01/25/2025
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে টিকটকার লিটনের‘কুরুচিপূর্ণ রাজত্ব’: নীরব প্রশাসনে ফুঁসছে এলাকাবাসী!
বিশেষ প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার বিতর্কিত টিকটকার লিটন তার মানহীন, কুরুচিপূর্ণ এবং আপত্তিকর ভিডিওর মাধ্যমে পুরো এলাকায় এক নতুন সংকট তৈরি করেছে। কখনো হিজরা, কখনো মহিলা সেজে সামাজিক মাধ্যমে নোংরা কনটেন্ট ছড়িয়ে সে নিজেকে “জগন্নাথপুরের কিং” বলে দাবি করে, যা স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে চরম ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।
লিটনের টিকটকের ছবি ও ভিডিও দেখে মনে হয়, সে যেন অপরাধপ্রবণ যুবসমাজের নতুন আইকন। তার কর্মকাণ্ডে প্রবাসী অধ্যুষিত সম্মানজনক এলাকা জগন্নাথপুর একটি হাস্যকর উপাখ্যানে পরিণত হচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, তার বিরুদ্ধে ইয়াবাসেবন, সিগারেট হাতে বেয়াদব সম্রাটের মতো আচরণ এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগও উঠেছে।
স্থানীয় এক সচেতন নাগরিক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, "লিটন সমাজের উঠতি বয়সী যুবকদের নষ্ট করছে। তার কর্মকাণ্ড আমাদের এলাকাকে অসম্মানিত করেছে। প্রশাসন এখনো কেন নীরব, তা আমাদের বোধগম্য নয়।"
গত ৬ জানুয়ারি স্থানীয় একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমে লিটনের কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পরও কোনো দৃশ্যমান ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বরং এক সপ্তাহ চুপ থাকার পর লিটন আবারো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তার এসব মানহীন ভিডিও দেখে স্পষ্ট যে, সে কোনো আইন বা নৈতিকতার ধার ধারে না।
স্থানীয় ৫ নম্বর চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বকুল বলেন, "আমরা লিটনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করছি। সে আমাদের কথা না শুনলে থানায় অভিযোগ করা হবে।" তবে এতদিনেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ক্রমশ বাড়ছে।
লিটনের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড এখন দেশ-বিদেশে প্রবাসী, সুনামগঞ্জবাসীর সম্মানহানি করছে। বিশেষ করে তার ভিডিওগুলো সমাজে অপরাধের উস্কানি দিচ্ছে, সচেতনতা সৃষ্টি নয়। এর আগে একবার স্থানীয় যুবসমাজ তার বাড়ি ঘেরাও করেছিল এবং সে প্রতিজ্ঞা করেছিল যে আর এমন কর্মকাণ্ড করবে না। কিন্তু প্রতিজ্ঞা ভেঙে সে আবারো ভাইরাল হওয়ার জন্য অপকর্মে লিপ্ত।
একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, "এই পরিস্থিতি যদি দ্রুত সমাধান করা না হয়, তাহলে জগন্নাথপুরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে। প্রশাসনকে এখনই তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।"
জগন্নাথপুরবাসীর দাবি, লিটনের এই মানহীন ভিডিওগুলো শুধু বিনোদনের নামে অপরাধপ্রবণতা বাড়াচ্ছে না, বরং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করছে। পবিত্র কোরআন নিয়ে অপমানজনক ভিডিও বানিয়ে সে এর আগেও জনগণের ধিক্কার কুড়িয়েছে।
সচেতন মহল এবং স্থানীয় বাসিন্দারা একজোট হয়ে প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন, লিটনের এই কুরুচিপূর্ণ কর্মকাণ্ডের অবসান ঘটাতে হবে এবং তাকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
জগন্নাথপুরের সাধারণ মানুষের প্রশ্ন: টিকটকার লিটন কি আইনের ঊর্ধ্বে? তার শক্তির উৎস কোথায়? প্রশাসন কি তার অপকর্মের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবে, নাকি নীরব দর্শক হয়ে থাকবে?
এই ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান না হলে, জগন্নাথপুরের সামাজিক স্থিতিশীলতা চিরতরে ব্যাহত হতে পারে। প্রশাসন যদি এখনো নীরব থাকে, তবে সাধারণ মানুষ আইন হাতে তুলে নিতে বাধ্য হবে।