জীবনের কিছু কথা - Jiboner Kisu Kotha

  • Home
  • জীবনের কিছু কথা - Jiboner Kisu Kotha

জীবনের কিছু কথা - Jiboner Kisu Kotha বিশিষ্ট মানুষের জীবনের কিছু কথা ও কিছু ভাবনা

23/07/2025

জীবনের কত ব্যস্ততা যে এক জায়গায় পাঁচ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকতে পারি না স্থির থাকতে পারিনা।

যা করি তা নিজ ইচ্ছাই করি না কোন কারণেই করতে হয়।

স্ত্রীর সৌখিনতা নিয়ে স্বামীর সাথে খুনসুটি। স্ত্রী: ওপেনিং ডে গুলোতে সকালে আমি আগে গোসলে যাই, তারপর যান "উনি" মানে আমার ক...
30/04/2025

স্ত্রীর সৌখিনতা নিয়ে স্বামীর সাথে খুনসুটি।
স্ত্রী: ওপেনিং ডে গুলোতে সকালে আমি আগে গোসলে যাই, তারপর যান "উনি" মানে আমার কর্তা আজ হঠাৎ বাথরুমের দরজা দিয়ে উঁকি মেরে জিজ্ঞেস করলেন,

"তুমি কোনওদিন সাবান মাখো না?"

আমি অবাক হয়ে -- 'মানে?'

উনি -- না, কোনোদিন সাবানটা ভিজা থাকে না, তাই...

আমি -- ঐ সাবানটা মাখি না। ওই গোলাপী মতো বোতল'টা আছে, ওইটা মাখি।

উনি আশ্চর্যান্বিত গলায় -- "ওটা শ্যাম্পু নয়?"

আমি -- 'না, ওটা বডিওয়াশ। তুমি কি শ্যাম্পু ভেবে মেখেছো?'

উনি কিঞ্চিৎ চিন্তিত হয়ে -- "ঠিক খেয়াল পড়ছে না, সাদা বোতল'টা শ্যাম্পু আর লাল'টা?"

আমি -- 'ওটা কণ্ডিশনার।'

কৌতুহলী উনি -"আর সবুজ, জেলি জেলি মতো, ওটা??"

আমি উত্তরে বলি -- 'ওটা ফেসওয়াশ।'

উনি আরও বেশি কৌতুহলী -- "তাহলে দানা দানা, খসখসে মতোটা, ওটা কি??"

আমি বিরক্ত হয়ে -- 'ওটা ফেস স্ক্রাবার।'

আমার উনি জবাব দেন -- "স্ক্রাবার তো টিউবের মতো'টায় লেখা।"

আমি হতাশ হয়ে -- 'ওটা বডি স্ক্রাবার!'

উনি কৈফিয়ত তলব করার ভঙ্গিতে -- "আর চ্যাপ্টা মত কৌটোটায়??"

আমি -- 'ওটা হেয়ার প্যাক।'

স্বামী জেরা করার সুরে -- "তাহলে এইটা (বাথরুমের দরজা দিয়ে হাত বাইরে বের করে)??"

আমি হাঁপিয়ে ওঠা গলায় -- 'হেয়ার সিরাম!'

অবাক উনি -- "কি রাম??"

আমি চেঁচিয়ে -- 'রাম নয় রে বাবা.....সিরাম, সিরআআআআম!!'

এবার উনি ঠাণ্ডা গলায় প্রশ্ন করেন -- "আর অয়েল-ইন-ক্রিম লেখা'টা কোথায় মাখো?"

এবার ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙা আমি চিৎকার করে উঠি --
'আমার যেখানে খুশি মাখি, রান্না করি ঐ তেল দিয়ে, হয়েছে? লাগবে তোমার?? গাড়িতে ঢালবে?? অ্যাঁ??
সক্কাল সক্কাল বাথরুমটা লণ্ডভণ্ড করছে লোকটা....আমি এবার পাগল হয়ে যাবো.....!!'

