Fathen Istayaq Rakin

  • Home
  • Fathen Istayaq Rakin

Fathen Istayaq Rakin �Assalamualaikum�
Well Come to My World �

Plz follow and read the story
17/04/2025

Plz follow and read the story

গল্পের নাম: এক রহস্যময় গ্রামের কথা (পর্ব ০১)
লেখক: ফাতিন ইসতিয়াক রাকিন
আজ আমাদের এইচএসসি পরীক্ষা শেষ হওয়ার‌ অনেক দিন পর আমরা সবাই মিলে একত্রিত হয়েছি। আসিফ,অজয় ,সুজন ,বলু,রাজীব,সুরবিন্দ , আনন্দ তারা কোথায় ঘুরতে যাবে তা নিয়ে আলোচনা করছিল।
হঠাৎ!!
আলোচনার মাঝখানে সুজন বলে উঠল...., তদের একটা গ্রামের বাড়ি আছে না অজয়?
অজয় উত্তর দিল ... ,“ ‘হ্যাঁ’ আছে তো।তো কী হয়েছে? তোরা কি আমার গ্রামের বাড়িতে যাবি?”
বলু সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলল , একবার নাহয় অজয়ের গ্রামের বাড়ি থেকে ঘুরেই আসি । একে তো আমাদের এইচএসসি পরীক্ষা শেষ হয়েছে। হাতে তেমন একটা কাজ ও নাই।সবাই এখন অবসর আছি।আর পরীক্ষার জন্য অনেক দিন ঘুরতে ও যাওয়া হয়নি। এই সুযোগে ঘুরতে যাওয়া ও হবে আবার অজয়ের গ্রামের বাড়িও দেখে আসা যাবে।অজয় বলল তাহলে চল একবার তোদের না হয় আমার গ্রামের বাড়ি ঘুড়ে ই আসি।এমনিতে অনেক দিন যাবত গ্রামের বাড়িতে যাওয়া হয়নি বলতে গেলে যাওয়ার সুযোগ হয়ে উঠেনি।তাই আমি ভাবছিলাম একবার যাব । কিন্তু একা যেতে হবে বলে যাই নি , এখন সবাই সম্মতি দেয় তাহলেই হবে”।
সুরবিন্দ বলল “’না’ এসব গ্রাম দেশে না ঘুরে চল আমরা দর্শনীয় কোনো স্থানে ঘুরে আসি।“
বলু , সুজন, আসিফ এতে দ্বিমত পোষণ হলো। আবার অন্য দিকে কথার মধ্যে ফোড়ন কাঁটায় সুজন ও একপ্রকার রেগে গেল। মানে কথা বলতে বলতে প্রায় ঝগড়া লাগার মত অবস্থা সৃষ্টি হতে পারে আন্দাজ করে সবার মাঝখান থেকে আমি হঠাৎ রেগে বলে উঠলাম “‘আচ্ছা’এবার বল তাহলে আমরা যাচ্ছি কোথায়? কোনো কথাকাটাকাটি নয়। সরাসরি ফাইনাল সিদ্ধান্ত চাই কিন্তু এই আমি বলে দিলাম।”
সুরবিন্দ বলল “ফাইনাল সিদ্ধান্ত আবার কী?”
এর মাঝখানে সুজন বলল “‘আচ্ছা’আমরা সবাই মিলে যে জায়গায় যেতে সম্মতি দিচ্ছি ওই জায়গায় গেলেই তো হয়। এতে করে সবার কথা ও রাখা হবে তাহলে আর কারও মনে কোনো আক্ষেপ থাকবে না যে আমার কথা শুনা হয়নি।”
সুরবিন্দ বলল “তাহলে আমার কথার কী হবে এর কী কোনো মূল্য নেই?”
