22/05/2025
নির্বাচন কমিশন নয় বরং উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন জরুরী
সম্প্রতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সমর্থিত রাজনৈতিক দল 'এনসিপি' কর্তৃক বর্তমান নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবি জনমনে বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছে। গণঅভ্যুত্থানের চেতনাকে ধারণ করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ঐক্যমতের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন পেশার অভিজ্ঞ, দক্ষ, যোগ্য ও সৎ ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত বর্তমান নির্বাচন কমিশন সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে। দেশের মানুষের নিরবিচ্ছিন্ন সমর্থন নিয়ে নির্বাচন কমিশন যখন নিবিড়ভাবে নিজেদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে ঠিক তখনই একটি জনবিচ্ছিন্ন ও অনিবন্ধিত রাজনৈতিক দল থেকে কমিশন পুনর্গঠনের দাবি জনমনে প্রচন্ড ক্ষোভ ও আক্রোষের জন্ম দিয়েছে।
ফ্যাসিবাদী শাসন আমলে গঠিত বিভিন্ন নির্বাচন কমিশনের কীর্তিকাহিনী এ দেশের মানুষের কাছে অজানা নয়। বিনা ভোটের নির্বাচন, দিনের ভোট রাতে এমন কোন কুকীর্তি নাই যা তারা করেনি। কিন্তু 'এনসিপি' বর্তমান জনসমর্থিত নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের কথা বললেও বিগত ৪ টি নির্বাচন কমিশনের অপরাধমূলক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত কমিশনারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ বিষয়ে নিশ্চুপ থেকে নিজেদেরকে আরো হাস্যকর রূপে উপস্থাপন করেছে। কি উদ্দেশ্যে এবং কোন রহস্যজনক কারণে বর্তমান নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবি করা হচ্ছে- দেশের গণমানুষের কাছে তা এক বিরাট প্রশ্ন। বরং ফ্যাসিবাদের পতনের পর দেশের জনগণ যে স্বপ্ন, যে আশা ও আকাঙ্ক্ষা নিয়ে গণঅভ্যুত্থানত্তোর পরিস্থিতিতে ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে গঠিত সরকারকে সমর্থন দিয়েছিল; দিন দিন সেই চাওয়া-পাওয়া যেন ফিকে হয়ে আসছে। সরকারের বর্তমান উপদেষ্টাগনের নানাবিধ বিতর্কিত কর্মতৎপরতা নিয়ে যেমন জনমনে সন্দেহ তৈরি হয়েছে- ঠিক তেমনি কোন কোন উপদেষ্টার কাজের স্বচ্ছতা নিয়েও মানুষের মধ্যে নানা প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে।
ছাত্র-জনতা, জুলাই ঐক্য, ছাত্র সমন্বয়ক ও "বৈষম্য বিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরাম" সম্মিলিতভাবে দীর্ঘদিন যাবৎ আওয়ামী ফ্যাসিস্ট মুক্ত জনপ্রশাসনের দাবী জানিয়ে আসলেও কোন কোন উপদেষ্টা অনৈতিকভাবে লাভবান হয়ে ফ্যাসিস্ট দোসরদেরকে রক্ষা করার নানা অপকৌশল গ্রহণ করেছেন। কেউ কেউ নিরপেক্ষতা হারিয়ে একটি নব্য ঘোষিত রাজনৈতিক দলকে সমর্থন জোগাচ্ছেন। এমনকি মাননীয় উপদেষ্টাগণের অনেকের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রমাণিক তথ্যাদি বিভিন্ন গণমাধ্যমে নিয়মিতভাবে প্রকাশিত হচ্ছে। কিন্তু সরকারের শীর্ষ মহল থেকে তাদের বিষয়ে কোনো প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় জনমনে প্রচন্ড ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে। অবিলম্বে এসব উপদেষ্টাগণকে জবাবদিহিতার আওতায় এনে উপদেষ্টা পরিষদ থেকে তাদের অপাসারণ করা এখন সময়ের দাবী। অতএবঃ
'নির্বাচন কমিশন নয় বরং উপদেষ্টা পরিষদ পূনর্গঠনের দাবি জানাচ্ছি'।