এবারে আমাকে উনি আস্বস্ত করার ভঙ্গিতে -- "আচ্ছা, আচ্ছা, বাদ দাও, আমারও মাথা গুলিয়ে গেছে।
বলছি, তাহলে সাবান'টা দিয়ে কিছুই করো না?
মানে কিছুই করো না আর কি??"

এরপর যদি এই জলের মতো সরল, ফুলের মতো কোমল মেয়েটা রেগে যায়.....তাহলে আমায় দোষ দিও না...

#𝑪𝒐𝒍𝒍𝒆𝒄𝒕𝒆𝒅

একটা ভালো সিনেমা দেখা ১০০ টা বই পড়ার সমান কিনা জানা নেই। তবে সিনেমার একটা অদ্ভুত শক্তি আছে। এটা আপনার মনকে চমৎকারভাবে ডা...
04/11/2024

একটা ভালো সিনেমা দেখা ১০০ টা বই পড়ার সমান কিনা জানা নেই। তবে সিনেমার একটা অদ্ভুত শক্তি আছে। এটা আপনার মনকে চমৎকারভাবে ডাইভার্ট করার ক্ষমতা রাখে। পুরোনো কোনো গভীর ক্ষতে প্রলেপ দিয়ে সারিয়ে দিতে পারে।

এই মুভিগুলো না দেখলে দেখে নিতে পারেন।

জীবনের বিতৃষ্ণাকে মানিয়ে নিতে দেখে নিতে পারেন নিচের মুভি গুলো :
- Its a wonderful life
- Shawshank Redemption
- Life is Beautiful

জীবনসঙ্গী নিয়ে ভাবনা চিন্তা করছেন?
- Midnight in Paris
- Mucise
- Vivah

এলোমেলো মনকে শান্ত করার রহস্য আবিস্কার করতে চান?
- তিতলী
- বাড়িওয়ালী
- অপরিচিত
- Raincoat

অপ্রাপ্তির হতাশায় খুব টায়ার্ড?
- Revenant
- Fall
- Survival Family

একটা প্রেম করে জীবনটা তুলাধুনা করতে চান?
- Dilwale Dulhaniya Le jayenge
- Mohabbatein
- Before Sunrise
- The Notebook

ফেলে আসা শৈশব, সোনালী অতীত মিস করছেন?
- 96
- Three Idiots
- Chichoree

কাউকে সান্ডে মান্ডে ক্লোজ করে নিজের উপর হওয়ার অন‍্যায়ের রিভেঞ্জ কেমনে নেয় দেখতে চান?
- No Mercy
- City of God
- Orphan (সাইকো থ্রিলার)

পার্সোনালিটি কী জিনিস বুঝতে চান?
- অগ্নীশ্বর

শিক্ষকতা পেশাটা ভাল লাগে?
- Dead Poet Society
- Madam Gita Rani
- Tare Zamin par

মানুষের কল্পনার অদ্ভুত জগৎ দেখতে চান?
- Apocalypto
- Perfume
- Avatar


যুদ্ধ বিদ্রোহ টানে খুব?
- Braveheart
- Troy

মানুষের অদ্ভুত ফ‍্যান্টাসি টাইম ট্রাভেল ভাল্লাগে?
- Casablanca
- Lagaan

ঝড় বৃষ্টির রাতে ভয়ের ফিল নিতে চান?
- Woh Kaun Thi

কার্টুন বা এনিমেশন ভাল লাগে?
- Coco
- Finding Nimo
- Up

ইসলাম কালচারের মুভি দেখতে মন চাই?
- Children of Heaven
- The messege
- Baren

ওয়ার্ল্ড ওয়ার ১/২ কি জিনিস বুঝতে চান?
- The Pianist
- Parl Harbour
- Down*fall

চমৎকার কিছু বাংলা সিনেমা দেখতে চান?
- সীমানা পেরিয়ে
- সূর্যকন্যা
- মেঘের অনেক রঙ
- আয়নাবাজি
- জীবন থেকে নেয়া
- পথের পাঁচালী

