
07/27/2025
বিমান বাহিনী না 'ঠোংগা' বাহিনী-১ঃ
'মাসুদরা কী ভালো হবে না?'
-----
জুলাইয়ের ২১ তারিখের এই মর্মান্তিক বিমান দূর্ঘটনাটি নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের ইতিহাসের বিমান দূর্ঘটনাগুলোর মধ্যে একটা নিকৃষ্টতম অধ্যায় হয়ে থাকবে। আল্লাহ যেন আহত-নিহত সবাইকে মাফ করে দেন এবং সংশ্লিষ্ট সকল আত্মীয়স্বজনদের ধৈর্যধারণের তৌফিক দেন সে দু'আকে সামনে রেখে চলুন কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের দিকে আলোকপাত করা যাক।
স্বাভাবিকভাবেই আমাদের দেশের মানুষজন সেনাবাহিনী এবং তাদের কার্যক্রম, কাজের ধরনের সাথে যতটা পরিচিত; নৌ এবং বিমান বাহিনীর কার্যক্রমের ব্যাপারে ঠিক ততটাই অজ্ঞাত। বিশেষ করে, যেহেতু আমাদের বিমান বাহিনী একটি অতি আধুনিক (!) কারিগরি বাহিনী, বেসামরিক জনজীবনে এর পদযাত্রা কম/নেই বললেই চলে (ত্রাণ কার্যক্রমের ছবি প্রদর্শন ব্যতীত), তাই জনমনে বিমান বাহিনী নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা-গুজব-পৌরাণিক কাহিনীর প্রচলন থাকাটা স্বাভাবিক।
আসুন খুঁজে দেখি বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর এই করুণ দুর্দশার পেছনে দায়ী কী/কারা।আজকের ঘটনাটাই কি প্রথম? অতীতের কোন ঘটনা থেকে বিমান বাহিনী শিক্ষা নিয়েছে কি? বা নিয়ে থাকলে কতটুকু নিয়েছে??
বলা হয়, Prevention is better than cure- প্রতিকারের চাইতে প্রতিরোধ উত্তম। তবে, আমাদের দেশের মানুষ হোক কিংবা আমাদের বাহিনীগুলোই হোক, ঠ্যালা না খেলে কেন যেন আমাদের টনক নড়ে না। এই যেমন ধরেন - ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকিরসহ অনেক নিরীহ নিষ্পাপ শিশুসহ বহুলোকের প্রাণ গেল, স্মরণকালের সর্ববৃহৎ এই সামরিক বিমান দূর্ঘটনার পরও দেখবেন - আমাদের বিমান বাহিনীর টিকিটাও নড়বে না। হয়ত সাময়িক কিছু লোক দেখানো পরিবর্তন হবে, কিন্ত কাজের কাজ আদৌ হবে কী?
মূল প্রসঙ্গে যাওয়ার আগে কয়েকটা বিষয় আপনাদের জেনে রাখা জরুরীঃ
১। এই মূহুর্তে বিমান বাহিনীর 'ফাইট' করার মত ফাইটার বা যুদ্ধবিমানের সংখ্যা ২০ এরও কম(!), অন্যান্য বড় বড় সংখ্যা যা দেখছেন, এগুলোর সংখ্যা শুধুই আইওয়াশ।
২। এখন এই ২০-৩০ টা সেকেন্ড /থার্ড জেনারেশনের ফাইটার দিয়ে আপনি এই জামানার কোন যুদ্ধে কার সাথে কীভাবে লড়াই করে জিতবেন? যেখানে আপনার আশেপাশের দেশগুলোর টাকা থাকুক বা না থাকুক, বুকপকেটে কয়েকশো ফোর্থ/ফিফথ জেনারেশন ফাইটার নিয়ে ঘুরে বেড়ায়!
