গাজীপুর

  • Home
  • গাজীপুর

গাজীপুর SHOHAG

পূর্ব চান্দরা স্পোর্টিং ক্লাব ও গন পাঠাগার, গাজীপুর।
12/08/2025

পূর্ব চান্দরা স্পোর্টিং ক্লাব ও গন পাঠাগার, গাজীপুর।

আমার পরিচিত একজনের গলব্লাডারে পাথর হয়েছে।সার্জারী করতে ৩০-৪০ হাজার টাকা লাগবে।এত টাকা তার কাছে নাই।তাকে বলেছি সিলেট গিয়ে...
12/08/2025

আমার পরিচিত একজনের গলব্লাডারে পাথর হয়েছে।
সার্জারী করতে ৩০-৪০ হাজার টাকা লাগবে।
এত টাকা তার কাছে নাই।
তাকে বলেছি সিলেট গিয়ে সাদাপাথরে শুয়ে থাকতে।
সব পাথর ফ্রীতে খুলে নিয়ে যাবে।
টের ও পাবে না।
এখন জানতে চাচ্ছি,তারা কি শুধু সাদা পাথরই নেয় নাকি যে কোন পাথর?

বড় ভাই আমার বিকাশে দুই হাজার টাকা সেন্ড করে বলল,-জয়,মাকে নিয়ে সারাদিনের জন্য কোথাও ঘুরে আসবি? আজ তোর ভাবীর বাসা থেকে মেহ...
08/08/2025

বড় ভাই আমার বিকাশে দুই হাজার টাকা সেন্ড করে বলল,
-জয়,মাকে নিয়ে সারাদিনের জন্য কোথাও ঘুরে আসবি? আজ তোর ভাবীর বাসা থেকে মেহমান আসবে।

মাকে নিয়ে ঘুরতে যেতে আমার আপত্তি নাই কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আজকে সৌমির সাথে ডেট আছে। ওর সাথে দেখা হলে আপনি এমনি খুব আতঙ্কে থাকি৷ চাকরি-বাকরি হচ্ছে না বলে ও যা ইচ্ছা-তাই বলে। এরউপর যদি সময়মত পৌঁছাতে না পারি সম্পর্কটাই বোধহয় আর থাকবে না।যাই হোক,তবু ওকে কিছু একটা বুঝিয়ে মাকে নিয়ে সকাল সকাল বেরিয়ে পড়লাম।

রিকশায় উঠে মায়ের প্রথম প্রশ্ন,

-ওই জয় আমারে কই নিয়ে যাস? ডাক্তার দেখাবি?ফাইলপত্র তো কিছু আনস নাই।

-এমনি মা,মনটা ভালো লাগছে না।ভাবছি তোমায় নিয়ে সারাদিনের জন্য ঘুরে বেড়াব।

-বাড়িতে মেহমান আইব। বউমা কতকিছু রান্না করতাছে।পোলাপান মানুষ,একলা সব সামলাইতে পারব না। আমি হাতে হাতে সাহায্য করে দিতাম।

-ভাবীর বান্ধবীরা আসবে মা। সব চাইনিজ রান্না। এসব তুমি বুঝবা না। কই যাইবা বলো? চিড়িয়াখানা?

-দুই টাকার একটা পাইপ আইসক্রিম খাওয়াবি,জয়!

বাড়িতে ব্রান্ডের বক্স আইসক্রিমে ফ্রীজ ভর্তি থাকে। মা ওসব ছুঁয়েও দেখেন না।একটা পাঁচ টাকা দামের পাইপ আইসক্রিমের দিকে লোভীর দৃষ্টিতে তাকায়। জৈষ্ঠ্য মাসের কাঠফাটা রোদে বাড়ির উঠানে ফসল আসত।ধান শুকাতে শুকাতর মা তৃষ্ণায় কাহিল।আইসক্রিমওয়ালা এসে ডাক দিত।
-ওই আইসক্রিম!
বাচ্চাদের জন্য ধান দিয়ে আইসক্রিম কেনা হত। মায়ের বয়স তখন কত!চৌদ্দ কি পনের! মায়েরও খুব ইচ্ছা হত একটা কমলা রঙের টুকটুকে আইসক্রিম নিয়ে মুখে পুরতে।নতুন বউ,এই ছোট্ট আহ্লাদের কথা স্বামীকেও কোনোদিন বলতে পারে নাই।

বৃদ্ধ বয়সে মানুষ হয়ে যায় পুনরায় শিশুর মত।তাই মায়ের এই না পাওয়া গল্প আমরা হাজারবার শুনেছি। আরো হাজারবার শুনতেও দ্বিধা নাই। সমস্যা হচ্ছে,এই গল্পগুলো মা ভাবীর সাথেও করেন এমনকি ভাবীর পরিবারের লোকজনের সামনে বলতেও লজ্জা পান না। আগেরবার ভাবীর মা-বাবা যেদিন আসলেন।অনেকপদ রান্না হয়েছে। মা নিজেই দাঁড়িয়ে বেয়াই-বেয়াইনদের জন্য রান্না করেছেন কৈ মাছের তেল-ঝাল,সরিষা ইলিশ।খাওয়ার টেবিলে মায়ের পাতে যখন ইলিশ মাছ দেওয়া হল।মা বলল,

-ও বউ,আমারে আধখানা মাছ দাও। পুরাটা খাইয়া ড়শেষ করতে পারুম না।

-পারবেন, মা।খান।

-এত বড় মাছ খাইয়া অভ্যাস নাই তো। খাইতে পারুম না।তুমি আমারে পেটির কাছে একটুখানি ভাইঙা দাও।

মেহমানরা একে অপরের দিকে তাকিয়ে দৃষ্টি বিনিময় করল। ভাবী কড়া চোখে ভাইয়ের দিকে তাকাল আর আমরা দুই ভাই অসহায়ের মত আমাদের সরল মাকে দেখছিলাম।ভাবীর হাইক্লাস পরিবার কোনোদিন বুঝবে না,বাবা মারা যাবার পর মা কি পরিমাণ ত্যাগ করে আমাদের দুই ভাইকে মানুষ করেছেন। তাদের কাছে মা একজন অশুদ্ধ ভাষায় কথা বলা গ্রাম্য মহিলা।

মাকে নিয়ে আইসক্রিম খেলাম। চিড়িয়াখানায় ঘুরলাম। মার সবচেয়ে পছন্দের প্রাণী হচ্ছে জিরাফ। এই প্রাণীটার বিশাল লম্বা গলা দেখে যতবার দেখে ততবার বলে,
-সুবহানাল্লাহ!আল্লাহর দুনিয়ায় কত আজব আজব প্রাণী আছে।
বানরের খাঁচার সামনে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলাম।মা বানরকে বাদাম ছিলে খাওয়াল।

দুপুরে মাকে নিয়ে খেতে গেলাম ভাই ভাই ভাতের হোটেলে। এখানে নদীর ফ্রেশ মাছ রান্না হয়।মায়ের জন্যে বোয়াল মাছ অর্ডার করে একটা ভর্তা-ভাজির প্লেটার নিলাম।মা বলল,
-ও জয়,তুই কি খাবি?তোর জন্যে গরুর গোশত নে!
হাসলাম।একটা বয়সের পর মানুষের আর খেতে পারে না। চোখের দেখাতেই পেট ভরে যায়।এই যেমন মা বোয়াল মাছ ভেঙে একটু মুখে দিয়েই আর খাবে না।পুরোটা যাবে আমার পেটে কিন্তু বহুদিন পর্যন্ত গল্প করে যাবে,
-জয়ের সাথে রেস্টুরেন্টে গিয়া বোয়াল মাছ খাইছিলাম
।বাটি উপচাইয়া পরতাছে এমন বড় পিস।এমন স্বাদের মাছ বহুদিন খাই নাই।

খাওয়া-দাওয়া শেষ করে মায়ের শখ হল শিশুপার্কে যাবার। জিজ্ঞেস করলাম,

-শিশুপার্কে গিয়া কি করবা?তোমার তো হাঁটু ব্যথা। কোনো রাইডে চড়তে পারবা না।
-আহা!চল না আমার সাথে।
মা শিশুপার্কে গিয়েই বায়না ধরল আমাকে ঘোড়ায় চড়তে হবে। একটা ত্রিশ বছরের বুড়া বেটা যদি রাইডে চড়ে তার মানসম্মান কোথায় থাকে!মা অবুঝ!ছোটোবেলায় নাকি মেলায় গিয়ে ঘোড়ায় চড়ার জন্য বায়না ধরতাম,মায়ের কাছে তখন টাকা থাকত না। রাইডের হেল্পার ছেলেটা বলে,
-স্যার সমস্যা নাই। উঠেন।কত বাচ্চাদের সাথে গার্ডিয়ানরা উঠে।

