06/05/2025
ভারত সরকার দেশের কয়েকটি রাজ্যে ৭ই মে তারিখে নকল ব্ল্যাকআউট ও জরুরি মহড়া চালাতে চলেছে।
এর উদ্দেশ্য হল সাধারণ মানুষকে সম্ভাব্য আ' ক্র ম ণের জন্য মানসিক ও ব্যবহারিকভাবে প্রস্তুত করা। ৫৪ বছর পর এই প্রথমবার, এই ধরনের একটি বড় মহড়া হতে চলেছে, যেখানে 'ক্র্যাশ ব্ল্যাকআউট' ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্যগুলিকে।
ব্ল্যাকআউট মানে, নির্দিষ্ট সময়ে শহরের সমস্ত আলো নিভিয়ে ফেলা — যার মূল উদ্দেশ্য, শ' ত্রু প ক্ষের বিমান হামলা ঠেকানো এবং জনজীবনের ক্ষয়ক্ষতি কমানো।
২০০৩ সালের একটি সরকারি দলিল তথা নথিতে (General Principles of Civil Defence in India) বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, কীভাবে ব্ল্যাকআউট কার্যকর করতে হবে এবং কী কী নিয়ম মেনে চলতে হবে এই সময়ে।
সন্দেহ নেই এ ব্যাপারে ব্যাপক কৌতূহল তৈরি হয়েছে দেশ জুড়ে। আগে জেনে নেওয়া যাক, কেন ব্ল্যাকআউটের প্রয়োজন হয়?
ব্ল্যাকআউট মূলত শ' ত্রু বিমানচালকদের বিভ্রান্ত করার কৌশল। সরকারি ওই নথিতে বলা হয়েছে, “যদি কোনও এলাকা সম্পূর্ণ অন্ধকার থাকে, তাহলে পাইলটের মানসিক উদ্বেগ বেড়ে যায় এবং টার্গেট নির্ধারণ করা কঠিন হয়।” এই কারণে ব্ল্যাকআউটের সময়ে এমনভাবে আলো নিয়ন্ত্রণ করতে বলা হয়েছে, যাতে ৫,০০০ ফুট উচ্চতা থেকে কোনও আলো দৃশ্যমান না হয়।
ব্ল্যাকআউটের নিয়ম অনুযায়ী, স্ট্রিট লাইট, কারখানার আলো এমনকি যানবাহনের হেডলাইটও নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। বড় শহরের বাজার এলাকায় আলোকিত বিজ্ঞাপন একেবারে নিষিদ্ধ। তবে নথিতে বলা হয়েছে, সম্পূর্ণ অন্ধকারের পরিবর্তে নিয়ন্ত্রিত আলো ব্যবহার করা যেতে পারে, যাতে জনজীবন একেবারে স্তব্ধ না হয়ে পড়ে।
ব্ল্যাক আউটের সময়ে কী কী নিষিদ্ধ, কী কী অনুমোদিত?
ব্ল্যাকআউট চলাকালীন, কোনও বাড়িতে এমনভাবে আলো ব্যবহার করা যাবে না, যাতে সেটি বাইরে থেকে দেখা যায় বা উজ্জ্বলতা ছড়ায়। বাড়ির বাইরের অংশে কোনও আলো জ্বালানো যাবে না। রাস্তায় আলো থাকলেও, সেটি এমনভাবে দিতে হবে যাতে তা কেবল নিচের দিকে পড়ে এবং ২৫ ওয়াট বাল্বের আলোর চেয়ে বেশি উজ্জ্বল না হয়।
যানবাহনের ক্ষেত্রে বিশেষ নিয়ম
গাড়ি এবং অন্যান্য যানবাহনের আলো ঢেকে রাখতে হবে। দুটি পদ্ধতির কথা বলা হয়েছে সরকারি নথিতে। এক, কাঁচের ওপর বাদামি কাগজ চাপিয়ে দেওয়া, দুই- কাগজের ডিস্ক দিয়ে হেডলাইট ঢেকে ছোট একটি সরু ফাঁক রাখা। এমনকি হাতের টর্চ পর্যন্ত কাগজে মুড়ে রাখতে হবে, যাতে অতিরিক্ত আলো না বেরোয়।
বিমান হা' ম লার সতর্কবার্তা কেমন?
আকাশপথে শ' ত্রুপক্ষের গতিবিধি নজরে রাখে বায়ুসেনা। সন্দেহজনক বিমান চিহ্নিত হলেই তা জানানো হয় সিভিল ডিফেন্স কন্ট্রোল সেন্টারে, সেখান থেকে সংশ্লিষ্ট শহর বা এলাকার প্রশাসনকে অবহিত করা হয় এবং শুরু হয় গ্রাউন্ড অ্যাকশন।
এই গোটা প্রক্রিয়ার উদ্দেশ্য একটাই — যুদ্ধকালীন বাস্তবতার মুখোমুখি হওয়ার আগে জনসচেতনতা ও প্রস্তুতি। সরকারি সূত্রে বলা হচ্ছে, বুধবারের মহড়া নিছক অনুশীলন নয়, বরং একটি কার্যকর রণনীতি, যা নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার প্রয়াস।
সতর্ক থাকুন, সচেতন থাকুন। এটি শুধুমাত্র মহড়া, আ' ত ঙ্কিত হবেন না বরং শেখার সুযোগ হিসেবে নিন!