Adity’s Clipboard

Adity’s Clipboard Chasing dreams and making them real🎀

25/09/2025

কাজের ফাঁকে কফি খাইতে দিসে😅

25/09/2025

সেই ঘুরে ফিরে থাল বাসনই মাজতে হয়😩
BTW আমার মতো ব্লেন্ডারে ভর্তা বানান কে কে?

22/09/2025

#পর্ব ৩২(শেষাংশ)
#চেরি ফুল
#অদিতি

"হ্যাঁ আমি..... তার আগে বলো এইটা কোত্থেকে জোটালে"?

"মাম্মা এনে দিসে"।

ও আচ্ছা উনি মেয়ে কে বিড়াল কিনে দিয়ে আমার থেকে দূরে সরাতে চাচ্ছেন? কি হিটলারি বুদ্ধি রে বাবা.....

"কি বলছেন এইসব? মাম্মা মোটেও এমন কিছু করে নি... সামনে আমার বার্থডে তাই "ডোরামি" কে গিফট করেছে।

" এ্যা!!! ডোরামি কে??"

" ওর নাম ডোরামি"....

" আচ্ছা আচ্ছা বিড়ালের নাম দিয়েছো, আমাকে তো কোনোদিন ভালোবেসে আদর করে কোনো নাম দিলে না,বিড়ালের প্রতি এত ভালোবাসা?"ব্রু কুঁচকিয়ে বলে উঠে নাজওয়ান।

" বারবার বিড়াল বলছেন কেন ওকে? ওর একটা নাম আছে, আর আপনার নতুন করে নাম দেয়ার কি দরকার আগে থেকেই তো একটা ছিলো"....আপনি কি কোনোভাবে জ্বলছেন??মুখ টিপে হেঁসে বলে উঠে নুজু।

" আমি জলবো তাও একটা বিড়ালের সাথে কোনোদিন ও না।"নাজওয়ান বলছে ঠিকি কিন্তু কথায় স্পষ্ট রাগ বুঝা যাচ্ছে।

" তোমাকে ১০ মিনিট সময় দিলাম উপরে যাবে, প্রয়োজনীয় যা কিছু আছে সেটা নিবে, আর নিচে চলে আসবে।আমরা নেক্সট ১২ টার ট্রেনে ওসাকা যাচ্ছি"।

" মানে?"

" মানে,টানে কিছু না, ভার্সিটি শুর হয়েছে আজ ২ দিন অথচ প্রথম ওরিয়েন্টেশন ক্লাস টাই মিস করেছো, আমি চাই না আমার উড বি ওয়াইফ মাত্র "কোকুসাই"( কলেজ) পাস করেই সংসার, বাচ্চা কাচ্চা আর এই বিড়াল সামলাক।"

মাম্মা ভার্সিটি তে কল দিয়ে বলে দিয়েছে আমি অসুস্থ। ফিরতে ৩/৪ দিন লাগবে।

তোমার মাম্মা নিজের হিটলারি বুদ্ধি দিয়ে কি করেছে সেটা আমি জানতে চাই নি,আমার সাধারণ বুদ্ধি তে তোমাকে এই মুহুর্তে এই খান থেকে নিয়ে যেতে চাচ্ছি ব্যাস!!! উপরে যাও রেডি হয়ে দ্রুত নামো।আর সেটা ও প্রয়োজন নেই হয়তো... এইভাবেই চলো ওসাকা গিয়ে আমি সব কিছু কিনে দিবো। উপরে যাও ততক্ষণ পর্যন্ত এই বিড়াল থুক্কু " ডোরামি" আমার কাছে থাকুক।

-মাম্মা কে না বলে এইভাবে চলে আসবো?

"ঠিক আছে বলে আসতে চাচ্ছো? দিবে কি না জানি না তাও ট্রাই করে দেখতে পারো। আমি বরং হোটেলে চেক ইন করে আসি। টাইম ও হয়ে গেছে। আর সাথে করে "ডোরামি" কে ও নিয়ে যাচ্ছি। যতক্ষণ না তুমি আমার কাছে আসছো ততক্ষণ ওকেই আমি আমার কাছে রাখবো।

"আমি ওকে ছাড়া একদমই থাকতে পারবো না।"

"ওয়াও, গ্রেট, মাত্র ২/৩ দিনে একটা বিড়াল তোমার কাছে এত টা আপন হয়ে গেছে। অথচ তোমার আমাকে ছাড়া থাকতে কষ্ট হচ্ছে না নোজোমি?"

নাজওয়ানের নাকের ডগা প্রায় লাল হয়ে আসছে। এতক্ষণ নোজোমির দিকে না তাকালে ও এইবার মাথা তুলে তাকায়।

" মাম্মা একটু বাহিরে গেছে একটু পরেই চলে আসবে।আর মাম্মা বলেছে ২/৩ দিনের ভিতরে ওসাকা যাবে আপনার সাথে দেখা করতে।তখনই আমাকে রেখে আসবে।"

"কিহহহহহহ!!!!" ইমপসিবল!!!!

" মোটেই না, মাম্মা আমাকে এই কয়েকদিন কিছুই বলে নি বরং অনেক আদর করেছে,ডোরামি কে ও এনে দিসে যেনো আমার মন ভালো হয়ে যায়।আর আপনি কি না আমার মাম্মার ব্যাপারে শুধু শুধু খারাপ ভাবছেন"!!!

" নোজোমি "it's a Trap"!!! Don't Fall in it..." ফুপি মোটেই এত সহজ মানুষ নন।"You Don't Know Her"....

কিন্তু....মাম্মা... নাজওয়ান ওটা মাম্মার গাড়ি।মাম্মা আপনাকে এইখানে দেখে ফেললে সমস্যা হয়ে যাবে।আপনি থাকুন আমি উপরে যাচ্ছি।

" ওয়েট! ওয়েট !মাত্রই তো বললে উনি আমার ব্যাপার টা মেনে নিয়েছে তাহলে আমাকে এইখানে দেখলে প্রবলেম কেনো হবে?"

