01/12/2023
“তৎকালীন পূর্ববঙ্গ তথা আজকের বাংলাদেশের বিক্রমপুরে এখনো বহু শতবর্ষী পরিত্যক্ত হিন্দু বাড়িঘর আছে যেসব স্মরণ করায় রথীমহারথীদের ইতিহাস....
এপার বাংলা হোক আর ওপার বাংলা নারায়ণ দেবনাথের বাঁটুল দি গ্রেট’, ‘নন্টে-ফন্টে’ দুই বাংলাতেই তুমুল জনপ্রিয়। কার্টুনিস্ট নারায়ণ দেবনাথের পূর্বপুরুষ এর আদি বাড়ি ছিল এই বিক্রমপুরে।
বিক্রমপুরের নাম বললেই একটি গ্রামের নাম চলে আসে,গ্রামটির নাম হাসাড়া এই গ্রামের সুধীর চন্দ্র ঘোষালের নাতনি ভারতের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী শ্রেয়া ঘোষাল।
অনেকেই বলে চট্টগ্রামের পরেই বিপ্লবীদের তীর্থভূমি এই বিক্রমপুর তার আগে একটি ঘটনা বলি, ১৯৩০ সালের ৮ ডিসেম্বর। বেলা তখন বারোটা।কলকাতার রাইটার্স বিল্ডিংয়ে ঢুকে গেলেন ‘বিলাতি’ পোশাক পরিহিত তিন বাঙালি যুবক। হুড়মুড় করে ঢুকে পড়লেন অত্যাচারী কর্নেল সিম্পসনের ঘরে। সিম্পসন কিছু বোঝার আগেই গুলিতে ঝাঁজরা হয়ে গেলেন। এভাবে যাঁরা ব্রিটিশের পাঁজরে কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছিলেন, তাঁরাই বিনয়কৃষ্ণ বসু, বাদল গুপ্ত এবং দীনেশচন্দ্র গুপ্ত।
বিনয়কৃষ্ণ বসু জন্মেছিলেন ১৯০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর, বিক্রমপুরের রোহিতভোগ গ্রামে। তার বাবা রেবতীমোহন বসু ছিলেন একজন প্রকৌশলী।
বাদল গুপ্তের জন্মনাম সুধীর গুপ্ত। ১৯১২ সালে বিক্রমপুর অঞ্চলের পূর্ব শিমুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
দীনেশচন্দ্র গুপ্তের জন্ম ১৯১১ সালের ৬ ডিসেম্বর, বিক্রমপুরের যশোলঙ গ্রামে। তার বাবা সতীশচন্দ্র গুপ্ত এবং মা বিনোদিনী দেবী। ছেলেবেলা থেকেই তিনি ছিলেন নির্ভীক, বেপরোয়া ও বাগ্মী। ঢাকা কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় তিনিও যোগ দেন বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স দলে।
বাঙালির বিজ্ঞান চর্চায় যার নাম সবার আগে আসবে তিনি হলেন
জগদ্বিখ্যাত বিজ্ঞানী স্যার জগদীশ বসুর পৈতৃক বাড়ি বিক্রমপুরের শ্রীনগর উপজেলার রাঢ়ীখাল গ্রামে।তবে ১৮৮৬ সালে জগদীশ বসু তার গবেষণা কাজের খরচের জন্য তাকে তার পৈতৃক ভিটা বিক্রি করেন।এ সময় তিনি কলকাতার ১৩০ নম্বর ধর্মতলা স্ট্রিটে বসবাস করতেন।
বিক্রমপুরের রথীমহারথীদের ইতিহাস লিখে কয়েকশত পৃষ্ঠায় শেষ হবার নয় দুঃখজনক বিষয় হলো আজকাল আমরা যারা ইতিহাস লিখছি তাদের পৃষ্টপোষকতা করার মতো কেউ নেই বলে ইতিহাসগুলো কালের অতল গহ্বরে হারিয়ে যেতে বসেছে।
ছবিতে বিক্রমপুরে পরিত্যক্ত একটি হিন্দু বাড়ি।”
Courtesy: Zahirul Islam Ani