02/21/2025
ব্যথা কমাতে ওষুধ নয়, বিকল্প হতে পারে যৌনমিলন।
গবেষণা করে দেখা গেছে, যাঁরা নিয়মিত যৌনসম্পর্কে লিপ্ত হন, তাঁদের মানসিক চাপ কম থাকে। এরও কারণ বিশেষ কিছু হরমোনের ক্ষরণ।
শরীরচর্চার বিকল্প হয়ে উঠতে পারে নিয়মিত যৌনমিলন। এ কথা অনেকেরই জানা। কিন্তু শারীরিক তৃপ্তি, সন্তান উৎপাদন বা শরীরচর্চা নয়, যৌনসঙ্গমের আরও নানা গুণ আছে। দেখে নেওয়া যাক সেগুলোই বা কী!
• রোগপ্রতিরোধ শক্তি বাড়েঃ পরিসংখ্যান বলছে, যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে যৌনসঙ্গমে লিপ্ত হন না, তাঁদের রোগপ্রতিরোধ শক্তি কমতে থাকে। প্রতিবার যৌনমিলনের সময় শরীরের রক্ত চলাচলের পরিমাণ বাড়ে, এমন বেশ কিছু হরমোনের ক্ষরণ বাড়ে— যেগুলো রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়িয়ে দেয়।
• বন্ধ্যাত্ব কমায়ঃ দীর্ঘদিন যৌন সম্পর্কে লিপ্ত না হলে বন্ধ্যাত্বের সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে পুরুষদের ক্ষেত্রে কমে যায় শুক্রাণু উৎপাদন। শুক্রাণুর মৃত্যুর হারও বেড়ে যায়। কিন্তু নিয়মিত যৌন সম্পর্ক ও কর্মতৎপরতা এ সমস্যা কমিয়ে দিতে পারে।
• মানসিক চাপ কমায়ঃ দেখা গিয়েছে, যাঁরা নিয়মিত যৌনসম্পর্কে লিপ্ত হন, তাঁদের মানসিক চাপ কম থাকে। কঠিন কাজও সহজ মনে হয়। মন থাকে ঝরঝরে। এরও কারণ বিশেষ কিছু হরমোনের ক্ষরণ। ওই হরমোনগুলোর ক্ষরণের ফলে রক্তচাপও কমে।
• ত্বক উজ্জ্বল হয়ঃ যাঁরা নিয়মিত যৌনসম্পর্কে লিপ্ত হন, তাঁদের ত্বকে বয়সের ছাপ দেরীতে পড়ে। তার কারণও সেই বিশেষ কিছু হরমোনের ক্ষরণ। হরমোনগুলো ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়ায়। দ্রুত নতুন কোষ জন্মাতে সাহায্য করে। ত্বকের কোষের মৃত্যুর হারও কমে।
• ব্যথা কমায়ঃ নানা ধরনের ব্যথা কমাতে যাঁদের নিত্য ওষুধ খেতে হয়, তাঁদের এই সমস্যার পাকাপাকি সমাধান হতে পারে যৌনমিলন। সঙ্গমের সময়ে অক্সিটোসিন, এনডরফিন হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। এই হরমোনগুলো মাথা যন্ত্রণা থেকে কোমরের ব্যথা, পেশির প্রদাহ থেকে নানা ধরনের স্নায়ুর সমস্যা কমাতে পারে।
সকালে নাকি রাতে, কোন সময়ে শারীরিক সম্পর্ক সুস্বাস্থ্যের ইঙ্গিত দেয়?
মূল কথা হল, কোন সময়ে যৌন সম্পর্ক স্বাস্থ্যের জন্য ভাল?
কেউ ঘুমতে যাওয়ার আগে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হতে চান। কেউ পছন্দ করেন ঘুম ভাঙার সময়। কিন্তু যৌন সম্পর্কের ইচ্ছার সময় নির্বাচন দিয়েও অনেক ক্ষেত্রে বোঝা যায় শরীরের অবস্থা। হালে ইংল্যান্ডের স্নায়ুবিদ ন্যান ওয়াইজ তাঁর গবেষণায় এমনই কিছু তথ্য তুলে ধরেছেন।
এ বিষয়ে গবেষণা করতে গিয়ে উঠে এসেছে কতগুলি তথ্য। দেখা গিয়েছে, পুরুষরা সাধারণত ঘুম ভাঙার সময়ে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হতে বেশি পছন্দ করেন। আর বেশির ভাগ মহিলার মধ্যে ঘুমতে যাওয়ার আগে শারীরিক সংম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার ইচ্ছে বেশি থাকে। বয়সের বিচারে এই পছন্দ-অপছন্দের সময় নিয়ে ভাগাভাগি রয়েছে। দেখা গিয়েছে, তুলনায় কম বয়সি যাঁরা, তাঁরা রাতের দিকে এই ধরনের সম্পর্কে বেশি মাত্রায় লিপ্ত হতে চান। আর বয়স যত বাড়তে থাকে, ততই পছন্দের সময় ক্রমশ ভোরের দিকে চলে যেতে থাকে। এ বিষয়ে ৩টি আলাদা আলাদা সময় নিয়ে কথা বলা হয়েছে এই গবেষণায়।