"আমি আসছি বলেই নাজওয়ানের হাত থেকে " ডোরামি" কে নিয়ে বাসার ভিতরে চলে যায় নুজু"।

নাজওয়ানের সব কিছু মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। ও কোনোভাবেই বিশ্বাস করতে পারছে না নুজুর কথা।

গাড়ি থেকে নেমেই এইদিক সেইদিক দেখে লিমা বাসার ভিতর ঢুকে পড়ে।আর নাজওয়ান ও লিমা কে দেখে কিছুটা আড়ালে চলে যায় কারণ ও কোনোভাবেই চায় না নুজুর কোনো কথা শুনা লাগুক। নাজওয়ান ঠিক করে কয়েকদিন ও "টোকিও" তে স্টে করবে।

মাঝ দিয়ে কেটে যায় ২ দিন..... এই দুদিনে তেমন কোনো কথাই হয় নি তাঁদের।আর নাজওয়ান ও যে টোকিও তে সেটা ও নুজু কে বলে নি।

খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে রেডি হয়ে নেয় নুজু কারণ আজ কে তারা নানুপুর বাসায় যাবে... ফোন টা হাতে নিয়ে নাজওয়ান কে ফোন দিতে নিয়েই দেখে ফোনে চার্জ নেই। বিরক্ত নিয়ে চার্জার এর দিকে তাকাতেই দেখে রাতে হয়তো সুইচ দিতে ভুলে গেছে। তাড়াতাড়ি করে ফোন টা চার্জে দিয়ে ফ্রেশ হতে চলে যায়।ফ্রেশ হয়ে বের হয়ে ফোন হাতে নিতেই দেখে মাত্র ১০% চার্জ হয়েছে।ফোন টা ঐভাবে রেখেই নিচে চলে আসে। সিঁড়ি দিয়ে নামার সময়ই দেখতে পায় বিশাল ২ টা লাগেজ রাখা।

" মাম্মা এতো বড় লাগেজ নিয়ে যাচ্ছি কেন আমরা?"

" অনেক দিন থাকবো তাই"!!

" অনেক দিন বলতে? কতদিন? আর তুমি ও থাকবে নানুপুর ঐখানে?"

" তোমাকে এতো কিছু ভাবতে হবে না তারাতারি নাস্তার টেবিলে বসো, না হলে ফ্লাইট মিস হয়ে যাবে।"

" ফ্লাইট মানে? আর ডোরামি কই মাম্মা? ওঁকে তো দেখছি না।" ডোরা চান.... ডোরা চান বলে নুজু ডাকতে থাকে।"

ডেকে লাভ নেই ওকে সকালে এসে তোমার বন্ধু লিসা নিয়ে গেছে। ডোরা কিছুদিন ওর কাছে থাকবে, পরে এনে পাঠায় দিবো তোমার কাছে।

" মানে!!! ডোরা কে আমাদের সাথে নিয়ে গেলে কি প্রবলেম হতো মাম্মা?রেগে গিয়ে বলে উঠে নুজু।আর তুমি তো জানো আমার এয়ারে প্রবলেম হয় তাও এয়ারে কেনো যাচ্ছো?

-এই মেয়ে টা বড্ড কথা বলে,তোমাকে যা বলেছি তাই করো চুপচাপ।

মায়ের ব্যবহার কিছুটা সন্দেহজনক মনে হয় নুজুর কাছে আদো কি ওরা নানুপুর বাসায় যাচ্ছে?
কোনো রকম ভাবে নাস্তা শেষ করেই উপরে চলে যায় অবিশ্বাস্য হলে ও ফোনের চার্জ তখনও সেই রকমই আছে। ড্রয়ার থেকে দ্রুত পাওয়ার ব্যাংক খুঁজতে থাকে নুজু। না পেয়ে নিচে গিয়ে জিজ্ঞাসা করতেই দেখে লিমা রেডি হয়ে দাঁড়িয়ে আছে আর বলতে থাকে" হয়েছে তোমার? চলো এইবার। কিন্তু মাম্মা আমার পাওয়ার ব্যাংক, ওয়ালেট, কিছুই নেই আমার ঘরে সেইসব কই গেলো?

তোমার সমস্ত জিনিস পত্র আমি নিয়ে নিয়েছি। এইবার চলো।

নুজু একবার নিজের ফোনের দিকে তাকায় আর একবার লিমার দিকে। উপায় না পেয়ে গাড়ি তে গিয়ে বসে। আর বলে উঠে " মাম্মা পাওয়ার ব্যাংক টা দাও"আমার ফোনে চার্জ নেই।

আহা এইটুকু সময় সহ্য হচ্ছে না তোমার? প্লেনে বসে চার্জ করে নিও।
রাগে কটমট করতে থাকে নুজু আর চুপচাপ বসে থাকে।

"নারিতা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট" দেখেই নুজু বলে উঠে আমরা নারিতা দিয়ে যাচ্ছি কেন মাম্মা? ডোমেস্টিক এয়ারের জন্য " হানেদা এয়ারপোর্ট" ই তো ঠিক ছিলো।
নুজুর কথার কোনো উত্তর না দিয়ে গাড়ি থেকে নেমে লাগেজ নামাতে থাকে।মায়ের থেকে উত্তর না পেয়ে ওয়াতানাবে সান অর্থাৎ নিজের পাপার কাছে গিয়ে ও সেম প্রশ্ন করতে থাকে নুজু কেউ কোনো উওর দিচ্ছে না দেখে নানান প্রশ্ন ঘুরপাক করতে থাকে নুজুর মনে।

ওসাকা যাওয়ার কথা বলে নুজুকে আসলে ক্যানাডা নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল তার লিমা। নুজু যেনো কিছু আঁচ করতে না পারে তাই আগেভাগেই টিকিট, পাসপোর্ট আর সব জরুরি কাগজপত্র নিজের কাছে গুছিয়ে রেখেছিল। বাহ্যিকভাবে কথা ছিল, তারা টোকিও থেকে ডোমেস্টিক ফ্লাইটে ওসাকা যাবে। কিন্তু লিমার আসল উদ্দেশ্য ছিল নুজুকে কানাডার ভালো কোনো ভার্সিটি তে ভর্তি করানো, আর সাথে সাথে নাজওয়ানের থেকে দূরে সরিয়ে নেওয়া।

