27/03/2025
الحمد لله رب العالمين- والعاقبةللمرسلين - وعلي اله واصحبه اجمعين - اما بعد
সকল প্রশংসা মহান আল্লাহর উপর যিনি সকল সৃষ্টি জগতের প্রতি পালক। দরুদ সালাম পেশ করি মহানবি হজরত মুহাম্মদ ﷺ এর উপর।
লাইলাতুল কদর এমন একটি রাত, যে রাতের কারনে পুরা রামাদান দামি হয়েছে। আল্লাহ পাক বলেছেন___ انا انزلنه في ليلة القدر- وما ادرك ما ليلة القدر- ليلة القدر خير من الف شهر-
আমি কুরআন নাযল করেছি লাইলাতুলকদরে- আপনি কি জানেন লাইলাতুলকদর কি? লাইলাতুলকদর হাজার মাসের চেয়ে উত্তম।
লাইলাতুলকদরের কারনে রামাদান দামি হয়েছে। লাইলাতুলকদর কদর কেন দামি হয়েছে? কুরআন নাযিলের কারনে।
এখন বলুন তো কুরআন কারীম রহমত হিসাবে বড় নাকি আমার হুজুর রাসুল ﷺ রহমত হিসাবে বড়? আল্লাহর ভাষ্য অনুযায়ী কোনটি রহমত হিসাবে বড়? কুরআন নাকি রাসুলﷺ?
আল্লাহ পাক বলেছেন___ وما ارسلنك الا رحمة للعالمين- ও আমার হাবীব! গোটা সৃষ্টি জগতের জন্য আমি আল্লাহ আপনাকে রহমত হিসাবে প্রেরণ করেছি। আর কুরআনের ব্যাপারে আল্লাহ বলেছেন__ ونزلنا عليك القران تبيان لكل شيء وهدى ورحمة وبشرى للمسلمين
মুহাম্মদ ﷺ এই কুরআনকে আপনার উপর নাযিল করেছি সকল বিষয়ে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা হিসাবে, পৃথিবীর সকল মুসলমানদের জন্য কুরআন হেদায়েত কারী, রহমতের কান্ডারী ও সুসংবাদের বাহক।
কুআরনকে আল্লাহ বলেছেন মুসলমানদের জন্য রহমত, আর আমার হুজুরﷺ কে বলেছেন সৃষ্টি জগতের রহমত।
কুরআন হচ্ছে সবার জন্য হেদায়ত আর শুধু মুমিনের জন্য রহমত। আল্লাহ পাক বলেছেন ___شهر رمضان الذي انزل فيه القران هدى للناس রামাদান এমন একটি মাস যাতে মানবজাতির হেদায়েতের জন্য কুরআন নাযল হয়েছে। আর আমার রাসুলﷺকে বলেছেন وما ارسلنك الا رحمة للعالمين__ হাবীব মুহাম্মদ ﷺ গোটা সৃষ্টি জগতের জন্য আমি আপনাকে রহমত হিসাবে প্রেরণ করেছি।
তাহলে রহমত হিসাবে বড় কোনটি? কুরআন নাকি হুজুর ﷺ ?