অতঃপর উঠতে হল।ঘোড়াতে চড়ে এক চক্কর না দিতেই আমার ইচ্ছেহল মাটির সাথে একেবারে মিশে যাই।বড় বড় চোখ করে সৌমি তাকিয়ে আছে। ওর সাথে ওর ভাগিনা।দুজনের হাতেই আইসক্রিম। কেউ আইসক্রিম খাচ্ছে না।আমার দিকে তাকিয়ে আছে। সৌমি বলল,

-তুমি এইখানে?তুমি না কোন বন্ধুকে রিসিভ করবা?তাই এয়ারপোর্টে যাবার কথা।
-ইয়ে মানে...সৌমি ইনি আমার মা।
সৌমি সালাম দিয়ে জানতে চাইল,
-আন্টি আপনি গ্রাম থেকে কবে এসেছেন?
-গ্রাম থেকে আসমু কেন?আমি তো ঢাকাতেই থাকি।
-ও।
সৌমি কটমট চোখে আমার দিকে তাকাল।ও বহুবার চেয়েছে মায়ের সাথে পরিচিত হতে। আমি বলেছি,মা গ্রামে থাকে।অসুখ-বিসুখ হলে শহরে ডাক্তার দেখাতে আসেন।পরপর দুইটা মিথ্যা সৌমির
কাছে ধরা পরে গেল।সৌমি বলল,

-চলেন আন্টি,আমরা কোথাও বসে চা খাই।

মা কিছু বলার আগেই আমি বলে উঠলাম,
-আমাদের এখুনি বাড়ি যেতে হবে। ভাইয়া,বারবার কল করছে।
সৌমি আমাদের রিকশা পর্যন্ত এগিয়ে দিল। মাকে রিকশায় উঠিয়ে ওকে বললাম,
-আসি। বাড়ি গিয়ে কল দিচ্ছি।
সৌমি বলল,
-তুই যদি আর কোনোদিন ফোন দিস তোর পা ভেঙে আমি হাতে ধরিয়ে দিব।মিথ্যুক হারামজাদা!

রিকশা কিছুদূর যাবার পরেই ফোন চেক করলাম।অলরেডি সৌমি ফেসবুক,নাম্বার থেকে আমাকে ব্লক করে ফেলেছে। এমনি প্রেম করি,বছরে ছয় মাস থাকি ব্লক লিস্টে,বাকি ছয় মাস কেটে যায় রাগ ভাঙাতে ভাঙাতে।মনটা সত্যি খারাপ লাগছে।

বাড়ির কাছাকাছি আসতেই মা বলল,
-বউমার মা-বাবা কি চলে গেছেন?নাকি আরো কিছুক্ষণ রিকশায় ঘুরবি?

অবাক হয়ে মার দিকে তাকালাম।মা বললেন,

-আমাকে মিথ্যা বলার কোনো প্রয়োজন ছিল নারে খোকন।বউমা বললেই পারত,আমি সারাদিন ঘর থেকে বের হতাম না।

-প্লিজ মা,মন খারাপ করো না। সবাই তো আর একরকম হয় না।

-ঠিক। আমার একটা কথা রাখবি,খোকন?

-বলো মা।

-তোর বউকে আমি পছন্দ করে নিয়ে আসব। তোর যেমন ভালো লাগে তেমনি হবে শুধু আমি মেয়েটির মা-বাবার সাথে কথা বলে দেখব তারা মেয়েটিকে শুধু শিক্ষিতা মানুষ করতে পেরেছি কীনা।

-অন্যের মেয়ের থেকে বেশি আশা করা ঠিক না,মা। আমরা দুই ভাই তোমাকে খুব ভালোবাসি। বলো ভালোবাসি না?

মায়ের চোখে জল। শুধু মাথা নেড়ে সম্মতি জানালেন।
আমার মা চৌদ্দ বছরে বউ হয়েছিলেন,চব্বিশেই বিধবা।দশ বছরের সংসার জীবনে দুই সন্তানের মা। একপ্রকার চাচীদের লাথি,ঝাটা খেয়ে শ্বশুরবাড়িতে পড়ে ছিলেন কেননা মামারবাড়ি চলে গেলে আমাদের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যেত।সংসারের সমস্ত কাজ করার বিনিময়ে ভাত জুটত বিনিময়ে চাচাদের মুখে শুনতে হত,
-নবাবের বউরে বইলো,সকালবেলা যেন ঘর থিকা বাইর না হয়,বিধবার মুখ দেখলে কাজকামে গেলে লোকসান হয়।
পৈতৃকভিটা টুকু ছাড়া সমস্ত সম্পত্তি চাচারা আত্মসাৎ করে নিয়েছে তাতে মায়ের দুঃখ নাই। তাই দুই ছেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করেছে। ভাইয়া মন্ত্রনালয়ে চাকরি করে।। ভাবী বড় ব্যবসায়ীর মেয়ে,ঢাকাতেই বড় হয়েছে। যার পরিবার বছরে ট্যুর দিতে ইউরোপ, আমেরিকা ঘুরে বেড়ায় তাদের স্ট্যাটাসের সাথে সত্যি আমাদের পরিবারকে মানায় না।কিন্তু দুজনের প্রেম আর ভাইয়ার চাকরি জন্যে বিয়ে হতে কারো আপত্তি খাটে নাই।

ভাইয়ার মত আমার প্রেম ভাগ্য এত ভালো নয় ভেবেছিলাম সৌমির সাথে সম্পর্কটাই বোধহয় ভেঙে যাবে কিন্তু পরদিন ঘুম ভাঙতে একটা চিঠি আমার জীবনটা পুরো উলটপালট হয়ে যায়।বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে যোগদান পত্র পাঠিয়েছে। কোনোরকমে চিঠিটা পড়েই মায়ের ঘরে দৌড় দিলাম।মা জায়নামাজে বসে কাঁদছেন,
-হে আল্লাহ,আমার দুই ছেলের মনেন সমস্ত আশা তুমি পূরণ করে দাও। ওদের জীবন থেকে বালা-মুসিবত দূরে করে দাও। ওদের আপনি নেকহায়াত দান করুন...

মায়ের মোনাজাতের পিছনে চুপ করে বসে থাকি। এদেশে চাকরি হতে মামা-চাচার জোর লাগে,মোটা অঙ্কের ঘুষ লাগে। আমাদের দুই ভাইয়ের পিছনে ছিল অকৃত্রিম মায়ের দোয়া এবং আল্লাহর অশেষ রহমতে আর কিছুর প্রয়োজন হয় নাই।

জয়েনিং লেটার নিয়ে সোজা চলে গেলাম জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। সৌমির ক্যাম্পাসে ওকে খুঁজে বের করতে অসুবিধা হল না।ও আমার হাতে লেটার দেখে কিছুক্ষণ বান্ধবীর সামনেই আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদল। তারপর বলল,
-এখুনি মায়ের কাছে চলো।মাকে গিয়ে বলবা কবে আমাকে বিয়ে করছ!
-আরে চাকরিতে জয়েন করি।তারপর আন্টির সাথে কথা বলি। এত বছর অপেক্ষা করেছ আর কয়েকটা মাস অপেক্ষা করতে পারবা না?