এয়ারপোর্টে গিয়ে যখন নুজু খেয়াল করে যে লিমা তাকে ডোমেস্টিক টার্মিনালের বদলে ইন্টারন্যাশনাল ইমিগ্রেশনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে, তখনই তার মনে সন্দেহ জাগে। নুজু কিছু বলার আগেই লিমা দ্রুত বলে ওঠে—
“চলো, যেতে হবে তাড়াতাড়ি।”

হঠাৎ এই অদ্ভুত পরিস্থিতিতে উপায় না পেয়ে নুজু বলে যে সে ওয়াশরুমে যাবে। সেই সুযোগেই ইমিগ্রেশনে ঢোকার আগে সরে যায় ।

এদিকে লিমার স্বামী বারবার তাকে তাগাদা দিচ্ছিল তাড়াতাড়ি ভেতরে ঢোকার জন্য। নুজু ওয়াশরুম থেকে ফিরতে দেরি করছে দেখে লিমা আর অপেক্ষা না করে তাকে রেখেই ভিতরে চলে যায়।

ততক্ষণে নুজু ও বুঝে যায় লিমার আসল উদ্দ্যেশ্য। সাথে নিজের ফোন ছাড়া আর কোনো কিছু নেই তার কাছে।ফোনের চার্জ ও মাত্র ৪%। দ্রুত নাজওয়ান কে ফোন দেয়। কয়েকবার রিং হতেই নাজওয়ান কল রিসিভ করে আর বলে উঠে " কি ম্যাডাম? একেবারে ওসাকা গিয়েই কথা হতো" শুধু শুধু কষ্ট করে এখন কল দিতে গেলেন কেন? আপনার হিটলার মাম্মা সামনে নাই নাকি ?

" প্লিজ এখন এইসব রসিকতা করার সময় না,আমার ফোনে চার্জ নেই,মাম্মা আমাকে ওসাকা নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ইন্টারন্যাশনাল ফ্লাইট দিয়ে অন্য কোথাও নিয়ে যাওয়ার জন্য এয়ারপোর্ট নিয়ে আসছে।আমার টিকিট, পাসর্পোট, ওয়ালেট সব কিছু মাম্মার কাছে। ফোনে ও চার্জ নেই,আমি কি করবো বুঝতে পারছি না।" ঠিক এতটুকু বলতেই ফোন অফ হয়ে যায়।

আর নাজওয়ান ও হ্যালো হ্যালো করতে থাকে ঐদিক থেকে।হাতে থাকা ফোন টা আছার মেরে খাটের উপর ফেলে দেয়।রাগে মাথার রগ গুলি ফুলে উঠে।

আর জোরে জোরে চিৎকার করে বলতে থাকে " i knew it" "Bloody stupid Women"

" ফুপি Your game is over" একটা বার নোজোমি কে আমার কাছে পাই,এই জনমে আর মেয়ের মুখ দেখতে দিবো না।দেরি না করে দ্রুত হোটেল থেকে বের হয়ে চলে যায় " নারিতা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে"। ভাগ্যিস নাজওয়ান টোকিও তেই ছিল নাহলে এই মেয়ে এখন কিভাবে কি করতো ভাবতে ভাবতেই নাজওয়ানের রাগ প্রতিনিয়ত বাড়ছিলো। এইদিকে নুজুর কাছে যেহুতু কোনো টাকা পয়সা কিছু নেই তাই কোনো কনিবিনি তে গিয়ে যে ফোন চার্জ করাবে সেই উপায় ও নেই। এয়ারপোর্টের বাহিরে একটা বাস স্ট্যান্ডের বসার সিটে হেলান দিয়ে বসে আছে নুজু।জানে না সামনে কি হবে।শরীরে বিন্দু মাত্র শক্তি পাচ্ছে না মাম্মা ওর সাথে এমন টা কিভাবে করতে পারলো? সে তো জানতো যে নুজুর কাছে কিছুই নেই।এই অবস্থায় তাকে ফেলে মাম্মা কিভাবে চলে গেলো? বাড়ি ফেরার টাকা টা পর্যন্ত নেই। একবার ভেবেছিল পুলিশ স্টেশন খুঁজে সেইখান থেকে সাহায্য নিয়ে বাড়ি ফিরবে কিন্তু হঠাৎ ঝড় শুরু হওয়ার কারণে বাস স্ট্যান্ডেই গুটি সুটি মেরে বসে আছে নুজু প্রায় ৮০ ভাগ ভিজে গেছে ।কান্না করতে করতে মাথা টাও ধরে আছে। বৃষ্টি থামার নাম নেই। হাঁটু ভাঁজ করে মুখ ডেকে বসে ছিল নুজু হঠাৎ করেই
"নোজোমি"বলে ডাক শুনতে পায়।মাথা উঠিয়ে তাকাতেই দেখে কাক ভেজা অবস্থায় নাজওয়ান দাঁড়িয়ে আছে।

আকাশটা যেন হঠাৎ করেই ভেঙে পড়েছে। চারপাশে ঝমঝম বৃষ্টি, আর তার মাঝেই দাঁড়িয়ে আছে নাজওয়ান। সাদা শার্ট ভিজে গিয়ে একদম শরীরের সাথে লেপ্টে আছে, কালো প্যান্টের কাপড়ও ভারী হয়ে গেছে পানির চাপে। চুলগুলো এলোমেলো হয়ে কপালের ওপর পড়ে আছে, সেখান থেকে টুপটাপ করে পানি গড়িয়ে নেমে যাচ্ছে গালে।

ফর্সা ত্বকের ওপর ঠান্ডা বৃষ্টির ছোঁয়া, আর শীতের কামড়ে নাকটা লাল হয়ে আছে।

কয়েক মুহুর্তের জন্য নুজুর মনে হলে সে বুঝি স্বপ্ন দেখছে। এইদিক ওইদিক তাঁকিয়ে বুঝার চেস্টা করছে। ততক্ষণে নাজওয়ান ও কাছাকাছি চলে এসেছে। নাজওয়ান সামনে আসতেই নুজু উঠে দাড়ায়।আর কিছু বলতে না দিয়েই সরাসরি হামলে পড়ে নাজওয়ানের বুকে। নাজওয়ান ও কোনো কিছু না ভেবে আঁকড়ে ধরে রাখে তাঁর চেরি কে।