কুরআনের রহমত থেকে আমার রাসুলﷺ এর রহমতের ব্যাপকতা আরো বেশি, আরো বিশাল, আরো ব্যাপক।
মুমিনের রহমত মুসলামনের রহমত এই কুরআন এসেছে বলেই লাইলাতুল কদর একটি রাত দামি হয়েছে। আর এই একটি রাতের জন্য রামাদান মাস দামি হয়েছে।( কিন্তু আখেরি নবি, নবীগণের মাথার তাজ নুর নবিজি মুহাম্মদﷺ রহমাতুল লিল আলামিন হিসাবে ১৫০০ বছর আগে রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ রাতে এসেছেন, সেই রাতকে বলা হয় ليلة مولد المصطفى এই কারনে সে রাতের দাম লাইলাতুলকদর থেকে লক্ষগুণ বেশি দামি। সে একটি রাতের কারনে রবিউল আউয়াল মাস সকল মাসের চেয়ে উত্তম)।
আল্লাহ পাক মানবজাতির হেদায়েতের জন্য কুরআন নাযিল করেছেন, যদি মানবজাতির পিতা আদম (আঃ) সৃষ্টি না করতেন মানুষ আসতো? আদম (আঃ) কে তো সৃষ্টি করেছেন মুহাম্মদ ﷺ এর খাতিরে। যদি আল্লাহ পাক তার হাবিবকে সৃষ্টি না করতেন, তাহলে আদম তো দূরে থাক, আরশ-কুরসি, লৌহ-কলম কোন কিছু সৃষ্টি করতেন না। সুতরাং কুরআন কারিমের ওসিলায় আদম বা মানবজাতি সৃষ্টি করেন নাই, বরং রাসুল ﷺ এর ওসিলায় আল্লাহ পাক সবকিছু সৃষ্টি করেছেন। সে জন্য কুরআন এসেছে মানুষের হেদায়েতের জন্য রাসুলﷺ এর শ্রেষ্ঠ মো'জিযা হিসাবে।
লাইলাতুলকদরে আল্লাহ পাক সবাইকে ক্ষমা করে দিবেন কিন্তু কিছু মানুষকে আল্লাহ ক্ষমা করবেন না। আল্লাহ পাক ক্ষমাশীল, ক্ষমা করতে ভালবাসেন। কিন্তু তারপরেও কিছু মানুষকে ক্ষমা করবেন না তারা হলেন
১। মুশরিকদের আল্লাহ ক্ষমা করবেন না।
মুশরিক কারা যারা অন্যকে আল্লাহর সমকক্ষ মনে করেন, যা শুধুই আল্লাহ দিতে পারেন সে ব্যাপারে আল্লাহ ব্যতিত অন্যের মুখাপেক্ষী হন, অন্যের কাছে ধরনা দেয় এসব ব্যক্তিদের আল্লাহ ক্ষমা করেন না
২। মাতা-পিতার অবাধ্য সন্তানকে আল্লাহ পাক ক্ষমা করেন না। যারা বাবা - মাকে কষ্ট দেয়, মনে আঘাত দেয়, দেখাশোনা করে না, খাবার দেয় না, সেবা যত্ন করে না, অবহেলা করে আল্লাহ পাক তাদেরকে ক্ষমা করেন না
৩। হিংসুক ব্যক্তিকে আল্লাহ পাক ক্ষমা করে না। মনে হিংসা তো সবার তো একটু আধটু থাকে কিন্তু যারা হিংসার কারনে অন্যের বাড়িঘর, ব্যবসা, প্রতিষ্ঠান বা সন্তানের উপর আঘাত করে আল্লাহ পাক কদরে তাদেরকে ক্ষমা করেন না
৪। জালিমকে আল্লাহ পাক ক্ষমা করেন না। যারা অন্যায়ভাবে মানুষের ক্ষতি করে, অত্যাচার, অবিচার, জুলুম করে আল্লাহ পাক তাদের ক্ষমা করেন না।
৫। যারা মদ, জোয়া, আফিম ড্রাগ এডিক্টেড বা ড্রাগ ব্যবসায় জড়িত আল্লাহ পাক তাদেরকে ক্ষমা করেন না।
কদর রাতের করণীয়
১। তাওবা করা
২। নফল ইবাদত করা
৩। কাযা নামায আদায় করা
৪। কদর তালাশ করা
৫। কল্যাণের জন্য দোয়া করা
৬। বাবা মা থেকে ক্ষমা চাওয়া
৭। যাদের উপর জুলুম করেছেন তাদের কাছে ক্ষমা চাওয়া।
৮। কম ঘুমানো
৯। তাহাজ্জুদ পড়া।
১০। কুরআন তেলাওয়াত করা
১১। মুরব্বিদের কবর জিয়ারত করা
১২। বেশি দরুদ শরীফ পড়া
যতবেশি সম্ভব আল্লাহর বন্দেগিতে রাত যাপনে কান্না করা কদরের করণীয়
আল্লাহ পাক আমাদের কবুল কুরুন আমিন