Marufa's Tangle Art

  • Home
  • Marufa's Tangle Art

Marufa's Tangle Art Contact information, map and directions, contact form, opening hours, services, ratings, photos, videos and announcements from Marufa's Tangle Art, Digital creator, .

21/08/2024

একদেশে এক টুনি পাখি ছিল। টুনি জন্ম নেওয়ার পরপরই টুনির বাবা পালিয়ে চলে গেল আরেকদেশের একটি অপরূপ পাখির সাথে।
টুনির মা একদিক দিয়ে অসুস্থ অপরদিকে ঝড়ের তান্ডবে মেহগনি ডাল আর রয়নার ডালের দুর্বল বাসাটা ভেংগে গেল।
টুনির মা ঝড়ের মাঝে টুনিপাখিকে তার পাখা দিয়ে ঝাপটে ধরে রেখেছে। সারা রাত ঝড় তুফান হওয়ার পর সকালে চিকচিকে রৌদ্রের আলোতে যখন চোখ খুললো টুনি নিজেকে একটা গর্তের পাশে আবিষ্কার করলো।
সেই ঝড় বন্যার পর থেকে টুনি তার মা কে আর খুজে পেল না। গর্তটা ছিল একটা মাছরাঙার। অসহায় বাচ্চা টুনিকে দেখে মাছরাঙা টুনিকে নিজ বাসায় রেখে লালনপালন শুরু করলো। কিন্তু টুনির ভাগ্যটা ভাল না। মাছরাঙার বউয়ের ছনছনানিতে টুনি টিকতে পারলো না এই বাসায়। জন্ম নেওয়ার সাত দিনের মাথায় নিজেকে খুব নিঃস্ব লাগলো টুনির। জন্ম পরিচয়হীন বলে যখন মাছরাঙার বঊ টুনিকে বেধম গালাগাল করে তখন টুনির খুব লাগে, ফেটে যায়।
টুনি সবেমাত্র উড়তে শিখেছে। নিজে কিছু করে বাঁচবে বলে টুনি মাছরাঙার বাসা থেকে পালিয়ে আসলো। একদিন, দুইদিন, তিনদিন টুনি খাবার পাচ্ছে না কোথাও। ময়লা পানি খেয়ে আর কতদিন। রাতের আধারে তাই টুনি ডাস্টবিনের খাবার লুকিয়ে খায়। টুনি অসহায় হতে পারে কিন্তু আত্মসম্মানবোধ আছে।
ধীরে ধীরে টুনি বড় হচ্ছে কিন্তু এইভাবে কতকাল। টুনি ভাবলো সে লিখাপড়া শিখবে। কিন্তু স্কুলেও তো টাকা লাগে। সে ভাবলো পাখিদের স্কুলের সামনেই একটা ঝালমুড়ির দোকান দিবে। কিন্তু তাতেও ৫০০ টাকা লাগবে। টুনি এইবার অন্যান্য পাখিদের বাসা বানানোর কাজ শুরু করলো। দিন ভর ঠোটে করে খড়কুটা আর শুকনো ডাল দিয়ে বাসা বানিয়ে দিতে পারলে প্রতি বাসায় ৫০ টাকা পাবে।
এইভাবে ৫০০ টাকা জমিয়ে ফেললো টুনি। স্কুলে ভর্তি গেলে স্কুলের হেডমাস্টার চাতক পাখি টুনিকে ভর্তি করে না ওর বাবা মা নেই বলে।
সহকারী শিক্ষকের পা পেচিয়ে টুনি কোনমতে ভর্তি হলো। কিন্তু কোন পাখিরা টুনির পাশে বসতো না। বরং কোকিল পাখি টুনিকে জারজ আর ঝালমুড়িওয়ালী বলে হাসি ঠাট্টা করতো। টুনি পিছনের বেঞ্চে বসে মনোযোগ দিয়ে পড়ালেখা করতো আর ঝালমুড়ি বিক্রি করে টাকা জমাতে লাগলো। পিএসসি পরীক্ষায় টুনি জিপিএ ৫ পেলো। তার লিখাপড়ায় আগ্রহ দেখে একটা মানবতার সংগঠন তাকে শহুরে পাখিদের স্কুলে নিয়ে আসলো। তারা শুধু টুনিকে ফ্রি বেতন করে দিবে বাকি খরচ টুনির বহন করতে হবে।
গ্রাম থেকে শহর পাখিরা একটু কেমন ভাবওয়ালা বেশিরভাগই সানগ্লাস পড়া। শহুরে পাখিদের বিশ্বাস করাও মুশকিল।
স্কুলের কাকাতুয়া ম্যাডামের বাসায় কাজ নিয়েছে টুনি। তারসাথেই স্কুলে যাওয়া আসা করবে আর বাকিসময় বাসায় পড়বে। কিন্তু কাকাতুয়া ম্যাডামের জামাইকে তার মোটেও ভাল লাগে নি। ৩ বছর কেটে গেল। বড় হচ্ছে টুনি পাখি। একদিন ম্যাডাম বাসায় না থাকায় ম্যাডামের জামাই টুনির সাথে অসভ্যতামি করতে আসলে তার মাথা ফাটিয়ে পালিয়ে যায় টুনি। কাকাতুয়া ম্যাডামও তার জামাইয়ের কথায় টুনিকে টিসি দিয়ে দেয়।