ঝুম বৃষ্টির মধ্যে দুজন মানুষ তাঁদের আকাশ সমান ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ করছে আলিঙ্গনের মাধ্যমে । কেউ কিছু বলছে না। নীরবতা ঠেলে নুজু যখনই কিছু বলতে যাবে নাজওয়ান সাথে সাথে নুজুর ঠোঁটে নিজের আঙ্গুল ঠেকিয়ে চুপ করতে বলে। নুজুর শরীর বরফের মতো ঠান্ডা হয়ে আছে সেটা এতক্ষণ নুজু কে জড়িয়ে ধরে রেখে নাজওয়ান বুঝতে পারে। আলতো করে নুজুর ভেজা বেবি হেয়ার গুলি কানের পেছনে দেয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করতে থাকে নাজওয়ান। আর নেশাতুর কণ্ঠে বলে উঠে " এখনই কোনো ক্লথ স্টোরে গিয়ে আমাদের কাপড় বদলাতে হবে না হলে দুজনেই অসুস্থ হয়ে পড়বো।"

নাজওয়ানের কথায় ঘোর লেগে যায় নুজুর আর শক্ত করে শার্ট খামচিয়ে ধরে রাখে।

ঠিক কতক্ষণ এইভাবে ছিল তাঁরা কেউই জানে না কিন্তু হঠাৎ নুজুর শরির অনবরত কাপতে শুরু করে ঠাণ্ডার কারণে ঠিক তখনি নীরবতা ভেঙ্গে নাজওয়ান বলে উঠে ঐ পাশে একটা" Uniqlo" দেখা যাচ্ছে চলো সেইখানে যাওয়া যাক।

নাজওয়ান নিজেই পছন্দ করে ২ টা সেম T Shirt ar Pant নিয়ে বিলিং সেশনে গিয়ে মিল মিটিয়ে সেইখান থেকে ছোট সাইজের গুলি নুজু কে দিয়ে চেঞ্জিং রুমে পাঠিয়ে দেয়।আর সাথে নিজে ও চেঞ্জ করে নেয়।যেহুতু ২ জনের পোশাক ই নাজওয়ান চুজ করেছে তাই নুজু জানতো না যে এক ই রকম পোশাক নিয়েছে দুজনের জন্য।বের হয়েই নাজওয়ান কে খুঁজতে গিয়ে নাজওয়ানের পাশ দিয়েই চলে যেতে নেয় আর নাজওয়ান বলে উঠে " এই তুমি কি আমাকে কখনই দেখতে পাও না?"আমি কি অদৃশ্য কিছু?

নুজু ঘুরে তাঁকিয়ে দেখে সেম ড্রেসে নাজওয়ান ও দাঁড়িয়ে আছে।
নুজু কে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে নাজওয়ান বলে উঠে " কেমন লাগছে বলো তো? একদম Twin,Twin🖤

এই মুহুর্তে নাজওয়ান কে নুজুর কাছে একদম ম্যাজিশিয়ান মনে হয়। এতো কিছু হয়ে গেলো অথচ এই মানুষ টা কিভাবে এত স্বাভাবিক ভাবে সব কিছু গুছিয়ে নিচ্ছে।আর সাথে নুজুকে ও স্বাভাবিক করার ট্রাই করছে। হাসানোর ট্রাই করছে। নাজওয়ান নুজু কে এক হাত দিয়ে ধরে আয়নার সামনে নিয়ে গিয়ে নিজের ফোন টা বের করে একটা ছবি তুলে নেয় তাঁদের যেইখানে ফোনের কারণে কারোর ফেস ই ঠিক মতো বুঝা যাচ্ছে না।অন্য সময় হলে নুজু কিছু টা বাধা দিতো।তবে আজ দিচ্ছে না নুজুর কাছে এখন সবচেয়ে কাছের মানুষ নাজওয়ান কেই লাগছে।

" এখন চলো আগে খেতে হবে কিছু"
আপনি এইখানে কিভাবে এলেন এতো তারাতারি?

" আমি এইখানেই ছিলাম,ঠিক করে এসেছিলাম তোমাকে নিয়েই ওসাকা ফিরবো। সেদিন তো গেলে না,তাই তোমার কথা মতো আজ কে ফিরতে চাইসিলাম যেহুতু তুমি ও যাবে। কিন্তু শেষে গিয়ে তোমার মা যেই কাজ টা করতে নিলো। আচ্ছা নোজোমি তুমি একবার ও বুঝতে পারো নি উনি এমন কিছু করবে?"

" বুঝতে পারলে সেইদিন আপনাকে ফেরায় দিতাম না।" মাম্মা এমন কিছু করতে পারে আমি ভাবতে ও পারি নি। উনি ডোরামি কে ও অন্য জায়গায় পাঠিয়ে দিসে। এটা বলেই নুজুর মন কিছু টা খারাপ হয়ে যায়।"
নুজুর কথার পিঠে নাজওয়ান আর কিছু বলে না কারণ অলরেডি নুজুর মন খারাপ নাজওয়ানের কোনো কথায় নুজু আর কষ্ট পাক এইটা সে কোনোভাবেই চায় না। সেইখান থেকে সরাসরি চলে কিছু খেতে।

কনবিনি থেকে হালকা কিছু খেয়ে নাজওয়ান সবার আগে যায় হোটেলে চেক আউট করতে। তারপর ই অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটতে গিয়েই দেখে কোনো এক সমস্যার কারণে আজ কে কোনো বুলেট ট্রেন ই চলবে না আর নাজওয়ান চায় না নুজু আনকমফোর্টেবল ভাবে প্লেনে যাক।তাই ওরা ঠিক করে রাতের বাসে করে ওসাকা যাবে। যেহুতু এখন সন্ধ্যা ছুঁই ছুঁই তাই রাত ৯ টার বাসে যেতে ও প্রায় ঘন্টা তিনেক বাকি এই সময় টা নুজু কে একটু রেস্টে রাখা প্রয়োজন তাই নাজওয়ান হোটেলে আর একদিনের টাকা পেমেন্ট করে রাতে চেক আউটের কথা জানিয়ে দেয়।

" নোজোমি তুমি একটু ঘুমিয়ে নিবে রুমে গিয়ে এখন, আমি নিচে লবি তে বসে কিছু কাজ করবো। ল্যাপটপ টা নিয়ে রুম থেকে বের হতে হতে বলতে থাকে নাজওয়ান।

" আমার রেস্ট করা প্রয়োজন নেই শুধু শুধু আপনি আমার জন্য কেনো লবি তে গিয়ে বসে থাকবেন?"

