13/12/2025
চাওয়ামাত্র সবকিছু পেয়ে গেলে একটা বাচ্চার মধ্যে ‘অপেক্ষা করার ক্ষমতা’ (Delay of Gratification) গড়ে ওঠে না।
আর এখনকার বাচ্চাদের—যাদের আমরা বলি Generation Alpha—এই সমস্যাটা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে।
আজকের শিশুরা খুব ছোট বয়স থেকেই “তাৎক্ষণিক পাওয়া”-র অভ্যাসে বড় হচ্ছে।
খিদে লাগল—মোবাইল।
বিরক্ত লাগল—ভিডিও।
কান্না শুরু—খেলনা বা চকলেট।
এইভাবে আমরা অজান্তেই শিশুদের শেখাচ্ছি,
👉 “অস্বস্তি মানেই সঙ্গে সঙ্গে সমাধান।”
👉 “অপেক্ষা করার দরকার নেই।”
কিন্তু জীবনের বাস্তবতা এমন না।
জীবনে সবকিছু সঙ্গে সঙ্গে পাওয়া যায় না—
না ভালো রেজাল্ট,
না ভালো সম্পর্ক,
না সাফল্য,
না মানসিক শক্তি।
যে বাচ্চা অপেক্ষা করতে শেখে না, সে ধীরে ধীরে হয়ে পড়ে—
• অল্পতেই রেগে যাওয়া
• না শুনতে না পারা
• ধৈর্যহীন
• পরিশ্রমে আগ্রহ কম
• সামান্য কষ্টেই ভেঙে পড়া
স্কুলে একটু চাপ এলেই মানিয়ে নিতে পারে না,
বন্ধুর সাথে সমস্যা হলে সব ছেড়ে দিতে চায়,
বড় হয়ে গেলে চাকরি, সম্পর্ক, সংসার—সব জায়গাতেই অস্থির হয়ে পড়ে।
Delay of Gratification মানে কেবল “চাওয়াটা দেরিতে পাওয়া” না,
এর মানে হলো—
নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা শেখা,
অপেক্ষা করার শক্তি তৈরি করা,
আজ কষ্ট সহ্য করে ভবিষ্যতের ভালোটা বেছে নেওয়া।
এই ক্ষমতা শিশুর জন্মগত না—
এটা চর্চা করে শেখাতে হয়।
সব আবদার সঙ্গে সঙ্গে পূরণ না করেও আপনি খারাপ মা–বাবা হন না।
বরং আপনি তখন শিশুকে জীবনের জন্য প্রস্তুত করেন।
অল্প অপেক্ষা,
অল্প না পাওয়া,
অল্প কষ্ট—
এই ছোট ছোট অভিজ্ঞতাগুলোই একটা শিশুকে ভবিষ্যতে মানসিকভাবে শক্ত মানুষ বানায়।
আজ আপনি যদি সন্তানের চোখের জল দেখে নরম হয়ে সব দিয়ে দেন,
কাল সেই সন্তানটাই জীবনের বাস্তব কষ্টে দাঁড়াতে পারবে না।
ভালোবাসা মানে সব দেওয়া না—
ভালোবাসা মানে কখনো কখনো অপেক্ষা করতে শেখানো।
✍️কলমে-তাহমিনা আক্তার লিলি