11/04/2025
ইসলামে একজন পুরুষকে সর্বোচ্চ চারজন স্ত্রী রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তবে এর সঙ্গে কিছু কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে।
পবিত্র কোরআনে এই বিষয়ে বলা হয়েছে:
"...নারীদের মধ্য থেকে যাকে তোমাদের ভালো লাগে, বিয়ে কর—দুজন, তিনজন, অথবা চারজন। কিন্তু যদি তোমরা আশঙ্কা কর যে, তাদের মধ্যে ন্যায়বিচার করতে পারবে না, তাহলে মাত্র একজনকেই (বিয়ে কর)..." (সূরা নিসা, ৪:৩)।
অথচ আমদের দেশের বেশীরভাগ পুরুষ একটি সম্পুর্ণ কোরআনের আয়াতের আর্ধেক জানে, আর অর্ধেক জানে না। এটা কিভাবে সম্ভব ? আসলে পুরুষরা তাঁদের প্রয়োজনীও অর্ধেক আয়াত এমনভাবে প্রচার করেছে যে বাকি অর্ধেক খুব কম মানুষ ই যানে ।
এই আয়াতের আলোকে আরো যে আয়াতগুলো এসেছে তা তো আরও বেশি অজানা। যেমন -
فَإِنْ خِقْتُمْ أَلَّا تَعْدِلُواْ فَوَاحِدَةً
আর যদি ভয় করো যে, তোমরা সমান আচরণ করতে পারবে না, তবে একটি বিয়ে করো।
কোরআন ৪:৩
وَلَن تَسْتَطِيعُوا أَن تَعْدِلُواْ بَيْنَ النِّسَآءِ وَلَوْ حَرَضْتُمْ
আর তোমরা যতই চেষ্টা করোনা কেন, তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে সমান আচরণ করতে কখনোই পারবে না।
কোরআন ৪:১২৯
হাদীস -
মহানবী (স.) বর্ণিত
যখন একজন পুরুষের দুই স্ত্রী থাকে সে তাঁদের মধ্যে একজনের প্রতি বেশি ঝুঁকে যায়,তখন কেয়ামতের দিন সে এমন আবস্থায় আসবে যে তার একপাস ঝুলে থাকবে।( অর্থাৎ অবস )
সুনানে আবূ দাউদ ২১৩৩
যে আয়াত সবাই জানি, সে আয়াতের কিছু বর্ণনা নিচে দেওয়ার চেষ্টা কেরলাম -
এই আয়াতের আলোকে, ইসলামে একাধিক বিয়ের ) প্রধান নিয়ম ও শর্তগুলো হলো:
সর্বোচ্চ সীমা: একজন পুরুষ একই সময়ে সর্বোচ্চ চারজন স্ত্রী রাখতে পারবেন। এর বেশি নয়।
ন্যায়বিচার ও সমতা: একাধিক স্ত্রী থাকলে তাদের সবার প্রতি সম্পূর্ণ ন্যায়বিচার এবং সমতা বজায় রাখা বাধ্যতামূলক। এর মধ্যে আর্থিক ভরণপোষণ, বাসস্থান, পোশাক, এবং সময় দেওয়ার ক্ষেত্রে সমতা অন্তর্ভুক্ত।
আর্থিক সক্ষমতা: সব স্ত্রীর সব ধরনের খরচ বহন করার মতো পর্যাপ্ত আর্থিক সক্ষমতা থাকতে হবে।
শর্ত পূরণ না হলে: যদি কোনো পুরুষ আশঙ্কা করেন যে তিনি স্ত্রীদের মধ্যে ন্যায়বিচার করতে পারবেন না, তবে তার জন্য শুধুমাত্র একজন স্ত্রী রাখা আবশ্যক।
বাধ্যতামূলক নয়, অনুমোদিত: ইসলামে একাধিক বিয়েকে উৎসাহিত বা বাধ্যতামূলক করা হয়নি, বরং নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে, বিশেষত এতিমদের বা বিধবাদের আশ্রয় ও সুরক্ষার প্রয়োজনে এটিকে একটি সমাধান হিসেবে অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
অন্য একটি আয়াতে (সূরা নিসা, ৪:১২৯) বলা হয়েছে, "তোমরা কখনোই নারীদের মধ্যে ন্যায়বিচার করতে সক্ষম হবে না, যদিও তোমরা তা গভীরভাবে কামনা কর"। এই আয়াতটি আগের আয়াতের শর্তের কঠোরতাকে আরও স্পষ্ট করে তোলে, যা বোঝায় যে একাধিক বিয়ে বজায় রাখা অত্যন্ত কঠিন একটি কাজ এবং এর জন্য বিশেষ নৈতিক ও মানসিক শক্তি প্রয়োজন।
মহান আল্লাহ আমাদের সৃষ্টি করেছেন আর উনি আমাদের সম্পর্ক জানে আর আমাদের নিষেদ করছেন, অথচ আমরাই আমাদের কেয়ামতকে কঠিন করছি। ইসলামিক বক্তাদের কথা শুনে অনুপ্রানিত হওয়ার আগে চিন্তা করে দেখেন, আপনার বিচার কি আপনি কঠিন করতে চান ? সিধান্ত আপনার। যেখানে মহান আল্লাহ বলছেন আপনি পারবেন না, সেখানে আপনি কাকে চ্যালেঞ্জ করছেন?
মনওয়ারা জুঁই ( নিউ ইয়র্ক)