17/06/2025
#তোমার_নামে_লেখা_চিঠি
#কলমে_নওরিন_মুনতাহা_হিয়া
#পর্ব_১৫ (রূপনগরের পথে)
ইনায়াকে সেইদিন অরণ্যর কমেন্ট করা ভিডিওটা চোখের সামনে ভেসে ওঠে ইভানের। সেদিন ইনায়াকে চিরতরে হারানোর উপলব্ধিটা তাকে ভিতর থেকে ছিঁড়ে ফেলেছিল। আর আজ মিলন সাহেবের সরল প্রশ্ন যেন সেই ক্ষতটাকে আবার নতুন করে ছুঁয়ে দিয়ে গেল।
ইভান মাথা নিচু করে বলে,
"- না আংকেল, দেশে থাকলেও মনের কোথাও যেন এখনও একটা শূন্যতা। ইনায়াকে ভুলে যাওয়া এত সহজ না..."
মিলন সাহেব একটু অপ্রস্তুত হয়ে বলেন,
"- সময়ই সবকিছুর উত্তর দেয় ইভান। তুমি শুধু নিজেকে সামলে নাও।"
ডিনারের টেবিলে নীরবতা নেমে আসে। সেই নীরবতা ভাঙে ইভান নিজেই,
"- আংকেল, আমি এক সপ্তাহের ছুটি নিয়েছি। রূপনগর যাবো, কিছু ব্যক্তিগত কারণ আছে।"
ইভান রূপনগরের নাম উচ্চারণ করতেই চমকে ওঠে ইনায়া। সে চোখ তুলে তাকায় ইভানের দিকে। ইভানের ঠোঁটে এক রহস্যময় হাসি।
---
পরদিন ভোর
ট্রেনের স্টেশন। হালকা কুয়াশা, অল্প আলো। অরণ্য আর ইনায়া প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে, দুইজনেই যথেষ্ট প্রস্তুত মনে হচ্ছে না। ইনায়া হাতে টিকিট ধরে বলে,
"- আমি এখনও বুঝতে পারছি না এই রূপনগরে গিয়ে আসলে আমরা কী খুঁজবো?"
অরণ্য হালকা হেসে বলে,
"- কিছু প্রশ্নের উত্তর নিজে না গেলে পাওয়া যায় না, ইনায়া। অনেক দরজা শুধু উপস্থিতিতে খুলে।"
ট্রেনটা হুইসেল দেয়, আর ঠিক তখনই ইনায়ার চোখ পড়ে প্ল্যাটফর্মের বিপরীত দিকে দাঁড়িয়ে থাকা একজনের দিকে। গাঢ় নীল জ্যাকেট পরা, মাথায় হুড, কিন্তু চেহারা যেন কোথাও দেখা!
ইনায়া চমকে ওঠে —
"ও... ইভান?"
ইভান এক ঝলক তাকিয়ে আবার চোখ সরিয়ে নেয়, যেন কিছুই হয়নি। কিন্তু তার উপস্থিতি ইনায়ার মনে আরেকটা প্রশ্নের ঝড় তোলে।
---
রূপনগর স্টেশন।
পুরানো ছোট্ট স্টেশনটা যেন শতাব্দীর গল্প বুকে চেপে আছে। ট্রেন থামতেই ইনায়া নামার সাথে সাথেই একটা ঘোরের মধ্যে পড়ে। যেন এই জায়গা তার ছোটবেলার স্মৃতিতে একবার এসেছিল। হয়তো একবার, খুব ছোট থাকতে, মায়ের হাত ধরে...
অরণ্য ব্যাগ হাতে নিয়ে বলে,
"- প্রথমেই তোমার নানার পুরোনো বাড়িতে যেতে হবে। তারপর স্থানীয় ইউনিয়ন অফিসে কিছু রেকর্ড আছে শুনেছি।"
ইনায়া মৃদু মাথা নাড়ে। তাদের রিকশা ভাড়া করে রওনা হয় গ্রামে। ধুলোবালি মেশানো পথ, মাঝে মাঝে গরু-ছাগলের হাট, বাচ্চাদের কাঁচা বাংলায় গল্প বলা—সব কিছুই যেন ইনায়ার কাছে পুরোনো লাগে, অথচ মনে পড়ে না ঠিক কোথা থেকে।
---
চৌধুরী ভিলা, রূপনগর।
একটা আধা ভাঙা পুর