এই স্বার্থপর শহরে টুনি বড় একা। তার জমানো কিছু টাকা দিয়ে ভাত-মাংসের ব্যবসা শুরু করলো। নতুন আরেকটা স্কুলে ভর্তি হয়েছে টুনি। রাতে ভ্যানে করে ভাত নিয়ে বসতো শ্রমজীবী পাখিদের জন্যে। আর দিনে পড়ালেখা। পাশের বাসার টিয়া খালার মেশিনে কাপড় ও সেলাই করা শিখতো অবসর সময়ে। গার্মেন্টেসে কাজ করা মেয়ে পাখিদের সাথে একবাসায় থাকায় এখন আর কোন সমস্যা হচ্ছে না।
মাঝে মাঝে ভাত বিক্রী করার সময় কিছু নেশাখোর খেতে এসে আজেবাজে কথা শুনায় টুনিকে। কখনো বা হাত চেপে ধরে টানাটানি করে। মুখ বুঝে সব সহ্য করে টুনি পেটের দায়ে।
টুনি সাইন্স থেকে এখন মেট্রিক পাশ। কলেজে ভর্তি হলো টুনি কারিগরি শিক্ষা নিয়ে দ্রুত কিছু করতে চায় নিজেকে আরো বড় করে তুলতে হবে যে। ভাতের ব্যবসা বন্ধ। গত দুই-তিন বছরে প্রায় ৩০০০০ টাকা জমিয়েছে ভাত বেচে। এই টাকা দিয়ে ৫ টা সেলাই মেশিন কিনে ৪ টা ভাড়া দিল আর ১ টা নিজে চালাতো। আগের থেকে বেশ লাভ হচ্ছে টুনির।
বস্তিতে থাকে বলে টুনির কোন বন্ধু হয়ে উঠে নি। সবা পাখিরা যখন মাঠে খেলতো বান্ধবীদের সাথে আড্ডা দিতো টুনি তখন খাতায় ছক করতো কিভাবে বড় হওয়া যায়। একঝাক চড়ুইয়ের দল যখন আইফোন হাকিয়ে সেলফি তুলতো তখন টুনির হিংসে হতো না বা যখন সুন্দরী বাশঘুঘু তার বয়ফ্রেন্ডের হাত ধরে হাটতো তখন ছেলেরা পাত্তা দেয় না বলে টুনির কষ্ট হতো না। দোয়েলপাখি যখন দোয়েল ল্যাপটপ নিয়ে ক্যাম্পাসে ফ্রি ওয়াইফাই চালাতো তখন ও ল্যাপটপ নেই বলে টুনি আক্ষেপ করতো না। আক্ষেপ আর কষ্টে জর্জরিত হত যখন স্যুটবুটওয়ালা, সানগ্লাস ধারী বাবুই পাখির কাছে নোট চাইতে গেলে তাকে বলতো ' U bastard, stay away from me khet, বস্তি টস্তি কিভাবে এসে যে এই কলেজে ভর্তি হয়'
শুধু নীরবেই চোখের পানি ফেলে যায় টুনি।