অজয় বলল “আরে বন্ধু এসব ছোট-খাটো বিষয় ধরলে কী চলে, বাদ দে তো।”
আনন্দ বলল “এবার নাহয় আমাদের কথা শুনে অজয়ের গ্রামের বাড়িতে চলে , পরেরবার যখন ঘুরতে যাব তখন তুই যে জায়গায় যেতে বলবি সেই জায়গাতেই না হয় যাব। সোনা ভাই আর জেদ করিস না আমাদের কথাটা শুন।”
অজয় অতি আনন্দিত স্বরে বলে উঠলো “একবার আমার গ্রামের বাড়ি চল দেখবি সেখানন থেকে আর আসতেই মনে চাইবে না।”
সুরবিন্দ “‘আচ্ছা ঠিক আছে তোরা যেহেতু অজয়ের গ্রামের বাড়িতে যাবি তো চল। কিন্তু যদি অজয়ের কথামতো ভালো না লাগে তাহলে আমি পরের দিনই তাদের রেখেই চলে আসব।”
অজয়ের কথায় আশ্বস্ত হয়ে আমরা সবাই সম্মতি দিলাম । এর মাঝখানে আমি বললাম
হবে যে সময় আমরা যেতে পারব।
অজয় বলল তাহলে না হয় চল কালকেই‌ ?
সুজন বলল “কালকে তো যাওয়াই যায়......কি(অশেষ বাক্য)..........”।
আসিফ বলল “যাওয়া যায় কী কালকে তো আমরা সবাই নিশ্চত যাচ্ছি”
সুজন আবার বলল “আরে আমারা তো কালকে যাবই কিন্তু কীভাবে যাব তার কথা বলছি।”
অজয় বলল “কীভাবে আবার যেভাবে যেতে হয় সেভাবে , মানে আমরা বাসের যাব”
সুরবিন্দ বলল “বাসে গেলে কী মজা হবে নাকি , এছাড়া ও বাস একটু পর পর থামাবে এসব করে পৌঁছাতে দেরী হয়ে যাবে এমনিতে ও অজয়ের জন্য অলরেডি অনেক টা দেরি হয়ে গেছে, আবার রাস্তায় যদি বাস নষ্ট হয়ে যায় তাহলে আবার আরেক সমস্যা, এর থেকে ভালো হবে আমরা একটা মাইক্রোবাসে করে যাই”।
অজয় দেখলাম কী একটা বলছে যাচ্ছে আমি অজয়ের কানের কাছে গিয়ে বললাম ভাই আর কথা বাড়াস না ,এমনিতে অনেক কষ্টে সুরবিন্দকে রাজি করছি পরে যদি সে বেঁকে বসে তাহলে আবার আরেক ঝামেলা।বুঝলাম অজয় আমার কথা রাখছে , সে আর কিছু বলল না। কিন্তু সত্যিকার অর্থে সমস্যা হলো বাস বাদ দিয়ে যদি মাইক্রোবাসে যাই তাহলে টাকার পরিমাণটা বেশি যাবে আবার অন্যদিকে বাস থেকে নেমে যে টুকু পথ হাঁটার কথা ওইটুকু আর হাঁটতে হবে না। যাইহোক সবাইকে এই কথাটা বললাম ‌।দেখলাম আমার কথাটা বুঝতে পেরে সুরিন্দর আর কোনো কথা বলছে না এই বিষয়ে। কিন্তু বাকিরা বলল মাইক্রোবাসে যেহেতু টাকা বেশি যাবে তাই বাসেই ভালো।বাকিটা হাঁটার পথ নাহয় একটু কষ্ট করে পার করে দিব। নতোবা ঐখানে গিয়া একটা ব্যবস্থা হবেক্ষণ।আমি আর কোনো্ কথা না বলে সবার কথায় সম্মতি দিলাম।
আসিফ আনন্দকে বলল “আমাদের ৮ জনের জন্য অনলাইনে টিকিট বুকিং করে ফেল তো।”
আনন্দ বলল “বন্ধু আমার এমবি নাই তুই সুজন কে বলল”
সুজন বলল “তুই আর মানুষ পাস নাই এই কিপ্টা রে বলস , তার এমবি থাকলে ও এমবি খরচ হয়ে যাওয়ার ভয়ে কাজ করত না”
আনন্দ বলল “ভাই আমি ওয়াইফাই ইউজার আমার এমবি থাকবে কী করে।”
আনন্দ আর ও কিছু কথা বলত কিন্তু বলুর ইসারাতে না করার কারণে কিছু বলল না ।
সুজন বলল “‘আচ্ছা’ আমি ব্যবস্থা করছি।”
সুজন টিকিট বুকিং করার চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না , কী একটা যেন সমস্যা করছে। কিন্তু কী সমস্যা সেটা আর বুঝা যাচ্ছে না।এরই মধ্যে সুজয় প্রায় কয়েক বার চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না।হয়তো নেটওয়ার্কের সমস্যা !
