18/11/2025
ুওয়তলাভের পঞ্চম বছর, নবীজি (সা.) দেখলেন শুধুমাত্র ইসলামগ্রহণের ‘অপরাধে’ নিজ গোত্রের আপন লোকেরাই সাহাবিগণের ওপর অমানবিক নির্যাতন শুরু করেছে। দিন যত যায়, জুলুম-নিপীড়ন আর অবমাননা বাড়তে থাকে। যারা সমাজে খুব সম্মানের সাথে চলাফেরা করতেন, তাদেরই এখন আড়ালে-আবডালে থাকতে হয়।
সাহাবিগণের এই ‘পরাধীনতা’ নবীজির (সা.) মনে খুব কষ্ট দিল। তিনি তাদের বললেন, ‘তোমরা আল্লাহর জমিনের কোথাও হিজরত করে চলে যাও, আল্লাহ শীঘ্রই তোমাদের একত্রিত করবেন। সাহাবিগণ আরজ করলেন, কোথায় যাব? তিনি হাবশার দিকে ইঙ্গিত করেন।’ (সীরাতুল মুস্তফা, ইদরীস কান্ধলবী, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ২১১-২১২, ইফাবা)
আরেক বর্ণনায় আছে, নবীজি (সা.) বলেন, ‘তোমরা হাবশায় চলে যাও, এটাই তোমাদের জন্য ভালো। কারণ সেখানে একজন ন্যায়পরায়ণ বাদশাহ আছেন, যার রাজত্বে কেউ জুলুমে শিকার হয় না। সেই দেশটা সত্য ও ন্যায়ের দেশ। আল্লাহ যতদিন পর্যন্ত তোমাদের জন্য এই জুলুম থেকে বাঁচার পরিবেশ না করে দেন, ততদিন পর্যন্ত তোমরা সেখানে থাকতে পারো। (সীরাতুন নবী, ইবনে হিশাম, খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ২৮৪, ইফাবা)
এই নির্দেশ পেয়ে ৬১৫ খ্রিষ্টাব্দে, হিজরিপূর্ব ৭ সালের রজব মাসে সাহাবিগণ মক্কা ছেড়ে সমুদ্রপথে আফ্রিকার দিকে রওনা দেন, যা ইতিহাসের কিতাবে ‘হাবশায় প্রথম হিজরত’ নামে প্রসিদ্ধ।
তারা খ্রিষ্টান রাজা নাজ্জাশি শাসিত আকসুম রাজ্যে (বর্তমান ইথিওপিয়া ও ইরিত্রিয়া) গিয়ে নোঙর ফেলেন, এবং সেখানে বেশ নিরাপত্তার সঙ্গে তিন থেকে চারমাস বসবাস করেন। এরপর এমন একটা গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে মক্কার সবাই ইসলামগ্রহণ করে ফেলেছে, তাই তারা ফিরে আসেন।