৩। ঢাকার উপরে ট্রেনিং কার্যক্রম চলবে কি চলবে না সে ব্যাপারে বলার আগে আরেকটা বিষয় জেনে রাখেন। বর্তমানে বাংলাদেশের যুদ্ধবিমানের পাইলট দের ট্রেনিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হয় মাত্র দুটো বিমান ঘাঁটি থেকে: ঢাকার বিমান বাহিনী ঘাঁটি বীর উত্তম এ কে খন্দকার আর চট্টগ্রামের বিমান বাহিনী ঘাঁটি জহুরুল হক। এগুলো বাদে কক্সবাজারের মত অতি গুরুত্বপূর্ণ, স্ট্র্যাটেজিক একটি এয়ারফিল্ডকে প্রায় অলসই বসিয়ে রাখা হয়েছে বলা চলে। এছাড়াও সিলেট, রাজশাহী, সৈয়দপুর সহ বহু মানসম্পন্ন এয়ারফিল্ড ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে দেশের নানা প্রান্তে। সেগুলো নিয়ে সরকার বা বিমান বাহিনীর কোন মাথাব্যথা আছে কি? অবশ্য থাকলে তো সমস্যা, ঢাকার বাইরে পোস্টিং এ চলে যেতে হবে যে!
৪। তাও এদিকে যা দু-একটা বিমান ঘাঁটি আছে, দেশের উত্তর আকাশসীমা কিন্ত এই মূহুর্ত পর্যন্ত এক্কেবারে অরক্ষিত। ম্যাপ খেয়াল করলে দেখবেন, বাংলাদেশের উপরের অর্ধেক অংশে, অর্থাৎ উত্তরের বড় একটা এরিয়া জুড়ে না আছে কোন বিমান ঘাঁটি, আর না আছে কোন উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন আকাশ প্রতিরক্ষা রাডার! বিমান বাহিনীর রাডারগুলোর যে ছবি/ভিডিও আপনারা বিভিন্ন মাধ্যমে দেখেন, সেগুলোর এক-একটা ভাই জাদুঘরের মাস্টারপিস! এক পা খোড়া তো দুই পা কানা এমন আর কি!
৫। পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোর কথা তো দূরে থাক, আপনি প্রতিবেশী ভারত, মায়ানমার আর পাকিস্তানের এয়ার বেজগুলোর দিকে তাকান। রাজধানী ঢাকার সামরিক ও স্ট্র্যাটেজিক গুরুত্ব বিবেচনায় ঢাকায় তো এয়ার বেজ থাকতেই হবে, কোন সন্দেহ নেই। তবে ওদের মত করে আমাদের কিছু এয়ার বেজগুলোকে কী যুদ্ধকালীন সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ঢাকার বাইরেও করা যেত না? সাথে কিছু প্রশিক্ষণ আর অপারেশনাল কার্যক্রম? সবকিছু শুধুই রাজধানী কেন্দ্রিক কেন হতে হবে ভাই? সিলেট, রাজশাহী, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, সৈয়দপুর, কুমিল্লা... এগুলা কী দোষ করল? সীমানা ঘেঁষে এয়ার বেজ করতে চাইলে এত্ত বাঁধা আর অনীহা কেন?
ও আচ্ছা, রাজধানীতে এয়ার বেজ থাকার একটা বড় সুবিধা আছে, বলতে ভুলে গেসিলাম। কোন সমস্যা হলে যাতে খুনি হাসিনার মত ডাইনিদেরকে অনায়াসে সীমানা পার করে নিরাপদে পৌঁছে দিয়ে আসা যায়, তাই আর কী....
