
30/07/2025
#দিবারাত্রি
রহস্যময় রাত পেরিয়ে নতুন সকালের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই সারা দেশকে গ্রাস করলো এক ভয়াবহ আতঙ্ক। বিভিন্ন সংবাদ চ্যানেলগুলোর ব্রেকিং নিউজে তখন একটাই খবর - বিজনেসম্যান আনসারের নৃশংস হত্যাকাণ্ড। তার নিজ বাড়িতে পাওয়া গেছে আনসারের নিথর দেহ, আর সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর বিষয় হলো, তার গায়ে চাকু দিয়ে স্পষ্ট করে লেখা রয়েছে 'Lady Killer RK'।
এই একটি নাম, 'Lady Killer RK', যেন সারা দেশে এক অজানা ভয়ের শীতল স্রোত বইয়ে দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে চায়ের দোকান পর্যন্ত, সর্বত্রই এখন এই নাম আর আনসারের হত্যাকাণ্ড নিয়ে আলোচনা। কে এই 'Lady Killer RK'? কেন সে বিজনেসম্যান আনসারকে হত্যা করলো এবং তার গায়ে এমন রহস্যময় বার্তা লিখলো? এসব প্রশ্নই এখন সারা দেশের মানুষকে অস্থির করে তুলেছে। জনমনে আতঙ্ক এতটাই তীব্র যে, প্রশাসনকেও এর মোকাবিলায় হিমশিম খেতে হচ্ছে। সবার মনে একটাই প্রশ্ন, পরবর্তী শিকার কে? আর কবে এই 'Lady Killer RK' ধরা পড়বে?
রাশেদ খানম টিভি নিউজের দিকে তাকিয়ে, হতাশায় মাথা নাড়ছেন।
রাশেদ :- "বিশ্বাস করতে পারছো আম্মু ? 'Lady Killer RK' আবারও আঘাত হেনেছে! আনসারের মতো একজন হাই-প্রোফাইল বিজনেসম্যানকে এভাবে খুন করা হলো, আর খুনিকে ধরার কোনো লক্ষণই নেই। এই মেয়েটা যেন একটা অদৃশ্য শক্তি! পুরো শহর ভয়ে কাঁপছে।"
রাত্রি ঠোঁটের কোণে এক রহস্যময় হাসি, যেন মনের গভীরে এক গোপন সন্তুষ্টি।
রাত্রি :- হ্যাঁ বাবা, আমিও দেখছি। ব্যাপারটা সত্যিই উদ্বেগজনক। কিন্তু একটা কথা ভাবো, যারা মারা যাচ্ছে, তারা কি আসলেই নিরীহ ছিল? আনসার, বা এর আগের যে শিকারগুলো... তারা প্রত্যেকেই তো সমাজের অন্ধকার জগতের প্রতিনিধি ছিল। হয়তো এই 'Lady Killer RK' তাদেরই শাস্তি দিচ্ছে, যারা আইনের চোখে ধুলো দিয়ে চলতো।"
রাশেদ :- "সেটা আমিও মানছি, আম্মু। আনসারের মতো লোকগুলো সমাজের ক্যান্সারের মতো ছিল। কিন্তু আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়াটা তো জঙ্গিবাদ! এটা তো সমাজে আরও বড় সমস্যা তৈরি করবে। একটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।"
রাত্রি আস্তে করে কফির কাপ নামিয়ে রেখে, বাবার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে।
রাত্রি :- বিশৃঙ্খল? বাবা, যখন নিরীহ মানুষের জীবন কেড়ে নেওয়া হয়, যখন মায়ের খুনিরা অবাধে ঘুরে বেড়ায়, তখন কি সমাজে কোনো শৃঙ্খলা থাকে? যেখানে আইনের হাত ছোট হয়ে যায়, সেখানে হয়তো এমন কাউকে প্রয়োজন হয়, যে এই কালো শক্তিগুলোর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে। এই 'Lady Killer RK' হয়তো সেই সব অন্ধকারের মুখোশ খুলে দিচ্ছে, যারা দিনের আলোয় সাধু সাজার অভিনয় করে। সে হয়তো দেখাচ্ছে, ক্ষমতা যতই থাকুক না কেন, পাপের ফল ভোগ করতেই হবে।"
রাশেদ :- "তুই কি বলতে চাইছিস, এই 'Lady Killer RK' যা করছে, তা ঠিক? এক ধরনের প্রতিশোধমূলক বিচার?"
