
06/03/2025
I went to an English Medium school in Dhaka and this is my story.
এই ছবিটা আমার অফিসের। গতকাল তোলা, আম্মুকে Messenger এ পাঠিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, “Are you proud?” আমি জানি উত্তর কি আসবে, তারপরও ইচ্ছা করেই জানতে চাইলাম। উত্তর আসলো, “আর কি চাই? সেহেরি শেষ করে কল দিচ্ছি।”
আমি জানি আম্মুর অনুভূতি কি, গত ৩০+ বছর তার লক্ষ্য ছিলো দুই সন্তানকে প্রতিষ্ঠিত করার। আমার মা ঢাকা শহরের একটি বড় নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করতেন, কয়েক বছর হলো অবসর নিয়েছেন। আমাদের দুই বোনের জন্মের পর থেকেই আম্মুর একটাই ধ্যান, সন্তানদের সুশিক্ষিত করা। ঢাকা শহরে সংসার চালানো কঠিন, সেই অবস্থায় মেয়েদেরকে English medium স্কুলে পড়ানো নিয়ে আমার মাকে অনেক কুটুক্তি শুনতে হয়। “মেয়েদের পেছনে অযথাই এত খরচ, বরং তাদের বিয়ের গয়না বানাও, এই সব English medium স্কুলে গেলে মেয়েরা নস্ট হয়ে যাবে।”
আম্মু তা করেনি। যখন আমার বাবাও রাজি হয়নি, তখন আম্মু চাকরির পাশাপাশি টিউশনি করে আমাদের স্কুলের বেতন দিয়েছে। আম্মুর এই যুদ্ধ এত ছোট থেকে দেখেছি যে আমি খুব ভালো করেই জানতাম আমার দায়িত্ব কি। মায়ের এই যুদ্ধের সহযোদ্ধা হয়ে গেলাম। আমার লক্ষ্য ছিলো সহজ, সবাইকে ভুল প্রমাণ করা।
English medium স্কুলের বেতন কত হয় তা হয়তো অনেকেই জানে। আমার স্কুল সেটা থেকে ভিন্ন নয়। কিন্তু ক্লাসের বাৎসরিক পরীক্ষায় প্রথম ৩ জনের মধ্যে থাকায় আমি স্কুল থেকে বৃত্তি পাই। বিনা বেতনে পড়াশোনা করেছি। পড়াশোনার খরচ তো শুধু বেতন না, আরো অনেক কিছু। আমাদের পাঠ্য বই ছিল সব বিদেশি লেখকদের, সেই বই পুস্তকের দাম ছিল চড়া। খরচ কমাতে অরিজিনাল বইয়ের বদলে সাদাকালো ফটোকপি কিনে পরতাম। আমার বই পরের বছর আমার ছোট বোন যেন পড়তে পারে, তাই খুব যত্ন নিয়ে বই ব্যাবহার করতাম, বইয়ের পাতায় একটা দাগও দিতাম না। ভালো ছাত্রী ছিলাম বলে টিউশনি পেতে তেমন কষ্ট হতো না, তাই ক্লাস ১০ থেকেই টিউশন করে নিজের হাত খরচ চালাতাম। “ভদ্র ঘরের মেয়েরা অপরিচিত বাড়িতে গিয়ে পড়ায় নাকি?” এই প্রশ্নটা বহুবার শুনেছি, কিন্তু পাত্তা দেইনি। ছোট থেকেই শিখেছি মানুষের সব কথায় কান দিলে নিজেরই ক্ষতি।
আম্মুকে আমি জিজ্ঞেস করি, “কেন এই জেদ তোমার? কেন মেয়েদের পড়াশোনার জন্য এত খরচ, এত কষ্ট করো?”