আসুন এবারের এই দূর্ঘটনার পেছনের আরও কিছু ঘটনার প্রতি মোটাদাগে আলোকপাত করিঃ
১। ২০১২ সালের পর 'ফোর্সেস গোল ২০৩০' নামক হাস্যকর একটা ভারতীয় মদদপুষ্ট সামরিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করে খুনি হাসিনা সরকার, যার সিকিভাগ লক্ষ্যমাত্রাও অর্জন করতে পারেনি (কিংবা অন্যভাবে বললে, ইচ্ছাকৃতভাবেই করেনি) হাসিনার সাংগপাংগরা। সেটার বিস্তারিত গল্প, গলদগুলোসহ সামনে কোন একদিন বলব হয়তো ইনশা আল্লাহ।
২। গত ১৭ বছরে মাত্র ১ টা স্কোয়াড্রন (মোটেমাটে মাত্র ১৬ টা) নামমাত্র ফাইটার বিমান কিনল তারা, যেগুলোর 'ফাইট' করার সামর্থ্য নিয়েও আছে নানান রকমের ব্যঞ্জনা!
৩। রাশিয়া থেকে নেয়া লোন এর টাকায় YAK-130 ক্রয় করা হলো সেবার। কিন্ত পরবর্তীতে দেখা গেল, চুক্তিসংক্রান্ত অদূরদর্শীতা এবং মানসম্পন্ন যন্ত্রাংশের অভাবে মেইন্টেন্যান্সের চূড়ান্ত অব্যবস্থাপনা!ফলাফল - এক নাগাড়ে একটার পর একটা YAK-130 এর ক্র্যাশ, বিভিন্ন রকমের ঘটনা-দূর্ঘটনা। বলি কারা? বিমান বাহিনীর উদ্যমি, দক্ষ পাইলটেরা।
৪। শুধু তাই-ই নয়, YAK-130 এর ওভারহলিং এর উচ্চ ও অস্বাভাবিক খরচও কিন্ত একটা বড়সড় তদন্তের দাবীদার। বলে রাখা ভালো, এখন কিন্ত বাংলার আকাশে একটা YAK-130 ও আর ওড়ে না!
৫। বয়োবৃদ্ধ ওভারহাইপড F-7 সিরিজের ব্যাপারে কী-ই আর বলব! ওভারহলিং আর নাম মাত্র মেইন্টেন্যান্স এর নামে জোড়াতালি দিয়ে পাইলটদের মরতে পাঠানো হচ্ছে আর কী গেল কয়েক বছর ধরে।
৬। একদিকে নামমাত্র দামে বিমান বাহিনীর পরিবহন বহরে C-130 জুলিয়েট বিমানের বাহিরের খোল কেনার স্ক্যাম চলে আর অন্যদিকে, AN-32 বিমানের পুরো বয়সকালে মাথায় একটাও ছাদ জুটে না! ফলে সব বিমান হ্যাংগারে লুকাও আর এক কুমিরের ছানা সাতবার দেখাও! এভাবে আর কত ভাই?
৭। রাশিয়ার তৈরী Mi-17 হেলিকপ্টারের জাল নম্বরযুক্ত ও মানহীন যন্ত্রাংশ ক্রয়ের গল্পটা আবার অনেক ইন্টারেস্টিং। এটাও অন্য সময়ের জন্য তোলা থাক (যার দরুন ২০১৫ সালে স্কোয়াড্রন লিডার শাফায়েত মারা গিয়েছিলেন হেলিকপ্টার ক্র্যাশে)
৮। MiG‑29 যুদ্ধবিমান, কুমিরের আরেক ছানা; ২০০০ সালে একবার কেনার পর থেকে কয়েক হাজারবার প্রদর্শন করে যা দিয়ে বিমান বাহিনী ফ্লেক্স নিয়ে আসছে বরাবরই। রাশিয়া থেকে ১৯৯৯ সালে ৮টি MiG‑29 কেনা হয় প্রায় ~৭০০ কোটি টাকায়, যেখানে উচ্চ পদের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কমিশন গ্রহণ ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। তো ওঠার পরে কী হলো? আমরা কিছুই জানি না। জানবই বা কেন? পরে তো সমস্যা হবে!