জব্বার বলল “ ‘আচ্ছা’ বাদ দে কালকে বাস ছাড়ার আগে টিকিট কাউন্টার থেকে টিকিট বুক করব নে।”
সবাই বলল ওকে এটাই ফাইনাল। আমরা তাহলে সবাই কালকে অজয়ের গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছি । এরপর রাতে আমারা অনেকক্ষণ গল্প আড্ডা দেওয়ার পর রাত ৮:৪৫ দিকে বাসায় ফিরে গেলাম।
পরেরদিন সবাই ঠিক দুপুরে খাওয়ার দাওয়াত করে বাসা থেকে বের হলাম। সবাই ঠিক বিকাল ৪ টার সময় অজয়ের বাসার কাছে যে পার্ক আছে ওই যায়গায় দেখা করলাম । কিন্তু মজার ব্যাপার আমরা গ্রামের বাড়িতে যাব সেই এখনো আসে নাই।
সুজন বলল “নাও এখন বসে তার জন্য অপেক্ষা কর, কখন সে আসে”
বলু বলল “আসিফ তুই অজয়কে একটা কল দিয়ে দেখতো সে কি কোথায় আছে। সে আসতে অনেক দেরী করছে । আমরা ৪ টার সময় এই জায়গায় আসছিলাম এখন প্রায় ৫ টা বাজতে চলল আর এখনো তার আসার নাম নেই । পরে দেখবি আমাদের পৌঁছাতে রাত হয়ে যাবে । সে তো আর কম দূরে না । আমাদের লক্ষীপুর যেতে হবে। প্রায় ৭ ঘন্টা আমাদের জার্নি করে যেতে হবে , বুঝতে পারছিস ব্যাপারটা ?”
এরপর আসিফ অজয়কে ফোন দিল ।“অজয় কিরে তুই কি আজ আসবি না ? আমরা সবাই অনেকক্ষণ থেকে আপনার জন্য অপেক্ষা করতেছি বাট আপনার কোনো খবরই নাই।”
তখন ফোনের ওই পাশ থেকে অজয় বলল “আরেহ বাবা, আমার দুপুরের খাওয়া দাওয়া করে রেডি হতে গিয়ে একটু হয়ে গেছে। ৫ মিনিট দ্বারা আমি ১৫ মিনিট আগেই বাসা থেকে রেডি হয়ে বের হয়ছি ৫ মিনিটের মধ্যে পৌঁছে যাব।”
তারপর সবাই মিলে আবার গল্পগোজবে মন দিলাম।‌প্রায় ১০ মিনিট পর হঠাৎ দেখি অজয় আসছে।অজয় আসতেই সুজয় মজা করে বলল যাক তুই এসেছিস আমি তো ভাবছি তরে রেখেই আমাদের চলে যাব।
অজয় তাচ্ছিল্যের সুরে বলে উঠলো “তুই আমার গ্রামের বাড়িতে যাবি আমাকেই রেখে, বাহ !! ভালো তো তাহলে তুই বরং এখনই বেরিয়ে পড় তুই যেহেতু আমার গ্রামের বাড়ি চিনিস বলে মনে হচ্ছে ।আর আমরা না হয় ।পরের বাসে করে তোর পিছনে পিছনে আসছি”
সুজয় বলল “আরে ভাই আমি তো মজা করছিলাম।”
হঠাৎ বলু বলে উঠল “আরে ভাই এবার থাম। এখন আমরা কি করব সেটা বরং সবাই মিলে চিন্তা কর।”
