়েছে।
জাতিসংঘে দাখিলকৃত আবেদনে বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হয়েছে যে, এই নিষেধাজ্ঞা কীভাবে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ও জনপ্রিয় রাজনৈতিক দলের সমর্থকদের রাজনৈতিক অধিকার খর্ব করছে এবং দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও আইনের শাসনকে মারাত্মকভাবে দুর্বল করে ফেলছে।
আবেদনে জাতিসংঘের স্বাধীন বিশেষজ্ঞদের কাছে তিনটি প্রধান দাবি জানানো হয়েছে:
১. বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী প্রশাসনকে অবিলম্বে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন আয়োজনের জন্য চাপ প্রয়োগ করা।
২. আওয়ামী লীগের ওপর থেকে সব ধরনের নিষেধাজ্ঞা অবিলম্বে প্রত্যাহারের জন্য জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
৩. ভবিষ্যতে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে আওয়ামী লীগ যাতে পূর্ণমাত্রায় অংশগ্রহণ করতে পারে, তা নিশ্চিত করা।
এই আইনি পদক্ষেপের মাধ্যমে বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক সংকট আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন মাত্রা পেল। এখন দেখার বিষয়, জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই আবেদনে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে কী ভূমিকা পালন করে।