৯। বুড়ো হাড়ের F‑7 বিমান কেনায় অস্বচ্ছতা ও অতিরিক্ত ব্যয়ের প্রসঙ্গ আসে ২০০৪–০৬ সালে, ১৬টি F‑7 কেনার সময় চুক্তিতে মূলত 93.6M ডলার বলা হলেও পরবর্তীতে মূল্য বেড়ে 117.9M ডলার হয়ে যায়। এর মধ্যে প্রায় 9M অস্বচ্ছ ব্যয় হিসাবে গণ্য হয়েছে। কোথায় গেল এই টাকাগুলা?
১০। Yak‑130 প্রশিক্ষণ বিমান ক্রয়ে দুর্নীতি (২০১৫–১৬): রাশিয়ার Rostec থেকে Yak‑130 কেনার জন্য প্রায় 1 বিলিয়ন ডলারের চুক্তিতে কমিশন ও দামবৃদ্ধির অভিযোগ ওঠেছিল সেবার। ওই ও পর্যন্তই। এরপরে অভিযোগগুলোর কথা কেন যেন সবাই বেমালুম ভুলেই গেল।
১১। K‑8W Karakorum বিমান কেনায় কমিশন লেনদেন (২০১৪–১৮): চীন-পাকিস্তানের যৌথভাবে তৈরি এ বিমান কেনাতেও মধ্যস্বত্বভোগীদের মাধ্যমে অতিরিক্ত কমিশন বিতরণের অভিযোগ রয়েছে। হাজার হোক, আওয়ামী বাংগালীর রক্ত, মানুষ কী এত্ত সহজে হবে বলেন?
১২। এর বাইরেও বিভিন্ন বছরে চীন থেকে কেনা পুরনো PT‑6 প্রশিক্ষণ বিমানগুলো কেনাকাটার সময় অতিরিক্ত দাম ও জাল হিসাবের অভিযোগও আছে। এখন দেখেন, যেটা ভালো মনে করেন।
১৩। Yak‑130 ও MiG‑29 যুদ্ধবিমানের মেইন্টেন্যান্স এর সময় জাল ভাউচার ও বিলিং: বিমানের খুচরা যন্ত্রাংশে অত্যধিক দাম দেখানো ও কল্পিত খরচ দেখানোর অভিযোগ উঠলো। এরপর?
১৪। Su‑30SME যুদ্ধবিমান কেনার প্রস্তাব আসল একবার। ওখানে বাদ দিল না, প্রস্তাবিত প্রতিটি Su‑30SME যুদ্ধ বিমানের দাম যেখানে গড়ে 60M ডলার, সেখানে কিছু আওয়ামী রাজনৈতিক নেতা/তৃতীয় পক্ষ থেকে 120M ডলার কমিশন আদায়ের অভিযোগে চুক্তি বাতিল হয়। একই বিমান একই সময়ে মায়ানমার অনেক কম দামে কিনে নেয়, যা দিয়ে এখন আমাদের ওপরে চোখ রাঙায়, তক বুঝলেন না ব্যাপারটা?
১৫। চট্টগ্রামে Yak‑130 দুর্ঘটনার পর বিমান রক্ষণাবেক্ষণ মান বজায় না রাখায় উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা বরখাস্ত হন। অভিযোগ ছিল অনিয়ম, দায়িত্বজ্ঞানহীনতা ও জাল রিপোর্ট তৈরীর। বাংগালী!
১৬। খুনি হাসিনা আপার জিহবা তো অনেক বড়, আবার তিনি তো দয়ারও সাগর, যা খান মিলমিশ করে খান। তাই উনার ভাই-বেরাদরদের নিয়ে বিমান বাহিনীর MiG‑29 যুদ্ধবিমান ও নৌবাহিনীর ফ্রিগেট কেনার ক্ষেত্রে প্রায় 126M ডলারের দুর্নীতি অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছিলেন তারা। পরে অবশ্য সবকিছু ধামাচাপাও দিয়ে দিয়েছিলেন কিনা কে জানে!