হঠাৎ চোখ পড়ল আমার ঘড়ির দিকে দেখলাম ঘড়িতে তখন বিকাল ০৫:২৪:৫৯ মিনিট দেখাচ্ছে প্রায় সাড়ে বাজে।এমনিতে ও আমরা অজয়ের দেরী হওয়ার কারণে দুইবার বাস মিস করছি। এখন পরবর্তী বাস ঠিক সন্ধ্যা ৬:১০ মিনিটে ছাড়বে। তাই আমাদের আর ও ৪৫ মিনিটের মতো অপেক্ষা করতে হবে।সবাই নীরব থাকল কিছুক্ষণ ।যেন দুইবার বাস মিস হয়ে যাওয়াতে সবাই চিন্তায় পড়ে গেল ‌। আমি সবাইকে বললাম চিন্তা করার কোনো দরকার নেই আমরা সন্ধ্যা ৬:১০ এর বাসে যাব ।আর তো মাত্র কিছুক্ষণের ব্যাপার।সবাই একটু ধৈর্য ধরে বস।এরই মধ্যে বলরাম বলে উঠল যাক এতক্ষণে তোর মুখে কথা ফুটেছে। আমি তো ভাবছি তুই মন হয় মৌনব্রত নিয়েছিস । আমি বলুর উত্তরে বললাম হায়রে “ভাবুক ছেলেটি”।কি বলব বলতো তাইতো আমি কথা না বলে তোদের কথা শুনছি ।আসিফ বলল বাসের ছাড়ার সময় হয়ে যাচ্ছে চল আমরা ধীরে ধীরে কাউন্টারের সামনে যাই।
এই অনুয়ায়ী আমরা আমরা বাসের কাউন্টারের সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। আমরা দাঁড়িয়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করছি। টিকেট কাটতে আমি কাউন্টারের দিকে এগিয়ে গেলাম , এমন সময় কাউন্টারে বসা এক লোক বলল। আজকে এই বাস চলবে না। আমি কারণ জিজ্ঞেস করতেই লোকটি বলল তোমরা যে বাসে যাবে কুমিল্লা থেকে আসার পথে রাস্তায় এক্সিডেন্ট করেছে। সাথে সাথে সব ঘটনা সবাইকে এই বললাম। সবার তো হঠাৎ এই ঘটনা শুনে ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়ার মতো অবস্থা।সবাই যেন এক মুহুর্তের জন্য দিশেহীন হয়ে গেলাম। তখন কী করব আমাদের কিছুই মাথায় আসছে না।কি করা যায় তা নিয়ে বন্ধুদের সাথে আলোচনা করছি এমন সময় টিকেট কাউন্টারের ওই লোকটা বলল
“তোমরা যদি চাও তাহলে আমি তোমাদের যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে পারি।আচ্ছা তোমরা কোথায় যাবে ?”
সুরবিন্দ বলল “আঙ্কেল যেতে তো চাই কিন্তু আপনি কীভাবে আমাদের যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিবেন? আসলে আমরা আমাদের বন্ধুর গ্রামের বাড়িতে ঘুরতে যাচ্ছি। আমাদের ঘুড়তে যাওয়া শুরুতেই এমন বাঁধা পড়ে গেল।না জানি সামনে গিয়ে আর ও কী কী হবে!”
অজয় বলল “এসব অলক্ষুনে কথা বলিস না তো” সুরবিন্দ বলল “আচ্ছা ভাই” কাউন্টারের ওই লোকটা বলল “আমার শ্যালকের ট্রাভেল এজেন্সি আছে সেখান থেকে না নাহয় একটা মাইক্রোবাস তোমাদের জন্য বুক করে দিচ্ছি।”
সবার সম্মতি ক্রমে আমি লোকটা-কে‌ বলু আপনি একটু কষ্ট করে আপনি আমাদের জন্য একটা মাইক্রোবাস তো
“অজয় বলল তোরা থাক আমি একটু আসছি”
বলু বলল “এখন আবার কোথায় যাচ্ছিস তুই?”