সৌমি অপেক্ষা করতে রাজি ছিল কিন্তু ভাগ্য বিড়ম্বনায় একমাসের মধ্যেই আমাকে ওর মায়ের সামনে গিয়ে দাঁড়াতে হল। ওর দূরসম্পর্কের খালাতো ভাই লন্ডন থেকে ফিরেছে এমবিএ করে। তিনি সৌমিকে দেখেই পছন্দ করে ফেলেছে এবং ওকে বিয়ে করে লন্ডন নিয়ে যেতে চাইছে। এত ভালো প্রস্তাব পেয়ে সৌমির মাও রাজি।

অতঃপর সৌমিকে বলতে হল আমার কথা। ওর মা ছুটির দিনে দেখা করবার জন্য ডেট ফিক্সড করলেন।
সৌমির মা রওশানা আরা বেগম, বাংলার অধ্যাপিকা।সৌমির বাবার সাথে ডির্ভোস হবার পর একাই তিনি সৌমিকে বড় করেছেন। উনার সাথে আমার দেখা হবার কথা বিকাল চারটায়। সাড়ে তিনটা থেকে এসে বসে আছি।বুয়া এসে চা-নাস্তা দিয়ে গেল কিন্তু তিনি বসার ঘরে ঢুকলেন ঠিক চারটায়। সৌম্য,সম্ভ্রান্ত চেহারা। চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা খুব গুছিয়ে শাড়ি পরেছেন।উনি আমার পরিবার,চাকরি সম্বন্ধে প্রশ্ন করলেন।তারপর বললেন,

-তোমাকে কিছু কথা বলব,হয়ত তোমার শুনতে ভালো লাগবে না।কিন্তু কোনো সম্পর্ক গড়ার ক্ষেত্রে আগে তিতা পরে মিঠা ভালো।

-জ্বী বলেন।

-আমার সাথে সৌমির বাবা ডির্ভোস হয়ে গেছে,জানো নিশ্চয়ই।সৌমির বাবা আলমের সাথে সম্পর্ক খারাপ ছিল না কিন্তু যৌথ পরিবারে আমার স্বাধীনতা ছিল না। সৌমির দাদী আমার পড়াশোনা বন্ধ করে দিয়েছিলেন এমনকি বাবার বাড়ি আসতে চাইলেও উনার অবজেকশন ছিল। পরিবারের বাকিসব সদস্যের প্ররোচনায় আমাদের সম্পর্ক দিনে দিনে খারাপ হতে থাকে এবং শেষ পর্যন্ত ডির্ভোস।

ভদ্রমহিলা চশমা খুললেন।তারপর বলতে থাকলেন,

-সৌমিকে আমি আমার মত করে বড় করেছি।ও জীবনে যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাই হয়েছে। ও আর্টস পড়তে চেয়েছিল তাই পড়েছে। তোমাকে পছন্দ করেছে তাতেও আপত্তি নাই কিন্তু আমি চাই না ওর জীবনটা আমার মত হোক।ও যৌথ পরিবারে মানিয়ে নিতে পারবে না।

-আমার মা বাকি সবার মত নয় আন্টি।তারসাথ একবার কথা বললে আপনি বুঝতে পারবেন।মা একেবারে সহজ-সরল।মাটির মানুষ।

-পৃথিবীর প্রত্যেক সন্তানের কাছে তা মা মহান। কিন্তু তারপরও ঘরে ঘরো বউদের নির্যাতিতা হতে হয়। মা মাত্রই যদি মহান হত তাহলে পৃথিবীর কোনো শিশুকে অভুক্ত থাকতে হত না। জয়,তোমার মা তোমাকে কষ্ট করে বড় করেছেন তার প্রতি অবশ্যই তোমার দায়িত্ব-কর্তব্য আছে। মায়ের ভরণপোষণ করা,অসুস্থ হলে সেবা করা সবকিছুই তুমি সন্তান হিসেবে পালন করবে কিন্তু আমার মেয়েকে তুমি আলাদা সংসার দিবে।পারবে না?

-আমাদের বিয়ের পর আলাদা বাসায় উঠতে বলছেন?

-তুমি বুদ্ধিমান ছেলে। বুঝতে পেরেছ। তুমি রাজি থাকলে বিয়ের আয়োজন শুরু করো নয়ত সৌমি নেক্সট মাসে লন্ডন যাচ্ছে।শৈশবের মা সৌমিকে বউকে করে নিতে আমার হাতে ধরে বসে আছেন। আমার কথা শেষ। সৌমি,তোমার বন্ধুকে কম্পানি দাও।

সৌমির মায়ের সাথে কথা বলার পর তিনদিন রাতে ঘুমাতে পারলাম না। মনের সাথে দ্বন্দ্ব আর মানসিক টানাপোড়েনে জীবন ক্ষতবিক্ষত। সৌমিকে আমি ভালোবাসি,ভালোবাসার পিছনে কোনে কারণ থাকে না তাই এই ভালোবাসা অফুরন্ত, অকৃত্রিম। আর মা,মাকে ছাড়া তো আমি নিজের অস্তিত্ব কল্পনাই করতে পারি না। সেই মাকে চলে যাব আমি!এও কি আদৌ সম্ভব। সৌমির মা যে এককথার মানুষ তা উনার সঙ্গে কথা বলেই বুঝতে পেরেছি।উনি শর্ত ভঙ্গ করবেন না।

এদিকে বাড়িতে মহাগ্যাঞ্জাম চলছে। মায়ের সাথে ভাবীর সম্পর্ক একেবারে খারাপ না। কিন্তু এবার মায়ের কথায় ভাবী খুব রাগ করেছে। মা বলেছে,

-ও বউমা!তোমগো কতদিন তো বিয়া হইল!বাচ্চা-কাচ্চা নিতে মন চায় না?

খুব সাধারণ কথা কিন্তু ভাবীর কান্না দেখে মনে হচ্ছে মা উনার চুলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। ভাই নতজানু হয়ে চুপচাপ বিছানায় বসে আছে। সাক্ষী হিসেবে আমাকে ডেকে আনা হয়েছে। ভাবী বলল,
-তুমিই বলো জয়,মা এই কথাটা বলতে পারলেন? কেন উনি আমাদের ব্যক্তিগত ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করলেন!

ধীরে ধীরে ভাবীর পাশে গিয়ে বসে বললাম,
-ভাবী,আপনাদের বিয়ে হয়েছে সাত বছর। বিয়ের পর কয়েকটা বছর চাকরির পিছনে ছুটে সারাদিন কোচিং করেছেন,জবের পরীক্ষা দিয়েছেন।তখন এই সংসার আমার মা সামলাত। ভাগ্য সহায় হয় নাই তাই জব হয় নাই।মাঝখানে এতগুলো বছর চলে গেছে মা একটাবার মুখ ফুটে বলেছে বেবির কথা?

ভাবী চুপ করে আছে।

-আপনাদের হাইক্লাস ফ্যামিলিতে বিয়ের ঠিক কতবছর পর বেবি নেয় আমি জানি না।আমার গ্রাম্য মা যে সাত বছর পর স্রেফ জিজ্ঞেস করেছে তাতেই আমি অবাক। মায়ের জায়গায় অন্য কেউ থাকলে হয়ত বহু আগেই এই বিষয়ে প্রশ্ন করতেন। বলো ভাবী,তোমার বান্ধবীরা বা রিলেটিভ কেউ কি জানতে চায় না?

ভাবী গম্ভীর হয়ে বসে আছে।আমি রুম হতে বের হয়ে যেতেই ভাবী বলে উঠল,
-তোমার ভাই কি বলতে চাইছে আমি বুঝি না?আমার ফিজিক্যাল প্রবলেম আছে এই তো।আজকেই যাব ডক্টর কাছে।দেখব সমস্যা আমার নাকি তোমার!

সৌমি খুব চিন্তায় আছে।ওর মাকে ও জমের মত ভয় পায়।তবু কয়েকবার বলেছে,ওর যৌথ পরিবারে আপত্তি নাই কিন্তু ওর মা শুনতে নারাজ। ও আমাকে বারংবার অনুরোধ করছে আমি যেন একবার ওর মায়ের সাথে আমার মাকে কথা বলতে দেই।কিন্তু আমি জানি,অমন ব্যক্তিত্বময়ী,রাশভারী মহিলার সামনে আমার খেই হারিয়ে ফেলবে আর মা যদি এমন শর্তের কথা শুনে তিনি নিরদ্বিধায় আমাকে দূরে ঠেলে দিবে।বুকে পাথর চাপা দিলেও একবার মুখ ফুটে বলবে না,তোকে ছাড়া আমার কষ্ট হবে বাজান।এমনি আমার মা!