উল্লেখ করা এইগুলো বাদেও আরো কত কত মুভি যে আছে! যা কিনা এক জীবন কেবল সিনেমা দেখেই পার করে দেয়া যাবে হইতো।

20/06/2024

ধূমকেতুর যাত্রাঃ আজ(০৫/০৩/২০২৪) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। এটাকে পরীক্ষা না বলে ভর্তি যুদ্ধ বলা...
07/03/2024

ধূমকেতুর যাত্রাঃ
আজ(০৫/০৩/২০২৪) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। এটাকে পরীক্ষা না বলে ভর্তি যুদ্ধ বলা যেতে পারে। প্রায় ৭০০ ছাত্র ছাত্রী আজকে ধুমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনে ঢাকা থেকে এসে বিকেল সাড়ে তিনটার ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন ।

রেল ব্রোকেনের জন্য ধুমকেতু এক্সপ্রেস ঢাকা থেকেই বিলম্বে রওনা হয়। সকাল ১১ টায় হিসেব করে দেখা গেল ট্রেনটি বিকেল ৩:০০ টা নাগাদ রাজশাহী পৌঁছবে। পরীক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে ট্রনটি অন্য ট্রেনকে বসিয়ে দিয়ে এগিয়ে আনছিলাম। ভাগ্য এতই খারাপ, লাহেড়ী মোহনপুর স্টেশনে এসে ধূমকেতুর ইঞ্জিন ফেইল করে, চাকা ঘুরছে না । কি করা যায়, কি করা যায় পরীক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে শরৎনগরে বসা চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিন কেটে এনে ধুমকেতু আবার চালু করলাম।

হিসেবে করে দেখলাম ট্রেনটি বিকেল ৪ ঘটিকায় রাজশাহী পৌঁছবে, তখন পরীক্ষা শুরু হয়ে যাবে। মাননীয় ভিসি মহোদয়কে পরীক্ষার সময় পিছিনোর বিনীত অনুরোধ করলাম। তিনি আমাকে প্রায় ৪ বার ফোন করে ট্রেনের খবর নিলেন। ট্রেন সর্বোচ্চ অনুমোদিত গতিতে চলছে। দূশ্চিন্তা ছাড়ছে না। পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। উপায়ন্ত না দেখে আড়ানী স্টেশনের স্টপেজে ট্রেন না থামিয়ে থ্রু পাশ করলাম।

ঈশ্বরকে খুব একটা ডাকি না, পরীক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে জোড়ে জোড়ে ডাকা শুরু করলাম, একটু মানত ও করলাম। ঈশ্বর মনে হয় সদয় হলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে ট্রেন থামিয়ে দিলাম, তখন বিকেল ৩/৩৮ ঘটিকা। দৌড় দৌড় হলে ঢুকতে হবে ৪ টার মধ্যে। ভিসি মহোদয়কে বিনীত অনুরোধ করলাম ছেলে মেয়েদের হলে ঢোকার সুযোগ দেয়ার জন্য। তিনি কথা রাখলেন এবং রেলওয়ের সবাইকে ধন্যবাদ দিলেন।

ট্রেন পরিচালনায় পাকশী কন্ট্রোলে সার্বক্ষনিক ভাবে মনিটরিং করেন ডিআরএম(পাকশী)। এখন নিজেকে বেশ হালকা লাগছে।

সুচি কে লেখা রোহিঙ্গা শিশুর মর্মস্পর্শী চিঠি-----------------+-----------------প্রিয় অং সান সু চি,আপনি কি ভাল আছেন? হয়...
30/01/2024