অজয় উত্তর দিল “আর বলিস না ভাই , টেনশনে আমার এক নাম্বারটা পেয়ে গেছে , আমি একটু ওয়াসরুম থেকে আসছি”
বলু বলল “তাড়াতাড়ি চলে আসিস , যেকোনো সময় গাড়ি চলে আসতে পারে”
অজয় বলল “আচ্ছা”
আসিফ বলল “আচ্ছা সবাই মিলে অজয়ের গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছি কিন্তু সেখানে গিয়ে আমরা সবাই থাকব কই?”
সুজন বলল “আরে বোকা আমরা অজয়ের গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছি অবশ্যই সেখানের আত্মীয়-স্বজন কেউ আছে আমরা তাদের বাসায় হয়তো থাকব।” আসিফ আবার বলল,“সেটাতো নাহয় ঠিক আছে কিন্তু হঠাৎ করে কি অজয়ের গ্রামের বাড়িতে যাওয়া ঠিক হবে। ‘মানে আমরা তো জানি না গ্রামের বাড়িতে আদ্দ কোনো আত্মীয় আছে কী না। এছাডা ও অজয় তো আমাদের কোনো দিন তার গ্রামের বাড়িতে ‘কে থাকে না থাকেনা সে বিষয়ে কোনো দিন আমাদের সাথে গল্প ও করেনি। যদি কোনো আত্মীয় না থাকে তাহলে থাকব কোথায়?”
বলু বলল; “আসিফ তুই অযথা চিন্তা করছিস। তকে আর এসব নিয়ে ভাবতে হবে না। ওই দেখ অজয় আসছে। আমরা সবাই না হয় সে আসলে তোর সব প্রশ্ন গুবোই জিজ্ঞেস বার। তাহলে তো হবে, তাই না?”
আসিফ বলল “হ্যা”।
সুজয় বলল;“কীরে অজয়, তোর জন্য আমরা অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে আছি তোর এতো দেরী হলো যে?”
অজয় বলল;“আচ্ছা ভাই আমার ভুল হয়ছে। এখন চল আমরা গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হই।”
“সুজয় অজয়কে বলল গাড়ি আর পনেরো মিনিট আগেই চলে এসেছে, চল তাইলে এবার আমরা তোর গ্রামের বাড়ির দিকে রওনা হই।”
গাড়িতে প্রচুর হাসি ঠাট্টা ও মজা চলল আমাদের। এরই মধ্যে গ্রামে পৌঁছাতে প্রায় রাত ৮:৪৫ মিনিট হয়ে গেলো। গ্রামের ভিতরে প্রবেশের সামনেই একটা মসজিদ দেখা যাচ্ছে এবং সেখানে লাইট জ্বলতেও দেখা যাচ্ছে । আমরা ভাবলাম এখানে নেমে এশার নামাজটা পড়ে নিব।
আসিফ তখন বললো “দেখলি আমাদের অনেক দেরী হযে গেছে। সব দোষ অজয়ের। আজকে অজয়ের সব সময় দেরি হওয়ার অভ্যাসের কারণে আমাদের পৌঁছাতে এত সময় হয়ে গেল এত দেরি হয়ে গেল, সন্ধ্যা হওয়ার আগেই গ্রামে পৌঁছে পেলাম যেতাম।”
সুজন বলল, “আচ্ছা বাদ দে যা হওয়ার হইছে।”“এশার আজান হয়তো অনেক আগেই দিয়ে দিছে গাড়িতে ছিলাম বিধায় বুঝতে পারিনি, আসিফ আয় আমরা নামাজ পড়ে নি। মনে হয় জামাত অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে যেহেতু গ্রাম একটু তাড়াতাড়ি এশার নামাজ পড়ে নেয়।