" ও তাহলে আমাকে কি তুমি রুমে থাকতে বলছো? ঠোঁটে দুষ্ট একটা হাসি টেনে দুহাত নুজুর গলায় দিয়ে নাজওয়ান বলে উঠে।"

" এই না না আমি সেটা কখন বললাম,আমি তো জাস্ট...."

" থাক কিছু বলতে হবে না তোমার রেস্টের প্রয়োজন, রাতে বাসে কমফোর্টলি ঘুমাতে পারবে কি না জানি না তাই এখন একটু রেস্ট করে নাও,বলেই নুজুর কপালে আলতো করে একটা চুমু খায় নাজওয়ান।চোখ বন্ধ করে সমস্ত আদর টুকু অনুভব করে নুজু।"

লম্বা একটা সময় ধরে ঘুমিয়ে উঠে নুজু।আর ততক্ষণ নাজওয়ান ভার্সিটির কিছু কাজ লবি তে বসে সেরে নেয়।

প্রায় ৮:৩০ এর কাছাকাছি ওরা বাস স্ট্যান্ডে এসে পৌঁছায়। রাতের বাসে চলতে বরাবরই নুজুর ভালো লাগে।আর ঘুমিয়ে উঠার কারণে মন টাও বেশ ফুরফুরা তাছাড়া এইখানে আসার পরপরই নাজওয়ান কড়া করে এক কাপ কফি খাইয়েছে তাকে।সব কিছু মিলিয়ে সকালের ঘটনা ও প্রায় ভুলে বসেছে নুজু।এমন কি নিজের ফোন টা চার্জ করানোর কথা ও একবার মাথায় আসে নি।সব কিছু সেরে বাসে উঠে পড়ে ওরা।

ঠিক ৯ টার সময় বাস টোকিও স্টেশনের ইস্ট গেট দিয়ে রওনা হয়। বাসে বসেই নুজু নিজের জুতা গুলি খুলে বাসের স্লিপার পরে নেয়। নাজওয়ান বেশ অনেক্ষন ধরেই ফুরফুরে নুজু কে দেখছিলো।আর মনে মনে বলছিলো " এইভাবেই হাসি খুশি রাখতে চাই তোকে আমি সোনা" নুজু ঘুরে নাজওয়ানের দিকে তাকাতেই নাজওয়ান চোখ ফিরিয়ে নেয়।

হালকা হেঁসে নুজু বলে উঠে " লুকিয়ে লুকিয়ে দেখছিলেন যে"
" লুকিয়ে দেখা বারণ?"

" নিজের জিনিস লুকিয়ে দেখতে হয়"?

" তুমি আমার?"

নিজের কথার পিঠে প্রশ্নে নুজু নিজেই থতমত খেয়ে যায়....

" তুমি আমার নোজোমি?"

নুজু চুপ.....

যদি সত্যিই তাই হয়ে থাকে তাহলে আমার যেকোনো সিদ্ধান্তে আমার পাশে থাকবে তো?...

"হুম"......বলেই নাজওয়ানের একটা হাত নিজের দুহাতের ভাঁজে নিয়ে কাঁধে মাথা রাখে।

নুজু কে যতই দেখছে ততই মুগ্ধতা ছড়িয়ে যাচ্ছে নাজওয়ানের মধ্যে। পিনপন নীরবতা চলছে দুজনের মধ্যে। এর মাঝেই নুজু ঘুমে তলিয়ে পড়ে । নাজওয়ান ও সিটে হেলান দিয়ে চোঁখ বন্ধ করে রাখে।

বৃষ্টির ফোঁটা জানালার কাচে টুপটাপ শব্দ তুলছে। হঠাৎ করে বুকের ভেতরটা কেমন যেন অস্থির হয়ে উঠছে। নিজের মধ্যেই আস্তে আস্তে বিড়বিড় করে বলতে লাগে

“না… আর অপেক্ষা করলে হবে না। নুজুকে আমি খুব শীঘ্রই নিজের করে নিতে হবে।

তার চোখে এক অদ্ভুত দৃঢ়তা জ্বলজ্বল করছে। যেন এই এক মুহূর্তেই সে নিজের ভবিষ্যৎ ঠিক করে ফেলল। নুজু তখনো গভীর ঘুমে মগ্ন। নাজওয়ান আলতো করে নুজুর গালে হাত ছুঁয়ে দেয়।আর নিজে ও ঘুমানোর চেষ্টা করে।

চলবে.......

21/09/2025

🎀

20/09/2025

সাইকেল চালানো শিখে আসা মাস্ট 😩

19/09/2025

#পর্ব ৩২(প্রথমাংশ)
#চেরি ফুল
#অদিতি

কেটে যায় ১ সপ্তাহ.....

