18/11/2024
দেশের রাজনৈতিক ক্ষমতা দখল ও প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে সহিংসতার যে চিত্র আমরা দেখতে পাই, তা আসলে এক গভীর সংকটের ইঙ্গিত বহন করে। ক্ষমতার লোভ এবং আধিপত্য কায়েমের প্রতিযোগিতায় মানবজীবনের যে অপচয় ঘটছে, তাতে মনে হয় যেন মানুষের জীবন আর কোনো মূল্যই বহন করছে না। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন করার নামে সহিংসতা, আক্রমণ, এবং এমনকি হত্যাকাণ্ডের ঘটনাগুলো আমাদের সমাজের মানবিক ও নৈতিক মূল্যবোধের ক্রমশ অবক্ষয়কেই চোখে আনে।
এ ধরনের সহিংস পরিস্থিতি শুধুমাত্র সামাজিক অস্থিরতাই সৃষ্টি করে না, সাধারণ মানুষের জীবনকেও করে তোলে অনিরাপদ ও শঙ্কিত। এক পক্ষ ক্ষমতা ধরে রাখতে আরেক পক্ষকে নির্মমভাবে দমন করে, যেন মানুষের জীবন কেবলই একটি সংখ্যা। এই লড়াইয়ে প্রাণ হারায় অসংখ্য নিরীহ মানুষ, যারা হয়তো রাজনীতির এই রক্তক্ষয়ী খেলার অংশ নয়; তারা কেবল শান্তিতে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখে।
রাজনীতির প্রকৃত উদ্দেশ্য হওয়া উচিত জনগণের সেবা ও জাতির উন্নয়ন। অথচ ক্ষমতার লড়াইয়ে অনেকেই ভুলে যান যে, তাদের দায়িত্ব জনগণের জীবনমান উন্নত করা, সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। রাজনৈতিক নেতৃত্বের উচিত মতভিন্নতা থাকা সত্ত্বেও সহনশীলতা বজায় রেখে শান্তিপূর্ণ উপায়ে নিজেদের মতামত ও লক্ষ্য অর্জনের চেষ্টা করা। শক্তি প্রদর্শন ও সহিংসতার মাধ্যমে অর্জিত ক্ষমতা কোনোদিনও স্থায়ী সমর্থন আনতে পারে না, বরং এটি ক্ষয়িষ্ণু সমাজ ও অসহনশীল পরিবেশ তৈরি করে।
আমাদের প্রয়োজন এমন একটি রাজনৈতিক পরিবেশ, যেখানে নেতৃত্ব কেবল ক্ষমতার জন্য নয়, বরং মানবতার কল্যাণে কাজ করবে। সবার আগে জীবন, শান্তি, ও মানবাধিকারকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে—এমন সমাজেই প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব। একে অপরকে নিঃশেষ করে ফেলার এই প্রতিযোগিতা বন্ধ হওয়া উচিত। একটি শান্তিপূর্ণ সমাজ ও সভ্য জাতি গঠনে রাজনৈতিক সহনশীলতা ও দায়িত্বশীল আচরণের কোনো বিকল্প নেই।