
08/04/2025
১২,৫০০ বছর আগে পৃথিবীর বুকে শেষ ডায়ারউল্ফটির পদচিহ্ন মুছে গিয়েছিল। বরফ যুগের সেই পরাক্রমশালী শিকারীরা ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই পেয়েছিল শুধু—যতদিন না গেম অফ থ্রোন্স এর "খালেসি" আর "গ্রে উইন্ড" আমাদের কল্পনায় তাদের ফিরিয়ে আনে। কিন্তু আজ? বিজ্ঞানের যাদুকরী ছোঁয়ায় তিনটি ডায়ারউল্ফ আবারও নিঃশ্বাস নিচ্ছে, তাদের থাবা ঠুকরাচ্ছে বাস্তবতার মাটিতে।
প্রথমে ধরা যাক, ডায়ারউল্ফের "ফিরে আসা" আসলে কী। বিজ্ঞানীরা পুরোদস্তুর বিলুপ্ত প্রজাতিকে ফিরিয়ে আনেননি—বরং আধুনিক গ্রে উল্ফের দেহে ডায়ারউল্ফের জিনগত বৈশিষ্ট্য বসিয়ে এক ধরনের "হাইব্রিড" তৈরি করেছেন। প্রাচীন হিমায়িত নমুনা থেকে ডিএনএ সিকোয়েন্সিং করে তারা শনাক্ত করেছেন শতাধিক জিন যেগুলো ডায়ারউল্ফকে বিশালাকার, মাংসাশী, এবং পুরু লোমযুক্ত করত। ক্রিস্পার জিন এডিটিং প্রযুক্তি দিয়ে গ্রে উল্ফের ভ্রূণে এই জিনগুলো প্রবেশ করানো হয়েছে। ফলাফল? তিনটি শাবক—যাদের একটির নাম মার্টিন সাহেবের ইচ্ছায় "খালেসি"।
এখানেই শুরু হয় বিতর্ক। প্যালিওজেনেটিসিস্টরা বলছেন, "এটা ডায়ারউল্ফের পুনর্জন্ম নয়, বরং এক ধরনের জিনেটিক কসমেটিক সার্জারি।" কারণ:
- ডায়ারউল্ফ (Aenocyon dirus) এবং গ্রে উল্ফ (Canis lupus) সম্পূর্ণ আলাদা জেনাসের প্রাণী।
- ডিএনএর পাশাপাশি এপিজেনেটিক্স (জিনের এক্সপ্রেশন প্যাটার্ন) পুনরুদ্ধার অসম্ভব।
- আচরণ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, এমনকি শব্দভেদী গর্জন—এসব কিছুই আসল ডায়ারউল্ফের মতো হবে না।
তবুও, এই হাইব্রিডগুলো ডায়ারউল্ফের চেয়ে ৮০% মিল রাখবে বলে দাবি করছেন কলোসাল টিম।
"উড়ন্ত ডাইনোসর ফিরে এলে সকালের নাস্তায় আমাদেরই খেয়ে ফেলবে!" সত্যি বলতে, ডাইনোসর পুনরুজ্জীবন অসম্ভব—কারণ ৬.৫ কোটি বছর পুরনো ডিএনএ টিকে থাকেই না (এর হাফ-লাইফ মাত্র ৫২১ বছর)। কিন্তু ম্যামথ? সেটা সম্ভব। কলোসাল ইতিমধ্যেই সাইবেরিয়ান পারমাফ্রস্ট থেকে ম্যামথ ডিএনএ নিয়ে কাজ করছে। লক্ষ্য? উলি হাতি তৈরি করা যা টুন্ড্রায় বেঁচে থাকতে পারবে।
ডায়ারউল্ফের এই "ফিরে আসা" আসলে আমাদের বিজ্ঞানের সীমা আর সম্ভাবনাকে চিনিয়ে দেয়। হয়তো একদিন গেম অফ থ্রোন্স-এর ভক্তরা সত্যিই জন স্নোর মতো ডায়ারউল্ফ সঙ্গী নিয়ে উত্তরমেরু অভিযানে বের হবে। কিন্তু তার আগে, বিজ্ঞানীদের বলতে হবে: *"Winter is coming... but the dire wolves are already here."* ❄️🐺
*(সূত্র: CNN, কলোসাল বায়োসায়েন্স, এবং ব্যাঙের ছাতার নিচে বসে করা বিজ্ঞানী-গল্প)*