এই এক সপ্তাহে নুজু অসংখ্য বার নাজওয়ান কে ফোন দিলে ও প্রতিবারের মতোই রিং বাজতে বাজতে কেটে গিয়েছে। মেয়ের ছটফটানি দেখে লিমা কিছুটা আঁচ করতে পারলে ও তেমন কিছু বলছে না কারণ সে তাঁর সিদ্ধান্তে অটল। নুজু কে কোনোভাবেই আর ওসাকা পড়তে যেতে দিবেন না।

এইদিকে এই এক সপ্তাহ নাজওয়ানের উপর দিয়ে রীতিমতো ঝড় গিয়েছে। সাধারণত জাপানে পড়তে আসা বিদেশি ছাত্র যেকোনো দুর্ঘটনায় মৃ*ত্যু ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে জাপানি পুলিশ আসে। তারা ঘটনাস্থল ঘিরে তদন্ত করে, তারপর অফিসিয়াল মৃত্যুসনদ ইস্যু করে।এরপর স্থানীয় সিটি অফিসে মৃত্যু নিবন্ধন সম্পন্ন হয়। এখান থেকেই শুরু হয় ভিন্নধর্মী এক যাত্রা—নিজ দেশে ফেরার শেষ যাত্রা।

পরিবারের স্বাভাবিক ইচ্ছা থাকে, প্রিয়জনের দেহ যেন দেশের মাটিতে ফেরে। কিন্তু এর জন্য খরচ হয় প্রচুর। যদি কফিনে পুরো দেহ পাঠাতে হয়, তবে কফিন, এয়ারটাইট বক্স, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও এয়ারলাইন্সের কার্গো চার্জ মিলে খরচ দাঁড়ায় প্রায় ১৫ থেকে ২৫ লাখ ইয়েন (বাংলাদেশি টাকায় ১০ থেকে ১৫ লাখের মতো)।অনেক পরিবার এত বড় খরচ বহন করতে পারে না।

কিন্তু প্রশ্ন হলো—কে এই খরচ বহন করবে? বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পরিবারের ওপরই এই দায়িত্ব পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণত সরাসরি খরচ দেয় না, যদিও কিছু বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে জরুরি তহবিল থেকে সামান্য সহায়তা করা হয়। দূতাবাস ও কনস্যুলেট প্রক্রিয়াগত সাহায্য করে যেমন কাগজপত্র, স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ কিন্তু আর্থিক সহায়তা দেয় না।

আসল ভরসা হলো বীমা। যদি ছাত্রটির লাইফ ইনস্যুরেন্স বা ট্রাভেল ইনস্যুরেন্স থাকে, তবে প্রায় পুরো খরচই বীমা কোম্পানি বহন করে। আর যদি না থাকে, তখন পরিবার, বন্ধু এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠীদের অনুদানের ওপর ভরসা করতে হয়। কিন্তু সবে মাত্র মাস ছয়েক ধরে জাপানে আসার কারণে জীবন বিমার ফান্ডে ও তেমন কোনো টাকা জমা ছিলো না রাহাতের। দেশ থেকে টাকা পয়সা দেয়ার কথা জনি ও কিছু বলছে না। মসজিদ থেকে কিছু টাকা দিয়েছে তবে সেটা ও খুব সামান্য।

রাহাতের বডি আজ ৩ দিন ধরে সংরক্ষিত অবস্থায় আছে। কিন্তু দেশে পাঠানোর মতো টাকা এখনো হয় নি।ওইদিকে প্রতিদিন জনির বাবা ফোন দিয়ে কান্নাকাটি করে। উনি চাচ্ছে উনার শেষ একটা জমি বিক্রি করে হলে ও রাহাতের লাশ দেশে নিতে । কিন্তু বিপত্তি ঘটে যখন জনি এইটার দ্বিমত করে বসে।

নাহিদ জনির রুমের পাশ দিয়েই যাচ্ছিলো কল যেহুতু লাউড স্পিকারে ছিলো তাই নাহিদ সবটাই শুনে ফেলে তবে অবাক হয় জনির কথা শুনে। জনির কথা ছিল কিছুটা এমন" আব্বা একটা লাশ নেয়ার জন্য আপনি জমি বেচার কথা বলতেছেন? আমার কি কোনো ভবিষ্যৎ নাই ?যে চলে গেছে তারে নিয়া পইরা থাকলে চলবে? এইখানে দাফন কইরা ৩/৪ লাখে মামলা ডিসমিস কইরা লাইলেই তো হয়।আপনি জমি বেচার কথা চিন্তা ও কইরেন না।

ঠিক এতটুকু শুনেই নাহিদ নাজওয়ানের রূমে যায় সবটা বলতে সব শুনে নাজওয়ানের কেমন যেনো সন্দেহ হয় জনির উপর। কিন্তু এখন সেইসব ভাবনা এক সাইটে রেখে চলে যায় মসজিদে। সেইখানে কমিটির সাথে কথা বলে তাঁদের অনুমতি নিয়ে শুক্রবার জুমহার নামাজের পর মসজিদের বাহিরে চাদা তুলার কথা চিন্তা করে। যতটুকু হয় হবে আর বাকি টুকু নিজ থেকে দেয়ার কথা চিন্তা করে।

যেইভাবা সেই কাজ তবে এইভাবে টাকা উঠানোর পর ও সব মিলিয়ে আরো লাখ ৬ এর মতো প্রয়োজন। আর পুরো টাকা টা নাজওয়ান নিজ থেকে দেয়ার কথা ভাবে।সব কিছু প্রস্তুতি নিয়ে বাসায় এসে দেখে জনি বসে আছে। নাজওয়ান কে আসতে দেখেই জনি জিজ্ঞেষ করে কিরে কিছু ব্যবস্থা করতে পারলি? জনির এমন কথায় নাহিদ কিছুটা রেগে গিয়ে বলে হ্যাঁ ভাইটা তো নাজওয়ানের তাই নাজওয়ান ই ব্যবস্থা করছে সব, তুই তোর বাপের জমি নিয়ে ভবিষ্যৎ কর।

আহা নাহিদ চুপ কর তো... কথার মাঝেই নাহিদ কে থামিয়ে দেয় নাজওয়ান আর জনির উদ্দেশ্য বলতে থাকে রাহাতের লাশ নিয়ে তুই যাবি দেশে নাকি কফিনে ভরে একাই পাঠায় দিবি ওঁকে?

আ... আমি কিভাবে? ভার্সিটি থেকে আমাকে ছুটি দিবে? আর টিকিট খরচ ও তো আছে। সত্যি বলতে আমার কাছে সেই টাকা টাও নেই।

নাহিদ রাগে কটমট করতে থাকে কারণ কিছুদিন আগেই ও জনির কাছে লাখ দুয়েক টাকা দেখেছে অথচ এখন বলতেছে টিকিটের টাকা ও নেই?

