26/05/2025
একদম রোদজ্বলা, গরমে ফুটতে থাকা ফ্লোরিডার উপকূলে একদিন হঠাৎ দেখা মেলে এক আজব লোকের—ডেল ফিগগো। বছর কয়েক আগে ক্যাপিটলে হামলার সময় হাজির হয়েছিলেন, কিন্তু সে যাত্রায় কিচ্ছু করতে পারেননি। এখন সে ফ্লোরিডার একটা নির্জন জায়গায় ঘাঁটি গেড়ে বসে আছে, একদল উগ্রবাদী সমর্থক নিয়ে। লক্ষ্য? আবার ‘পুরোনো আমেরিকা’ ফিরিয়ে আনা। কিন্তু বাস্তবটা হলো, লোকটা বেকার, মানসিকভাবে অস্থির, আর ফেসবুকে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ছড়ানোই তার কাজ।
এই দলে যে কারা আসে, তারও ঠিক নেই—কেউ গা-জোয়ারি, কেউ ধর্মীয় উগ্রপন্থী, কেউ আবার নিজেদের ‘দেশপ্রেমিক’ ভাবে। এই গোষ্ঠী পরিকল্পনা করছে একটা বিশাল “ইভেন্ট”, যেখানে তারা তাদের কথিত শত্রুদের বিরুদ্ধে একপ্রকার বিপ্লব ঘটাবে।
📌 অন্যদিকে, শহরের একদম উল্টোদিকে দেখা যায় ক্লিউর বয়েটকে — এক নামী-দামী কংগ্রেসম্যান, যিনি টিভিতে ধর্ম আর দেশপ্রেমের কথা বলেন, কিন্তু ভিতরে ভিতরে তিনি একটা ভুয়া দাতব্য সংস্থা চালিয়ে মানুষের টাকা লুটে খাচ্ছেন। তার মুখে নীতি, আর পকেটে দুর্নীতি।
এই দুই পৃথিবীকে জোড়া লাগাতে গল্পে এসে পড়ে এক পুরনো পরিচিত চরিত্র — টুইলি স্প্রি। একদা সাংবাদিক, এখন পরিবেশ রক্ষায় নিজের জীবন উৎসর্গ করা এক প্রকার “প্রকৃতির গুপ্তচর”! সে বুঝতে পারে, ডেল ফিগগোর গোষ্ঠী শুধু রাজনীতি নয়, প্রকৃতি ধ্বংস করতেও পিছপা নয়। তাই সে নিজেই ওই দলে গোপনে ঢুকে পড়ে, একের পর এক গোপন তথ্য জোগাড় করতে থাকে।
📌 আর তখনই হাজির হয় নতুন মুখ — বিবা মোরালেস।
সে এসেছিল সমাজসেবা করতে। ভাবছিল ফ্লোরিডার রোদে, সমুদ্রে, বৃদ্ধদের পাশে দাঁড়িয়ে সে সুন্দর একটা জীবন কাটাবে। কিন্তু তার চোখের সামনে একে একে খুলে যেতে থাকে ষড়যন্ত্র, ভণ্ডামি, লোভ আর বিদ্বেষের আসল চেহারা।
বিবা ধীরে ধীরে বুঝে যায়, সে শুধু একটা দাতব্য সংস্থার স্বেচ্ছাসেবক নয় — সে এক বিশাল ছলনার পেছনে দাঁড়িয়ে আছে। তাই সে এগিয়ে আসে সত্যি উন্মোচনে, পাশে পায় টুইলিকে।
তারা মিলে ফিগগোর দলের বিরুদ্ধে পরিকল্পনা করে। কিন্তু বিপদ শুধু বাইরের না, ভেতরেও বিশ্বাসঘাতকতা আছে।
🌪️ গল্পের ক্লাইম্যাক্সে, সব দিক থেকে চাপ আসে:
ফিগগোর দল আগ্রাসী হয়ে উঠে,
ক্লিউর বয়েট ফেঁসে যায় নিজের দুর্নীতিতে,
মিডিয়া সব জানাজানি শুরু করে,
আর বিবা ও টুইলি সিদ্ধান্ত নেয় — এবার এই পাগলামির অবসান চাই।
শেষে এক বিশাল সংঘর্ষ, ধরা পড়ে ফাঁস হওয়া পরিকল্পনা, ভেঙে যায় গোষ্ঠী, আর ফ্লোরিডার আকাশে একবারের জন্য হলেও বাতাসে সত্যের গন্ধ আসে।
🌀 এই গল্পটা শুধু একদল উগ্রবাদী আর কিছু দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদের গল্প না — এটা আমাদের সময়ের গল্প।
এটা দেখায়, কিভাবে মিথ্যে, লোভ আর উগ্রতা একসাথে মিললে সমাজ কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়। আর সেই জায়গা থেকে উঠে আসা কিছু মানুষ — যেমন বিবা বা টুইলি — কীভাবে ছোট ছোট পদক্ষেপে বড় সত্য সামনে আনে।
গত সপ্তাহে পড়া শেষ করলাম কার্ল হিয়াাসেনের নতুন বই Fever Beach — কী বলব, একেবারে পাগলামিতে ভরপুর কিন্তু একইসাথে বাস্তবতার ধারালো ছোঁয়া! 🤯