12/09/2024
সম্প্রতি জন্মদিন উপলক্ষে আম্মু আর বেটার হাফ মিলে গিফট করেছিলো বাপ্পী খান ভাইয়ের বুনো সিরিজটি। নীচে কাহিনী সংক্ষেপ সহ আমার মতামত দিয়ে দিলাম
হিমঘুম:
কাহিনী সংক্ষেপ:
সমাজের উঁচু স্তরের প্রভাবশালী কিছু মানুষ একে একে মারা যাচ্ছে। দূর্ঘটনা, হত্যা না কি অন্য কোনো রহস্য? মৃত্যুর কারণ জানতে পেরে ফরেনসিক ইনচার্জ আদনান বিস্মিত। হোমিসাইডের ক্যাপ্টেন কায়সার জীবনে প্রথমবার টের পেল ভয় কাকে বলে। চোখের সামনে আততায়ী অদৃশ্য হয়ে গেল। মৃত্যুর নীল ছোবল এরপর কার দিকে ধেঁয়ে আসবে, সেটাও অজানা। সত্য? না কি পুরোটাই গুজব?
প্রাচীন কুসংস্কার যখন ঘুরে ফিরে আসে তদন্তে, তখন থমকে যেতেই হয়। রাজনীতি, লৌকিক বিশ্বাস আর নেশার রাজ্যের অন্তরালে লুকিয়ে আছে কোন সত্য? কোন অতীতের সুরে গর্জে প্রতিশোধের হুঙ্কার?
নিনাদ:
কাহিনী সংক্ষেপ:
ক্যাপ্টেন কায়সার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেল বন রক্ষক দলে। শান্ত সুন্দরবনে কোনো ঝামেলা নেই, নেই বিশৃঙ্খল বা অনৈতিক কাজ। পশু-পাখির দল দিব্যি ঘুরে বেরাচ্ছে চারপাশে। আসলেই কি তাই?
ডিপ ইকোলজির সদস্যরা ভাওয়াল গড়ে আক্রমনের শিকার, প্রাক্তন শিকারি সরওয়ার পাঠানের মনে শঙ্কা জাগে।
অতর্কিত হামলা-বোট বিস্ফোরণে হারিয়ে গেল কায়সার। প্রানী বিশারদ আদনান প্রেক্ষাপট হাজির, সঙ্গে রহস্যময় এক সঙ্গী, মনি মিয়া; বিচিত্র তার পেশা ও নেশা।
সিলেটের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের মাটির নিচে গোপন সুরঙ্গ। কী খেলা শুরু হয়েছে গোটা দেশজুড়ে?
রাঙামাটির দূর্গম অঞ্চলে ছুটল সবাই। আদিবাসী সর্দারের ছেলের ক্ষত-বিক্ষত দেহের কারণটা অদ্ভুত; এক শ্বেত-শুভ্র মায়াবী প্রানী! গর্জনে তার বজ্র নিনাদ! ভেসে আসছে শ্বাপদের হুংকার। পাহাড় থেকে নামছে বৃষ্টির ঢল। বিপর্যয় আঘাত হানল বলে.,,
এ অসম যুদ্ধে জেতা অসম্ভব।.. কখনও কখনও পুরনো শত্রুরাও যে বন্ধুরূপে ফিরে আসতে পারে।
ক্রান্তি:
কাহিনী সংক্ষেপ:
প্রাণঘাতী এক ভাইরাস আকস্মিকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। গুজব ভেবে কেউ পাত্তা দিল না, ভুলটা হলো এখানেই। মানুষ মরতে শুরু করল দেদারসে। যন্ত্রণাদায়ক আর বীভৎস এই মৃত্যুভয় ছড়িয়ে পড়ল দ্রুত, দেখা দিল বিশৃঙ্খলা। এই মৃত্যুভয়ের আড়ালে চলছে আরেক খেলা। নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে মরিয়া এক গোষ্ঠীর কাছে এত মানুষের মৃত্যু কেবলই সংখ্যা। ষড়যন্ত্রে জয়ী হতে এরা নির্মম, নিষ্ঠুর।
প্রাণঘাতী এই ভাইরাস প্রাকৃতিক নয়, কৃত্তিম-আর তা ছড়াতে ব্যবহার করা হয়েছে এক বিশেষ প্রজাতির প্রাণী! গবেষক আকবর খানের মৃত্যুটাও সন্দেহজনক। বিচ্ছিন্ন কিছু তথ্য মিলিয়ে ডিপ ইকোলজি অ্যান্ড স্নেক কনজারভেশন ফাউন্ডেশনের সদস্যরা মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে ছুটল বনে, সমাধানের সূত্র কি তবে সেখানেই?
মতামত:
গল্পের জাল ভালোই বুনেছেন এখানে লেখক। খেয়াল করলে কোন চরিত্র রিয়াল লাইফের কার ক্যারিকেচার সেইটাও ধরা খুব একটা কঠিন না। সেইসাথে রিয়াল লাইফ ইন্সিডেন্টের রেফারেন্স তো আছেই। যার ভেতরে একটা ব্যক্তিগত কারনে খুব বেশি নাড়া দিয়ে গেছিলো আমাকে। উপরন্তু বোনাস ছিলো প্রানীজগতের ডিটেইলস বর্ননা। সাথে লেখকের অন্যান্য সিরিজের রেফারেন্স তো আছেই। আর অনেকগুলো চরিত্র এখানে বাস্তব। নাম দিয়ে গুগল করলেই তাদের কীর্তির ডিটেইলস পেয়ে যাবেন। এছাড়া অনেক ঘটনাই নাম পরিবর্তন করা বাস্তব অভিজ্ঞতা
আর নেগেটিভ যদি বলতে হয় সেক্ষেত্রে বলবো পয়েন্ট অফ ভিউ চেঞ্জ গুলো বেশ চোখে লাগে। কাহিনীর খেই ধরতে কিছুটা সময় লাগে। গল্পের সুতোও কেটে যায় মাঝেমধ্যে এই কারনে। আর সেলফ-ইনসার্ট জিনিসতা আমার বরাবরই না-পছন্দের। সেই জিনিসটাও চোখে লেগেছে। যদিও সেগুলোর কিছু নাকি লেখকের বাস্তব অভিজ্ঞতা। বিশেষ করে নিনাদের একটি ঘটনা।
সব মিলিয়ে ৭.৫/১০ পাবার মত একটি ট্রিলজি এটি
ও আচ্ছা বইগুলো কিনেছিলাম বুক ভিলেজ থেকে। অসম্ভব আন্তরিক ওনারা।