ভোরে: বয়স যত বাড়ে তত তাড়াতাড়ি ঘুমনোর প্রবণতা আসে। সেই কারণেই বেশি বয়সের মানুষের মধ্যে রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে ভোরে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার প্রবণতা দেখা দেয় বলে দাবি করা হয়েছে এই গবেষণায়। এ ছাড়াও দেখা গিয়েছে, পুরুষদের মধ্যে সকাল ৮টা নাগাদ সবচেয়ে বেশি মাত্রায় টেস্টোস্টেরন হরমোনের ক্ষরণ হয়। এই হরমোন যৌন ইচ্ছা বাড়ানোর কাজ করে। তাই সকালের দিকে পুরুষের মধ্যে এই ইচ্ছা বাড়তে থাকে। ভোরের দিকে কোনও পুরুষের যৌন ইচ্ছের মাত্রা বেশি মানেই, তাঁর শরীরে টেস্টোস্টেরনের ক্ষরণের মাত্রা ভাল। অর্থাৎ তাঁর শরীর এ সব দিক থেকে সুস্থ। শুধু তাই নয়, যৌন সম্পর্কের ফলে এনডরফিনস বা ডোপামিনের মতো হরমোনের ক্ষরণও বাড়ে। যা মন ভাল রাখে।
পাশাপাশি গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, যৌন সম্পর্কের ফলে এক ধরনের ক্লান্তিও হয়। যাঁদের সারা দিন খুব পরিশ্রম করতে হয়, তাঁরা অনেকেই ভোরে যৌন সম্পর্কের কারণে আবার ঘুমিয়ে পড়তে বাধ্য হন। সেই কারণেই ইচ্ছে থাকলেও অনেকে এই সময়টা এড়িয়ে যান।
রাতে: যে সব মহিলাদের নিয়ে এই সমীক্ষা চালানো হয়েছে, তাঁদের বেশির ভাগই বলেছেন, রাতে ঘুমনোর আগে শারীরিক সম্পর্ক তাঁদের বেশি পছন্দের। দেখা গিয়েছে, তুলনায় সারা দিন যাঁদের অনেক বেশি পরিশ্রম করতে হয়, তাঁদের মধ্যে রাতে শারীরিক সম্পর্কে আগ্রহ বেশি। যৌন সম্পর্কের ফলে প্রোল্যাকটিন এবং অক্সিটোসিন নামে হরমোনের ক্ষরণ বেশি হয়। এই হরমোনগুলি ঘুম পাড়াতে সাহায্য করে।
গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, রাতে যাঁরা যৌন সম্পর্কে বেশি উৎসাহ দেখান, তাঁদের অনেকেরই উদ্দেশ্য, সাময়িক ক্লান্তি কাটানো এবং তার পরে ঘুমিয়ে পড়া। যাঁরা সারা দিন মানসিক ভাবে অনেকটা ব্যস্ততার মধ্যে কাটান, তাঁদের পক্ষে দিনের শেষে যৌন সম্পর্কের সঙ্গে রোম্যান্টিকতাকে মেশানোর ক্ষমতা তুলনায় কমে আসে। এমনটাই বলা হয়েছে এই গবেষণায়।
দুপুরে: সপ্তাহান্তের দুপুরের যৌন সম্পর্ক পছন্দ করেন কেউ কেউ। এর পিছনে কারণ হিসেবে গবেষণায় বলা হয়েছে, শারীরিক সম্পর্কের অভ্যাস থেকে বেরতে অনেকেই এই সময়টা বেছে নেন।
তবে কোন সময়টা যৌন সম্পর্কের জন্য ভাল, কোনটা সময় খারাপ— এমন কোনও নির্দিষ্ট সংজ্ঞা যে নেই, তা বলা হয়েছে এই গবেষণায়। এটাও বলা হয়েছে, পুরোপুরি শারীরিক সম্পর্ক না হলেও পরস্পরকে আদর, ছোট ছোট স্পর্শও কখনও কখনও অত্যন্ত প্রয়োজনীয় হয়ে ওঠে। এবং সেগুলিও একই ধরনের হরমোনের ক্ষরণ ঘটায়। আর এর বাইরে সঙ্গী বা সঙ্গিনীর মন বুঝে, তাঁর সময়ের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার একটা প্রবণতাও কাজ করে সময় নির্বাচনের ক্ষেত্রে।
Courtesy: Dr. Nan Wise Ph.D. এর লেখা Understanding the Neuroscience of Pleasure for a Smarter, Happier, and More Purpose-Filled Life
Why Good S*x Matters গ্রন্থে সন্নিবেশিত নিবন্ধসমূহ অবলম্বনে নিউইয়র্ক, ইউএসএ, থেকে ড. ওমর ফারুক কর্তৃক অনুদিত, সম্পাদিত ও পরিমার্জিত॥
Who is Dr. Nan Wise?
Reply: Nan Wise PhD.: A Renowned Neuroscientist, S*x Therapist, and Relationship Specialist.
Dr. Nan Wise is playing a pivotal role in changing our cultural ideas about s*x, through her research on the critical ways that pleasure affects our health and happiness, why we’re experiencing less pleasure now more than ever, and how we can discover our s*xual potential.