সুচি কে লেখা রোহিঙ্গা শিশুর মর্মস্পর্শী চিঠি
-----------------+-----------------
প্রিয় অং সান সু চি,
আপনি কি ভাল আছেন? হয়তো ভাল। আবার না ও থাকতে পারেন। কারণ যতদূর জানি আপনার স্বভাব কিছুটা আমার মায়ের মতনই। আপনি দেখতেও আমার মায়ের মতনই কিছুটা। তাই আপনাকেই কিছু কথা বলতে চাই। যেহেতু মায়ের কথা খুব মনে পরছে এ মুহূর্তে। সে যেখানেই থাকুক, আল্লাহ ভাল রাখুন তাঁকে।
আচ্ছা, নিজের পরিচয় দেই একটু। আমার নাম জহির, বয়স ১২। বাবার নাম বসির উদ্দিন। মা তাহেরা। আমার আরও তিনটি ভাই বোন আছে। কিন্ত তারা আজ কে কোথায় আছে আমি তা জানিনা। আমাদের আপনারা রোহিঙ্গা বলে ডাকেন – মুসলিম রোহিঙ্গা, হিন্দু রোহিঙ্গা। আমাদের রাখাইন রাজ্যের গাঁয়ে আমরা ভালো ছিলাম কি মন্দ ছিলাম জানিনা, তবে আজকের চেয়ে অবশ্যই ভালো ছিলাম। আজ শুধু বেঁচে আছি, যদি একে বাঁচা বলে। এইটুকু বয়সে অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। আজ সে কথাই আপনাকে বলতে চাই। আরও বলতে চাই একটি স্বপ্নের কথা। আমার এখন একটাই স্বপ্ন। আর তা হল আপনার সাথে দেখা করা। দেখা হলে কিছু প্রশ্ন জিজ্ঞেস করব। এবং অবশ্যই তার উত্তর নিয়েই আমাকে ফিরতে হবে।
আমার বাবা ছিলেন জেলে। মাছ ধরে খুব অল্প রোজগারে আমরা প্রতিদিন খেতে আর পরতে পারতাম। আমাদের গাঁয়ে একটা স্কুল ছিল। সেখানে আমি প্রতিদিন পড়তে যেতাম। বইয়ের পাতার জগৎটা আমার কাছে অদ্ভুত, অপরিচিত তবে রঙ্গিন আর স্বপ্নের মতই মনে হত। কল্পনায় দেখতাম আমিও একদিন দেশের নাম বলবো, পতাকা আঁকবো আর গাইবো জাতীয় সংগীত। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গায়ের গণ্ডী ছাড়িয়ে যাবো রাজধানীতে। যদিও বইয়ের পাতায় যে দেশ, প্রকৃতি, গল্প, কবিতা, ইতিহাস লেখা ছিল তার সাথে আমাদের জীবনের কোন মিল ছিল না। আমি জানতাম না দেশ কী, পতাকা কী, সেনাবাহিনী কী। কিন্তু এ কদিনে এবং আজ জীবন আমাকে অনেক কিছুই শিখিয়েছে।
প্রথম কষ্টের দিন শুরু হল যেদিন আমার বাবা তার রক্তাক্ত আর ব্যান্ডেজ করা মাথা নিয়ে নদী থেকে ফিরে এলেন। কারণ আপনার সেনারা বলল নদীতে মাছ ধরা নাকি রোহিঙ্গাদের জন্য নিষেধ।তারা সব জেলেকে মেরে পিটিয়ে নদী থেকে তাড়িয়ে দিল। আল্লাহ’র দুনিয়ায় নিজের গাঁয়ের নদীতে মাছ ধরা কোন ধরণের অপরাধ ছিল একটু বুঝিয়ে বলবেন আমাকে?