বাধ্য হয়ে একদিন বড় ভাইয়ের অফিসের গেলাম।ভাইয়া সবটা শুনে কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলল,
-সমস্যা কি!মা তো আমার কাছে ভালোই আছে। তুই বিয়েটা করে ফেল।
-কিন্তু মা...
-আরে মাকে যা বোঝানোর আমি বুঝিয়ে বলব নে।তুই প্যারা নিস না।

সেদিন বাড়ি ফিরে অদ্ভুত এক দৃশ্য দেখলাম, বড় ভাবীর মায়ের পায়ে মাথা রেখে শুয়ে আছে। মা ভাবীর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।ভাবী কাঁদছে।মা বলছে,
-কিচ্ছু চিন্তা কইরো না, মা। আল্লাহ চাইলে সব সম্ভব। তোমরা চিকিৎসা শুরু করো। আমি মন থিকা আল্লাহর কাছে চাইব। তিনি তার বান্দাকে কোনোদিন খালি ফেরান না।

ভাইয়া এসে আমার পাশে দাঁড়াল।বলল,
-তোর ভাবীর পিসিওএস।পরীক্ষা না করলে কোনোদিন জানতেই পারতাম না। ত্রিশের পর এই সমস্যা আরো প্রকট আকার ধারণ করে,ঋতুর অলরেডি বত্রিশ চলে। জানি না,ভবিষ্যতে কি আছে!

-তুমি এত চিন্তা করো না ভাইয়া। আজকাল চিকিৎসা ব্যবস্থা সবই আধুনিক। সময় লাগবে হয়ত কিন্তু ঠিক হয়ে যাবে।

ভাইয়া দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন,
-তাই যেন হয়।

বিয়ের আয়োজন শুরু হল।ভাইয়া আর ভাবী গিয়ে একদিন সৌমিকে আঙটি পরিয়ে দিয়ে আসল। মা অসুস্থতার জন্য যেতে পারলেন না। আমি মাকে নেবার জন্য চেষ্টা করতে তিনি বললেন,
-তোর বউকে তো আমি আগেই দেখেছি।
-কই দেখছ?
-ওই যে শিশুপার্কে। ফর্সা মতন কোঁকড়া চুলের মাইয়াটা।কি জানি নাম কইছিল...
-সৌমি?
-সুমী?
-সুমী না সৌমি।
-ওরে একখান লাল টুকটুকে বেনারসি কিন্না দিস বাপ,ওরে লাল রঙে খুব মানাইব।

লাল বেনারসি কেনা হয় না। সৌমি ভাবীর সাথে শপিং করতে গিয়ে অফহোয়াইট রঙের গাউন কিনে। ওর ডায়মন্ড স্টোনের গহনার সাথে নাকি বেনারসি একেবারে খেত লাগবে। স্বর্ণের গহনা হলে একটা কথা ছিল। মায়ের যা স্বর্ণের গহনা ছিল বেশিরভাগই ভাইয়ের বিয়ের সময় খরচ হয়ে গেছে। ভাবী সেই আদ্দিকালের গহনক ভেঙে নতুন ডিজাইনের জড়োয়ার সেট বানিয়েছেন। এই নিয়ে মায়ের মনে কিছুটা ক্ষোভ। জীবনে অনেক দুঃখের দিন গেছে।কিন্তু মা গহনা নষ্ট করেন নাই,বিয়ের স্মৃতি হিসেবে যখের ধনের মত আগলে রেখেছে।তাই বাকি গহনা মায়ের কাছ থেকে চাওয়ার আর সাহস হয় নাই।

এমনি বড় ভাই যখন মাকে বলেছে,চাকরির সুবিধার্থে আমাকে অফিসের কাছাকাছি বাসা নিতে হবে তখনি মা সবটা বুঝে গেছে। বিয়ের পর আমাকে আলাদা হতে হবে।

দুই বাড়িতে উৎসব চলছে। কেনাকাটা -মেহেন্দি অনুষ্ঠান,ব্রাইডাল শাওয়ার, ব্যাচেলর পার্টি। আমি কিছুতেই মন দিতে পারছি না।মায়ের মুখটার দিকে তাকালে নিজেকে ব্যর্থ সন্তান মনে হয়। সৌমি ফোন দিয়ে রোজ বিয়ের পর কি করবে কোথায় হানিমুনে যাবে সেই গল্প করে আমি হু হা করে ফোন রেখে দেই।
ওর খুশিতে আনন্দিত হতে পারি না।

দিন গড়ায়। বিয়ের দিন ঘনিয়ে আসে। বিয়ের এক সপ্তাহ আগে সৌমির সাথে আমার বয়ফ্রেন্ড হিসেবে শেষ দেখ। সৌমি খুব এক্সাইটেড।ও অনবরত কাকে কাকে দাওয়াত দিয়েছে, কার কাছে সাজবে এসব গল্প বলছে। আমি কফি খাচ্ছি। সৌমি আমার আনমনা ভাব লক্ষ্য করে বলে উঠল,
-তোমাকে আমি প্রেসার দিয়ে বিয়ে করছি নাতো,জয়?

-না।তা হবে কেন?

-বিয়ের কথা হবার পর থেকেই তুমি অন্যমনস্ক আপসেট।যদি বিয়ে করতে না চাও সরাসরি বলে দাও। এখনো সময় আছে।

-সৌমি আমি তোমাকে ভালোবাসি। এই বিয়ের দিনটার জন্য কত বছর অপেক্ষা করেছি। কিন্তু বিয়ে মানে যে আমার সবচেয়ে আপনজনকে হারিয়ে তোমাকে পাওয়া তা কখনো ভাবি নাই।মাকে ছাড়া আমার দুনিয়া অসম্পূর্ণ।আমি ভালো থাকতে পারছি না...

সৌমি চুপ করে আছে। ওর হাতে একটা শপিং এগিয়ে দিলাম।সৌমি বলল,

-এটা কি?

-একটা লাল বেনারসি। খুব বেশি দামী না। তোমার আধুনিক গয়নার সাথে মানাবেও না। কিন্তু আমার মায়ের খুব ইচ্ছা তার বউ লাল টুকটুকে বউ হয়ে বাড়িতে পা রাখবে।মায়ের কোনো ইচ্ছাই তো পূরণ করতে পারলাম না। এইটা পারলে বিয়ের দিন পরো।

সৌমি বলল,

-এখন আর সম্ভব না। পার্লারে কিভাবে সাজব তার বুকিং দেওয়া হয়ে গেছে।

-আচ্ছা। আজ উঠি তাহলে। অফিসিয়ালি বিয়ের দিন দেখা হচ্ছে ।

১৭ ই আগস্ট,রোজ শুক্রবার।আমার আর সৌমির বিয়ে। ওদের বাড়ির পাশেই কনভেনশন হল বুকড করা হয়েছে।ছেলের বিয়েতে নাকি মাকে যেতে নাই। কিন্তু সকাল থেকে বিয়েবাড়িতে সবচেয়ে বেশি ছুটাছুটি করছে মা। দধিমঙ্গলের ব্যবস্থা করা,বরণ ডালা সাজানো।আত্মীয়দের অ্যাপায়নের ব্যবস্থা করা।মায়ের কাজের আর শেষ হয় না।এক ফাঁকে আমাকে ডেকে বলল,
-ও খোকন,একবার আমার ঘরে আসবি?

মায়ের ঘরের গেলাম। মা পুরানো কাঠের আলমারি খুলে গহনার বাক্স বের করেছে। এক জোড়া হাতের বালা,গলার নেকলেস সাথে ঝুমকো কানের দুল। গহনায় হাত বুলিয়ে বললেন,

-বড় বউমাকে দেবার পর এইটুকুর আমার সম্বল। নতুন বউরে গয়না ছাড়া ঘরে তুলবি!কীসব অমঙ্গলের কথা। নে!বউমাকে সাজাইয়া ঘরে তুল।

-এসবের কোনো দরকার নাই, মা।

-আছে। ওদের জন্যেই আমি এসব রেখে দিয়েছিলাম।নিয়ে যা ওর জন্যে। আজকাল মাইয়া...এসব পুরানো জিনিস পছন্দ করব কী না...আজকের দিনটা যাক...পরে না হয় এইগুলা নতুন করে গয়না গড়ে নিব।

মায়ের হাতদুটো ধরে বললাম,
-তুমিও আমার সাথে চলো, মা। তুমি তোমার ছেলের বউকে গয়না দিয়ে আশীর্বাদ করে নিয়ে আসো।

-পাগলে কি কয়!ছেলের বিয়েতে মায়েরা যায় কোনোদিন!

-তুমি না গেলে আমি বিয়েই করব না।তুমি যাবে কী না বলো!