সময় কেটে যাচ্ছে খুব দ্রুত। টুনি ডিপ্লোমা পাস করে টেক্সটাইলে ভর্তি হয় গার্মেন্টস শিল্প নিয়ে বিএসসি করতে থাকে। পাশাপাশি শপিং মলে ভিডিও ক্যাসেটের শপে পার্টটাইম কাজ করে টুনি। একটা তোতা পাখির বাচ্চাকে টিউশনি পড়ায়। সেলাই মেশিনের সংখ্যা ২০ টি হয়েছে।
প্রতি মাসে টুনির আয় এখন ২০ হাজার টাকা।
ভাল একটা বাসায় ও উঠেছে। টেক্সটাইল ভার্সিটির ক্যাম্পাসে দু-একটা টোনা উকিঝুকি ও মারে। কিন্তু টুনি এসবে মোটেও পাত্তা দেয় না।
অবশেষে টুনি টেক্সটাইল থেকে বিএসসি পাশ করে ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ে। এইবার তার যে কোন গার্মেন্টেসে ভাল পোস্টে চাকরী করার যোগ্য তা ভাবতেই খুশিতে আত্মহারা। বক পাখির ইন্ডাস্ট্রিতে ইন্টারভিউতে টুনি যায়। বস বক তাকে একাকী ইন্টার্ভিউ তে ডাকে। সার্টিফিকেট ও যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও বকের সাথে 'one night stand' এর শর্তে চাকরী দিবে বলে আশা দেয়। হঠাত প্রচন্ড রেগে যায় টুনি। জোড়াজুড়ি করতে গেলে প্রতিবাদী হয়ে যায় টুনি। বকের নামে পুলিশ ডাহুকের কাছে অভিযোগ দিলে ও কাজ হয় না। বরং কোন কোম্পানিতে জব পাচ্ছে না টুনি। বক এতই প্রভাবশালী সব কোম্পানীতে ব্যানড করে দিয়েছে টুনি পাখিকে।