আসিফ বলল “আচ্ছা চল গিয়ে দেখে যদি জামাত পাই তাহলে তো জামাতে নামাজ পড়বো না হলে আমি আর তুই একলাই নামাজ পড়ে নেব।”
আসিফ ও সুজন মসজিদের কাছাকাছি যেতে কেমন একটা গায়ে শিহরণ জনিত কোন কারন অনুভব করল। এছাড়াও মসজিদ কিন্তু এর আশেপাশে কোন মুসল্লি বা মানুষকে ও দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। বিষয়টা অত্যন্ত অদ্ভুত কারণ আমাদের দেরি হওয়ার কারণে নামাজ জামাতসহিত নামাজ আদায় না করতে পড়তে পারলেও অনেকে নামাজের পরও মসজিদে অবস্থান করে অথবা অনেক বয়স্করা ও অনেক সময় মসজিদ থেকে একটু দেরি করে বের হয়। এসব বিষয় বাদেও মসজিদে যেহেতু আশেপাশে অন্তত এক দুজন মানুষ থাকতো আবশ্যক ছিল। যাইহোক এসব চিন্তা বাদ দিয়ে হাসি পশুর জন্ম মসজিদে প্রবেশ করল। মসজিদের ভিতর প্রবেশ করে ও তারা দুইজন ব্যক্তি ব্যতীত অন্য মানুষ বা মুসল্লিকে দেখতে পেল না। সম্ভবত তারা ইমাম ও মুয়াজ্জিন। তারা নামাজ আদায় রত অবস্থায় আছে।
সুজন বলল “নামাজ তো পড়বো আগে উঠে তো করতে হবে কিন্তু ওজুখানা টা কোন দিকে আমি তো বুঝতে পারতেছি না কি করি ?”
আসি বলল” আমি তো দুইজন দেখতে পাচ্ছি তাদের জিজ্ঞেস করব কিন্তু তারা তো নামাজরত অবস্থায় একটু দাঁড়া দেখি তাদের নামাজ যদি শেষ হয় তাহলে তাদের না হয় জিজ্ঞেস করবো যে অজুখানা টা কোন দিকে।
তারপর কিছুক্ষণ পর তাদের না নামাজ শেষ হলো ।
এরপর আসিফ সামনের দিকে তাকিয়ে ওই দুই ব্যক্তিকে উদ্দেশ্য করে জিজ্ঞেস করল একটু কি বলতে দিতে পারবেন ওজুখানা টা কোন দিকে?”
তারা চুপ থাকলো ।মনে হলো যেন তারা আসিফের কথা শুনতে পাইনি। অতঃপর আসিফ ভাবলে হয়তো আমি আসতে বলাতে আমার কথা তাদের কানে পৌঁছায়নি। তাই দ্বিতীয়বার আসিফ উচ্চস্বরে পূর্বের প্রশ্নটি সামনের দিকে ছুড়ে দিল। কিন্তু অবাক করার বিষয় এইবারও তাদের দুজনের মধ্যে একজন কোন জবাব দিল না। অগত্যা আসিফকে রেখে সুজন সামনের দিকে গেল অজুখানা খুঁজতে। বিষয়টা তাদের কাছে অদ্ভুত লেগেছে কারণ দুজনের মধ্যে একজন তাদের প্রশ্নের উত্তর দিল না।
কিছুক্ষণ পর “সুজন আসিফকে ডাক দিয়ে বলল আসিফ এদিকে চলে আয় আমিও অজুখানা খুঁজে পেয়েছি। ডাক দেওয়ার সাথে সাথে আসিফ ওই দিকে চলে গেল।“
এরপর তারা তাড়াতাড়ি অজু করে নামাজের উদ্দেশ্যে আবার আগের জায়গায় ফিরে গেল। তারা গিয়ে দেখল দুজন ব্যক্তি পূর্বে যে জায়গায় বসেছিল এখনো সেই জায়গাতেই বসে আছে। তারা আর কিছু বলল না শুধু.....