“মেয়েদের জন্য নয়, আমার সন্তানদের জন্য। আমার যা যা দুর্বলতা আছে, তা যেন আমার সন্তানদের না থাকে, সেই জন্য। বাংলা মাধ্যমের স্কুলের কারিকুলাম দুর্বল, আমি পড়াই তাই বুঝি এখানে critical thinking এর চেয়ে মুখস্ত বিদ্যার প্রয়োগ বেশী। আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা ব্যবস্থায় পড়াশোনা করে বিশ্বের সেরাদের মধ্যে যেন একজন হতে পারো, সেই জন্য তোমাদেরকে English medium এ পড়াই।”
English medium এ পড়াশোনা করেছি বলেই হয়তো ইংরেজিতে দক্ষতা এসেছে। তবে কি বাংলা মাধ্যমে পড়াশোনা করলে পিছিয়ে যেতাম? অবশ্যই না, বরং A’levels (উচ্চ মাধ্যমিক) পর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা দিতে গিয়ে যত হয়রানির শিকার হয়েছি, তা অনেক খানি কমে যেত। এমনকি অনার্স প্রথম বর্ষের ভাইভাতে যখন Biochemistry নিয়ে প্রশ্ন না করে স্যাররা জিজ্ঞেস করে, “English medium এর ছাত্রী, তুমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কি কর? তোমারা “ফার্মের মুরগি”রা তো উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেই বিদেশ পাড়ি দাও। অযথাই একটা সিট নষ্ট করছো।” তখন আম্মুর উপর রাগ করতাম, বাংলা মিডিয়ামে পড়লে এত কৈফিয়ত দিতে হতো না।
ছোট থেকেই নিয়ম করে পড়াশোনা করতাম, বাসায় পরিবেশটাই ছিল তেমন। ইংরেজি বাংলা দুই রকমেরই গল্পের বই পড়তাম বলে পাঠ্য বই পড়তে, বুঝতে কখনোই অসুবিধা হয়নি। যখন সিদ্ধান্ত নিলাম অনার্স শেষ করে দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি জমাবো, তখন সেই কঠিন GRE, TOEFL পরীক্ষাগুলো ৩ সপ্তাহের প্রস্তুতিতেই পাশ করি, কারণ ইংরেজি আমার কাছে খুবই সহজ। হয়তো এই দক্ষতাই আমাকে আজ এই অবস্থানে আসতে সাহায্য করেছে।
এই রচনা লেখার কারণ? কিছুই না, একটু আগে Facebook এ দেখলাম একজন জনপ্রিয় influencer এই English medium স্কুলের বেতন নিয়ে ভীষণ চিন্তিত। স্বাভাবিক, একে তো স্কুলের চড়া বেতন, তার ওপর আলাদা টিউশনির খরচ। অনেক খরচ। এত টাকা দিয়ে English medium এ পড়িয়ে আবার যদি আলাদা টিউশন করাতে হয়, তাহলে লাভ কি? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে হলে আপনাকে অবশ্যই যাচাই করতে হবে আপনার সন্তানের জন্য কী প্রয়োজন। সন্তানের শিক্ষা শুরু হয় ঘরে, মা বাবার ভুমিকা সেখানে অপরিহার্য। আপনি আপনার সন্তানকে English medium এ পাঠালেই তার জ্ঞান অর্জনের সকল দায়িত্ব যে স্কুলের, সেটা ভাবাটা যেমন ভুল , তেমনি বাংলা মাধ্যমে লেখাপড়া করলে বাচ্চারা ইংরেজি পারবে না, সেটাও ভাবা ভুল।
Education is a necessity, access to quality education is a privilege. I am extremely privileged that I was born to a mother who understood the importance of educating her daughters, of giving them the chances to become financially independent. Ask yourself why you want to educate your children, what is it that you want them to learn and be. If you can honestly answer those questions, you will see that where you send your kids to school is far less important than what you provide your kids with.
P.S.: I am a tenure-track Assistant Professor of Pharmaceutical Sciences at a university in USA, and my younger sister is a Chartered Accountant, working as an assistant vice president of a bank in Dhaka. I think we have earned the right to do some humble bragging 🤷🏽♀️
— Dr. Shamma Rahman, March 6, 2025