সেটা ও দিলাম... দেশ থেকে ঘুরে আয় তোর বাবার সাথে কথা বলেছি আমি, মানুষিক ভাবে যথেষ্ট ভেঙ্গে পড়ছেন উনি।এখন তোর তাঁদের পাশে থাকা টা অনেক জরুরী। বলেই নাজওয়ান নিজের রূমে চলে যায়।
দীর্ঘ ৫ দিনের সফর শেষ প্লেনে করে বুক ভরা সপ্ন নিয়ে জাপানে এসে এখন কফিনে করে জাপান থেকে শেষ যাত্রায় রওনা হয় রাহাত।লাশ এয়ারপোর্টের উদ্দ্যেশ্যে রওনা হওয়ার পর পর ই নাজওয়ান আর নাহিদ বাড়িতে চলে আসে।

টানা সপ্তাহ খানিকের মতো নির্ঘুম রাত, দুশ্চিন্তা, আর ভিতরে এক সূক্ষ্ম যন্ত্রণা নিয়ে পার করেছে নাজওয়ান। বিছানায় গা এলাতেই চোখে লেগে যায়।

চোখ কিছুটা লাগতেই চোখে ভাসতে থাকে রাহাতের সেই র*ক্তাত্ব মুখ টা। নাজওয়ান হাত দিয়ে রাহাতের মুখ টা ছুঁতে গেলেই সাথে সাথে মুখ টা হাওয়ায় মিলিয়ে যায় আর সেই জায়গায় নুজুর মুখ টা দেখা যায়।

সপ্নের মধ্যেই নাজওয়ান চিৎকার করে বলতে থাকে তোমার কিচ্ছু হয় নি চেরি ফুল,আমি তোমাকে কোনোভাবেই নিজের থেকে দুরে যেতে দিবো না। চোখ খুল সোনা, আই প্রমিজ আর বকা দিবো না, রুড হয়ে কথা ও বলবো না। প্লিজ চোখ খুল একটা বার কথা বল আমার সাথে। নুজু কে কারা যেনো নিয়ে যাচ্ছে আর নাহিদ নাজওয়ান কে ধরে রাখছে আর বলতেছে " ঐখান থেকে আর কেউ ফিরে আসে না নাজওয়ান, তোকে এখন নুজু কে ছাড়াই সারা জীবন থাকতে হবে।"

নোজোমি................. চিৎকার দিয়ে ধড়ফড়িয়ে ঘুম থেকে উঠে নাজওয়ান। শরীর কাপছে অনবরত। নাজওয়ানের চিৎকার শুনে নাহিদ ঘর থেকে দ্রুত বের হয়ে আসে রুমে ঢুকতেই দেখে মাথায় হাত দিয়ে এলোমেলো ভাবে বিছানার উপর বসে আছে নাজওয়ান।

" কিরে কি হয়েছে?"
"কিছু না"পানি দে
"খারাপ স্বপ্ন ছিলো"?
"হুম....

এর মাঝেই কলিং বেল বেজে উঠে নাহিদ উঠে গিয়ে দরজার কাছে যেতেই লুকিং গ্লাসে দেখে আছিয়া খাতুন দাঁড়িয়ে আছে সাথে হাতে একটা ব্যাগ। সাথে সাথে দরজা খুলতেই উনি বলতে থাকে বিরক্ত করলাম তোমাদের?

না না দিদুন কি বলছেন আসুন ভীতরে আসুন। ভিতরে নিয়ে বসাতেই নাজওয়ান কে রূমে গিয়ে তাঁর আসার খবর টা দেয়।

এলোমেলো অবস্থায়ই নাজওয়ান বাইরে চলে আসে।
আসসালামুয়ালাইকুম দিদুন।
ওয়ালাইকুম আসসালাম। ঘুমাচ্ছিলে?
হ্যাঁ ভেঙ্গে গেছে।
দুপুরে তো কিছু খাও নি তোমরা দেখেই মনে হচ্ছে। যাও ফ্রেশ হয়ে আসো। খেয়ে নাও।

কিছুক্ষন আগের স্বপ্ন আর এখন দিদুন কে এইখানে দেখে নাজওয়ান কিছুটা আবেগপ্রবণ হয়ে পরে আর আছিয়া খাতুনের পায়ের কাছে মাথা দিয়ে বসে পড়ে।

আছিয়া খাতুন বুঝতে পারে নাজওয়ানের মনের অবস্থা। মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলতে থাকে "ভাইজান ভালো আছে?
নাজওয়ান চুপ...
একটু থেমে আছিয়া খাতুন আবার বলতে থাকে থাক সেইসব কথা এই কয়দিন নুজু টার উপর দিয়ে ও বেশ ঝড় গেছে।আমি আমার মেয়ে কে চিনি। লিমা নানুপু কে হয়তো এইখানে আর আসতে দিবে না। যাওয়ার সময় তো এই ও বলে গেছিলো যে ওকে কানাডা ওর দাদা দাদীর কাছে পাঠায় দিবে।এইবার তুমিই দেখো তুমি কি করবে... এতোদিনে লিমার সামনে কথা বলার মতো একমাত্র তোমাকেই আমি দেখেছি।তুমি চাইলে অনেক কিছুই করতে পারো।এতোদিনে এইটা বুঝে গেছি নানুপু তুমি বলতে পাগল। নাজওয়ান মাথা উঠিয়ে আছিয়া খাতুনের দিকে তাকায়। নাকের ডগা লাল হয়ে আছে। চুল গুলি এলোমেলো।
"দিদুন নুজু আমাকে ভুল কেনো বুঝলো?"
" ওর বয়স কম ওর জায়গায় অন্য কেউ থাকলে ও হয়তো একটু আকটু প্রশ্ন মনে আসতই।"
" ও কি একটু ও ভরসা করতে পারলো না আমাকে?"
" ভরসা করে বলেই সেইদিন আসছিলো তোমার কাছে যাওয়ার আগে" তুমি নাকি ওকে চলে যেতে বলছো?"