তারপর বাবা আমাদের মুখে একটু অন্ন যোগানোর জন্য হেন কাজ নেই যা করেননি। কুলির কাজ করা, জুতা সেলাই করা থেকে শুরু করে আরও কত কাজ। এখানে যেকোন কাজ পাওয়াই কঠিন। আমার বাবা পরিশ্রমী একজন মানুষ ছিলেন। কখনও বসে থাকতেন না। সর্বশেষ আমি ও বাবা একজনের জমিতে কাজ নিয়েছিলাম। বর্গা চাষির কাজ। স্বপ্ন দেখতে শুরু করলাম আবার, দিন ফিরবে। আমরা খুবই সাধারণ শ্রমিক রোহিঙ্গা। রাজনীতি বুঝিনা। শুধু খেয়ে পরে বাঁচতে চাই। আমাদের তো খুব বেশি চাওয়া কোনকালেই ছিল না। তাই পরিশ্রম করে দিন ফিরিয়ে আনার স্বপ্ন দেখা কি অপরাধ ছিল?
কিন্তু হঠাৎ সে স্বপ্নেও ছেদ পরল। সেদিন সবে সন্ধ্যা হয় হয়। বেশ কিছু সেনাসদস্য কয়েকটা গাড়িতে করে এলো। কিছু লোক এলো সাধারণ পোষাকে। তারা চিৎকার করতে করতে ঘৃণিত দৃষ্টি নিয়ে আমাদের গায়ে ঢুকে পরল। কথা নেই বার্তা নেই গুলি করতে লাগল। আমার সামনেই আমার বাবাকে দেখলাম গুলি খেয়ে পরে যেতে। আমি তাকে ধরতে যেতেই হ্যাঁচকা টানে কে যেন আমাকে ঘরের পিছনে আড়ালে নিয়ে গেল। সেখানে আমার ভাইবোন আর মা ও ছিল। সারা গাঁয়ে শোরগোল পরে গেল। তার মাঝেই বুঝলাম কে বা কারা আমাদের ছোট্ট ঘরটিতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। আগুনের দাউ দাউ আভায় দেখলাম সন্ধ্যা নেমেছে পুরোপুরি। আর পুড়ে যাচ্ছে আমাদের ঘর, পুরে যাচ্ছে আমাদের সব স্বপ্ন। আমরা ঊর্ধ্ব শ্বাসে প্রাণ নিয়ে দৌড়াতে লাগলাম। কিন্তু বেশিক্ষণ পারলাম না। মস্ত ইউনিফরম পরা ভয়ংকর চেহারার এক লোক, আমার মাকে, যে আমার ছোট বোনটিকে নিয়ে দৌড়াতে পারছিল না, ধরে ফেলল। ছোট্ট বোনটিকে সে ছুড়ে দিল মাটিতে। ছেঁচড়ে টেনে নিয়ে যেতে লাগল মাকে। আমি চিৎকার করে তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়লাম। ধস্তাধস্তিতে সে আমাকে গুলি করতে না পেরে রাইফেলের বাট দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত করল। আমি জ্ঞান হারালাম। জ্ঞান ফিরে এলে দেখি কেউ কোথাও নেই। বাকি তিন ভাইবোনকে খুঁজে পেলাম না কোথাও। একটু দূরে ঝোপের আড়ালে খুঁজে পেলাম মায়ের গুলিবিদ্ধ উলঙ্গ দেহখানি। এমন দৃশ্য এর আগে কোনদিন দেখিনি আমি। দু:স্বপ্নের চেয়েও ভয়ংকর। পাগলের মত কাঁদতে লাগলাম আমি। এই ভয়ংকর দৃশ্য কেন কিভাবে এলো আমার সামনে?যে মায়ের দুধ আমি পান করেছি, তার নগ্ন দেহ কেন আজ আল্লাহ আমাকে এভাবে দেখাল?
সেই বিশাল প্রান্তর আর জঙ্গলের ধারে এই নগ্ন দেহকে আমি কিভাবে রক্ষা করবো শেয়াল-কুকুরের হাত থেকে? আল্লাহ সহায়। রাস্তা ধরে যাচ্ছিলো শত শত লোক তখন।আসলে পালাচ্ছিল রাতের আঁধারে। তাদের সাহায্য নিয়ে মায়ের দেহখানি মাটিতে পুতে দিলাম দোয়া পড়তে পড়তে। মানুষের হাত থেকে বাঁচতে পারেনি আমার মা, শেয়াল-কুকুরের হাত থেকে অন্তত বাঁচুক।