অনেকটা জোরপূর্বক মাকে গাড়িতে উঠালাম। সারাটারাস্তা মায়ের এক কথা।
-মাইনষে কি কইব!ছি! ছি!পোলার মায়ের কোনো সরম নাই।

ভাই-ভাবী পিছনের সীটে। আমি গাড়ি চালাচ্ছি। পাশে মা বসে। ভাইয়া-ভাবী সাধারণত আমার আচরণে নিস্তব্ধ। কথা খুঁজে পাচ্ছে না।

প্যান্ডেলে ডুকেই প্রথমে সৌমিকে ফোন দিলাম।
-সৌমি,তোমার সাথে আমার কথা আছে।গেটের বাইরে আসো।

সৌমি আমার কণ্ঠ শুনে বুঝতে পেরেছে কিছু একটা হয়েছে। গেট ধরার ঝামেলায় যেতে হল না। সৌমির এক আঙ্কেল আমার হাত ধরে বললেন,
-কি বলবে,বাবা!যা বলার বিয়ের পর বলা যায় না?
-না।

সৌমি, সৌমির মা আর কিছু নিকটাত্মীয় আলাদা ঘরে বসে আছে। আমি মাকে নিয়ে ডুকলাম।আমি সৌমির মাকে বললাম,

-আন্টি,সৌমিকে আমার কিছু বলার আছে। জানি আপনিও শুনতে চাচ্ছেন আমি কি বলব। ওকে যা বলার আমি বিয়ের আগেই বলে দিতে চাই। কেননা সম্পর্কে আগে তিতা পরে মিঠা ভালো।

সৌমির মা এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আমি বললাম,

-সরি,সৌমি।আমি শুধু তোমাকে নিয়ে সংসার শুরু করতে পারব না। কারণ আমার কাছে আমার পরিবার মানে আমার মা,আমার ভাই,আমার ভাবী। তোমাদের মূল সমস্যা মাকে নিয়ে তো।তোমাকে জানানোর জন্যে বলছি,আমার মায়ের আরো কিছু খারাপ স্বভাব আছে। মা একসময় চুরি করত।

সৌমির মা বলল,

-কীহ চুরি করত?

আমি বললাম,

-জ্বী আন্টি। আমার এসএসসি পরীক্ষা চলে। রাত জেগে পড়াশোনা করি। চাচাদের সংসারে থেকে দুবেলা শাক-ভাত জুটে। ভালো-মন্দ খেতে দেয় না।মা কী করেন,মাছ কাটলে চাচীদের অজান্তে লেজের দিকে এক টুকরো মাছ ভেজে তুলে রেখে দেয়।আমি ভাত খাবার সময় ভাতের ভেতর মাছ পাই।বাড়ির গরুর জন্য ঘাসন কাটে মা৷ ভূষি খাওয়ায় মা।কিন্তু তার দুই ছেলের জন্য এক ছটাক দুধ জুটে না। মা কী করেন,এক গ্লাস দুধ আঁচলের তলায় নিয়ে এসে দুই ভাইকে ভাগ করে দেন। খেতে না চাইলে মা বলত,

-ভালো খাবার না খেলে ভালো রেজাল্ট আসবে কী করে!না খেলে শরীরে বল হয় না,খা!

মা মুখে আঁচল চেপে কাঁদছে। ভাইয়ার চোখ ছলছল। আমি বললাম,

-শুধু চোর না,আন্টি।মা মিথ্যুকও বটে।ঢাকায় যখন পড়তে আসি, মা প্রতিমাসে গ্রাম থেকে খরচ পাঠাতেন। জিজ্ঞেস করতাম,
-ও মা,এত টাকা তুমি কই পাও?
মা বলত,
-একটা গহনা বিক্রি করলাম।
ইদের ছুটিতে বাড়ি গিয়ে দেখি,ঠোঙা বানাতে বানাতে মায়ের হাতে কড়া পড়ে গেছে। সেই ঠোঙা বিক্রির টাকায় আমাদের পড়াশোনা চলে কিন্তু মা একটা গহনাও ভাঙেন নাই। যত্ন করে রেখে দিয়েছেন তার পুত্রবধূদের জন্যে।আর আমাদের মিথ্যা কথা বলেছে।

সৌমির সামনে সেই গহনার সেট মেলে ধরলাম।
সৌমি হতভম্ব হয়ে মায়ের দিকে তাকিয়ে আছে। বললাম,

-সৌমি,আমার সাথে ঘর করতে হলে তোমার এই মিথ্যুক,চুন্নী মহিলাকেও সহ্য করতে হবে। যদি না পারো এখুনি বলো, আমি আমার মাকে নিয়ে সসম্মানে চলে যাচ্ছি।

সৌমি কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলল,

-পাঁচ মিনিট সময় দিবা? আমি লাল শাড়িটা পরে আসছি।

সৌমির মায়ের কড়া চাহনি উপেক্ষা করে ও ঘর থেকে বের হয়ে গেল।

বরযাত্রীর বাস পিছনে রেখে আমাদের গাড়ি সামনে ছুটছে। ড্রাইভিং সীটে আমি,আমার পাশে ভাই। পিছনে দুই বউ মাকে মাঝখানে বসিয়ে মায়ের দুইহাত ধরে বসে আছে।মা বলল,
-ও খোকন, গাড়ি থামা।পানির পিয়াস পাইছে।
গাড়ি থামালাম। পানি খাবার পর মা বলল,
-দেখ তো,ঠাণ্ডা কিছু পাস নাকি!একটা পাইপ আইসক্রিম...

ভাইয়া বলল,
-তোমার খালি আজেবাজে খাওয়ার চিন্তা। জয় গাড়ি স্টার্ট দে।

সৌমি বলল,
-ভাইয়া,আমাদের জন্যেও দুইটা আনেন। খেয়ে দেখি,পাইপ আইসক্রিম কেমন লাগে!

তিনজনের হাতে পাইপ আইসক্রিম। মা শিশুর মত পা দুলিয়ে গল্প করেছেন। পুরানো দিনের গল্প। কিছু গল্প শেষ হতে নাই। দিন কেটে যায়, রেশ রয়ে যায়....

© হাবিবা সরকার হিলা

সেভ করে রাখুন কাজে লাগবে। পুরাতন দলিলে ব্যবহৃত ১০০টি শব্দের অর্থের তালিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:পুরাতন দলিলে ব্যবহৃত অন...
08/08/2025

সেভ করে রাখুন কাজে লাগবে। পুরাতন দলিলে ব্যবহৃত ১০০টি শব্দের অর্থের তালিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:

পুরাতন দলিলে ব্যবহৃত অনেক শব্দের সংক্ষিপ্ত রূপ রয়েছে। কিছু শব্দ খুব কম ব্যবহৃত হয়। যারা পুরাতন দলিলের শব্দের অর্থ বোঝেন না, তাদের জন্য বিস্তারিত ব্যাখ্যা নিচে দেওয়া হলো —

