02/03/2025
#কবুতরের_ভ্যাকসিন_বা_টিকা_শুরু_থেকে_শেষ নুতনদের জন্য পড়ার অনুরোধ..
কিছু কবুতর পালক আছেন, যারা কবুতরকে টিকা দেবার জন্য পাগল হয়ে যায় ৷ বিশেষ করে শীতের মৌসুমে ৷ তাদের ধারনা টিকা দিলেই কবুতর আর রোগে আক্রান্ত হবে না আর টিকা না দিলে কবুতর সব মারা যাবে ৷ জেনে রাখা উচিত, বাংলাদেশে কবুতরের টিকা সহজলভ্য না ৷ বেশিরভাগ কবুতর পালকেরাই পোল্ট্রির (হাস মুরগির) টিকা দিয়ে থাকেন ৷
আর পোল্ট্রির টিকা কবুতরের জন্য প্রযোজ্য না ৷ মানে পোল্ট্রির টিকা কবুতরের এন্টিবডি তৈরি করতে সাহায্য করে না ৷ অথচ তথাকথিত অভিজ্ঞরা (এক্সপার্ট) এসব না জেনেই নতুন কবুতর পালকদের পোলট্রির টিকা দেবার পরামর্শ দেন ৷ সেটাও আবার সঠিক নিয়মের তোয়াক্কা না করেই ৷ ফলে কবুতরের কোন উপকারে তো আসেই না, উল্টো ক্ষতি হয় ৷
অনেকে হাস মুরগির টিকা দিয়ে, কবুতর বিক্রির বিজ্ঞাপনে বলে থাকেন ৷ ব্যাপারটা হাস্যকর ৷ অনেকে আছেন দুই মাস পর পর বিভিন্ন রোগের ভ্যাকসিন দিয়ে থাকেন ৷ একজন জানালেন, সব রোগ মিলে একটা ভ্যাকসিন দেন , হাস মুরগির ভ্যাকসিন ৷ আমরা কবুতর পালছি, হাস মুরগি না, তবে কেন হাস মুরগির ভ্যাকসিন নিয়ে মাতামাতি করি ?
ভ্যাকসিন বা টিকা এন্টিবডি তৈরি করতে বা রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে ৷ রোগ সৃষ্টিকারী জীবানু থেকেই সেই রোগের টিকা তৈরি করা হয় ৷ টিকা দুই ধরনের হয় ৷ জীবিত এবং মৃত ৷
আমরা কবুতরকে টিকা দেই না ৷ টিকা না দিয়েই কবুতরের সুরক্ষা ব্যবস্থা (ইম্যুনিটি) ভাল রাখার চেষ্টা করি ৷ আলহামদুলিল্লাহ্, এতে আমরা সফল ৷ যা হোক, আপনি যদি টিকা দিতেই চান, তবে কবুতরের টিকাই দেবেন ৷ সেজন্য নিজ উদ্যোগে বিদেশ থেকে টিকা আনতে হবে অথবা যারা আনেন তাদের কাছ থেকে সংগ্রহ করতে হবে ৷ জেনে রাখা ভাল, এতে খরচ অনেক বেশি হবে ৷ যারা বিদেশ থেকে টিকা আনেন, তারা অনেক বেশি দামে বিক্রি করেন ৷
কবুতরের জন্য প্রযোজ্য কিছু ভ্যাকসিন :
প্যারামক্সি ভাইরাস বা pmv এর জন্য
Chevivac P200
Nobilis (Nobivac)
PMV Colombovac
TRAVI-PMV-VAC
Avian PMV vaccine
সাল্মনেলিসিসের জন্য
Chevivac S
Salmo PT
SALMONELLA-PMV-VAC" এই ভ্যাকসিনটি সাল্মোনেলিসিস এবং pmv দুটোর জন্যই প্রযোজ্য ৷
পক্সের জন্য
CheviPok
Romporpox
RAVI-POX-VAC
ভ্যাকসিন দিলে প্রতিরোধের জন্য অন্য কোন ঔষুধ দিতে হবে না ৷
দেবার নিয়ম