আসিফ বলল সুজন এমনিতেই অনেক দেরি হয়ে গেছে যে যা পারে করুক আমাদের এত কিছু দেখার সময় নেই এমনিতেই নামাজ পড়ে বাইরে যেতে হবে অজয় এরা আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে অনেক সময় ধরে। অতঃপর তারা অন্যদিকে খেয়াল না দিয়ে নামাজ পড়া শুরু করল।
অন্যদিকে অজয় ও অন্যান্য বন্ধুরা আসিফ ও সুজনের জন্য অপেক্ষা করতে করতে প্রায় মসজিদের কাছাকাছি যেতে তারাও একইভাবে গা শিহরণ জনিত কোন কারণ অনুভব করল। তারা রীতিমতো চিন্তিত হয়ে পড়ল আসিফ ও সুজনের জন্য। কিন্তু তারপর চিন্তা করল যেহেতু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান আশাকরি সেখানে তাদের কোন অমঙ্গল বা খারাপ কিছু ছুঁতে পারবে না । তাই একথা ভেবে তারা কিছু নিশ্চিন্তই বোধ করল।
আবার এদিকে আসিফ ও সুজনের নামাজ শেষ হওয়ামাত্রই কারেন্ট চলে গেল। আসিফ সুজন দুইজনই কিছুটা ভয় পেয়ে গেল।
ভয় কাঠিয়ে আসিফ বলল “আরে সুজন ভয় পাস না এটা গ্রাম, এখানে তো কারেন্ট খুব বেশি আসা যাওয়া করে। তুই বরং তোর মোবাইলের ফ্লেস লাইট জ্বালিয়ে চল আমরা বাহিরে যাই। অজয় এরা বাহিরে আমাদের জন্য অনেক ক্ষপ থেকে অপেক্ষা করছে।
সেই সময় হঠাৎ আসিফ এর ফ্লেস লাইট সামনে দিকে দিতেই তারা অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকল। কারণ আসিফের লাইট যেমন সামনে দিকে গেল তখন সেখানে ইমাম ও মুয়াজ্জিন কেউই ছিল না।
সুজন বলল; “আরেহ! ব্যপারটা কী? ইমান, মুয়াজ্জিন কোথায় গেল, কিছুক্ষণ আগে না নামাজ পড়াচ্ছিল। তারা কখন মসজিদ থেকে বের হয়ে গেল বুঝতেই তো পারে নি। সবচেয়ে বড ব্যাপার হলো কারেন্ট যাওয়ার আগে বা পরে তাদের কোনো কথাবার্তা বলতে তো শুনিনি ।” এমন সময় আসিফ বলল; “আমার মনে হচ্ছে এখানে কোনো গন্ডগোল আছে। অনেক বড় গন্ডগোল। আমার কথা শুন এখান থেকে চল যদি নিজের জীবনের মায়া থাকে”।
সুজল বলল; শুধু তোর না ব্যাপারটা আমার শুরু থেকেই কেমন একটা যেন গন্ডগোলের লাগছিল বিষয়টা অত্যন্ত অদ্ভুত। এমন ঘটনা কোনদিন আমাদের সাথে করেছে বলে আমার মনে পড়ছে না। কিন্তু আসছি যেহেতু নামাজ তো পড়তে হবে এমনি তো এখানে নামাজ না পড়লে আর তো পড়া জায়গা পাব কিনা সেটাও জানিনা।আচ্ছা যাইহোক চল কোনভাবে কষ্ট করে আগে নামাজটা আদায় করি। এরপর বাইরে গিয়ে না হয় এই বিষয়ে কথা বলব।এমনিতে ও এরা দুজন অনেকক্ষপ থেকে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে।
আসিফ বলল “আচ্ছা, চল।”