১) মৌজা: গ্রাম
২) জে.এল. নং: মৌজা নম্বর/গ্রামের নম্বর
৩) ফর্দ: দলিলের পাতা
৪) খং: খতিয়ান
৫) সাবেক: আগের/পূর্বের
৬) হাল: বর্তমান
৭) বং: বাহক (যিনি নিরক্ষর ব্যক্তির নাম লেখেন)
৮) নিং: নিরক্ষর
৯) গং: অন্যান্য অংশীদার
১০) সাং: সাকিন/গ্রাম
১১) তঞ্চকতা: প্রতারণা
১২) সনাক্তকারী: বিক্রেতাকে চিনেন এমন ব্যক্তি
১৩) এজমালি: যৌথ
১৪) মুসাবিদা: দলিল লেখক
১৫) পর্চা: প্রাথমিক খতিয়ানের নকল
১৬) বাস্তু: বসতভিটা
১৭) বাটোয়ারা: সম্পত্তির বণ্টন
১৮) বায়া: বিক্রেতা
১৯) মং: মোট
২০) মবলক: মোট পরিমাণ
২১) এওয়াজ: সমমূল্যের বিনিময়
২২) হিস্যা: অংশ
২৩) একুনে: যোগফল
২৪) জরিপ: ভূমি পরিমাপ
২৫) চৌহদ্দি: সীমানা
২৬) সিট: মানচিত্রের অংশ
২৭) দাখিলা: খাজনার রশিদ
২৮) নক্সা: মানচিত্র
২৯) পিং: পিতা
৩০) জং: স্বামী
৩১) দাগ নং: জমির নম্বর
৩২) স্বজ্ঞানে: নিজের জ্ঞানের ভিত্তিতে
৩৩) সমুদয়: সব কিছু
৩৪) ইয়াদিকৃত: পরম করুণাময় সৃষ্টিকর্তার নামে শুরু
৩৫) পত্র মিদং: পত্রের মাধ্যমে
৩৬) বিং: বিস্তারিত
৩৭) দং: দখলকারী
৩৮) পত্তন: সাময়িক বন্দোবস্ত
৩৯) বদলসূত্র: জমি বিনিময়
৪০) মৌকুফ: মাফকৃত
৪১) দিশারী রেখা: দিকনির্দেশক রেখা
৪২) হেবা বিল এওয়াজ: বিনিময়সূত্রে জমি দান
৪৩) বাটা দাগ: বিভক্ত দাগ
৪৪) অধুনা: বর্তমান
৪৫) রোক: নগদ অর্থ
৪৬) ভায়া: বিক্রেতার পূর্বের দলিল
৪৭) দানসূত্র: দানকৃত সম্পত্তি
৪৮) দাখিল-খারিজ: মালিকানা পরিবর্তন
৪৯) তফসিল: সম্পত্তির বিবরণ
৫০) খারিজ: পৃথক খাজনা অনুমোদন
৫১) খতিয়ান: ভূমির রেকর্ড
৫২) এওয়াজসূত্র: বিনিময় সূত্রে পাওয়া সম্পত্তি
৫৩) অছিয়তনামা: উইল/মৃত্যুকালীন নির্দেশ
৫৪) নামজারি: মালিকানা হস্তান্তরের রেকর্ড
৫৫) অধীনস্থ স্বত্ব: নিম্নস্তরের মালিকানা
৫৬) আলামত: মানচিত্রে চিহ্ন
৫৭) আমলনামা: দখলের দলিল
৫৮) আসলি: মূল ভূমি
৫৯) আধি: ফসলের অর্ধেক ভাগ
৬০) ইজারা: নির্দিষ্ট খাজনায় সাময়িক বন্দোবস্ত
৬১) ইন্তেহার: ঘোষণাপত্র
৬২) এস্টেট: জমিদারি সম্পত্তি
৬৩) ওয়াকফ: ধর্মীয় কাজে উৎসর্গকৃত সম্পত্তি
৬৪) কিত্তা: ভূমিখণ্ড
৬৫) কিস্তোয়ার জরিপ: কিত্তা ধরে ভূমি পরিমাপ
৬৬) কায়েম স্বত্ব: চিরস্থায়ী মালিকানা
৬৭) কবুলিয়ত: স্বীকারোক্তি দলিল
৬৮) কান্দা: উচ্চভূমি
৬৯) কিসমত: ভূমির অংশ
৭০) খামার: নিজস্ব দখলীয় ভূমি
৭১) খিরাজ: খাজনা
৭২) খসড়া: প্রাথমিক রেকর্ড
৭৩) গর বন্দোবস্তি: বন্দোবস্তবিহীন জমি
৭৪) গির্ব: বন্ধক
৭৫) জবরদখল: জোরপূর্বক দখল
৭৬) জোত: প্রজাস্বত্ব
৭৭) টেক: নদীর পলি জমে সৃষ্টি ভূমি
৭৮) ঢোল সহরত: ঢোল পিটিয়ে ঘোষণা
৭৯) তহশিল: রাজস্ব এলাকা
৮০) তামাদি: নির্দিষ্ট সময় অতিক্রান্ত
৮১) তফসিল: সম্পত্তির বিবরণ
৮২) নামজারি: মালিকানা হস্তান্তর
৮৩) নথি: রেকর্ড
৮৪) দেবোত্তর: দেবতার নামে উৎসর্গকৃত
৮৫) দখলী স্বত্ব: দখলের ভিত্তিতে মালিকানা
৮৬) দশসালা বন্দোবস্ত: দশ বছরের বন্দোবস্ত
৮৭) দাগ নম্বর: জমির ক্রমিক নম্বর
৮৮) দরবস্ত: সব কিছু
৮৯) দিঘলি: নির্দিষ্ট খাজনা প্রদানকারী
৯০) নক্সা ভাওড়ন: পূর্ব জরিপের মানচিত্র
৯১) নাম খারিজ: পৃথককরণ
৯২) তুদাবন্দি: সীমানা নির্ধারণ
৯৩) তরমিম: সংশোধন
৯৪) তৌজি: চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত রেকর্ড
৯৫) দিয়ারা: নদীর পলিতে গঠিত চর
৯৬) ট্রাভার্স: জরিপের রেখা পরিমাপ
৯৭) খাইখন্দক: জলাশয় বা গর্তযুক্ত ভূমি
৯৮) চর: নদীর পলি জমে গঠিত ভূমি
৯৯) চৌহদ্দি: সম্পত্তির সীমানা
১০০) খাস: সরকারি মালিকানাধীন জমি

বিঃদ্রঃ
এই শব্দগুলো পুরাতন দলিল পড়ার সময় আপনাকে দারুণ সহায়তা করবে। সেভ করে রেখে দিন — প্রয়োজনে অমূল্য হয়ে উঠবে।

এক সাংবাদিক ভাইয়ের নৃশংস হ*ত্যাকাণ্ড দেখে বেশ কয়েকবছর আগে  কুয়েত এয়ারপোর্টের রেস্টরুমে এক  পরিচ্ছন্নকর্মী ভাইয়ের কথা আজ ...
08/08/2025

এক সাংবাদিক ভাইয়ের নৃশংস হ*ত্যাকাণ্ড দেখে বেশ কয়েকবছর আগে কুয়েত এয়ারপোর্টের রেস্টরুমে এক পরিচ্ছন্নকর্মী ভাইয়ের কথা আজ আমার মনে হলো। রেস্টরুমের এক কর্নারে এটিএম মেশিনের বুথের চেয়েও ছোট একটা রুমে একটা ছোট টুলের উপর বসে তিনি দুপুরের আহার করছেন।

আহার বলতে একটা ছোট রুটির ভিতর চিনি ভরে কোনো রকমে ক্ষুধা নিবারণের চেষ্টা। পরিশ্রমের কমতি নেই। কিন্তু তারপরও যত পারা যায় নিজের খাবারের পেছনে খরচ কম করে অর্থ বাঁচান। যাতে দেশে পরিবারের ভরণ পোষণ করতে পারেন। কথা শুনে চোখ দিয়ে পানি চলে আসার মতো অবস্থা।

বললেন- রাত গভীরে ঘরে ফিরেন। ঘর বলতে যেখানে গাদাগাদি করে অনেক মানুষ এক সাথে থাকে। আরেকটা ব্যাপার জানলাম। দিনে ওনারা গোসল করতে পারেন না। কারণ- পানি অনেক বেশি গরম থাকে। গভীর রাতে পানি বালতিতে রাখা হয়। তারপর সেই পানি একটু ঠাণ্ডা হয়ে আসলে তারপরেই গোসল করতে হয়।

ভাবলাম। হায়রে কি কষ্টের এক দূর্বিষহ জীবন। এরপর সচরাচর যে প্রশ্ন সবাই করে। বোকার মতো সেই প্রশ্নটা আমিও করলাম।

বললাম- ভাই বিদেশে এতো কষ্ট না করে দেশেই তো কত কিছু করতে পারতেন। কেউ সিএনজি চালায়, কেউ ছোটখাটো ব্যবসা করে।

উনার দীর্ঘশ্বাস এবার আরো দীর্ঘতর হলো। বললেন- এই প্রশ্ন করাটা যত সহজ। জবাব দেয়াটাও সহজ। কিন্তু যে টা সহজ না সে টা হলো কি নিদারুণ দুঃখ বুকে নিয়ে একেকজন মানুষ প্রবাসী হয়।

বললাম সেটা কি রকম?