মৃত টিকা পুশ গান দিয়ে করতে হয়। পুচ্ছ থেকে ঘাড় অভিমুখে শিরদাঁড়ার শেষ প্রান্তে পায়রা প্রতি ০.২ মিলি পরিমান ইনজেকশন পুশ করতে হয়। খেয়াল রাখতে হবে যেন মাথার পিছনে না পুশ করা হয় বা হাড্ডিতে সূচ না লাগে। এতে কবুতরের প্যারালাইসিস হবার সম্ভাবনা থাকে। মৃত টিকা দেবার জন্য প্রশিক্ষণ নেয়া উচিত অথবা প্রশিক্ষিত কারও সাহায্য নিতে হবে ৷
জীবিত টিকা সাধারণত ১ চোখে বা ১ নাকে ১ ফোঁটা করে দিতে হয়।
মৃত টিকা বছরে একবার এবং জীবিত টিকা ৩০/৪৫ দিন পর পর দিতে হয় ৷
টিকার দেবার উপযুক্ত সময়
প্রজনন জোড়ার মেটিং এর ৪/৬ সপ্তাহ আগে।
বাচ্চা বাসার মধ্যে ৪ দিন বয়সের আগে।
রেসিং সিজন শুরু করার ৪/৬ সপ্তাহ আগে।
প্রদর্শনী জন্য কবুতরকে ৪/৬ সপ্তাহ পূর্বে ।
সতর্কতা
-টিকা আনার জন্য ফ্ল্যাক্স বা এয়ারপ্রুফ কিছুতে আনতে হবে, যার ভিতরের তাপমাত্রা ৪° সেঃ এর বেশি হওয়া যাবে না ৷ বরফে পরিণত করবেন না। সূর্যের আলো থেকে দূরে রাখতে হবে ৷
- লেবেল ছাড়া কোন টিকা দেবেন না, আর মেয়াদ দেখে নিবেন।
- ঠান্ডা সময়ে (খুব সকালে অথবা রাতে) দিতে হয় ৷
- টিকার সাথে দেয়া ঔষধ ছাড়া অন্য কোন ঔষধ মেশানো যাবে না।
- টিকা দেবার সময় মাস্ক, গ্লভস পরতে হবে ৷
- খেয়াল রাখতে হয় যেন টিকা যেন মাটিতে না পড়ে ৷
- পায়ে বা পাখায় ভ্যাকসিন পুশ করা যাবে না।
- টিকার ভায়াল খোলার দুই ঘন্টার মধ্যে ব্যবহার করতে হবে ৷
- অবশিষ্ট টিকা মাটিতে পুতে ফেলতে হয়। দুই ঘন্টা পর টীকার কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যায় ৷দুই ঘন্টার পর উপকারী জীবাণু সক্রিয় হয়ে অপকারী হিসেবে কবুতরকে আক্রান্ত করতে পারে ৷ অনেকেই ফ্রিজে রেখে একই ভায়াল কয়েকবার প্রয়োগ করে, এটা কবুতরের জন্য মারাত্বক ক্ষতিকর ৷
- শুধুমাত্র সুস্থ কবুতরকে টিকা দিতে হবে, অসুস্থ এবং দুর্বল কবুতরকে টিকা দেয়া যাবে না।
- ডিম পাড়বে এমন কবুতরকে টিকা দেয়া যাবে না।
- কৃমিনাশক ও টিকা কাছাকাছি সময়ের ব্যবধানে দেয়া যাবে না।
- টিকা দেবার দেবার দিন স্যালাইন দিতে হবে।
- টিকা দেবার একদিন পর থেকে ৩ দিন মাল্টিভিটামিন দিতে হবে।
- সব ধরনের ভ্যাকসিন এর ক্ষেত্রে একই নিয়ম মেনে চলতে হবে।
Creator Admin a
কবুতর ক্রয়,বিক্রয়,তথ্য এবং চিকিৎসা Exclusive Pigeon Fan Club
Group Link : https://web.facebook.com/groups/233262657171111/