টুনি আবার ভেংগে পড়ে। সার্টিফিকেট গুলো সাদা কাগজ মনে হয় তখন। পৃথিবীটা এত নিষ্ঠুর কেন? ভাবে টুনি। ভাবতে ভাবতে রাত গভীর হয়ে যায়। টুনি পাখি ভাবে এই দেহ-ই কি সব? একটা দেহের বিনিময়ে কত কিছুই না চাইলে পাওয়া যায়। কিন্তু আত্মসম্মানবোধ না মোটেই না। আমাকে শক্ত হতে হবে। আরো শক্ত। খুব শক্ত। আমি এই পৃথিবীকে দেখিয়ে দিতে চাই। নরপিশাচ পুরুষ গুলোকে বৃদ্ধাংগুল দেখিয়ে জেগে উঠতে চাই। নারী মানেই দেহ নয় নারীর আরেকটা জাগরণী রুপ আছে তা প্রমাণ করতে চাই।
এইবার টুনি পাখি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ১০০ সেলাই মেশিন কিনে নিজেই ছোটখাট রুম ভাড়া করে মিনি গার্মেন্টস দিল। তার গ্রাম থেকে সেই মাছরাঙার ছেলেকে এনে চাকরী দিল।
১ বছরেই ব্যাংকের সব টাকা পরিশোধ হয়ে গেলো। কাক পাখি অনেক বড় বিজনেসম্যান। তার সাথে ৭ দিন আগে থেকে এপয়েনম্যান্ট নিয়ে মিটিং করতে হলো। বিদেশে পোষাকশিল্পের সাথে হাত আছে কাক পাখির।
টুনির তৈরী পোষাক দেখে কাক সন্তুষ্ট হয়ে বিশাল অংকের রেডিমেড পোষাকের অর্ডার দিল।
টুনি পাখির শ্রম, বুদ্ধিমত্তা, সৃজনশীলতার পরিচয় তার নতুন ডিজাইনের পোষাক পশ্চিমা দেশগুলোয় ব্যাপক সাড়া পেলো।
আজ টুনি পাখির ১৩ টা গার্মেন্টস, ২ টা বাংলো বাগান বাড়ী, ৩ টা ফ্লাট, পাজেরো গাড়ী, আইফোন, ASUS ল্যাপটপ সব আছে। মনে আছে কোকিলের কথা? কোকিল আজকে টুনির কারখানার ২০ হাজার টাকার ইঞ্জিনিয়ার।
মনে আছে বাবুই পাখির কথা? টুনিকে বাস্টার্ড বলা মেয়েটা ডিভোর্স পেয়ে অসহায় টুনি তাকে তার কোম্পানির গ্রাফিক্স ডিজাইনিং এ চাকরী দিয়েছে।
মনে আছে বক ইন্ডাস্ট্রির কথা? বস বক এখন দাঁড়িয়ে টুনিকে ম্যাডাম বলে সম্মান করে।
টুনিকে এখন অনেক পাখি শিল্পপতির ছেলে বিয়ে করতে চায়। টুনি বারান্দায় দাঁড়িয়ে চাদের দিকে তাকিয়ে ভাবে আর কফিতে চুমুক দেয়। আবার ভাবে। কে আমি? কি আমার পরিচয়?
আমি কেন মেয়ে পাখি হলাম? যেই সমাজে মেয়েদের ভোগের পণ্য হিসেবে ভাবা হয় আমি সেখানে কেন টুনি পাখি হলাম?
চাদের মাঝে টুনি পাখির মায়ের চেহারা ভেসে উঠে আর বলে। টুনি তুই জন্ম নিয়েছিস সব মেয়ে পাখির আদর্শ হওয়ার জন্য। যে আত্মসম্মানবোধককে টিকিয়ে রেখে শ্রম, নিষ্ঠা, মেধা দিয়ে নিজেকে উচু করে তোলে। যে ছেলেদের দাসত্বের জন্য জন্ম নেই নি। তুই দেখিয়েছিস মেয়ে পাখিরাও পারে মুক্ত হয়ে আকশে উড়ে বেড়িয়ে রাজত্ব করতে। হিংস্র সমাজে চিল পাখির থাবা থাকবেই তবুও তুই মাথা নোয়াসনি তুই হে বীর নারী।

নারী তুমি অহংকারী, মমতাময়ী আবার বিদ্রোহী কবিতা,
হিংস্র পশুর নখের থাবায় আচড়ে যাওয়া মানবতা।
থেমে থাকো নি তবু জেগে উঠছে বেড়াজাল ভেংগে চুরে,
তাই তো নারী তোমায় সালাম জানাই দুই আংগুল উচু করে।

বিডি রায়হান

09/05/2024
নিজের ক্ষ'ত নিজেকেই সারাতে হয়!🖤
08/05/2024

নিজের ক্ষ'ত নিজেকেই সারাতে হয়!🖤

Half page mandala with lotus   ✨♥️🖤
15/10/2023

Half page mandala with lotus ✨♥️🖤

09/10/2023

Gift for me... from me ❤️

53rd Convocation of DU

Address


Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Marufa's Tangle Art posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Shortcuts

  • Address
  • Alerts
  • Claim ownership or report listing
  • Want your business to be the top-listed Media Company?

Share