কেউ মনে হয় কারো দুঃখের কথা এতো মন দিয়ে শুনেনা। যেহেতু উনি শুনার মানুষ পেয়েছেন। আর আমারও দীর্ঘ ছয় ঘন্টার অবসর। তাই উনার কথা শুনি।

বললেন- উনার ভাই সিএনজি ড্রাইভার। দু বছর আগে বিয়ে করেছেন। ঘরে এক বছরের ছেলে। যা আয় করেন তা দিয়ে সংসার ভালোই চলে। এমনকি কিছু টাকাও মাসের শেষে জমা করতে পারেন।

একদিন গাড়ি চালাতে গিয়ে আর সড়কে কি এক ঝামেলায় ঘরে ফিরতে বেশ রাত হয়ে গিয়েছে। পথে তার গাড়ি আটকালো মটর সাইকেলে আসা তিনজন ওঠতি বয়সী যুবক। দাবী করলো যা আয় করেছেন সব তাদেরকে দিয়ে দিতে। সারাদিন গাড়ি চালানোর পর একজন মানুষের মানসিক অবস্থা সবসময় শান্ত থাকেনা। আমার শান্ত-শিষ্ট ভাই জীবনে যা করলেন না তাই করলেন। প্রাণপনে চেষ্টা করলেন গাড়ি নিয়ে পালাতে। যুবকদের একজন সরাসরি ওনার মাথায় গুলি চালালো। ভাইয়ের আর তার স্ত্রী সন্তানের কাছে ফিরা হলোনা। গাড়িতেই মারা গেলেন। ভাইয়ের লাশ পেলাম পরদিন সকালে। মা এখবর শুনে মূর্ছা গেলেন। কিন্তু সেই যে শয্যাশায়ী হলেন আর বিছানা থেকে দাঁড়াতে পারলেন না।

এবার বুঝেন- একজন মানুষ কি যন্ত্রণায় নিজ দেশ ছাড়ে। রুজি করতে গিয়ে জীবনটাই যদি না বাঁচে। তবে কোনো ভরসায় আপনি সিএনজি চালাবেন কিংবা মুঠোগিরি করবেন।

এর জবাবে আমার আর কি বলার আছে। মনে হলো নিজের প্রশ্ন নিজেই গিলে খেয়ে ফেলি।

বললেন- ভাই এই যে নেতারা বলেন। প্রবাসী ভাইয়েরা দেশপ্রেম থেকে দেশে রেমিটেন্স পাঠায়। বিশ্বাস করেন ভাই। এগুলো সব মিথ্যা কথা। দেশের প্রতি আমার এক ফোটা দরদ নেই। যে দেশে পরিশ্রম করতে গিয়ে হালাল রুজি করতে গিয়ে আমার নিরীহ ভাইকে গুলি খেয়ে মরতে হয় সেই দেশের প্রতি দেশপ্রেম হয় কেমন করে। দেশ বলতে আমি শুধু বুঝি আমার বিছানায় শয্যাশায়ী মা, আমার ভাইয়ের বিধবা স্ত্রী আর তার সন্তান। এরা ছাড়া আমার আর কোনো দেশ নেই, দেশপ্রেমও নেই।

মহানবী সাঃ এর সময় কিছু মানুষ আবিসিনিয়ায় চলে যায়। সেখানে যাওয়ার একমাত্র কারণ ছিলো সেখানে সুশাসন আর বিচারব্যবস্থা ভালো ছিলো। তাদের জান মালের নিরাপত্তা ছিলো। মহানবী সঃ এর হিজরত করার কারণ ও ছিলো তাই। তাঁর জীবন বিপন্ন হয়ে পড়েছিলো মক্কায়। আর মদীনায় তিনি মনে করেছিলেন সেখানে তিনি জীবনের নিরাপত্তা পাবেন। মানুষ যেখানে গিয়ে জীবনের নিরাপত্তা পায় সেখানেই তো সে চলে যায়।

ভাই বললেন- এই দেশে আছি। খুব ভালো নেই। কোনো রকমে খেয়ে , পরে না পরে আছি। কিন্তু তারপরও মনে করি- অন্ততঃ কাজ শেষ করে নিরাপদে ঘরে ফিরে যাবো। রাস্তায় পড়ে বেঘোরে মারা যাবো না। কেউ চাঁদা না দিলে গলায় ছুরি বসিয়ে দিবেনা।

বললাম- আপনার ভাইয়ের খুনিরা কি ধরা পড়েছে।

উনি বললেন। সব খুনি কি আর ধরা পড়ে এমনকি পত্রিকার পাতায়ও আসেনা। যে ঘটনাগুলো ভাইরাল হয় সেগুলো নিয়ে সবাই খুব সরব থাকে। তারপর ধীরে ধীরে সবাই সব ভুলে যায়। খুনিও পার পেয়ে যায়। আমার ভাইতো সামান্য সিএনজি ড্রাইভার। কে তাকে অতো গুরুত্ব দেয়। আর সবকিছুই তো আমাদের দেশে অর্থে কেনা বেচা হয়। অর্থের জোর যে দিকে আইন আদালতও সেই দিকে। আর মামলা মোকাদ্দমা চালানোর মতো অতো সম্বলই বা কই।

উনার কথা শুনে দীর্ঘশ্বাস ফেলা ছাড়া আর কিইবা করার আছে।

শুধ ভাবি যে ধর্মে ঘর থেকে বের হতে কোন পা ফেলে বের হতে হয় সে শিক্ষা দেয়া হয়। ঘুমানোর সময় কিভাবে ঘুমাতে হবে তাও বলা হয়। কি ভাবে খাবার খেতে হয়, কার সাথে কি আচরণ করতে হয়, নখ কিভাবে কাটতে হয়, এমনকি কিভাবে শৌচাগার ব্যবহার করতে হয় এমন ছোট খাটো বিষয়গুলোও শিখানো হয়। সেই ধর্মের মানুষেরা কিভাবে সামান্য টাকা পয়সার জন্য একজন আরেকজনকে এতো সহজে খুন করে ফেলতে পারে। যে ধর্মের মানুষেরা নবী রাসুলের নামে নিজেদের নাম রাখে । সেই দেশের মানুষেরা কেনো এতো বেশি নির্মম আর নিষ্ঠুর হয়ে ওঠতে পারে।

জানিনা, এরা আসলে কোন ধরণের ধর্ম পালন করে।

লিখেছেন আরিফ মাহমুদ

08/08/2025

গাজীপুরে সাংবাদিককে কু*পিয়ে হ*ত্যার ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শা*স্তির দাবি জানাচ্ছি

আহ! মৃ*ত্যু, তবে বাংলাদেশের বেলায় মৃ*ত্যুটা একটু তুলনামূলক বেশিই অনিশ্চিত
04/08/2025

আহ! মৃ*ত্যু, তবে বাংলাদেশের বেলায় মৃ*ত্যুটা একটু তুলনামূলক বেশিই অনিশ্চিত

03/08/2025

নেতার পিছু না ছুটে একটি কর্মদক্ষতার পিছে ছুটুন। নেতা দেবে ভিক্ষা,থাকতে হবে দাসের মতো। দক্ষতা দিবে আত্মবিশ্বাস ও সম্মান।

Not Mahfuz, Not Nahid, Not Sadik,...Real Mastermind of Julyএই সাংবাদিকের এক প্রশ্নেই হাসিনার পতন
01/08/2025

Not Mahfuz, Not Nahid, Not Sadik,...

Real Mastermind of July

এই সাংবাদিকের এক প্রশ্নেই হাসিনার পতন

31/07/2025

অনেক পাওয়া না-পাওয়া ও হতাশার মধ্যেও অবশেষে এদেশের শাসনকাঠামোয় অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে!

এক.
এক ব্যক্তি জীবনে সর্বোচ্চ ১০ বছর প্রধানমন্ত্রী পদে থাকতে পারবেন, এমন বিধান সংবিধানে যুক্ত করা হচ্ছে।

দুই.
সংসদে উচ্চকক্ষ গঠিত হচ্ছে, যা শাসন বিভাগকে জবাবদিহিতার পাশাপাশি নিম্নকক্ষে পাশ হওয়া প্রতিটি আইনের রিভিউতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

তিন.
সংসদে সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিতে উচ্চকক্ষে পিআর (PR) পদ্ধতি বাস্তবায়ন হচ্ছে। এটা একটা ঐতিহাসিক শাসনতান্ত্রীক পরিবর্তন। যার ফলে সংসদে আমরা বহুমতের প্রতিফলন দেখতে পাবো।

চার.
গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক চুক্তির অনুমোদন, সংশোধন ইত্যাদি সংসদের উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষ উভয় থেকে পাশ করিয়ে নিতে হবে। কোনরূপ আলোচনা না করেই, জনগনকে না জানিয়েই হাসিনার মতো ট্রানজিট দিয়ে দিতে পারবে না আর কেই, হিজ্রেল থেকে পেগাসাস কিনে ফেলতে পারবে না, দেশ বিরোধী আদানি চুক্তি করতে পারবে না।