হ্যাঁ, বলছিলাম আজ আমি অনেক শক্ত। শুধু কান্না পায় যখন মায়ের কথা মনে পড়ে।এই শরণার্থী ক্যাম্পের কাছের দোকানের টিভিতে আপনাকে দেখে মায়ের কথা আবার মনে পরল। আপনার হাসির সাথে আমার মায়ের হাসির অনেক মিল, যদিও সে কবে আপনার মত পোশাক পরে আর খোপায় ফুল পরে হেসেছিল তা প্রায় ভুলে গেছি। তবে হেসেছিল।
আমার এক চাচা ছিল। সে স্কুলের বড় ক্লাস পর্যন্ত পড়েছিল। তার কাছ থেকে শুনেছি, মিয়ানমারের জনগণ এবং আপনি নাকি রোহিঙ্গাদের চান না। রোহিঙ্গারা নাকি মিয়ানমারের নয়। বৌদ্ধ,যারা আলখাল্লা পরে আর ধর্মের কথা বলে আমাদের ইমামদেরই মত, তারা কেন আমাদের উপর এত রেগে ছিল সেটাও একটা দুর্ভেদ্য রহস্য আমার কাছে। এখন আমি এখানে এরকম কাউকে দেখলে ভয় পাই। ঘৃণা করতে ইচ্ছা হয়। কিন্তু কেন? আমি তো তা চাইনি। আমার এই চোখ, এই মন কি তবে তাদেরই মত হয়ে যাচ্ছে যারা আমাদের ঘৃণা করেছে, যারা আমার মাকে খুন করে উলঙ্গ অবস্থায় ফেলে গেছে?আমার বাবাকে গুলি করে হত্যা করেছে? যাদের জন্য আমার আদরের ছোট ছোট ভাইবোন গুলো হারিয়ে গেছে? প্রিয় সু চি, আমাকে আপনি এই ঘৃণা থেকে কী রক্ষা করতে পারবেন কোনদিন?
তিনদিন দুই রাত হেঁটেছি। জংগলে, নদীর ধার দিয়ে। সারি সারি মানুষের সাথে। নি:স্ব, শূন্য হাতে। আর খুঁজেছি ভাইবোন গুলোকে। কোথাও যদি ওদের পাই। ক্ষুধার্ত হয়েছি যখন, কারো কাছে কোন খাবার নেই, কোথায় পাবে। গাছের লতা-পাতা আর পানি খেয়ে জান বাঁচিয়েছি। শুধু জানটা নিয়ে আপনাদের কথিত আর আমার কল্পনার সেই দেশ মিয়ানমার ছেড়ে এসেছি এই বাংলাদেশে। এখানে এসেও দেখছি ইউনিফর্ম পরা লোকজন। কাঁধে তাদের রাইফেল। কিন্তু চোখগুলোই শুধু আলাদা। মুখের ভাষা না, চোখের ভাষায় বুঝেছি তারা আমাদের ক্ষতি করবেনা আপনার সেনাদের মত। প্রথমে তাদের দেখা পেয়ে ভয়ে আর অনিশ্চয়তায় কেঁদেছিলাম। কিন্তু এখন বুঝে গেছি আল্লাহ’র দুনিয়া থেকে মায়া-মমতা উঠে যায় নি।
জন্ম থেকে দেখেছি সব সন্তান তার বাবা মায়ের কাছে আদর পায়।
প্রিয় সু চি, আপনি কি আপনার সব সন্তানদের আদর করেন না? চাচা বলতো দেশ মানে নাকি মা। মিয়ানমার কি তার সব সন্তানদের সমান চোখে দেখে না? আমরাতো তারই সন্তান ছিলাম। জেনেছিলাম রাখাইন আমাদের রাজ্য, ভেবেছিলাম মিয়ানমার আমাদের দেশ। প্রিয় সু চি, দেশ মানে আপনার কাছে কি?
ইতি
হতভাগ্য একজন রোহিঙ্গা যে একটি দেশ চেয়েছিল আপনার কাছে।

Address


Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when জীবনের কিছু কথা - Jiboner Kisu Kotha posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Shortcuts

  • Address
  • Alerts
  • Claim ownership or report listing
  • Want your business to be the top-listed Media Company?

Share