১৭। এয়ার চীফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান প্রায় ~৩০০০ কোটি টাকা একাই নিয়ে আত্মসাত করে গেছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে এখন তদন্ত চলছে,৷ ব্যাংক হিসাব-সম্পত্তি জব্দ হয়েছে, বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা থাকলেও পালিয়ে আছেন বিদেশেই!
এখন হিসাব করেন তো, তার পকেটমানির টাকায় কয়টা ফাইটার বিমান কিনতে পারতাম আমরা?
শেষ করার আগে আসুন বেশি না, সামান্য একটু পেছনে ফিরে তাকাইঃ
১। ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তাহমিদ, ২০১৫ সালে একটি চাইনিজ F-7 যুদ্ধবিমান নিয়ে পুরো বিমানসহ বংগপসাগরে বিদধস্থ হন বিমানের কারিগরি ত্রুটির কারণে। বিমানের ধংসাবশেষের অল্প কিছু অংশ খুঁজে পাওয়া গেলেও সাহসী সেই বৈমানিকের লাশ উদ্ধার করা যায়নি।
[বিস্তারিতঃ Pilot missing after BAF fighter jet crashes in Bay https://share.google/EEA2r0OYwSroLmnA3]
২। স্কোয়াড্রন লিডার শাফায়েত, ২০১৫ সালে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে একটি রাশিয়ান Mi-17 হেলিকপ্টার ক্র্যাশে মারা যান। কথিত আছে, মানহীন যন্ত্রাংশের সংযোজনই নাকি সেই হেলিকপ্টার দূর্ঘটনার প্রধান কারণ, যার ফল হিসেবে প্রাণ গিয়েছিল স্কোয়াড্রন লিডার শাফায়েতের।
[বিস্তারিতঃ https://www.risingbd.com/english/BAF-helicopter-crash-in-Ctg-Injured-pilot-dies/25130]
৩। স্কোয়াড্রন লিডার এনায়েত ও স্কোয়াড্রন লিডার সিরাজ, ২০১৮ সালে একটি K-8 Basic Jet Trainer যুদ্ধবিমান নিয়ে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কবলে পড়ে যশোর বিমান ঘাঁটির পার্শ্ববর্তী একটি লেকে মারাত্মকভাবে ক্র্যাশ করেন, যার ফলে তাদের দেহাবশেষ কিংবা বিমানের ধংসাবশেষ, কোনটাই আস্ত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। পরে সেই পাইলটদের দেহের কিছু কিছু টুকরো অংশ পানির গভীর তলদেশ থেকে নৌবাহিনীর ডুবুরি দলের সহায়তায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছিল।
[বিস্তারিতঃ Two Air Force pilots killed as jet crashes in Jessore https://share.google/yXp0F5ZlSWNBdArDg]
৪। উইং কমান্ডার আরিফ আহমেদ দীপু, ২০১৮ সালে টাংগাইলের রসুলপুর ফায়ারিং রেঞ্জে F-7 যুদ্ধবিমান নিয়ে Air-to-Ground ফায়ারিং এর সময় ডেট এক্সপায়ার্ড (!) রকেট, গোলাবারুদ ও বিমানের যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিশ্রী রকমের একটা দূর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেন। তার লাশটিও একত্রে পুরোটা উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
[বিস্তারিতঃ Air Force pilot killed in crash in Tangail https://www.dhakatribune.com/bangladesh/161599/air-force-pilot-killed-in-crash-in-tangail]