নাজওয়ান এইবার দ্রুত উঠে দাড়ায় এইদিক সেইদিক কি যেনো একটা খুঁজতে থাকে। দ্রুত পায়ে হেঁটে নিজের রুমে গিয়ে বিছানায় পড়ে থাকা ফোন টা নিয়ে নুজু কে কল দেয়। কিন্তু এইবার ওই দিক থেকে নুজু আর কল উঠায় না কয়েকবার দেয়ার পর ও কল উঠায় না দেখে নাজওয়ান আবার ফিরে এসে আছিয়া খাতুনের কাছে তাঁর ফোন টা চেয়ে নিয়ে নুজু কে কল দেয়।

নানুপুর কল পেয়ে সাথে সাথে কল উঠায় নুজু। নুজু কে কথা
না বলতে দিয়ে নাজওয়ান বলতে থাকে" এই মেয়ে তোমাকে আমি কখন থেকে কল দিচ্ছি ধরছো না কেন? নানুপুর কল পেয়ে সাথে সাথে রিসিভ করে ফেলেছ তাই না?সমস্যা কি?

নাজওয়ানের ভয়েস শুনে সাথে সাথে নুজু কল কেটে দিয়ে ফোন বন্ধ করে বসে থাকে।
বিড়বিড় করে বলতে থাকে " এতদিন যখন আমি কল দিয়েছি তখন তো ধরেন নি এইবার দিতে থাকেন আপনিও আমি ও ধরবো না।"

আছিয়া খাতুন নাজওয়ানের এমন পায়চারি দেখে মিটিমিটি হাসছে। আছিয়া খাতুনের কাছে ফোন দিতে এসে নাজওয়ান অসহায় দৃষ্টিতে তাকায় তার দিকে। বসা থেকে উঠে উনি বলে উঠে" আমার নাতনি টা একটু অভিমানী, তোমাকেই সামলাতে হবে।" আজ কে আসি তোমাদের জামেলা জলদি মিটিয়ে ফেলো।অন্য আরও অনেক বিষয়ে কথা বলার আছে তোমার সাথে আমার, যেহুতু মন মেজাজ ভালো না এখন তাই সেইসব কথা উঠাতে চাচ্ছি না।"

নাজওয়ান শুধু মাথা নাড়ে।সত্যি বলতে তার ও এখন সেইসব বিষয় নিয়ে কথা বলতে ইচ্ছে করছে না।এমনেতেই মাঝ দিয়ে অনেক কিছু হয়ে যাচ্ছে। তার উপর নোজোমির এমন হঠাৎ করে ইগনোর টাও কোনোভাবে মেনে নিতে পারছে না সে।কিছু না ভেবেই দ্রুত ল্যাপটপ টা অন করে অনলাইনে টোকিও যাওয়ার একটা টিকিট বুক করে ফেলে আগামী কাল কের।

যেই ভাবা সেই কাজ সকালের প্রথম বুলেট ট্রেনে করে চলে রওনা হয় টোকিওর উদ্দ্যেশ্য। যেহেতু নুজুর বাসায় এর আগে ও আসা হয়েছে তাই সোজা বাসার নিচে গিয়ে দাঁড়ায়। কাঠ ফাটা রোদ এর মধ্যে ও ফুল হাতার ব্ল্যাক হুডি, মাস্ক চোঁখে কালো সানগ্লাস পরে ঠিক নুজুর বাসার অপজিতে দাঁড়ায়।সময় তখন সকাল ১০ টা অপেক্ষা করতে থাকে কখন লিমা আর ওয়াতানাবে বাসার থেকে বের হবে।কিন্তু নাজওয়ান কে অবাক করে দিয়ে কিছুক্ষন পড়ে নুজু ই বের হয়। তার হাতে একটা "পার্সিয়ান ক্যাট"।

এই গরমে ও নাজওয়ান নিজে কে এইভাবে ঢেকে রাখছে যে কেউ দেখলেই চিনতে অসুবিধা হবে। নাজওয়ান কে চিনতে না পেরে পাশ কেটে নুজু চলে যায়।তবে যাওয়ার সময় নাকে একটা পরিচিত পারফিউমের গন্ধ পায়। পিছনে ঘুরে তাকাতে যাবে ঠিক সেই সময়ে নাজওয়ান নুজুর হাতে থাকে বিড়াল টাকে ছো মেরে নিজের কাছে নিয়ে নেয় আর বিড়াল টাও নাজওয়ানের কোলে গিয়ে ঝুপটি মেরে বসে থাকে। খুব মনোযোগ দিয়ে বিড়াল টা কে দেখে নাজওয়ান। পার্সিয়ান ক্যাট বরাবরই কিউট হয় অনেক ।কিন্তু এই বিড়াল টা একটু বেশিই কিউট। ধবধবে সাদা গুলুমুলু একটা বিড়াল যার গলায় আবার গোলাপী ঘন্টা। আকষ্মিক এমন ঘটনায় নুজু কিছুটা ভয় পেয়ে যায়।
আর জাপানিজে বলতে থাকে( やめろ!それは俺の猫だ?)

" থামো! এটা আমার বিড়াল!"

মাস্কের ভিতর থেকে নাজওয়ান বিড়বিড় করে বলতে থাকে কিছু হইলেই জাপানীজ ছাড়বে।এই একটা জিনিস দিয়েই আমাকে দাবায় রাখতে চায় সবসময়।
নুজু আবারও বলতে থাকে(聞こえないですか?)
"শুনতে পাচ্ছ না"?

মাস্ক টা খুলে হুডির টুপি টা খুলে নুজুর দিকে না তাকিয়েই নাজওয়ান বলে উঠে" শুনতে পাচ্ছি বলো".....

চোখ বড় বড় করে নুজু বলে উঠে " আপনিইইইইইই......

চলবে.....

(কপি করা নিষেধ)

কোনো এক শীতের সকালে সূর্য আর আমি এক ফ্রেমে 🌤️
18/09/2025

কোনো এক শীতের সকালে সূর্য আর আমি এক ফ্রেমে 🌤️

18/09/2025

সারাক্ষন এইগুলি ই চলে ক্লাসে🙂

☘️☘️
17/09/2025

☘️☘️

🌆🌆
16/09/2025

🌆🌆

住所

Chiba-shi, Chiba

ウェブサイト

アラート

Adity’s Clipboardがニュースとプロモを投稿した時に最初に知って当社にメールを送信する最初の人になりましょう。あなたのメールアドレスはその他の目的には使用されず、いつでもサブスクリプションを解除することができます。

共有する

カテゴリー