আসিফ ও সুজন যে মাত্র বসা থেকে দাঁড়িয়ে উঠতে যাবে তখন আসিফের ফ্ল্যাশলাইট পুনরায় সামনের দিকে যেতেই আবার তারা হতভম্ব হয়ে গেল। দেখল কোথা থেকে যেন আবার ইমাম মুয়াজ্জিন তাদের আগের জায়গায় বসে আছে। কিভাবে কি হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছে না তারা। সবকিছু যেন এলোমেলো মনে হচ্ছে আসিফ ও সুজনের। তারা অত্যন্ত ভয়ভীতি ও উৎকণ্টায় প্রায় দৌড় দিয়েই মসজিদের বাহিরে চলে আসলো ।
বাহিরে বের হওয়া মাত্রই আসিফ , সুজন ‌, অজয় সহ বলু সবাইকে সব কথা খুলে বলল। শুনে তো ওরা সবাই ই অবাক হলো।
বলু বলল; “আমার ও অনেক্ষণ থেকে এই জায়গা ও এর আশেপাশ আমার বেশি সুবিধার লাগছে না কেমন যেন গা শিহরণ দিচ্ছে বার বার।
আসিফ ও সুজন ও বলল “আমদের ও এমন হয়েছে তো। “
আসিফ আবার বলল “অনেক হয়েছে এখনো আমাদের হাতে সুযোগ আছে , আমার কথা শুন চল এখান দেখি আমরা আবার শহরের উদ্দেশ্যে রওনা দেই আর যেতে হবে না অজয়ের গ্রামের বাড়িতে। আমার অত্যন্ত ভয় করছে এবং কিছু অদ্ভুত ঘটনা আমাকে অত্যন্ত চিন্তিত ও আমারদের নিরাপত্তা সম্পর্কে আমি চিন্তিত। যদি নিজের জীবনের মায়া থাকে তাহলে এখানেই আমাদের ভ্রমণের ইতি দিয়ে চল শহরের দিকে ফিরে যাই।
সুজন বলল; আসিফ ঠিক বলেছে অনেক হয়েছে এখনো সুযোগ আছে আমরা সবাই গ্রাম থেকে শহরে ফিরে যাই।”
সেইসময় অজয় বলল; আরে বোকা এত ভয় পাওয়ার কী আছে এসব না তর মনের ভুল বৈত আর কিছু নয়। আরে এসব যাদের কথা বলছিস এরা বলতে কিছু হয় না।”
আসিফ বলল; আরে মানলাম আমার মনের ভুল কিন্তু মসজিদের বাহিরে ও ভিতরে যা যা হয়েছে সেটা তো শুধু আমি একাই দেখি নাই , আমার কথা যদি বিশ্বাস না হয় তাহলে আমার সাথে তো সুজন ও ছিল। ওকে জিজ্ঞেস একবার জিজ্ঞেস কর ।..........(চলমান)

(পর্ব:০১ , সমাপ্ত)
আমার এই গল্পটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ।আশা করব আপনার গল্পটি ভালো লেগেছে। পরবর্তী পর্ব ২ খুব তাড়াতাড়ি আপনাদের সামনে উপস্থাপন করব। আশা করব আপনারা আপনাদের মূল্যবান ভালো খারাপ লাগার মন্তব্যটি আমাদের সাথে শেয়ার করে আমাদের পাশে থাকবেন। আপনাদের মন্তব্যই আমাদের সামনের দিকে এগুলো অনুপ্রেরণা।
ধন্যবাদ 🥰
ধন্যবাদান্তে
লেখক: ফাতিন ইসতিয়াক রাকিন(রচনা, সম্পাদনা ও প্রকাশনায়)
তানজিম আহমেদ শাহীন ও শান্ত দাস (পর্ব ০১ বিশেষ সহযোগিতায়)

Address


Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Fathen Istayaq Rakin posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Fathen Istayaq Rakin:

Shortcuts

  • Address
  • Alerts
  • Contact The Business
  • Claim ownership or report listing
  • Want your business to be the top-listed Media Company?

Share