পাঁচ.
হাইকোর্টে পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলের পর গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রভিশনের ক্ষেত্রে সংবিধানে গণভোটের বিধান ফিরে এসেছে। ফলে জনগণের ক্ষমতা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ছয়.
সংসদে বিরোধী দলের গুরুত্ব বৃদ্ধি করা হয়েছে। এখন থেকে ডেপুটি স্পিকার পদে বিরোধী দল থেকে মনোনয়ন হবে। সংসদীয় স্থায়ী কমিটিগুলোতে আনুপাতিক হারে সব দলেরও অংশগ্রহণ থাকবে। অর্থাৎ, বিরোধী দলগুলো সংসদে যে কটি আসন পাবে, তার অনুপাতে সংসদীয় কমিটির সভাপতি পদ পাবে।

সাত.
স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক আর থাকছে না। ফলে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের স্থানীয় পর্যায়ের মাদকাসক্ত, গুন্ডা পান্ডাদের পরিবর্তে যোগ্য, শিক্ষিত, মার্জিত লোকজন স্থানীয় প্রতিনিধি হিসেবে উঠে আসবে।

আট.
৭০ অনুচ্ছেদ পরিবর্তন হচ্ছে। এতে অর্থবিল ও আস্থা ভোট ছাড়া অন্য যেকোনো বিষয়ে সংসদ সদস্যরা দলের বিপক্ষে ভোট দিতে পারবেন। এতোদিন ধরে চলমান প্রধানমন্ত্রী যা বলে তা-ই সঠিক এই "rubber stamp" প্রথার প্রভাব কমবে।

নয়.
হাইকোর্ট বিভাগের বেঞ্চগুলো বিভাগীয় পর্যায়ে স্থানান্তরিত হচ্ছে। ফলে পঞ্চগ্রামের জমি বিরোধ নিয়ে আপনাকে আর ঢাকায় আসতে হবে না।

দশ.
স্বাধীন পুলিশ কমিশন হচ্ছে। এটার ইতিবাচক ইমপ্যাক্ট হবে হিউজ। প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুলিশকে আর রাজনৈতিক হাতিয়ার বানানো যাবে না।

এগারো.
নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগকে স্বাধীন করার জন্য সুপ্রিম কোর্টের আলাদা সচিবালয় হচ্ছে।

বারো.
সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে একটি স্বাধীন বিচার বিভাগীয় নিয়োগ কমিশন (Judicial Appointments Commission-JAC) গঠিত হচ্ছে।

তেরো.
গণহত্যা ও ভোট জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠিত হচ্ছে।

চৌদ্দ.
প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা নানা উপায়ে হ্রাস করা হয়েছে। এখন একটাই বাকি আছে, সেটা হলো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়োগ প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ মুক্ত করে স্বতন্ত্র নিয়োগ কমিটির মাধ্যমে করা। আশাকরি এটাও শীঘ্রই বাস্তবায়ন হবে।

দেখেন একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা বলি। এতো স্বল্প সময়ের মধ্যে এতগুলো গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আশাজাগানিয়া। জুলাই ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্ব ও দলাদলি হয়েছে, যা আমাদের মনে হতাশা তৈরি করেছে। তন্মধ্যে আবার ইন্টেরিম সরকারের উপর যে প্রত্যাশা ছিল সেটাও সিকিভাগ তারা পূর্ণ করতে পারেনি এটা সত্য। চারদিকে মব কালচার হয়েছে, চাঁদাবজি হচ্ছে, দলীয় কোন্দলে মানুষ মারা গিয়েছে। এনসিপি, বিএনপি, জামাত সহ রাজনৈতিক দলগুলো নিয়ে নানা ক্ষোভ আমাদের আছে। এতো কিছু পরেও জুলাই আমাদের যা দিয়েছে সেটা বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর আর কেউ দিতে পারেনি। দেখেন উপরে কতোগুলো শাসনতান্ত্রীক পরিবর্তনের কথা বললাম এগুলো সহ আরও অসংখ্য ইতিবাচক পরিবর্তন জুলাই আমাদের এনে দিয়েছে। একটা বিপ্লব বা গণঅভ্যুত্থানের পর এতো দ্রুত এতোগুলা পরিবর্তন খুব কম রাষ্ট্র নিয়ে আনতে পেরেছে।

দেখেন ফরাসি বিপ্লবের পর ফ্রান্সে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এসেছে প্রায় চার বছর পর। আমরা কী ফ্রান্স থেকেও সভ্য? যে একটা গণঅভ্যুত্থানের পর আমাদের সকল প্রত্যাশা দুই মাসেই পূর্ণ হয়ে যাবে? না ভাই। চব্বিশের পাঁচই আগস্টের পর বিগত একটা বছর আমাদের যে হতাশা, চারদিকে যে অরাজকতা, মব কালচার, সহিংসতা এগুলো সব হচ্ছে Emancipatory Violence. মানে একটা বিপ্লবের পর একটা নতুন শাসনতান্ত্রীক কাঠামোর মধ্যে দিয়ে রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা ফিরে আসার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত সেখানে অবধারিত ভাবে ভায়ালেন্স ও অরাজকতা হবেই। তবে সেই ভায়ালেন্স কতোটা কমিয়ে আনা যায় সেটা নির্ভর করে ঐ অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্বশীলদের সক্ষমতার উপর। সেটা নিয়ে আলাপ হতে পারে।

ফ্রান্সের লেগেছে চার বছর। তিউনিসিয়ার গণঅভ্যুত্থান হয়েছে ২০০৯ সালে, তিউনিসিয়া তার নতুন শাসনকাঠামো বা সংবিধান পেয়েছে ২০১৪ সালে। ইউক্রেনের অরেঞ্জ, জর্জিয়ার রোজ, কিরগিজিস্থানের টিউলিপ সহ ২০০৪/৫ সালের দিক যেসকল দেশে কালার রেভুলোশন হয়েছে সেসব দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এসেছে ২০১১/১২ সালের দিক। অর্থাৎ পাঁচ বছর পর।

দেশে দেশে প্রতিটি গণঅভ্যুত্থান ও বিপ্লবের পর শাসনকাঠামোয় যে সকল পরিবর্তন এনে দিয়েছে, আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে জুলাই তার চেয়ে অনেকগুন বেশি পরিবর্তন এনে দিতে পারবে বলেই আমি বিশ্বাস করি। তাই এতো হতাশার পরেও জুলাইকে আমি, আমরা ব্যর্থ বলে আগেই ভালো ছিলাম এই ন্যারেটিভ কথিত বুদ্ধিজীবীদের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা করতে দিতে পারি না।

অনেক জীবন আর আত্মত্যাগের এই জুলাইকে আমরা ব্যার্থ হতে দিবো না। ইনশাআল্লাহ।

৩১/০৭/ ২০২৫
মোহাম্মদ মিরাজ মিয়া,
লেখক- দি এ্যানাটমি অব ওয়ার্ল্ড পলিটিক্স, দি কসমিক প্লে অব কন্টেমপোরারি গ্লোবাল পলিটিক্স।

Address


Alerts

Be the first to know and let us send you an email when গাজীপুর posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Shortcuts

  • Address
  • Alerts
  • Claim ownership or report listing
  • Want your business to be the top-listed Media Company?

Share

গাজীপুর

গাজীপুর জেলা বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলের ঢাকা বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। ইতিহাস আর ঐতিহ্যের সংশ্লেষে কালোত্তীর্ণ মহিমায় আর বর্ণিল দীপ্তিতে ভাস্বর অপার সম্ভাবনায় ভরপুর গাজীপুর জেলা । মোগল - বৃটিশ - পাকিস্তান আমলে বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে গাজীপুরের রয়েছে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা। ১৯৭১ সালের ১৯ মার্চ মহান মুক্তিযুদ্ধের সূচনা পর্বে গাজীপুরেই সংঘটিত হয় প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধযুদ্ধ। গাজীপুরে রয়েছে জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সদর দপ্তরসহ ১৯টি কেপি আই, ৫টি বিশ্ববিদ্যালয় ও দেশের একমাত্র হাইটেক পার্কসহ বহু সংখ্যক সরকারী, স্বায়ত্বশাসিত, বেসরকারী প্রতিষ্ঠান এবং ক্ষুদ্র/মাঝারী ও ভারী শিল্প কারখানাসহ দেশের তৈরী পোষাক শিল্পের বিরাট অংশ। মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমাবেশ বিশ্ব ইজতেমা টংগীর তুরাগ নদীর তীরে অনুষ্ঠিত হয়।