রাত্রি কণ্ঠস্বরে এক দৃঢ়তা, যা রাশেদ খানমকে ভাবিয়ে তোলে।
রাত্রি :- "ঠিক-বেঠিকের সীমানাটা বাবা অনেক সময় খুব ঝাপসা হয়ে যায়, যখন বিচার পাওয়া যায় না। আমি জানি না কে এই 'RK', তবে যদি সে সত্যিই আমার মায়ের মতো নিরীহ মানুষের খুনিদের শাস্তি দেয়, তাহলে আমি বলব, সে তার মতো করেই সঠিক কাজ করছে। হয়তো এই 'Lady Killer RK' এই সিস্টেমের ব্যর্থতারই একটা প্রতিফলন, যা বলছে, এবার আর কোনো অপরাধী পার পাবে না।"
রাশেদ :- "আমি জানি না এর শেষটা কী হবে, রাত্রি। তবে এটা নিশ্চিত, এই খেলাটা ভয়ঙ্কর।"
রাত্রি মনে মনে ভাবে,,,, কারঙ তার চোখে প্রতিশোধের আগুন ""হ্যাঁ বাবা, ভয়ঙ্কর। কিন্তু এই খেলাটা আমাকেই শেষ করতে হবে। মা-কে যারা কেড়ে নিয়েছে, তাদের শেষ আমি দেখেই ছাড়ব।""" রাত্রি বাবার কাঁধে হাত রেখে, শান্ত স্বরে বলে
রাত্রি :- "বাবা, প্লিজ আর চিন্তা করো না। এই সব নিয়ে পরে ভাবা যাবে। এখন চলো, আপুনির কোর্ট ম্যারেজের পর পার্টির জন্য রেডি হতে হবে। আপুনি আর আরেফিন ভাইয়া অপেক্ষা করছে। তুমি ফ্রেশ হয়ে আসো, আমি সব দেখছি।"
রাশেদ :- "ঠিক আছে মা। তোর আপুনির খুশির দিনে এসব চিন্তা করে মন খারাপ করতে চাই না। আমি আসছি।" [ গভীর দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে ]
রাশেদ খানম ধীর পায়ে কক্ষ ত্যাগ করেন। রাত্রি বাবার চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে কিছুক্ষণ, , এর কিছু মূহুর্তের পর তার চোখে জ্বলে ওঠে প্রতিশোধের আগুন"""তোমরা যারা ভেবেছ পার পেয়ে যাবে, তোমরা যারা মাকে কেড়ে নিয়েছ, তোমাদের প্রত্যেকের দিন গোনা শুরু হয়ে গেছে। সবে তো শুধু শুরু এরপর তো আরো ভয়ানক হতে চলেছে। তোমরা সবাই হচ্ছো 'Lady Killer RK'-এর হাতের পুতুল। একের পর এক তোমাদের মুখোশ খুলে দেব, তোমাদের সাম্রাজ্য গুঁড়িয়ে দেব। তোমাদের প্রত্যেকের চেহারা আমার মনে আছে , আর তোমাদের পরিণতিও লেখা হয়ে গেছে। এবার পালা আমার। এই খেলা আমি শেষ করব।"
সারাদিন বোনের ছোট্ট করে আয়োজন করা বিয়ের পিছনে ছুটতে ছুটতে কখন যে বিকাল হয়ে গেছে বুঝতে পারেনি। তাঁর মনে পড়লো কিছুক্ষণ পরে তো আপুনিকে বিয়ের জন্য কাজী অফিসে নিয়ে যাওয়া হবে। হঠাৎ তার বুকের ভিতর মোচড় দিয়ে উঠল মনে পড়লো আজকে তো তার আসার কথা।
সন্ধ্যা থেকে শুরু হলো গেস্টদের আনাগোনা। আরেফিন একটা ওফ হোয়াইট কালারের সুট পরেছে,, হাতে ঘড়ি চুলগুলো কোইফ স্টাইলে সেট করা।অন্যদিকে রাতে সাজে ছিল এক স্নিগ্ধ কমনীয়তা। তার পরনে ছিল একটি সিম্পল গাউন, যা কোনো জাঁকজমক ছাড়াই তার স্বাভাবিক সৌন্দর্যকে ফুটিয়ে তুলেছিল। গাউনের মার্জিত নকশা আর রঙ তার ব্যক্তিত্বের সঙ্গে পুরোপুরি মানানসই ছিল।
তার মুখে ছিল সিম্পল মেকআপ, যা কৃত্রিমতা এড়িয়ে তার প্রাকৃতিক লাবণ্যকেই প্রাধান্য দিয়েছিল। হালকা ফাউন্ডেশন, চোখে কাজলের নরম রেখা, আর ঠোঁটে ন্যুড বা সফট পিঙ্ক লিপস্টিক – এই ছিল তার সাজের উপকরণ। এই সাজে রাত আরও বেশি কমনীয় ও আকর্ষণীয় লাগছিল, যা প্রমাণ করে যে, সৌন্দর্য সবসময় সরলতার মাঝেই উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।
Will Continue..... 🥰🥰🥰