05/16/2025
কানাডার তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (LNG) এখন এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের দিকে নজর দিচ্ছে, যেখানে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং তাইওয়ানের মতো দেশগুলো তাদের জ্বালানি নিরাপত্তা ও পরিবেশগত লক্ষ্য পূরণে নতুন উৎস খুঁজছে।
কানাডার LNG: এশিয়ার নতুন শক্তি সঙ্গী
কানাডার পশ্চিম উপকূলের প্রকল্পগুলো, যেমন LNG Canada, Cedar LNG, এবং Woodfibre LNG, এশিয়ার বাজারে প্রবেশের জন্য প্রস্তুত। বিশেষ করে, Cedar LNG প্রকল্পটি হাইসলা জাতি এবং পেম্বিনা পাইপলাইনের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত হচ্ছে, যা কানাডার প্রথম আদিবাসী সংখ্যাগরিষ্ঠ মালিকানাধীন LNG প্রকল্প। এই প্রকল্পটি ২০২৮ সালের শেষ দিকে চালু হওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে এবং এর বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা ৩.৩ মিলিয়ন টন।
🌏 কেন এশিয়া?
এশিয়ার দেশগুলো, বিশেষ করে জাপান, তাদের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং পরিবেশবান্ধব জ্বালানি উৎসের দিকে ঝুঁকছে। জাপানের LNG চাহিদা ২০৪০ সালের মধ্যে ১০% বৃদ্ধি পেয়ে ৭৪ মিলিয়ন টনে পৌঁছাতে পারে, যদি নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসার প্রত্যাশিত হারে না হয়।
🚢 কানাডার প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা
ভৌগোলিক অবস্থান: কানাডার কিটিম্যাট থেকে জাপানের হিমেজি বন্দরের দূরত্ব ৭,৬৯৮ কিলোমিটার, যা কাতার থেকে ১১,৭৭৩ কিলোমিটার।
কম কার্বন নির্গমন: কানাডার LNG উৎপাদন প্রক্রিয়া অন্যান্য দেশের তুলনায় কম কার্বন নির্গমন করে, যা পরিবেশবান্ধব জ্বালানি সরবরাহে সহায়ক।
নিম্ন পরিবহন খরচ: কানাডা থেকে উত্তর-পূর্ব এশিয়ায় LNG পরিবহনের খরচ প্রায় ৯৬ সেন্ট প্রতি মিলিয়ন BTU, যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গালফ কোস্ট থেকে এই খরচ ২.২২ ডলার।
🤝 নতুন অংশীদারিত্ব
কানাডার ARC Resources সম্প্রতি ExxonMobil-এর সাথে একটি দীর্ঘমেয়াদী চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, যার মাধ্যমে Cedar LNG প্রকল্প থেকে বার্ষিক ১.৫ মিলিয়ন টন LNG সরবরাহ করা হবে।
⚠️ চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ
যদিও কানাডার LNG প্রকল্পগুলো এশিয়ার বাজারে প্রবেশের জন্য প্রস্তুত, তবে নিয়ন্ত্রক জটিলতা, অবকাঠামোগত চ্যালেঞ্জ এবং বিনিয়োগের অনিশ্চয়তা রয়েছে। TC Energy-এর CEO ফ্রাঁসোয়া পয়ারিয়ার মতে, কানাডাকে LNG রপ্তানিতে শীর্ষস্থানীয় হতে হলে রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রয়োজন।
কানাডার LNG প্রকল্পগুলো এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি উৎস হতে পারে, যা পরিবেশবান্ধব, প্রতিযোগিতামূলক এবং নির্ভরযোগ্য। যদি সঠিকভাবে পরিচালিত হয়, তবে কানাডা এশিয়ার জ্বালানি নিরাপত্তা ও পরিবেশগত লক্ষ্য পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।