৪। স্কোয়াড্রন লিডার আনিস, ২০১৯ সালে যশোর বিমান ঘাঁটিতে একটি L-39 Basic Jet Trainer বিমানের ইনজেকশন সিটের গোলযোগের কারণে On ground এ দূর্ঘটনাবশত Eject হয়ে প্রায় ৫০-৭০ ফিট উঁচু থেকে উনার নিজ+সিট+প্যারাসুট সম্বলিত প্রায় ৩০০ কেজি ওজন নিয়ে সরাসরি ভূমিতে আছড়ে পড়েন! হাসপাতালে নিয়ে উন্নত চিকিৎসা দেয়া হলেও বেশিদিন বেচে থাকতে পারেননি তিনি।
৫। স্কোয়াড্রন লিডার আসিম জাওয়াদ, ২০২৪ সালের মে মাসে একটি Yak-130 Advanced Jet Trainer যুদ্ধবিমান নিয়ে Low level Aerobatics প্রদর্শনী অনুশীলনের সময় দূর্ঘটনায় পতিত হন। তিনি ও তার সাথে থাকা উইং কমান্ডার সোহান, দুজনে সফলভাবে Eject করে বেরিয়ে আসতে পারলেও শেষমেশ কর্ণফুলী নদীতে আছড়ে পড়ে মৃত্যু হয় তার। জানা যায়, যুদ্ধবিমানের পাইলটদের পরিহিত Automatic Mae Waist (Life Jacket এর মত, যা পানির স্পর্শ লাগার সাথে সাথেই ফুলে ওঠার কথা) ঠিকঠাক ফুলে ওঠেনি; ডেট নাকি এক্সপায়ার হয়ে গিয়েছিল অনেকদিন আগেই!
[বিস্তারিতঃ squadron leader asim jawad crash https://g.co/kgs/6WqQG2B]
৬। ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির, ২০২৫ সালের ২১ জুলাই, FT-7 BG সিরিজের একটি যুদ্ধবিমান নিয়ে তার প্রথম একক উড্ডয়ন (Solo Flight) মিশনে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উত্তরার মাইলস্টোন কলেজ ও কিন্ডারগার্টেন ভবনে আছড়ে পড়েন। শেষ মুহুর্তে Eject করে বেরিয়ে এলেও হাসপাতালে পরবর্তীতে মৃত্যু হয় তার। সাথে মাইলস্টোন কলেজের নিষ্পাপ, নিরপরাধ শিশু, অভিভাবক, শিক্ষক সহ অগণিত বেসামরিক জনগণ মারাত্মকভাবে আহত ও নিহত হন। বিস্তারিত তো আপনাদের সবারই জানা।
দেখেন এগুলো বেশিদিন আগের না, মাত্র ১০ বছরের কিছু 'বড় বড়' দূর্ঘটনার কথা আপনাদের সামনে তুলে ধরলাম। এমন হাজারো ছোটখাট ঘটনা-দূর্ঘটনা বিমান বাহিনীতে প্রতিনিয়তই ঘটে চলেছে, আপনার আমার অজ্ঞতার কারণে যেগুলোর প্রায় কোন কিছুই আমরা জানতাম না। এগুলোও হয়তবা বিমান বাহিনী কর্তৃপক্ষ চেপে যেত, যদি না এগুলো বেসামরিক এলাকা বা আপনার আমার 'মাথায়' না পড়ত!?
আচ্ছা, এসব ঘটনাগুলোর মধ্যে 'কমন' কিছু খুঁজে পান কী? বুদ্ধি করে বলেন তো দেখি কয়েকটা?
বিতাড়িত ফ্যাসিবাদী শয়তান ওবায়দুল কাদেরের ভাষায় বিমান বাহিনীকে বলতে ইচ্ছে হয়, "মাসুদ! তুমি কি ভালো হবে না?"
--------
যেকোন তথ্য দিয়ে আমাদের সহায়তা করুন এই ঠিকানায়:
টেলিগ্রাম : https://t.me/gridnetbot
ইমেইল : [email protected]
আমাদের সাথে যুক্ত হোন :
টেলিগ্রাম -
https://bit.ly/3ZwrMb1
হোয়াটসঅ্যাপ -
https://bit.ly/41tHsi3
ফেসবুক -
https://bit.ly/3D8GeyF
ওয়ার্ডপ্রেস -
gridnetbd.wordpress.com